Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 29
Saheeh International
It is He who created for you all of that which is on the earth. Then He directed Himself to the heaven, [His being above all creation], and made them seven heavens, and He is Knowing of all things.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
মহান আল্লাহর ক্ষমতা সম্বন্ধে দালীল
পূর্বের আয়াতে মহান আল্লাহ ঐ দালীলসমূহ বর্ণনা করেছেন যা স্বয়ং মানুষের মধ্যে রয়েছে। এখন তিনি এই পবিত্র আয়াতে ঐ দালীলসমূহের বর্ণনা দিয়েছেন যা দৈনন্দিন মানুষের চোখের সামনে ভাসছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, প্রত্যেক জিনিস সম্বন্ধে তাঁর জানা আছে। যেমন তিনি অন্যত্র বলেনঃ
﴿اَلَا یَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَ هُوَ اللَّطِیْفُ الْخَبِیْرُ﴾
যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? (৬৭ নং সূরাহ্ মূল্ক, আয়াত নং ১৪)
সৃষ্টির সূচনা
এ আয়াতের বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে সূরাহ্ ফুচ্ছিলাতে অর্থাৎ হা-মীম সাজদাহয়। মহান আল্লাহ বলেনঃ
﴿قُلْ اَىِٕنَّكُمْ لَتَكْفُرُوْنَ بِالَّذِیْ خَلَقَ الْاَرْضَ فِیْ یَوْمَیْنِ وَ تَجْعَلُوْنَ لَهٗۤ اَنْدَادًا١ؕ ذٰلِكَ رَبُّ الْعٰلَمِیْنَۚ۹ وَ جَعَلَ فِیْهَا رَوَاسِیَ مِنْ فَوْقِهَا وَ بٰرَكَ فِیْهَا وَ قَدَّرَ فِیْهَاۤ اَقْوَاتَهَا فِیْۤ اَرْبَعَةِ اَیَّامٍ١ؕ سَوَآءً لِّلسَّآىِٕلِیْنَ۱۰ ثُمَّ اسْتَوٰۤى اِلَى السَّمَآءِ وَ هِیَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَ لِلْاَرْضِ ائْتِیَا طَوْعًا اَوْ كَرْهًا١ؕ قَالَتَاۤ اَتَیْنَا طَآىِٕعِیْنَ۱۱ فَقَضٰىهُنَّ سَبْعَ سَمٰوَاتٍ فِیْ یَوْمَیْنِ وَاَوْحٰى فِیْ كُلِّ سَمَآءٍ اَمْرَهَا١ؕ وَ زَیَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنْیَا بِمَصَابِیْحَ١ۖۗ وَ حِفْظًا١ؕ ذٰلِكَ تَقْدِیْرُ الْعَزِیْزِ الْعَلِیْمِ﴾
বলোঃ তোমরা কি তাকে অস্বীকার করবেই যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দুই দিনে এবং তোমরা তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করাতে চাও? তিনি তো জগতসমূহের রাব্ব। তিনি স্থাপন করেছেন অটল পর্বতমালা ভূপৃষ্ঠে এবং তাতে রেখেছেন কল্যাণ এবং চার দিনে ব্যবস্থা করেছেন খাদ্যের- সমভাবে, যাঞ্চাকারীদের জন্য। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন যা ছিলো ধূম্রপুঞ্জ বিশেষ। অতঃপর তিনি এটাকে এবং পৃথিবীতে বললেনঃ তোমরা উভয়ে এসো স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বললোঃ আমরা এলাম অনুগত হয়ে। তারপর তিনি আকাশমণ্ডলীকে দুই দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশে এর বিধান ব্যক্ত করলেন এবং আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহর ব্যবস্থাপনা। (৪১ নং সূরাহ্ হা-মীম সাজদাহ, আয়াত নং ৯-১২)
সৃষ্টিসমূহের বিন্যাস
এ আয়াত দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, তারপর সাতটি আকাশ নির্মাণ করেছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, অট্টালিকা নির্মাণের এটাই নিয়ম যে, প্রথমে নির্মাণ করা হয় নীচের অংশ এবং পরে ওপরের অংশ। মুফাস্সিরগণ এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন যা ইনশা’আল্লাহ এখনই আসছে। কিন্তু এটা বুঝে নেয়া উচিত যেমন মহান আল্লাহ অন্য স্থানে বলেনঃ
﴿ءَاَنْتُمْ اَشَدُّ خَلْقًا اَمِ السَّمَآءُ١ؕ بَنٰىهَاٙ۲۷ رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوّٰىهَاۙ۲۸ وَ اَغْطَشَ لَیْلَهَا وَ اَخْرَجَ ضُحٰىهَا۪۲۹ وَ الْاَرْضَ بَعْدَ ذٰلِكَ دَحٰىهَاؕ۳۰ اَخْرَجَ مِنْهَا مَآءَهَا وَ مَرْعٰىهَا۪۳۱ وَ الْجِبَالَ اَرْسٰىهَاۙ۳۲ مَتَاعًا لَّكُمْ وَ لِاَنْعَامِكُمْ﴾
তোমাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর, নাকি আকাশ সৃষ্টি? তিনিই এটা নির্মাণ করেছেন। তিনি এটাকে সুউচ্চ ও সুবিন্যস্ত করেছেন এবং তিনি এর রাতকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন এবং ওর জ্যোতি বিনির্গত করেছেন এবং পৃথিবীকে এরপর বিস্তৃত করেছেন। তিনি এটা হতে বহির্গত করেছেন এর পানি ও তৃণ আর পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করেছেন; এ সবই তোমাদের ও তোমাদের জন্তুগুলোর ভোগের জন্য। (৭৯ নং সূরাহ্ নাযি‘আত, আয়াত নং ২৭-৩৩)
এ আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন যে, তিনি আকাশের পরে যমীন সৃষ্টি করেছেন।’
কেউ কেউ বলেছেন যে, পরবর্তী আয়াতটিতে আসমান সৃষ্টির পরে যমীন বিছিয়ে দেয়া ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে, সৃষ্টি করা নয়। তাহলে ঠিক আছে যে, প্রথমে যমীন সৃষ্টি করেছেন, পরে আসমান সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর যমীনকে ঠিকভাবে সাজিয়েছেন। এতে আয়াত দু’টি পরস্পর বিরোধী আর থাকবে না। এ দোষ হতে মহান আল্লাহর কালাম সম্পূর্ণ মুক্ত।
আসমানের পূর্বে পৃথিবী সৃষ্টি করা হয়েছে
﴿هُوَ الَّذِیْ خَلَقَ لَكُمْ مَّا فِی الْاَرْضِ جَمِیْعًا﴾ ‘পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন’ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় মুজাহিদ (রহঃ) বলেন যে, আকাশ সৃষ্টির পূর্বে মহান আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আর তা থেকে ধূম্রের সৃষ্টি। ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ), ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এবং আরো কয়েকজন সাহাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহর ‘আরশ পানির ওপরে ছিলো। এর পূর্বে তিনি কোন কিছু সৃষ্টি করেননি। তারপর যখন তিনি অন্যান্য জিনিস সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন তখন তিনি পানি হতে ধূম্র বের করেন এবং সেই ওপরে উঠে যায়। তা হতে তিনি আকাশ সৃষ্টি করেন। তারপর পানি শুকিয়ে যায় এবং সেটাকে তিনি যমীনে পরিণত করেন। এরপর পৃথক পৃথকভাবে সাতটি যমীন সৃষ্টি করেন। যমীন কাঁপতে থাকলে মহান আল্লাহ তার ওপর পাহাড় স্থাপন করেন, তখন তা থেমে যায়। মহান আল্লাহর এ কথার অর্থ এটাইঃ ‘আমি ভূ-পৃষ্ঠে পর্বতমালা স্থাপন করেছি, যেন তা তাদেরকে নিয়ে টলমল করতে না পারে। পাহাড়, যমীনে উৎপাদিত শস্য এবং যমীনের প্রত্যেকটি জিনিস মঙ্গল ও বুধ এই দু’দিনে সৃষ্টি করেন। এরই বর্ণনা পূর্বে বর্ণিত আয়াতটিতে রয়েছে। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেনঃ
﴿ثُمَّ اسْتَوٰۤى اِلَى السَّمَآءِ وَ هِیَ دُخَانٌ﴾
অতঃপর মহান আল্লাহ আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন যা ছিলো ধূম্রপুঞ্জ বিশেষ। (৪১ নং সূরাহ্ হা-মীম সাজদাহ, আয়াত নং ১১) এরপর বলা হয়েছেঃ
﴿ثُمَّ اسْتَوٰۤى اِلَى السَّمَآءِ فَسَوّٰىهُنَّ سَبْعَ سَمٰوٰتٍ﴾
‘অতঃপর তিনি আকাশের প্রতি মনঃসংযোগ করেন, অতঃপর তা সপ্তম আকাশে সুবিন্যস্ত করেন।’ অর্থাৎ এক একটি আকাশের ওপর আর একটি আকাশ এবং এক একটি যমীনের নীচে আর একটি যমীন সৃষ্টি করে মোট সাতটি আকাশ ও সাতটি যমীন সৃষ্টি করেছেন।
আকাশে তিনি ফিরিশতাকে সৃষ্টি করেন, যার জ্ঞান তিনি ছাড়া আর কারো নেই। দুনিয়ার আকাশকে তারকারাজি দ্বারা সুশোভিত করেন এবং সেগুলোকে শায়তান হতে নিরাপত্তা লাভের মাধ্যম বানিয়ে দেন। এসব সৃষ্টি করার পর বিশ্বপ্রভু ‘আরশের ওপর অধিষ্ঠিত হোন। এ আয়াত ঐ আয়াতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যা সূরাহ্ সাজদার ১১ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
জগত সৃষ্টির মোট সময়
তাফসীর ইবনু জারীরে রয়েছেঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু সা‘ঈদ বলেন যে, রোববার হতে মাখলূকের সৃষ্টিকাজ আরম্ভ হয়। দু’দিনে সৃষ্টি করা হয় যমীন, দু’দিনে যমীনের সমস্ত জিনিস এবং দু’দিনে আসমান সৃষ্টি করা হয়। শুক্রবারের শেষাংশের দিকে আসমানের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন যে, মহান আল্লাহ পৃথিবীকে আকাশের পূর্বে সৃষ্টি করেছেন। এটা হতে যে ধোঁয়া ওপরের দিকে উঠেছে তা হতে আকাশ নির্মাণ করেন যা একটির ওপর আর একটি এভাবে সাতটি এবং যমীনও একটির নীচে আরেকটি এভাবে সাতটি। এ আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে জানা যাচ্ছে যে, ‘আলিমগণ এ বিষয়ে একমত। সহীহুল বুখারীতে আছে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে তিনি উত্তরে বলেছিলেন যেঃ
بأن الأرض خلقت قبل السماء وأن الأرض إنما دحيت بعد خلق السماء.
‘যমীন তো আকাশসমূহের পূর্বে সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু বিছানো হয়েছে পরে।’ (ফাতহুল বারী ৮/৪১৭) সাধারণ ‘আলিমগণেরও উত্তর এটাই। অতীতের এবং বর্তমানের অনেক তাফসীরকারক একই বর্ণনা করেছেন যা সূরাহ্ নাযি‘আতের তাফসীরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে ‘দুহা’ শব্দটিরও বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
﴿وَ الْاَرْضَ بَعْدَ ذٰلِكَ دَحٰىهَاؕ۳۰ اَخْرَجَ مِنْهَا مَآءَهَا وَ مَرْعٰىهَا۪۳۱ وَ الْجِبَالَ اَرْسٰىهَاۙ﴾
‘আর পৃথিবীকে এরপর সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি এটা হতে বহির্গত করেছেন এর পানি ও তৃণ, আর পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করেছেন।’ (৭৯ নং সূরাহ্ নাযি‘আত, আয়াত নং ৩০-৩২)
কুর’আন মাজীদে دَحَهَا শব্দটি আছে এবং এর পরে পানি, চারা, পাহাড় ইত্যাদির বর্ণনা আছে। এ শব্দটির ব্যাখ্যা যেন নিম্নরূপঃ মহান আল্লাহ যে যে জিনিসের বৃদ্ধির ক্ষমতা এই যমীনে রেখেছিলেন, ঐ সবকে প্রকাশ করে দিলেন এবং এর ফলে বিভিন্ন আকারের ও বিভিন্ন শ্রেণীর উৎপাদন বেরিয়ে এলো। এভাবেই আকাশেও স্থির ও গতিশীল তারকারাজি ইত্যাদি দ্বারা নির্মাণ করলেন।
সহীহ মুসলিম ও সুনান নাসাঈতে বর্ণিত আছে যে, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার হাত ধরে বলেছেনঃ
خَلَقَ اللهُ التُّرْبَةَ يَوْمَ السَّبْتِ وَخَلَقَ الْجِبَالَ فِيهَا يَوْمَ الْأَحَدِ وَخَلَقَ الشَّجَرَ فِيهَا يَوْمَ الِاثْنَيْنِ وَخَلَقَ الْمَكْرُوهَ يَوْمَ الثُّلَاثَاءِ وَخَلَقَ النُّورَ يَوْمَ الْأَرْبِعَاءِ وَبَثَّ فِيهَا الدَّوَابَّ يَوْمَ الْخَمِيسِ وَخَلَقَ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلَام بَعْدَ الْعَصْرِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ آخِرَ الْخَلْقِ فِي آخِرِ سَاعَةٍ مِنْ سَاعَاتِ الْجُمُعَةِ فِيمَا بَيْنَ الْعَصْرِ إِلَى اللَّيْلِ.
মহান আল্লাহ মাটি সৃষ্টি করেছেন শনিবারে, পাহাড় সৃষ্টি করেছেন রবিবারে, বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেছেন সোমবারে, খারাপ জিনিসগুলো সৃষ্টি করেছেন মঙ্গলবারে, আলো সৃষ্টি করেছেন বুধবারে, জীবজন্তু সৃষ্টি করেছেন বৃহস্পতিবারে, আর আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করেছেন জুমু‘আবারে ‘আসরের পর সর্বশেষ সৃষ্টি হিসেবে জুমু‘আর দিনের ‘আসরের পর থেকে রাত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে। (হাদীসটি সহীহ। সহীহ মুসলিম ৪/ ২৮/ ২১৪৯, ২১৫০.মুসনাদ আহমাদ২/৩২৭, সুনান নাসাঈ (কুবরা) ১১০১০) এ হাদীসটি গারাইব-ই-মুসলিমের মধ্যে রয়েছে। ইমাম ইবনু মাদিনী (রহঃ), ইমাম বুখারী (রহঃ)-সহ প্রভৃতি মনীষীগণ এর বিরূপ সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে, কা‘ব (রাঃ)-এর নিজস্ব উক্তি এবং এবং আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) কা‘ব (রাঃ)-এর নিকট থেকে এ কথা শুনেছেন এবং কতক বর্ণনাকারী একে ভুলবশত মারফূ‘ হাদীসরূপে ধরে নিয়েছেন। ইমাম বায়হাকীও এরূপই বলেছেন। মহান আল্লাহই অধিক জ্ঞাত।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings