Surah Al Ahzab Tafseer
Tafseer of Al-Ahzab : 51
Saheeh International
You, [O Muhammad], may put aside whom you will of them or take to yourself whom you will. And any that you desire of those [wives] from whom you had [temporarily] separated - there is no blame upon you [in returning her]. That is more suitable that they should be content and not grieve and that they should be satisfied with what you have given them - all of them. And Allah knows what is in your hearts. And ever is Allah Knowing and Forbearing.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫০-৫১ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতদ্বয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিবাহের কিছু বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে যেগুলো কেবল তার নিজের জন্যই নির্দিষ্ট, অন্য কোন মু’মিন ব্যক্তিবর্গের জন্য নয়।
(إِنَّآ أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللّٰاتِيْٓ اٰتَيْتَ أُجُوْرَهُنَّ)
‘আমি তোমার জন্য তোমার সেই স্ত্রীদেরকে হালাল করেছি যাদের মাহর তুমি প্রদান করেছ’ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সকল স্ত্রীদেরকে মাহর দিয়ে বিবাহ করেছেন তারা সকলেই তাঁর জন্য বৈধ। যদিও এ বিধান সকল মু’মিনদের জন্য; কিন্তু মু’মিনরা মাহর দিয়েও চারের অধিক স্ত্রী একত্রে রাখতে পারবে না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যত স্ত্রীকে মাহর দিয়েছিলেন সকলেই তাঁর জন্য বৈধ ছিল। কেননা এ বিধান যখন অবতীর্ণ হয় তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী চারের অধিক ছিল। আর এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্যই নির্দিষ্ট।
(وَمَا مَلَكَتْ يَمِيْنُكَ مِمَّآ أَفَا۬ءَ اللّٰهُ عَلَيْكَ)
‘সেই নারীদেরকেও যাদেরকে আল্লাহ তোমার মালিকানাধীন করেছেন গণিমতরূপে’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অধীনে যে সকল দাসী রয়েছে তারা সকলেই তাঁর জন্য বৈধ। যদিও এখানে ‘‘ফাই” এর মাল হিসেবে যে দাসী হস্তগত হয় তার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ”ফাই” এর মাল ছাড়াও তার অধিনস্ত যে কোন দাসী তাঁর জন্য বৈধ করা হয়েছে। এটা শুধু রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য নির্দিষ্ট নয় বরং সকল মু’মিনদের জন্যই এটা বৈধ যে, তাদের অধিকারভুক্ত দাসীদের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করা। এমনকি সাধারণ লোকদের দাসী অন্যের হস্তগত হলে সে তার সঙ্গে সহবাস করতে পারবে, কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীরা যেমন অন্যের জন্য বৈধ নয় তদ্রƒপ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দাসীরাও অন্যের জন্য বৈধ নয়। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে অনেকে চুক্তিভিত্তিক কাজের মেয়েদের তৎকালীন দাসীদের সাথে তুলনা করে এদের সাথেও ঐরুপ আচরণ করতে চায় যা কখনোই সঠিক হবেনা, কারণ তাদের অধিকাংশই মুসলিম স্বাধীন নারী যারা অভাবের তাড়নায় অন্যের বাড়ীতে কাজ করে জিবিকা নির্বাহ করে তারা যেকোন মূহুর্তে কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে কিন্তু তৎকালীন দাসীদের এ ক্ষমতা ছিলনা। বিধায় বর্তমানে কাজের মেয়ে হিসেবে যারা অন্যের বাড়ীতে কাজ করে তারা দাসী নয় এবং তাদের সাথে দাসীদের আচরণও করা যাবেনা। তবে অবশ্যই বিবাহের মাধ্যমে তাদের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলে কোন সমস্যা নেই।
(وَبَنٰتِ عَمِّكَ وَبَنٰتِ عَمّٰتِكَ)
অর্থাৎ হে নাবী! যেসকল স্ত্রীদেরকে মাহর দিয়েছ ও যারা দাসী হিসেবে তোমার অধিনস্থ হয়েছে তাদের ন্যায় তোমার চাচা, ফুফু এবং মামা ও খালার কন্যাদেরকে বিবাহ করা বৈধ করা হয়েছে। এতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আলাদা কোন বিশেষত্ব নেই, কারণ সাধারণ মু’মিনরাও তো তাদের বিবাহ করতে পারবে। বিশেষত্ব হল এসব নারীদের মধ্যে যারা মদীনাতে হিজরত করে এসেছে তাদেরকেই বিবাহ করতে পারবে। সারকথা এই যে, সাধারণ উম্মাতের জন্য পিতৃ ও মাতৃকুলের এসব কন্যা কোন শর্ত ছাড়াই বিবাহ করা বৈধন হিজরত করুক আর না-ই করুক। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য কেবল তারাই হালাল যারা তাঁর সাথে হিজরত করেছে। “সাথে হিজরত” করার জন্য সফরের সঙ্গে থাকা অথবা একই সাথে হিজরত করা জরুরী নয়। বরং যে কোন প্রকারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ন্যায় হিজরত করাই উদ্দেশ্য। ফলে এসব কন্যার মধ্যে যারা কোন কারণে হিজরত করেনি তাদেরকে বিবাহ করার নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য বৈধ নয়।
(وَامْرَأَةً مُّؤْمِنَةً إِنْ وَّهَبَتْ نَفْسَهَا.....)
‘আর কোন মু’মিন নারী যদি নাবীর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে’ এখানে আরো একটি বিধান হল যদি কোন মু’মিন মহিলা নিজেকে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য হেবা করে দেয়, তাহলে নাবী চাইলে তাকে বিবাহ করতে পারেন। এতে কোন মোহরের প্রয়োজন হবে না।
এটা শুধু রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য নির্দিষ্ট, অন্য কোন মানুষের জন্য নয়। তাদেরকে শরয়ী নিয়ম অনুসারেই মাহর দিয়ে বিবাহ করতে হবে।
হাদীসে এসেছে: সাহল বিন সাদ হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক মহিলা এসে বলল: হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি আমার নিজেকে আপনার জন্য হেবা বা দান করে দিলাম। অতঃপর মহিলাটি দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। তখন একটি লোক দাঁড়িয়ে বলল। হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনার যদি তাকে প্রয়োজন না থাকে তাহলে আমার সাথে বিবাহ দিয়ে দিন। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তোমার নিকট এমন কিছু আছে কি যা তুমি তাকে মাহর হিসেবে দেবে? লোকটি বলল: আমার এই লুঙ্গি ব্যতীত আর কিছুই নেই। যদি তুমি তাকে লুঙ্গি দিয়ে দাও তাহলে তোমার পরার কোন লুঙ্গি থাকবে না। তুমি কিছু খুঁজে দেখ। তখন লোকটি খুঁজে বলল: আমি কিছুই পাইনি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তুমি একটি লোহার আংটি হলেও খোঁজ কর। লোকটি খুঁজে কিছুই পেল না। তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন: তোমার কি কুরআন মুখস্ত আছে? সে বলল: হ্যাঁ অমুক অমুক সূরা। (সে সূরাগুলোর নাম বলল।) তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: আমি তোমাকে তার সাথে বিবাহ দিলাম তোমার কুরআনের মুখস্থ সূরাগুলো শিক্ষা দেয়ার বিনিময়ে। (সহীহ বুখারী হা: ৫১২১, সহীহ বুখারী হা: ১৪২৫)
ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন: বিবাহ বন্ধন অথবা অধীনস্থ দাসী ছাড়া নিজেকে হেবা করেছে এমন কোন নারী ছিলেন না। কেউ বলেছেন; ছিল। ইমাম কুরতুবী (رحمه الله) বলেন, দ্বিতীয় মত সমর্থনে বুখারী মুসলিমে হাদীস রয়েছে, আয়িশাহ (رضي الله عنها) বলেন: আমি ঐ সকল নারীদের প্রতি ঈর্ষা করতাম যারা নিজেদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য হেবা করত। আমি বলতাম: মহিলাদের কি লজ্জা হয় না তারা একজন পুরুষের জন্য নিজেকে হেবা করে দেয়। এমনকি নাযিল হল-
(تُرْجِيْ مَنْ تَشَا۬ءُ مِنْهُنَّ وَتُؤْوِيْٓ إِلَيْكَ مَنْ تَشَا۬ءُ)
-‘তুমি তোমার স্ত্রীদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা পৃথক রাখতে পার এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পার’ আয়িশাহ (رضي الله عنها) বলেন: আল্লাহ তা‘আলার শপথ! আপনার প্রভু দেখি আপনার মতানুপাতেই ফয়সালা দিয়ে থাকেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৭৮৮, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৬৪) আয়িশাহ (رضي الله عنها) বলেন: খাওলাহ বিনতে হাকীম (رحمه الله) ঐ সকল নারীদের অন্তর্ভুক্ত যারা নিজেদেরকে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য হেবা করেছেন। (সহীহ বুখারী হা: ৫১১৩)
আয়াতে مؤمنة শব্দ দ্বারা স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, সাধারণ মানুষের জন্য আহলে কিতাবের মেয়েদেরকে বিবাহ করা বৈধ হলেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য এটা বৈধ ছিল না। বরং এক্ষেত্রে ঈমানদার হওয়া প্রধান শর্ত।
(تُرْجِيْ مَنْ تَشَا۬ءُ مِنْهُنَّ.......) শানে নুযূল:
আয়িশাহ (رضي الله عنها) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি ঐ সকল মহিলাদের ওপর হিংসা করতাম যারা নিজেদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য হেবা করত এবং আমি বলতাম, মহিলারা বিনা মাহরে নিজেকে হেবা করে? তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতটি নাযিল করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৭৮৮, সহীহ মুসলিম হা: ১৪৬৩, ১৪৭৬)
تُرْجِيْ শব্দটি ارجاء থেকে উদ্ভূত, অর্থ পেছনে রাখা, আর وَتُؤْوِيْ শব্দটি ايواء থেকে উদ্ভূত, অর্থ নিকটে আনা। আয়াতের অর্থ হচ্ছে: তুমি স্ত্রীগণের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দূরে রাখতে পারবে এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পারবে। এটা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য নির্দিষ্ট একটি বিধান যা উম্মতের জন্য প্রযোজ্য নয়। সাধারণ উম্মতের মধ্যে কারো একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের মাঝে সমতা বিধান করা জরুরী এবং বৈষম্যমূলক আচরণ করা হারাম। সমতার মানে ভরণ-পোষণ ও রাত্রি যাপনের সমতা রক্ষা করা। অর্থাৎ প্রত্যেক স্ত্রীর সাথে সমান সংখ্যক রাত্রি যাপন করতে হবে, কম-বেশি করা যাবে না এবং সমান ভরণ-পোষণ দিতে হবে। কিন্তু‘ এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করা হয়েছে, ইচ্ছা করলে পালা বণ্টন না করলেও কোন অপরাধ হবে না। তিনি যার সাথে ইচ্ছা তার সাথেই রাত্রি যাপন করতে পারবেন। কারো পালা আসলে তার সাথে রাত্রি যাপন না করে অন্যের সাথে রাত্রি যাপন করলে বা যার পালা আসেনি তার সাথে রাত্রি যাপন করাতে তাঁর কোনই অপরাধ নেই। আয়াতের শেষাংশে আরও ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যে, তুমি যে স্ত্রীকে একবার দূরে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছ, ইচ্ছা করলে তাকে পুনরায় কাছে রাখতে পারবে। (وَمَنِ ابْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكَ) বাক্যের অর্থও তাই।
আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মানার্থে তাকে স্ত্রীদের মাঝে সমতা বিধান করার হুকুম থেকে মুক্ত রেখেছেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতদসত্বেও তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে পালা বণ্টন করে দিতেন। আর এ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার পেছনে একটাই উদ্দেশ্য ছিল যে, যাতে করে তাঁর স্ত্রীরা তাঁর ওপর সন্তুষ্ট থাকেন। কোন প্রকার মনোমালিন্য না হয়।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. চারের অধিক স্ত্রী একসঙ্গে রাখা কেবল রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য বৈধ, কিন্তু উম্মাতের জন্য চারটির অধিক বৈধ নয়।
২. রাসূলের স্ত্রীগণ যেমন অন্যের জন্য বৈধ নয়, অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দাসীগণও অন্যের জন্য বৈধ নয়।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কোন মহিলা নিজেকে হেবা করলে কোন প্রকার মাহর ছাড়াই তাকে বিবাহ বৈধ, সাধারণ মু’মিনদের জন্য মাহর দেয়া ওয়াজিব।
৪. মু’মিন ছাড়া আহলে কিতাবের মেয়েদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য বিবাহ করা বৈধ ছিল না।
৫. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পালা বণ্টন করাটা অবশ্যক ছিল না। তথাপি তিনি পালা বণ্টন করে নিতেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings