Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 74
Saheeh International
Then your hearts became hardened after that, being like stones or even harder. For indeed, there are stones from which rivers burst forth, and there are some of them that split open and water comes out, and there are some of them that fall down for fear of Allah . And Allah is not unaware of what you do.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
ইয়াহুদীদের কঠোরতা
মহান আল্লাহ্র এতো নিদর্শন তথা মৃতকে জীবিত করার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করা সত্তেও বানী ইসরাঈলের লোকেরা যখন ঈমান আনলো না তাই অত্র আয়াতে বানী ইসরাঈলকে ধমক দিয়ে বলা হচ্ছে যে, ‘এরপরও তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেলো, তা পাথর কিংবা তদপেক্ষা কঠিন।’ অর্থাৎ বানী ইসরাঈলকে বলা হচ্ছে যে, এতো বড় বড় মু‘জিযাহ এবং মহান আল্লাহ্র ব্যাপক ক্ষমতার নিদর্শনাবলী দেখার পরও কিভাবে এতো তাড়াতাড়ি তাদের অন্তর পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেলো? এ জন্যই মু’মিনগণকে এরকম শক্তমনা হতে নিষেধ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছেঃ
﴿اَلَمْ یَاْنِ لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْ تَخْشَعَ قُلُوْبُهُمْ لِذِكْرِ اللّٰهِ وَ مَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ١ۙ وَ لَا یَكُوْنُوْا كَالَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ مِنْ قَبْلُ فَطَالَ عَلَیْهِمُ الْاَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوْبُهُمْ١ؕ وَ كَثِیْرٌ مِّنْهُمْ فٰسِقُوْنَ﴾
‘যারা ঈমান আনে তাদের হৃদয় ভক্তি-বিগলিত হওয়ার সময় কি আসেনি মহান আল্লাহ্র স্মরণে এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তাতে? আর পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিলো তাদের মতো যেন তারা না হয়, বহুকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে যাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে পড়েছিলো। তাদের অধিকাংশই সত্যত্যাগী। (৫৭ নং সূরা হাদীদ, আয়াত নং ১৬)
আল-আউফী (রহঃ) স্বীয় তাফসীরে বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিটিকে গাভীর গোস্তের টুকরা দ্বারা আঘাত করা হলে সে উঠে দাঁড়িয়ে যায় এবং জীবিত অবস্থায় সে যতোখানি সুস্থ-সবল ছিলো তার চেয়েও তাকে সতেজ মনে হয়েছিলো। তাকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ তোমাকে কে হত্যা করেছিলো? সে উত্তরে বললোঃ আমার ভাইয়ের ছেলে আমাকে হত্যা করেছে। এরপর সে আবার মারা যায়। লোকটি আবার মারা যাওয়ার পর তার ভাইয়ের ছেলে বললোঃ মহান আল্লাহ্র শপথ! আমি তাকে হত্যা করিনি। এভাবে সে সত্যকে অস্বীকার করলো, যদিও সবাই এ কথা জেনে গেছে। মহান আল্লাহ বলেনঃ
﴿ثُمَّ قَسَتْ قُلُوْبُكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ فَهِیَ كَالْحِجَارَةِ اَوْ اَشَدُّ قَسْوَةً﴾
‘এরপরও তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গেলো, তা পাথর কিংবা তদপেক্ষা কঠিন। (তাফসীর তাবারী ২/২৩৪)
কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বানী ইসরাঈলের অন্তর পাথরের চেয়েও শক্ত হয়ে গিয়েছিলো। কেননা পাথর হতেও তো ঝরণা প্রবাহিত হয়। কোন কোন পাথর ফেটে যায় এবং তা হতে পানি বের হয়, যদিও তা প্রবাহিত হওয়ার যোগ্য নয়। কোন কোন পাথর মহান আল্লাহ্র ভয়ে ওপর হতে নীচে গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ঐ লোকদের অন্তর নসীহত বা উপদেশে কখনো নরম হয় না। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (রহঃ) বলেন, ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ আয়াতের ভাবার্থ হলো এমন কিছু পাথর রয়েছে যা তোমাদের হৃদয়ের চেয়ে কোমল। তারা সত্যকে স্বীকার করে, যে সত্যের প্রতি তোমাদেরকে আহ্বান করা হয়েছে। (তাফসীর ইবনে আবি হাতিম ১/২৩৩)
কঠিন বস্তু বা পাথরের মধ্যেও বোধশক্তি আছে
কোন কোন মুফাস্সির মনে করেন যে, রূপক অর্থে পাথরের সাথে সাদৃশ্য দেয়া হয়েছে। ওপরের বর্ণনা থেকে এটাও জানা যায় যে, পাথরের মধ্যে জ্ঞান-বিবেক আছে। কুর’আন মাজীদের অন্য স্থানে আছেঃ ‘সাত আসমান ও যমীন এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থলে যা কিছু আছে সবাই মহান আল্লাহ্র তাসবীহ্ পাঠ করে ও প্রশংসা করে। যেমন তিনি বলেনঃ
﴿اِنَّا عَرَضْنَا الْاَمَانَةَ عَلَى السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ الْجِبَالِ فَاَبَیْنَ اَنْ یَّحْمِلْنَهَا وَ اَشْفَقْنَ مِنْهَا﴾
আমি তো আসমান, যমীন ও পবর্তমালার প্রতি এই আমানত অর্পণ করেছিলাম, তারা এটা বহন করতে অস্বীকার করলো এবং এতে শংকিত হলো। (৩৩ নং সূরা আহযাব, আয়াত নং ৭২)
﴿تُسَبِّحُ لَهُ السَّمٰوٰتُ السَّبْعُ وَ الْاَرْضُ وَ مَنْ فِیْهِنَّ﴾
সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং এদের অর্ন্তবর্তী সব কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। (১৭ নং সূরা ইসরাহ, আয়াত নং ৪৪) ওপরের আয়াতে বর্ণিত হয়েছে যে, সমস্ত জিনিস মহান আল্লাহ্র তাসবীহ্ বর্ণনা করে। অন্যস্থানে মহান আল্লাহ বলেনঃ ﴿وَّ النَّجْمُ وَ الشَّجَرُ یَسْجُدٰنِ﴾
তারকা ও বৃক্ষ উভয়ে মহান আল্লাহকে সিজদা করে। (৫৫ নং সূরা আর রাহমান, আয়াত নং ৬)
﴿اَوَ لَمْ یَرَوْا اِلٰى مَا خَلَقَ اللّٰهُ مِنْ شَیْءٍ یَّتَفَیَّؤُا ظِلٰلُهٗ﴾
তারা কি লক্ষ্য করে না মহান আল্লাহ্র সৃষ্ট বস্তুর প্রতি, যার ছায়া ডানে ও বামে ঢলে পড়ে মহান আল্লাহ্র প্রতি সিজদাবনত হয়ে? (১৬ নং সূরা নাহল, আয়াত নং ৪৮) অন্যত্র আছেঃ
﴿قَالَتَاۤ اَتَیْنَا طَآىِٕعِیْنَ﴾
তারা (যমীন ও আসমান) বললোঃ আমরা এলাম অনুগত হয়ে। (৪১ নং সূরা হা-মীম সাজদাহ, আয়াত নং ২১) অপর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেনঃ ﴿لَوْ اَنْزَلْنَا هٰذَا الْقُرْاٰنَ عَلٰى جَبَلٍ﴾
আমি যদি এই কুর’আন পর্বতের ওপর অবতীর্ণ করতাম। (৫৯ নং সূরা হাশর, আয়াত নং ২১) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো বলেনঃ ﴿وَ قَالُوْا لِجُلُوْدِهِمْ لِمَ شَهِدْتُّمْ عَلَیْنَا١ؕ قَالُوْۤا اَنْطَقَنَا اللّٰهُ﴾
(জাহান্নামীরা) তাদের ত্বককে জিজ্ঞেস করবেঃ তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছো কেন? উত্তরে তারা বলবেঃ মহান আল্লাহ আমাদেরকেও বাকশক্তি দিয়েছেন। (৪১ নং সূরা হা-মীম সাজদাহ, আয়াত নং ২১) একটি বিশুদ্ধ হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহুদ পাহাড় সম্পর্কে বলেনঃ إن هذا الجبل يحبنا ونحبه এ পাহাড়টি আমাদেরকে ভালোবাসে এবং আমরাও একে ভালোবাসি। (সহীহুল বুখারী ৭/৪৪২২, সহীহ মুসলিম ২/৫০৩/১০১১, ফাতহুল বারী ৬/৯৮) আর একটি হাদীসে আছে যে, যে খেজুর গাছের কাণ্ডের ওপর হেলান দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুৎবা দিতেন, যখন মিম্বার তৈরী করা হয় এবং কাণ্ডটিকে সরিয়ে ফেলা হয় তখন কাণ্ডটি অঝোর নয়নে কাঁদতে থাকে। (সহীহুল বুখারী ৬/৩৫৮৩, জামি‘ তিরমিযী- ২/৫০৫, সুনান নাসাঈ- ৩/১৩৯৫, সুনান ইবনে মাজাহ ১/১৪১৫, মুসনাদে আহমাদ ৫/৮৯, ৯৫, ১০৫) সহীহ মুসলিমে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
"إني لأعرف حجرًا بمكة كان يسلم علي قبل أن أبعث إني لأعرفه الآن"
‘আমি মাক্কার সেই পাথরটি এখনও চিনতে পারি যা আমাকে নবীরূপে প্রেরণের পূর্বে সালাম দিতো।’ পাথরটির আরো কিছু বিবরণ দিয়ে মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
أنه يشهد لمن استلمه بحق يوم القيامة
‘যে একে সত্যের সাথে চুম্বন করবে, কিয়ামতের দিন এটা তার ঈমানের সাক্ষ্য প্রদান করবে।’ (মুসনাদে আহমাদ ১/২৬৬) এ ধরনের বহু আয়াত ও হাদীস রয়েছে যাদ্বারা এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এসব জিনিসের মধ্যে বিবেক ও অনুভূতি আছে এবং এগুলো প্রকৃত অর্থেই আছে, রূপক অর্থে নয়।
أَوْ শব্দটি সম্পর্কে ইমাম কুরতুবী (রহঃ) এবং ইমাম রাযী (রহঃ) বলেন যে, এটা ইচ্ছার স্বাধীনতার জন্য এসেছে। কারো কারো মতে এটার ভাবার্থ এই যে, কতক অন্তর পাথরের মতো শক্ত এবং কতক অন্তর তার চেয়েও বেশি শক্ত। মহান আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। মহান আল্লাহ বলেনঃ ﴿وَ لَا تُطِعْ مِنْهُمْ اٰثِمًا اَوْ كَفُوْرًا﴾
কোন পাপী অথবা কাফেরের আনুগত্য করো না। (৭৬ নং সূরা ইনসান/দাহর, আয়াত নং ২৪)
﴿عُذْرًا اَوْ نُذْرًا﴾
অনুশোচনা স্বরূপ অথবা সতর্কতা স্বরূপ। (৭৭ নং সূরা মুরসালাত, আয়াত নং ৬) অন্যান্য জ্ঞানীগণ বলেন যে, এখানে ‘অথবা’ শব্দটি ‘বরং’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। অতএব এখানে অর্থ হবে, তোমাদের হৃদয় পাথরের মতো শক্ত, বরং এর চেয়েও শক্ত। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ
﴿اِذَا فَرِیْقٌ مِّنْهُمْ یَخْشَوْنَ النَّاسَ كَخَشْیَةِ اللّٰهِ اَوْ اَشَدَّ خَشْیَةً﴾
‘তাদের একদল মহান আল্লাহকে যেরূপ ভয় করে তদ্রুপ মানুষকে ভয় করে, বরং তদপেক্ষাও অধিক। (৪ নং সূরা নিসা, আয়াত নং ৭৭)
﴿وَ اَرْسَلْنٰهُ اِلٰى مِائَةِ اَلْفٍ اَوْ یَزِیْدُوْنَ﴾
‘তাকে আমি লক্ষ বা লক্ষাধিক লোকের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম। (৩৭ নং সূরা সাফফাত, আয়াত নং ১৪৭)
﴿فَكَانَ قَابَ قَوْسَیْنِ اَوْ اَدْنٰى﴾
ফলে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের ব্যবধান রইলো, অথবা তারও কম। (৫৩ নং সূরা নাজম, আয়াত নং ৯)। কারো কারো মতে এর ভাবার্থ এই যে, তাদের হৃদয় পাথরের মতো কিংবা কঠোরতায় তার চেয়েও বেশি। (তাফসীর তাবারী ২/২৩৬) এটা নিম্নের আয়াতেরও অনুরূপঃ
﴿مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِی اسْتَوْقَدَ نَارًا﴾
এদের অবস্থা ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে অগ্নি প্রজ্জলিত করলো। (২ নং সূরা বাকারাহ, আয়াত নং ১৭)
﴿اَوْ كَصَیِّبٍ مِّنَ السَّمَآءِ﴾
অথবা আকাশ হতে ভারী বর্ষণের ন্যায়। (২ নং সূরা বাকারাহ, আয়াত নং ১৯) মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ ﴿وَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْۤا اَعْمَالُهُمْ كَسَرَابٍۭ بِقِیْعَةٍ﴾
‘যারা কুফরী করে, তাদের ‘আমলসমূহ মরুভূমির মরীচিকা সাদৃশ্য। (২৪ নং সূরা নূর, আয়াত নং ৩৯) এর পরের আয়াতেও অনুরূপ বলা হয়েছেঃ ﴿اَوْ كَظُلُمٰتٍ فِیْ بَحْرٍ لُّجِّیٍّ﴾
অথবা (কাফেরদের কাজ) প্রমত্ত সমুদ্রের বুকে গভীর অন্ধকারের ন্যায়। (২৪ নং সূরা নূর, আয়াত নং ৪০)
তাফসীর ইবনে মিরদুওয়াই এর মধ্যে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
"لا تكثروا الكلام بغير ذكر الله، فإن كثرة الكلام بغير ذكر الله قسوة القلب، وإن أبعد الناس من الله القلب القاسي".
মহান আল্লাহ্র যিকির ছাড়া বেশি কথা বলো না। এরকম বেশি কথা অন্তরকে শক্ত করে দেয়। আর শক্ত অন্তর বিশিষ্ট ব্যক্তি মহান আল্লাহ্র নিকট হতে বহু দূরে থাকে। (হাদীসটি য‘ঈফ। জামি‘ তিরমিযী- ৪/২৪১১, ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেন, হাদীসটি হাসান, গরীব। সুনান বায়হাকী- ৪/৪৯৫১, মুওয়াত্তা ইমাম মালিক (রহঃ), ২/৮/৯৮৬। সিলসিলাহ আহাদীসিস যাঈফ) ইমাম তিরমিযী (রহঃ) এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং এর একটি পন্থাকে গরীব বলেছেন।
মুসনাদ- ই- বাযযারের মধ্যে আনাস (রাঃ) হতে মারফূ‘ রূপে বর্ণিত আছে যেঃ
"أربع من الشقاء: جمود العين، وقسي القلب، وطول الأمل، والحرص على الدنيا"
চারটি জিনিস দুর্ভাগ্যের অন্তর্ভুক্ত তা হলো (১) মহান আল্লাহ্র ভয়ে চক্ষু দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত না হওয়া। (২) অন্তর শক্ত হয়ে যাওয়া। (৩) আশা বৃদ্ধি পাওয়া। (৪) লোভী হয়ে যাওয়া।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings