Surah Ash Shura Tafseer
Tafseer of Ash-Shuraa : 24
Saheeh International
Or do they say, "He has invented about Allah a lie"? But if Allah willed, He could seal over your heart. And Allah eliminates falsehood and establishes the truth by His words. Indeed, He is Knowing of that within the breasts.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২৩-২৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
সৎ আমলকারী মু’মিনরা আখিরাতে জান্নাতে থাকবে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ, যাতে দুনিয়াতেই তারা আশস্ত হতে পারে এবং আল্লাহ তা‘আলার প্রতি খুশি হয়ে শুকরিয়া আদায় করে। এখানে আল্লাহ তা‘আলা তারই বর্ণনা দিয়েছেন।
(إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبٰي)
‘তোমাদের নিকট হতে আত্মীয়তার ভালবাসা ব্যতীত অন্য কোন বিনিময় চাই না’ নাবীরা তাদের রেসালাতের দায়িত্ব পালনে কোন প্রকার প্রতিদান চান না- এর বর্ণনা অনেক স্থানে এসেছে। সূরা হূদের ২৯ নম্বর আয়াতেও উল্লেখ করা হয়েছে। নাবীকুল শিরোমণি রিসালাতের দায়িত্ব পালনে প্রতিদান চাওয়া থেকে পবিত্র, তবে আত্মীয়তার ভালবাসা ছাড়া। আত্মীয়তার ভালবাসার অর্থ কী এ নিয়ে ইমাম শানকিতী (রহঃ) চারটি বক্তব্য তুলে ধরেছেন :
(১) ইবনু আব্বাস, মুজাহিদ, কাতাদাহ প্রমুখ বলেন : এর অর্থ হল-আমার মাঝে ও তোমাদের মাঝে যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে তা বজায় রাখ, আমাকে দীন প্রচার করার কারণে কষ্ট দিওনা, মানুষকে আমায় কষ্ট দিতে বারণ কর। যেমন তোমাদের প্রত্যেক আত্মীয়-স্বজনদের ব্যাপারে করে থাক। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কুরাইশদের সাথে আত্মীয়তা রয়েছে। আরবদের নিয়ম হল তারা আত্মীয়দের সাথে কোনদিন খারাপ ব্যবহার করে না। সে হিসেবে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথা বলেছিলেন। যেমন আবূ তালেব রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সংরক্ষণ করেছেন, অথচ তাঁর দীন গ্রহণ করেননি।
(২) তোমরা আমার আত্মীয় ও বংশধরকে কষ্ট দিওনা। এ কথা সাইদ বিন যুবাইর, আমর বিন শুআইব বলেছেন। এরূপ আরো দু’টি বক্তব্য রয়েছে। প্রথম বক্তব্যই সঠিক।
এ আয়াতের তাফসীরে ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন : ‘আবদুল মালিক ইবনু মাইসারা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি ত্বউস থেকে তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ইবনু ‘আব্বাস একদা এ আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হন। তখন সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর বলেন : এর দ্বারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটাত্মীয়দেরকে বুঝানো হয়েছে। ইবনু ‘আব্বাস বলেন : তুমি খুব তাড়াতাড়ি করেছ। কুরাইশের যতগুলো গোত্র ছিল সবারই সাথে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। এর ভাবার্থ হবে, তোমরা ঐ আত্মীয়তার সম্পর্কের প্রতি লক্ষ্য রেখ যা আমার ও তোমাদের মধ্যে রয়েছে। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮১৮)
নাবী পরিবারের সম্মান ও মহব্বত : উপরের আলোচনা থেকে বুঝা গেলে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাওয়াতী কাজ করতে গিয়ে কুরাইশদের থেকে যে কষ্ট পেয়েছেন সে জন্য তাদেরকে বলছেন : তোমাদের সাথে আমার যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে সেজন্যও তো তোমরা আমাকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে পার।
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর পরিবারকে সম্মান ও মহব্বত করতে হবে। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর বংশের মহব্বত নিয়ে কোন সময় মুসলিমরা মতবিরোধ করেনি। সর্বসম্মতিক্রমে তাদেরকে ভালবাসা অপরিহার্য, এমনকি ঈমানের অঙ্গ। তবে বিরোধ হল মহব্বত কিভাবে করব? শিয়াদের রাফেযী সম্প্রদায় নাবী পরিবারকে সম্মান দেখাতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে, অন্যান্য সাহাবীদেরকে গালিগালাজ করে, আবার কেউ নাবী পরিবারকে সম্মান দেখাতে গিয়ে শিথীলতা প্রদর্শন করেছে। উভয়টি পরিত্যাজ্য। বরং নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর পরিবারকে ভালবাসতে হবে তবে বাড়াবাড়ি করা যাবে না, তাদেরকে ভালবাসতে গিয়ে অন্যদেরকে গালিগালাজ করা যাবে না এবং স্বীয় সম্মান থেকে বেশি দেয়া যাবে। নাবী পরিবারকে ভালবাসতে গিয়ে শিয়া ও রাফিযী সম্প্রদায় হাজার হাজার হাদীস তৈরি করেছে, যা ইসরাঈলী বর্ণনা ও তাদের তাফসীর গ্রস্থসহ অনেক তাফসীর গ্রন্থে বিদ্যমান। তাছাড়া শিয়ারা নাবী পরিবারের প্রতি ভালবাসার যে দলীল পেশ করে তাও ঠিক নয়। কারণ এই আয়াত ও সূরাটি হলো মাক্কী। তখন ‘আলী ও ফাতিমাহ্ (রাঃ)-এর মধ্যে বিবাহ বন্ধন সম্পন্ন হয়নি। যার প্রতি মনগড়া ভালবাসা রাখার প্রমাণ এ আয়াত থেকে করা হয়।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি উত্তম কাজ করে আমি তার নেকী ও সওয়াব বৃদ্ধি করি। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী :
(إِنَّ اللّٰهَ لَا يَظْلِمُ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ ج وَإِنْ تَكُ حَسَنَةً يُّضٰعِفْهَا وَيُؤْتِ مِنْ لَّدُنْهُ أَجْرًا عَظِيْمًا)
“আল্লাহ অণু পরিমাণও জুলুম করেন না। আর কোন পুণ্য কর্ম হলে আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেন এবং আল্লাহ তাঁর নিকট হতে মহাপুরস্কার প্রদান করেন।” (সূরা নিসা ৪ : ৪০)
(أَمْ يَقُوْلُوْنَ افْتَرٰي)
অর্থাৎ কাফির-মুশরিকরা যেমন বলে থাকে- মুহাম্মাদ এ কুরআন নিজে রচনা করে আল্লাহ তা‘আলার নামে চালিয়ে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এরূপ হলে আল্লাহ তা‘আলা কঠোর হস্তে দমন করতেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَیْنَا بَعْضَ الْاَقَاوِیْلِﭻلَاَخَذْنَا مِنْھُ بِالْیَمِیْنِﭼثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْھُ الْوَتِیْن َفَمَا مِنْکُمْ مِّنْ اَحَدٍ عَنْھُ حٰجِزِیْنَ)
“যদি সে নিজে কোন কথা বানিয়ে আমার কথা বলে চালিয়ে দিত, তবে অবশ্যই আমি তার ডান হাত ধরে ফেলতাম, এবং কেটে দিতাম তার হৃৎপিণ্ডের শিরা।
অতঃপর তোমাদের মধ্যে এমন কেউ থাকত না, যে তার থেকে আমাকে বিরত রাখতে পারে।” (সূরা হা-ক্কাহ ৬৯ : ৪৪-৪৭)
অতএব এটা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকেই অবতারিত কিতাব, এটা কোন মানুষের রচিত কিতাব নয়।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন : তিনি মিথ্যাকে মিটিয়ে দেন সত্য দ্বারা, আর সত্যকে নিজ বাণী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করেন। এমনকি এ কুরআনও যদি মিথ্যা হত, যদি এতে কোন মানুষের উক্তি থাকত তাহলে তিনি এটাকেও মিটিয়ে দিতেন। কারণ এটাই হলো তাঁর নীতি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
২. ভাল কাজের প্রতিদান আল্লাহ তা‘আলা বৃদ্ধি করে দেন।
৩. কুরআন কোন মানব রচিত কিতাব নয়, বরং এটা ঐশী গ্রন্থ।
৪. সত্যের মোকাবেলায় মিথ্যা কখনো বিজয়ী হয় না, মিথ্যা কোন এক সময় মুছে যাবেই।
৫. আল্লাহ তা‘আলা সকলের অন্তরের খবর সম্পর্কেও অবহিত।
৬. নাবী পরিবারকে ভালবাসার নামে বাড়াবাড়ি করা যাবে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings