Surah Qaf Tafseer
Tafseer of Qaf : 36
Saheeh International
And how many a generation before them did We destroy who were greater than them in [striking] power and had explored throughout the lands. Is there any place of escape?
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩৬-৪০ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ বলছেন : এ সকল মুশরিক কুরাইশের পূর্বে কত জাতিকে আমি ধ্বংস করেছি; তারা তাদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী ও প্রতাবশালী ছিল। কিন্তু যখন শাস্তি এসেছে তারা কেউ রক্ষা পায়নি।
(فَنَقَّبُوْا فِي الْبِلَادِ)
(দেশে বিদেশে বিচরণ করত)-এর একটি অর্থ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বিভিন্ন শহরে মক্কাবাসীর চেয়েও বেশি ভ্রমণ করত। কিন্তু যখন আমার আযাব এলো, তখন তারা না কোথাও আশ্রয় পেল, আর না পালানোর কোন পথ পেল।
এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য যার আছে সজাগ বোধগম্য হৃদয় অথবা যে মনোযোগসহ শ্রবণ করে। সুতরাং যে ব্যক্তি সচেতন সে পূর্ববর্তী ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সতর্ক হবে এবং আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাফরমানীর কাজে লিপ্ত হবে না।
لُّغُوْبٍ অর্থ ক্লান্ত হওয়া, কাতাদাহ ও কালবী (রহঃ) বলেন : মদীনার ইয়াহূদীরা বিশ্বাস করত আল্লাহ তা‘আলা ছয় দিনে আকাশ-জমিন সৃষ্টি করেছেন, শুরু করেছেন রবিবার আর শেষ করেছেন জুম‘আবার, শনিবার বিশ্রাম নিয়েছেন- তাদের এ ভ্রান্ত বিশ্বাসকে খন্ডন করার জন্য উক্ত আয়াত নাযিল হয় (কুরতুবী)। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা কোন কাজে ক্লান্ত বোধ করেন না বরং তিনি কোন কাজ করার ইচ্ছা করলে শুধু বলেন- ‘কুন’ বা ‘হও’ আর তা সাথে সাথেই হয়ে যায়। তবে ছয় দিনে আকাশ-জমিন সৃষ্টি করার পিছনে আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ কোন হিকমত রয়েছে।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সান্ত্বনা প্রদান করছেন যে, তুমি তাদের অসার কথায় ধৈর্য ধারণ করো। আর সকাল-সন্ধ্যা, রাতের কিয়দাংশে ও সালাত শেষে তাসবীহ পাঠ করো।
(وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ)
ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন : মিরাজের পূর্বে সূর্যোদয়ের আগে, ফজরের সময় দু’ রাকআত আর আসরের সময় দু’রাকআত সলাত ফরয ছিল। অতঃপর আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফারয করার মাধ্যমে তা রহিত করে দেন। (ইবনু কাসীর- এ আয়াতের তাফসীর)
জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : একরাতে আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তিনি চৌদ্দ তারিখের রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন : তোমরা যেমন এ চাঁদটি দেখতে পাচ্ছ তেমনিভাবে তোমরা তোমাদের রবকে দেখতে পাবে এবং তাঁকে দেখার ব্যাপারে বাধা বিঘœ হবে না। তাই তোমাদের সামর্থ্য থাকলে সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের আগের সালাতের ব্যাপারে পরাজিত হবে না। তারপর তিনি পাঠ করলেন : তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা সহকারে পবিত্রতা বর্ণনা কর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮৫১, সহীহ মুসলিম হা. ৬৩৩)
সূর্যোদয়ের পূর্ব বলতে ফজরের সালাত সূর্যাস্তের পূর্বে বলতে ‘আসরের সালাতকে বুঝানো হয়েছে। আর রাতের কিয়দাংশ সালাত আদায় করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা হলো তাহাজ্জুদের সালাত।
(وَأَدْبَارَ السُّجُودِ)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : এর উদ্দেশ্য ফরয সালাতের পর তাসবীহ পাঠ করা। প্রমাণ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন : দরিদ্র মুহাজিরগণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলেন : হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ধনী লোকেরা তো উচ্চ মর্যাদা ও চিরস্থায়ী নেয়ামত লাভ করে ফেলেছেন! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : কিভাবে? তাঁরা বললেন : আমাদের মতো তারাও সালাত আদায় করে, সিয়াম পালন করে। কিন্তু তারা দান-সদকা করে আর আমরা করতে পারি না এবং তারা গোলাম আযাদ করে, আমরা পারি না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : আমি কি তোমাদেরকে এমন আমলের কথা বলে দেব না যা করলে তোমরাই সর্বাপেক্ষা অগ্রগামী থাকবে, তোমাদের ওপর কেউ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারবে না?
তারপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরয সালাতের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আল-হামদুলিল্লাহ ও ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করতে বললেন। (সহীহ বুখারী হা. ৮৪৩)
আর কেউ বলেছেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মাগরিবের পর দু’রাক‘আত সালাত পড়া।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. পাপাচারীদের উভয় জগতের ভয় দেখানো বৈধ।
২. পূর্ববর্তী ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিদের থেকে তারাই শিক্ষা গ্রহণ করে যাদের জীবন্ত আত্মা রয়েছে ও যারা মনোযোগসহ শোনে।
৩. সালাতের মাধ্যমে ধৈর্য ধারণ ও সাহায্য প্রার্থনা করা উচিত।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings