Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 73
Saheeh International
So, We said, "Strike the slain man with part of it." Thus does Allah bring the dead to life, and He shows you His signs that you might reason.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
নিহত ব্যক্তিকে পুনরায় জীবন দান
সহীহুল বুখারীতে اَلدَّارَءَتُمْ-এর অর্থ হয়েছে ‘তোমরা মতভেদ করলে।’ (ফাতহুল বারী ৬/৫০৬) মুজাহিদ (রহঃ) ‘আতা আল খুরাসানী (রহঃ) এবং যাহ্হাক (রহঃ) প্রভৃতি মনীষীগণ হতেও এটাই বর্ণিত আছে। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/২২৯) মুসীব ইবনু রাফি‘ (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সাতটি ঘরের মধ্যে লুকিয়েও কোন কাজ করে, মহান আল্লাহ তার সাওয়াব প্রকাশ করে দিবেন। এ রকমই যদি কোন লোক সাতটি ঘরের মধ্যে ঢুকেও কোন খারাপ কাজ করে, মহান আল্লাহ ওটাও প্রকাশ করে দিবেন। অতঃপর ﴿وَاللّٰهُ مُخْرِجٌ مَّا كُنْتُمْ تَكْتُمُوْنَ﴾ এই আয়াতটি পাঠ করেন। এখানে ঐ চাচা ভাতিজারাই ঘটনা বর্ণিত হচ্ছে, যে কারণে গরু যবেহ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। বলা হচ্ছে যে, ওর কোন অংশ নিয়ে মৃত ব্যক্তির দেহে আঘাত করো, যদি বলা হয় যে ঐ অংশটি কোন অংশ ছিলো তাহলে বলা হবে যে, এর বর্ণনা না কুর’আন মাজীদে আছে, আর না কোন সহীহ হাদীসে আছে। এটা জানায় না কোন উপকার আছে, আর না জানায় কোন ক্ষতি আছে। যে জিনিসের কোন বর্ণনা নেই তার পিছনে না লেগে থাকার মধ্যেই শান্তি ও নিরাপত্তা রয়েছে। অতএব আমাদের মঙ্গল তাতেই রয়েছে যে, মহান আল্লাহ যা গুপ্ত রেখেছেন আমরাও যেন তা গুপ্ত রাখি।
ইবনু আবী হাতিম (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে একটি সূত্র উল্লেখ করে বলেন যে, বানী ইসরাইলের লোকেরা চল্লিশ বছর যাবৎ অনুসন্ধানের পর একজন লোকের গরুও পালের মধ্যে তারা দেখতে পায়। যা তাদেরকে অবাক করে দেয়। তিনি বলেন, তারা একের পর এক তার বিনিময় নির্ধারণ করতে থাকলো কিন্তু গাভীর মালিক দিতে সম্মত না হওয়ায় এক পর্যায়ে তারা গাভীর চামড়াকে থলে বানিয়ে সেই থলে ভর্তি স্বর্ণমুদ্রা দেয়ার শর্তে বিক্রি করে। অতঃপর তারা তা যবেহ করে কোন একটি হাড় দ্বারা নিহত ব্যক্তিকে আঘাত করতেই তার শীরাগুলো দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হতে লাগলো। তারপর জীবিত হলে তারা তাকে জিজ্ঞেস করলো কে তোমাকে হত্যা করেছে? উত্তরে সে বললো আমাকে অমুক হত্যা করেছে। (অত্র হাদীসের সনদে আব্দুল ওয়াহিদ ইবনু যিয়াদ নামক একজন য‘ঈফ রাবী আছে। তাই হাদীসটি য‘ঈফ)
হাড়টির পরিচয়
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে হাড় দ্বারা তারা নিহত ব্যক্তিকে আঘাত করেছিলো তা ছিলো গাযরূবের হাড়। আর ইবনু সীরীন ‘উবায়দাহ (রাঃ)-এর সূত্রে বলেন যে, তা হাড় ছিলো না বরং কিছু গোশত ছিলো। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন তারা গোশতের টুকরা দ্বারা লাশের রানে আঘাত করার ফলে তা জীবিত হয়ে বলেছিলো যে আমাকে অমুক ব্যক্তি হত্যা করেছে। ইকরামাহ (রহঃ) বলেন তারা গাভীর রান দ্বারা আঘাত করলে তা উঠে দাঁড়িয়ে যায় এবং বলে যে আমাকে অমুক হত্যা করেছে। কেউ বলেছেন তার জিহবা দ্বারা আঘাত করা হয়েছিলো। কেউ বলেছেন তার লেজের হাড় দ্বারা আঘাত করেছিলো।
মৃতকে জীবিত করার আরো কিছু প্রমাণসমূহ যা কিয়ামতের পর পুনরুত্থানের প্রতিই প্রমাণ বহণ করে
হাড়টি যে অংশেরই হোক না কেন তা দ্বারা স্পর্শ করা মাত্রই সে জীবিত হয়ে ওঠে এবং মহান আল্লাহ সেই ঝগড়ার ফায়সালা এর দ্বারাই সমাধান করেন। আর কিয়ামতের দিন মৃতরা যে জীবিত হয়ে উঠবে তার দালীলও এতেই বর্ণনা করেন। এ সূরার মধ্যে পাঁচ জায়গায় মৃত্যুর পর জীবিত হওয়ার বর্ণনা রয়েছে। প্রথম হচ্ছে নিন্মের আয়াতটি ﴿ ثُمَّ بَعَثْنٰكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَوْتِكُمْ﴾ (২ নং সূরাহ্ বাকারাহ, আয়াত নং ৫৬) দ্বিতীয় আলোচ্য ঘটনায়, তৃতীয় ঐ লোকদের যারা হাজার সংখ্যায় বের হয়েছিলো এবং একটি বিধ্বস্ত পল্লী তারা অতিক্রম করেছিলো। চতুর্থ ইব্রাহীম (আঃ)-এর চারটি পাখিকে মেরে ফেলার পর জীবিত হওয়ার মধ্যে এবং পঞ্চম হচ্ছে যমীনের মরে যাওয়ার পর বৃষ্টির সাহায্যে পুনর্জীবন দান করাকে মরণ ও জীবনের সাথে তুলনা করার মধ্যে।
আবূ দাঊদ তায়ালিসী (রহঃ)-এর একটি হাদীসে আছে যে, আবূ রাজীন আকিলী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেনঃ ‘হে মহান আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কিভাবে মহান আল্লাহ মৃতকে জীবিত করবেন?’ তিনি বলেনঃ
أما مررت بواد ممحل، ثم مررت به خضرا؟
‘তুমি কোন দিন বৃক্ষলতাহীন প্রান্তরের মধ্য দিয়ে চলেছো কি?’ তিনি বলেনঃ ‘হ্যাঁ।’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আবার কখনো ওকে সবুজ ও সতেজ দেখেছো কি?’ তিনি বলেনঃ ‘হ্যাঁ’। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ كذلك النشور‘এভাবেই মৃত্যুর পর জীবন লাভ ঘটবে। আর এ কথার পক্ষে প্রমাণ বহণ করে মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীঃ
﴿وَاٰیَةٌ لَّهُمُ الْاَرْضُ الْمَیْتَةُ١ۖۚ اَحْیَیْنٰهَا وَ اَخْرَجْنَا مِنْهَا حَبًّا فَمِنْهُ یَاْكُلُوْنَ۳۳ وَ جَعَلْنَا فِیْهَا جَنّٰتٍ مِّنْ نَّخِیْلٍ وَّ اَعْنَابٍ وَّ فَجَّرْنَا فِیْهَا مِنَ الْعُیُوْنِۙ۳۴ لِیَاْكُلُوْا مِنْ ثَمَرِهٖ١ۙ وَ مَا عَمِلَتْهُ اَیْدِیْهِمْ١ؕ اَفَلَا یَشْكُرُوْنَ﴾
তাদের জন্য একটি নিদর্শন মৃত ধরিত্রী, যাকে আমি সঞ্জীবিত করি এবং যা হতে উৎপন্ন করি শস্য, যা তারা আহার করে। তাতে আমি সৃষ্টি করি খেজুর ও আঙ্গুরের উদ্যান এবং উৎসারিত করি প্রস্রবন, যাতে তারা আহার করতে পারে এর ফলমূল হতে, অথচ তাদের হস্ত এটা সৃষ্টি করেনি। তবুও কি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না? (৩৬ নং সূরাহ্ ইয়াসীন, আয়াত নং ৩৩-৩৫)
একটি মাস’আলাঃ কোন আহত ব্যক্তি যদি বলে যে, অমুক ব্যক্তি আমাকে উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে হত্যা করেছে তবে তার একথাকে সত্য মনে করা হবে এ জিজ্ঞাস্য বিষয়ের ওপর এ আয়াত দ্বারা দালীল গ্রহণ করা হয়েছে এবং ইমাম মালিক (রহঃ)-এর মাযহাবকে এর দ্বারা মযবূত করা হয়েছে। কেননা নিহত লোকটি জীবিত হওয়ার পর তাকে জিজ্ঞেস করায় সে যাকে তার হত্যা কারী বলে তাকে হত্যা করা হয় এবং নিহত ব্যক্তির কথাকেই বিশ্বাস করা হয় এটা ¯পষ্ট কথা যে মানুষ মুমূর্ষু অবস্থায় সাধারণত সত্য বলে থাকে এবং সে সময় তার ওপর কোন অপরাধ দেয়া হয় না।
আর এ কথাকে আনাস (রাঃ) এর হাদীসও প্রধান্য দেয় তথা সুদৃঢ় করে। যেমন তিনি বলেন যে এক ইয়াহূদী একজন দাসীর মাথা পাথরের ওপরে রেখে অন্য পাথর দ্বারা ভীষণ ভাবে প্রহার করে এবং তার অলংকার খুলে নেয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছালে তিনি বলেনঃ ঐ দাসীকে জিজ্ঞেস করো যে তাকে কে মেরেছে? ফলে লোকেরা তাকে জিজ্ঞেস করে যে তোমাকে অমুক মেরেছে? অমুক মেরেছে? সে তার মাথার ইশারায় অস্বীকার করতে থাকে। অবশেষে প্রহারকারী ইয়াহূদীর নাম নেয়া হলে সে মাথার ইশারায় হ্যাঁ বোধক সম্মতি জানায়। সুতরাং ইয়াহূদীকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাকে বারবার জিজ্ঞেস করায় সে স্বীকার করে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ দেন যে, তার মাথাকেও এভাবেই দু’টি পাথরের মধ্য স্থলে রেখে দলিত করা হোক। ইমাম মালিক (রহঃ)-এর মতে এটা উত্তেজনার কারণে হলে নিহত ব্যক্তির ওয়ারিশগণকে শপথ করাতে হবে। কিন্তু জামহূরগণ এর বিরোধী এবং একজন মাত্র নিহত ব্যক্তির কথাকে এ ক্ষেত্রে দালীলরূপে গ্রহণ করে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings