Surah Al Hadid Tafseer
Tafseer of Al-Hadid : 7
Saheeh International
Believe in Allah and His Messenger and spend out of that in which He has made you successors. For those who have believed among you and spent, there will be a great reward.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৭-১১ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে ঈমান আনার পাশাপাশি তাদেরকে যে সম্পদের উত্তরাধিকারী বানিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। এ কথা ইঙ্গিত প্রদান করছে, তোমাদের নিকটে যে ধন-সম্পদ আছে তা চিরদিন তোমাদের কাছে থাকবে না। তোমরা যেমন উত্তরাধিকারী সূত্রে পেয়েছো তোমরা মারা গেলে পরবর্তীরা উত্তরাধিকারী সূত্রে মালিক হয়ে যাবে। অতএব তোমরা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় না করলে তারা ব্যয় করে অশেষ নেকী হাসিল করে নেবে। হাদীসে এসেছে : মানুষ বলে আমার সম্পদ আমার সম্পদ। অথচ তোমার সম্পদ হল প্রথমত সেটা যা খেয়ে শেষ করে ফেলেছো। দ্বিতীয়ত : যা পরিধান করে নষ্ট করে ফেলেছো। তৃতীয়ত : যা তুমি আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করেছো। এছাড়া যা কিছু থাকবে তা সবই অন্যদের ভাগে আসবে। (সহীহ মুসলিম হা. ২৯৫৯, তিরমিযী হা. ২৩৪৯) সুতরাং যে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সম্পদ দান করেছেন, যে পথে ব্যয় করলে তিনি খুশি হবেন সে পথেই ব্যয় করা উচিত। তাঁর অবাধ্য ও পাপ কাজে ব্যয় করা উচিত হবে না।
(وَمَا لَکُمْ لَا تُؤْمِنُوْنَ بِاللہِ)
এখানে মহান আল্লাহ তাদের তিরস্কার করছেন যাদের কাছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দাওয়াত পৌঁছেছে কিন্তু তারপরে ঈমান আনছে না। তিরস্কার করে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন : তোমাদের কী আপত্তি ও কী বাধা রয়েছে যে- তোমরা ঈমান আনছ না, অথচ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে ঈমানের দিকে আহ্বান করছেন!
(وَقَدْ أَخَذَ مِيْثَاقَكُمْ)
আল্লামা ইবনু কাসীর (রহঃ) أَخَذَ ক্রিয়ার কর্তা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বুঝিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের নিকট থেকে বাইয়াত গ্রহণ করেছেন যে, সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় তাঁর কথা শুনবে ও মানবে। ইবনু জারীর (রহঃ) এ ক্রিয়ার কর্তা আল্লাহ তা‘আলাকে বুঝিয়েছেন। অর্থ হল : সেই অঙ্গীকার যা মহান আল্লাহ রূহ জগতে আদম (আঃ)-এর পৃষ্ঠদেশ থেকে বের করে সকল মানুষের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। যেমন সূরা আ‘রাফের ১৭২ নম্বর আয়াতে উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছেন যে- তোমরা ঈমান আনবে; অধিকন্তু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও সে ঈমানের দিকে আহ্বান করছেন তারপরেও ঈমান আনছ না।
(لَا يَسْتَوِيْ مِنْكُمْ مَّنْ أَنْفَقَ مِنْ قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ)
‘তোমাদের মধ্যে যারা (মক্কা) বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও সংগ্রাম করেছে, উভয়ে সমান নয়’ এখানে الْفَتْحِ বা বিজয় দ্বারা কোন্ বিজয়কে বুঝোনো হয়েছে তা নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়।
(১) বিজয় দ্বারা উদ্দেশ্য হল হুদায়বিয়ার সন্ধি। (সহীহ বুখারী হা. ৪১৫০)
(২) বিজয় দ্বারা উদ্দেশ্য হল মক্কা বিজয়। এটা অধিকাংশ আলেমদের অভিমত। (ইবনু কাসীর, শরহু আকিদাহ ওয়াসিতিয়াহ)
অর্থাৎ যারা হুদায়বিয়ার সন্ধি বা মক্কা বিজয়ের পূর্বে আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করেছেন ও জিহাদ করেছেন তারা অধিক নেকী ও মর্যাদাসম্পন্ন তাদের থেকে যারা হুদায়বিয়ার সন্ধি বা মক্কা বিজয়ের পর আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করেছেন ও জিহাদ করেছেন। কেননা হুদায়বিয়ার সন্ধি বা মক্কা বিজয়ের পূর্বের ব্যয় ও জিহাদ উভয়টাই ছিল অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
(وَكُلًّا وَّعَدَ اللّٰهُ الْحُسْنٰي)
অর্থাৎ সাহাবীদের মধ্যে মর্যাদার তারতম্য থাকা সত্ত্বেও সকলের জন্য রয়েছে কল্যণের প্রতিশ্রুতি তথা জান্নাত। তাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস হল : মর্যাদাগত তারতম্য থাকা সত্ত্বেও সকল সাহাবীদের ব্যাপারে আমাদের অন্তর সকল প্রকার হিংসা বিদ্বেষ মুক্ত এবং জবান সকল প্রকার অকথ্য ও অশালীন কথা থেকে মুক্ত। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : তোমরা আমার সাহাবীদেরকে গালি দিয়ো না। সে সত্ত্বার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ যদি উহুদ পরিমাণ স্বর্ণ আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করে তবুও তাদের এক মুদ বা অর্ধ মুদ (প্রায় ৬২৫ গ্রাম) এর সমান হবে না। (সহীহ বুখারী হা. ৩৬৭৩, সহীহ মুসলিম হা. ২৫৪১)।
(مَنْ ذَا الَّذِیْ یُقْرِضُ اللہَ)
আল্লাহ তা‘আলাকে উত্তম ঋণ দেওয়ার অর্থ হল তাঁর পথে ব্যয় করা। যারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করবে তিনি তাদের প্রতিদান বহুগুণে বাড়িয়ে দেবেন এবং উত্তম প্রতিদান দেবেন। তবে অবশ্যই তা হতে হবে হালাল ও উত্তম সম্পদ হতে, সুস্থ-সবল ও সম্পদের প্রতি মোহ থাকাবস্থায় এবং আল্লাহ তা‘আলাকে সস্তুষ্ট করার জন্য; কাউকে খুশি করা বা বাহবা পাওয়ার জন্য নয়।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. সম্পদকে নেয়ামত মনে করে তার সৎব্যবহার করা উচিত।
২. ঈমানের সাথে নেকীর আশায় দান করলে আল্লাহ তা‘আলা মহা পুরস্কার প্রদান করবেন।
৩. সাহাবীদের মর্যাদা জানতে পেলাম।
৪. সাহাবীদের ব্যাপারে কুটক্তি করা, হিংসা বিদ্বেষ পোষণ করা সে যে কোন সাহাবীর ব্যাপারে হোক না কেন তা হারাম।
৫. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় ব্যয় করার ফযীলত জানতে পারলাম।
৬. সমস্ত সম্পদের প্রকৃত মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, মানুষকে তা ব্যবহার করার অধিকার দিয়েছেন।
৭. আমলের তারতম্য অনুপাতে জান্নাতে মর্যাদার তারতম্য হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings