Surah An Nisa Tafseer
Tafseer of An-Nisa : 22
Saheeh International
And do not marry those [women] whom your fathers married, except what has already occurred. Indeed, it was an immorality and hateful [to Allah ] and was evil as a way.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২২ হতে ২৩ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে বংশজাত, দুগ্ধপান এবং বৈবাহিক সম্বন্ধের কারণে যে সব নারীদেরকে বিবাহ করা পুরুষের জন্য হারাম তার বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, সাত শ্রেণির নারী বংশের কারণে এবং সাত শ্রেণির নারী বৈবাহিক সম্বন্ধের কারণে পুরুষের জন্য বিবাহ করা হারাম। অতঃপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করেন।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
يَحْرُمُ مِنَ الرَّضَاعَةِ مَايَحْرُمُ مِنَ النَّسَبِ
(রাঃ) বংশগত কারণে যাদেরকে বিবাহ করা হারাম দুধ পানের কারণেও তাদেরকে বিবাহ করা হারাম। (সহীহ বুখারী হা: ২৬৪৫, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৪৭ )
(مَا نَکَحَ اٰبَا۬ؤُکُمْ)
“তোমাদের বাপ-দাদা যেসব নারীদেরকে বিয়ে করেছে”জাহিলী যুগে সৎছেলেরা সৎমাকে বিবাহ করত। এটা ইসলামে হারাম করা হয়েছে।
(حُرِّمَتْ عَلَيْكُمْ ......بنات. الأخ)
‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, কন্যা...’ বংশীয় সম্পর্কের কারণে যেসব নারীদের বিবাহ করা হারাম তাদের বর্ণনা করা হয়েছে। তারা হল: মাতা, কন্যা, বোন, ফুফু, খালা, ভাইঝি ও ভাগ্নী। এদেরকে বিবাহ করা চিরস্থায়ী হারাম।
অধিকাংশ আলিম এ পক্ষে রায় দিয়েছেন যে, ব্যভিচার করার কারণে যে কন্যা সন্তান হয় তা ব্যভিচারের জন্য বিবাহ করা হারাম।
তবে ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, তাকে বিবাহ করা বৈধ। কেননা সে মেয়ে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে মেয়ে নয়। কারণ ব্যভিচার করে যে সন্তান হয় তাকে ওয়ারিশ দেয়া হবে না এ বিষয়ে সকলে একমত। অতএব সে মেয়ে ব্যভিচারীর কন্যা বলে গণ্য হবেনা। (ইবনে কাসীর, ২য় খণ্ড, পৃঃ ১৭৫)
আর দুধ পানকারিণী মার সাথে সম্পর্কের দিক থেকে যাদেরকে বিবাহ করা হারাম তারা হল: দুধ মা, দুধ বোন, দুধ মেয়ে, দুধ খালা, দুধ ফুফু, দুধ ভাইঝি ও ভাগ্নী।
আর বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে যাদেরকে বিবাহ করা হারাম তারা হল: শাশুড়ী, সৎ মেয়ে (যে স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছে, তার মেয়ে, পুত্রবধু ও দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা।
এছাড়াও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত- ফুফু, ভাইঝি অথবা খালা ও বোনঝি উভয়কে একত্রে বিবাহ করা হারাম। (সহীহ বুখারী হা: ৫১০৯, সহীহ মুসলিম হা: ১৪০৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন কোন পুরুষ কোন মহিলাকে বিবাহ করে, তখন তার মাকে বিবাহ করা হারাম। স্বামী ঐ মেয়ের সঙ্গে সহবাস করুক আর না-ই করুক। (তাফসীর তাবারী, ৮৯০৬)
পক্ষান্তরে কোন মহিলা দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বিবাহ হলে দ্বিতীয় স্বামীর জন্য উক্ত মহিলার পূর্বের স্বামীর ঘরের মেয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত বিবাহ করা হারাম হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না মহিলার সাথে সহবাস করে।
(وَحَلَ۬ائِلُ اَبْنَا۬ئَكُمْ)
‘তোমাদের ঔরসজাত পুত্রবধুকে’আপন পুত্রদের বধু বিবাহ করা হারাম। কিন্তু পালক পুত্রের বধু বিবাহ করা বৈধ। তাই তার সাথে পর্দা করাও ফরয। আমাদের দেশের মানুষ মনে করে পালক পুত্রবধুকে বিবাহ করা হারাম তাই তার সাথে বেপর্দায় চলাফেরা করে।
জাহিলী সমাজে এরূপ প্রথা ছিল। পালক পুত্রের বধুকে পিতা বিবাহ করত না। আল্লাহ তা‘আলা এ সংকীর্ণতা দূর করার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে পালকপুত্র জায়েদের স্ত্রীকে বিবাহ পড়িয়ে দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَلَمَّا قَضٰي زَيْدٌ مِّنْهَا وَطَرًا زَوَّجْنٰكَهَا لِكَيْ لَا يَكُوْنَ عَلَي الْمُؤْمِنِيْنَ حَرَجٌ فِيْٓ أَزْوَاجِ أَدْعِيَا۬ئِهِمْ)
“তারপর যায়িদ যখন জায়নাবের সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম।”(সূরা আহযাব ৩৩:৩৭)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন পালকপুত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করলেন তখন মক্কায় মুশরিকরা সমালোচনা করতে লাগলে আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করলেন
(وَحَلَ۬ائِلُ اَبْنَا۬ئَكُمُ الَّذِيْنَ مِنْ أَصْلَابِكُمْ)
‘তোমাদের ঔরসজাত পুত্রবধুকে’এবং নাযিল করলেন,
(وَمَا جَعَلَ اَدْعِيَا۬ئِكُمْ اَبْنَا۬ءَكُمْ)
‘আর তোমাদের পালক পুত্রদেরকেও তোমাদের ছেলে করেননি।’(সূরা আহযাব ৩৩:৪) আরো নাযিল হয়:
(مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا اَحَدٍ مِّنْ رِّجَالِكُمْ)
‘মুহাম্মাদ তোমাদের মধ্যকার কোন পুরুষের পিতা নয়।’(সূরা আহযাব ৩৩:৪০)
এছাড়াও মুশরিক নারী, কাফির নারী, অন্য পুরুষের ইদ্দত পালন করছে এমন নারী ও মুহরিম অবস্থায় রয়েছে এমন নারী বিবাহ করা হারাম। অনুরূপ ব্যভিচারী নারীও বিবাহ করা হারাম, তবে যদি সে কাজ থেকে তাওবাহ করে তাহলে বিবাহ করা যাবে।
আর যে সকল বিবাহ শরীয়তসম্মত নয় তা হল-
১. নিকাহ শিগার তথা কারো মেয়ে বা বোনকে এ শর্তে বিবাহ করা যে, তার কাছে এ ব্যক্তির বোন বা মেয়েকে বিবাহ দেবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ বিবাহ করা থেকে নিষেধ করেছেন। (সহীহ মুসলিম হা: ১৪১৭)
২. কারো জন্য বৈধ করে দেয়ার উদ্দেশ্যে বিবাহ করা, যেমন কোন ব্যক্তি একত্র তিন তালাকপ্রাপ্তা নারীকে বিবাহ করল, তারপর তালাক দিয়ে দিল যাতে পূর্বের স্বামীর জন্য বৈধ হয়। এটাকে আমাদের দেশে হিল্লা বিবাহ বলা হয়।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লা‘নত করেছেন যারা এরূপ কাজ করে এবং যার জন্য করে উভয়কে। (তিরমিযী হা: ১১২০, নাসায়ী হা: ৬/১৪৯, সহীহ)
৩. মুতা বিবাহ: তা হল অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিবাহ করা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বারের বছর এবং পরে ফাতহে মক্কার বছর এ ধরণের বিবাহ হারাম করেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৫১১৫, সহীহ মুসলিম হা: ১৪০৬)
৪. অন্যের স্ত্রীকে বিবাহ করা। অর্থাৎ কোন মহিলা স্বামীর সাথে বৈধ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। পরকীয়া, জবরদস্তি বা অন্য কোন পন্থায় এমন মহিলাদের বিবাহ করা হারাম। তেমনি ব্যভিচারী ও দেহ ব্যবসায়ী নারীদের বিবাহ করা হারাম, তবে তাওবা করে উক্ত কাজ থেকে ফিরে আসলে বিবাহ করা যাবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings