Surah An Nisa Tafseer
Tafseer of An-Nisa : 24
Saheeh International
And [also prohibited to you are all] married women except those your right hands possess. [This is] the decree of Allah upon you. And lawful to you are [all others] beyond these, [provided] that you seek them [in marriage] with [gifts from] your property, desiring chastity, not unlawful sexual intercourse. So for whatever you enjoy [of marriage] from them, give them their due compensation as an obligation. And there is no blame upon you for what you mutually agree to beyond the obligation. Indeed, Allah is ever Knowing and Wise.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
অর্থাৎ যেসব নারীর স্বামী রয়েছে তারাও তোমাদের জন্যে হারাম। তবে হ্যাঁ, কাফিরদের যেসব স্ত্রী যুদ্ধক্ষেত্রে বন্দিনী হয়ে তোমাদের অধিকারে আসবে, এক ঋতুকাল অতিক্রান্ত হবার পর তারা তোমাদের জন্যে বৈধ হবে। মুসনাদ-ইআহমাদে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ‘আওতাসের যুদ্ধে কতগুলো সধবা স্ত্রীলোক বন্দিনী হয়ে আসে। আমরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে তাদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় এবং তাদের সাথে মিলিত হওয়াকে বৈধ করা হয়। জামেউত্ তিরমিযী, সুনান-ই-ইবনে মাজা, সহীহ মুসলিম প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থেও এ হাদীসটি রয়েছে। তাবরানীর হাদীসে বর্ণিত আছে যে, এটা খাইবার যুদ্ধের ঘটনা।
পূর্ববর্তী মনীষীদের একটি দল এ আয়াতের সাধারণতা হতে দলীল গ্রহণ করে বলেন যে, দাসীকে বিক্রি করে দেয়াই হচ্ছে তার স্বামীর পক্ষ হতে তালাক প্রাপ্তি। হযরত ইবরাহীম (রঃ)-কে এ মাসআলাটি জিজ্ঞেস করা হলে তিনি হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর ফতওয়াটিই বর্ণনা করতঃ এ আয়াতটি পাঠ করেন।
অন্য সনদ দ্বারা বর্ণিত আছে যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, “যখন কোন সধবা নারী বিক্রীতা হয় তখন তার দেহের বেশী হকদার হচ্ছে তার মনিব।' হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) এবং হযরত ইবনে আব্বাসেরও (রাঃ) ফতওয়া এই যে, তার বিক্রি হওয়াই হচ্ছে তালাক প্রাপ্তি।
তাফসীর-ই-ইবনে জারীরের মধ্যে রয়েছে যে, দাসীর তালাক ছয় প্রকারের। তাকে বিক্রি করাও তালাক, আযাদ করাও তালাক, দান করাও তালাক, অব্যাহতি দেয়াও তালাক এবং তার স্বামীর তালাক দেয়াও তালাক।' (এখানে ৫ প্রকারের উদাহরণ দেয়া হয়েছে। ৬ষ্ঠ প্রকারটি মূল তাফসীরে নেই) হযরত ইবনুল মুসাইয়াব (রঃ) বলেন যে, সধবা নারীদের সাথে বিয়ে হারাম। কিন্তু দাসীরা এর ব্যতিক্রম, তাদের বিক্রি হওয়াই তালাক।।
হযরত মুহাম্মার (রঃ) এবং হযরত হাসান বসরীও (রঃ) এটাই বলেছেন। এ গুরুজনদের তো উক্তি এই, কিন্তু জমহ্র তাদের বিরোধীমত পোষণ করেন। তারা বলেন যে, দাসীদের বিক্রি তাদের জন্যে তালাক নয়। কেননা, ক্রেতা হচ্ছে বিক্রেতার প্রতিনিধি এবং বিক্রেতা তার সুফল স্বীয় অধিকার হতে বের করছে এবং দাসীর নিকট হতে ছিনিয়ে নিয়ে ক্রেতার নিকট বিক্রি করছে।
তাদের দলীল হচ্ছে হযরত বুরাইরা (রাঃ)-এর হাদীসটি যা সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থে রয়েছে। তা হচ্ছে এই যে, উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) হযরত বুরাইরা (রাঃ)-কে ক্রয় করে আযাদ করে দেন। তখন কিন্তু তাঁর হযরত মুগীস (রাঃ)-এর সঙ্গেকার বিয়ে বাতিল হয়নি। বরং রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁকে সে বিয়ে বাতিল করার বা বাকী রাখার অধিকার প্রদান করেন। হযরত বুরাইরা (রাঃ) বিয়ে বাতিল করাকেই পছন্দ করেন। এ ঘটনাটি প্রসিদ্ধ হয়ে রয়েছে। সুতরাং ঐ গুরুজনদের কথা অনুযায়ী বিক্রি হওয়াই যদি তালাক হতো তবে রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত বুরাইরা (রাঃ)-কে তাঁর বিক্রি হয়ে যাবার পর বিয়ে বাতিল করার বা ঠিক রাখার অধিকার দিতেন না।
অধিকার দেয়ার দলীল হচ্ছে বিয়ে ঠিক থাকার। কাজেই আয়াতে শুধু ঐ স্ত্রীলোকদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা যুদ্ধে বন্দিনী হয়ে মুসলমানদের অধিকারে এসেছে। এও বলা হয়েছে যে, (আরবী) শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে পুণ্যশীলা রমণীগণ। অর্থাৎ পুণ্যবতী নারীগণ তোমাদের জন্যে হারাম-যে পর্যন্ত না তোমরা বিয়ে, সাক্ষী, মোহর ও অভিভাবকের মাধ্যমে তাদের সতীত্বের অধিকারী হও, একজন হোক, দু'জন হোক, তিনজন হোক বা চারজন হোক। হযরত আবুল আলিয়া (রঃ) এবং হযরত তাউস (রঃ) এ ভাবার্থই বর্ণনা করেছেন। উমার (রঃ) এবং উবাইদাহ (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে-চারটের বেশী স্ত্রী তোমাদের জন্যে হারাম। হ্যা, তবে দাসীদের ব্যাপারে এ সংখ্যা নেই।
অতপর আল্লাহ তা'আলা বলেন-এ নির্দেশ আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর লিখে দিয়েছেন, অর্থাৎ চারটের হুকুম। সুতরাং এটাই তোমাদের জন্যে অবশ্যপালনীয়, তোমারা ওর সীমা ছাড়িয়ে যেওনা। তোমরা তাঁর শরীয়ত ও ফরযগুলো মেনে চল।' এও বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা হারাম নারীদেরকে স্বীয় গ্রন্থে প্রকাশ করে দিয়েছেন।
এরপরে বলা হচ্ছে-‘যেসব নারীর হারাম হবার কথা বর্ণনা করা হলো, তারা ছাড়া সমস্ত নারী তোমাদের জন্যে হালাল। একটি ভাবার্থ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, এ চারের কম তোমাদের জন্যে হালাল। কিন্তু এ উক্তি দূরের উক্তি। প্রথমটিই সঠিক ভাবার্থ। এটাই হযরত আতা' (রঃ)-এর উক্তি।
হযরত কাতাদা (রঃ) এর ভাবার্থ বর্ণনা করেন যে, এর দ্বারা দাসীদেরকে বুঝানো হয়েছে। এ আয়াতটিই ঐ লোকদের দলীল, যারা বিবাহে একই সময়ে দু' বোনকে একত্রিত করার বৈধতার সমর্থক এবং ঐ লোকদেরও দলীল যারা বলেন যে, একটি আয়াত ওকে হালাল করছে ও একটি আয়াত হারাম করছে।
অতঃপর আল্লাহ পাক বলেনঃ “তোমরা এ হালাল নারীদেরকে স্বীয় মাল দ্বারা গ্রহণ কর। আযাদ নারীদেরকে চারজন পর্যন্ত বিয়ে করতে পারবে এবং দাসীদেরকে সংখ্যা নির্ধারণ ছাড়াই বিয়ে করতে পারবে, তবে শরীয়তের পন্থায় হতে হবে। এ জন্যেই বলা হয়েছে-ব্যভিচারের উদ্দেশ্য ব্যতীত বিবাহবদ্ধ করার জন্যে। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেন-“যেসব স্ত্রী হতে তোমরা ফল ভোগ কর, সে ফল ভোগের বিনিময়ে তাদেরকে মোহর প্রদান কর।' যেমন অন্য আয়াতে রয়েছে (আরবী) অর্থাৎ ‘কিরূপে তোমরা তা (মোহর) গ্রহণ করবে? অথচ তোমরা পরস্পর একে অন্যের নিকট উপস্থিত হয়েছিলে।' (৪:২১) আর এক জায়গায় রয়েছে (আরবী) অর্থাৎ “তোমরা খুশী মনে স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর প্রদান কর।' (৪:৪) অন্য স্থানে রয়েছে (আরবী) অর্থাৎ ‘তোমরা স্ত্রীদেরকে যা কিছু প্রদান করেছ তা হতে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্যে বৈধ নয়।' (২:২২৯) এ আয়াত দ্বারা মুতআ’” (মুআ' হচ্ছে অস্থায়ী বা সাময়িক বিবাহ। কোন বস্তুর বিনিময়ে কোনরূপ ফল ভোগ করলে তাকে মু্তআ' বলে) বিবাহের উপর দলীল গ্রহণ করা হয়েছে।
ইসলামের প্রাথমিক যুগে ‘মুআ' শরীয়তেরই বিধান ছিল। পরে তা রহিত হয়ে যায়। ইমাম শাফিঈ (রঃ) এবং উলামা-ই-কিরামের একটি দল বলেন যে, ‘মুআ’ দু’বার বৈধ করা হয়, অতঃপর রহিত করা হয়। কেউ কেউ বলেন যে, তার চেয়েও বেশীবার বৈধ হয়েছে ও রহিত হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেন। যে, একবার মাত্র বৈধ হয়েছে, তারপরে রহিত হয়ে গেছে। এরপরে আর বৈধ হয়নি। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবং অন্যান্য কয়েকজন সাহাবী হতে প্রয়োজনের সময় এর বৈধতার কথা বর্ণিত আছে। হযরত ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) হতেও এরূপই একটি বর্ণনা বর্ণিত আছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ), উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ), সাঈদ ইবনে যুবাইর (রঃ) এবং সুদ্দী (রঃ) হতে (আরবী) শব্দের পরে (আরবী)-এর পঠন বর্ণিত আছে। কিন্তু জমহুর এর উলটো।
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি এর উত্তম মীমাংসা করেছে যাতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) খাইবারের যুদ্ধে মুতআ’র বিবাহ হতে এবং পালিত গাধার মাংস হতে নিষেধ করেছেন। এ হাদীসের শব্দগুলো আহকামের গ্রন্থসমূহে বিস্তারিতভাবে রয়েছে। সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত সুবরা' ইবনে মা’বাদ জুহনী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, মক্কা বিজয়ের যুদ্ধে তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে ছিলেন। তিনি ইরশাদ করেনঃ “হে মানবমণ্ডলী! আমি তোমাদেরকে মুতআ’র অনুমতি দিয়েছিলাম। জেনে রেখো যে, আল্লাহ তা'আলা কিয়ামত পর্যন্ত ওটাকে হারাম করে দিয়েছেন। যার নিকট এ প্রকারের স্ত্রী রয়েছে সে যেন তাকে পরিত্যাগ করে এবং তোমরা যা কিছু তাদেরকে দিয়ে রেখেছো তা হতে কিছুই গ্রহণ করো না।'
সহীহ মুসলিমের অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বিদায় হজ্বে একথা বলেছিলেন। হাদীসটি বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত আছে যার ব্যাখ্যার স্থান হচ্ছে আহকামের গ্রন্থসমূহ।
অতঃপর আল্লাহ পাক বলেন-‘মোহর নির্ধারণের পর যদি তোমরা পরস্পরের সম্মতিক্রমে কিছু মীমাংসা করে নাও তবে কোন অপরাধ হবে না। যারা পূর্ববর্তী বাক্যকে ‘মুআ’র’ অর্থে নিয়েছেন, তাঁরা এর ভাবার্থ এরূপ বর্ণনা করেন যে, যখন নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাবে তখন পুনরায় সময় বাড়িয়ে নেয়ায় এবং যা কিছু দিয়েছে তার উপর আরও কিছু দেয়ায় কোন পাপ নেই। সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, ইচ্ছে করলে পূর্বে নির্ধারিত মোহরের পর সময় শেষ হবার পূর্বে যা দিয়েছে সে বলবে-“আমি এত সময়ের জন্যে পুনরায় মুতআ করছি।
সুতরাং যদি গর্ভাশয়ের পবিত্রতার পূর্বে ঐ বেশীটা ঠিক করে নেয় তবে সময় শেষ হয়ে যাবার পর তার কোন ক্ষমতা থাকবে না। ঐ স্ত্রী পৃথক হয়ে যাবে এবং এক ঋতুকাল অপেক্ষা করে স্বীয় গর্ভাশয়কে পবিত্র করে নেবে। এ দু’ জনের মধ্যে উত্তরাধিকার নেই। স্ত্রীলোকটিও পুরুষ লোকটির উত্তরাধিকারিণী হবে না এবং পুরুষ লোকটিও স্ত্রীলোকটির উত্তরাধিকারী হবে না। আর যে মনীষীগণ বলেন যে, এটা সুন্নাত বিবাহ সম্পৰ্কীয় কথা, তাঁদের নিকটে এর ভাবার্থ তো পরিষ্কার যে, এখানে মোহর আদায়ের গুরুত্বের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। যেমন বলা হয়েছে- ‘মোহর সহজভাবে ও খুশী মনে দিয়ে দাও। তবে মোহর নির্ধারিত হবার পর যদি স্ত্রী তার সমস্ত প্রাপ্য বা আংশিক প্রাপ্য মাফ করে দেয়। তবে স্বামী বা স্ত্রীর কারও কোন পাপ নেই।' হযরত হারামী (রঃ) বলেন, মানুষ মোহর নির্ধারণ করে দেয়। অতঃপর তার দরিদ্র হয়ে যাবারও সম্ভাবনা রয়েছে। সে সময় যদি স্ত্রী তার প্রাপ্য ছেড়ে দেয় তবে তা বৈধ। ইমাম ইবনে জারীরও এ উক্তিকেই পছন্দ করেছেন।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে, তাদেরকে পূর্ণ মোহর প্রদান কর। অতঃপর তাদেরকে বসবাস করার বা পৃথক হয়ে যাবার পূর্ণ অধিকার দাও।' এরপর বলা হচ্ছে-‘আল্লাহ তা'আলা মহাজ্ঞানী বিজ্ঞানময়। এ বৈধতা বা অবৈধ সম্পর্কীয় নির্দেশাবলীর মধ্যে যে নিপুণতা ও যুক্তিযুক্ততা রয়েছে তা তিনিই খুব ভাল জানেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings