Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 33
Saheeh International
He said, "O Adam, inform them of their names." And when he had informed them of their names, He said, "Did I not tell you that I know the unseen [aspects] of the heavens and the earth? And I know what you reveal and what you have concealed."
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
ফিরিশতাগণের ওপরে আদম (আঃ)-এর সম্মান
এখানে এ কথারই বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, মহান আল্লাহ একটা বিশেষ জ্ঞানে আদম (আঃ)-কে ফিরিশতাগণের ওপর মর্যাদা দান করেছেন।
এটা ফিরিশতা কর্তৃক আদম (আঃ)-কে সাজদাহ করার পরের ঘটনা। কিন্তু তাঁকে সৃষ্টি করার মধ্যে মহান আল্লাহর যে হিকমাত নিহিত ছিলো এবং যা ফিরিশতাগণ জানতেন না, তার সাথে সম্বন্ধযুক্ত হওয়ার কারণে এ ঘটনাকেই পূর্বে বর্ণনা করেছেন এবং ফিরিশতাগণের সাজদাহ করার ঘটনা, যা পূর্বে ঘটেছিলো তা পরে বর্ণনা করেছেন, যেন খালীফা সৃষ্টি করার যৌক্তিকতা ও নিপুণতা প্রকাশ পায় এবং জানা যায় যে, আদম (আঃ)-এর (আঃ) মর্যাদা ও সম্মান লাভ হয়েছে এমন এক বিদ্যার কারণে যে বিদ্যা ফিরিশতাগণের নেই। মহান আল্লাহ বলেন যে, তিনি আদম (আঃ)-কে সমুদয় বস্তুর নাম শিখিয়ে দেন, অর্থাৎ তাঁর সন্তানদের নাম, সমস্ত জীব জন্তুর নাম, যমীন, আসমান, পাহাড়-পর্বত, নৌ-স্থল, ঘোড়া, গাধা, বরতন, পশু-পাখি, ফিরিশতা ও তারকারাজি ইত্যাদি সমুদয় ছোট বড় জিনিসের নাম। (তাফসীর তাবারী ১/৪৫৮)
মহান আল্লাহ আদম (আঃ)-কে সমস্ত জিনিসের নামই শিখিয়েছিলেন। প্রজাপতিগত নাম, গুণগত নাম এবং ক্রিয়াগত নামও শিখিয়েছিলেন। ইবনু আবী হাতিম (রহঃ) এবং ইবনু জারীর (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, ‘আসীম ইবনু কুরাইব (রহঃ) সা‘দ ইবনু মা‘বাদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলোঃ মহান আল্লাহ কি আদম (আঃ)-কে বিভিন্ন পাত্রের কথা শিখিয়েছিলেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ হ্যাঁ, এমনকি কিভাবে বায়ু ত্যাগ করতে হবে। (তাফসীর তাবারী ১/৪৭৫)
একটি সুদীর্ঘ হাদীস
এ আয়াতের তাফসীরে ইমাম বুখারী (রহঃ) এ হাদীসটি এনেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেনঃ
يجتمع المؤمنون يوم القيامة فيقولون لو استشفعنا إلى ربنا فيأتون آدم فيقولون أنت أبو الناس خلقك الله بيده وأسجد لك ملائكته وعلمك أسماء كل شيء فاشفع لنا عند ربك حتى يريحنا من مكاننا هذا . فيقول لست هناكم ويذكر ذنبه فيستحي ائتونا نوحا فإنه أول رسول بعثه الله إلى أهل الأرض . فيأتون فيقول لست هناكم ويذكر سؤاله ربه ما ليس ليه به علم فيستحي فيقول ائتوا خليل الرحمن . فيأتونه فيقول لست هناكم ائتوا موسى عبدا كلمه الله وأعطاه التوراة . فيأتونه فيقول لست هناكم ويذكر قتل النفس بغير نفس فيستحي من ربه فيقول ائتوا عيسى عبد الله ورسوله وكلمة الله وروحه . فيقول لست هناكم ائتوا محمد صلى الله عليه و سلم عبدا غفر الله له ما تقدم من ذنبه وما تأخر فيأتونني فأنطلق حتى أستأذن على ربي فيؤذن لي فإذا رأيت ربي وقت ساجدا فيدعني ما شاء الله ثم يقال ارفع رأسك وسل تعطه وقل يسمع واشفع تشفع . فأرفع رأسي فأحمده بتحميد يعلمنيه ثم أشفع فيحد لي حدا فأدخلهم الجنة ثم أعود إليه فإذا رأيت ربي مثله ثم أشفع فيحد لي حدا فأدخلهم الجنة ثم أعود الرابعة فأقول ما بقي في النار إلا من حبسه القرآن ووجب عليه الخلود
‘কিয়ামতের দিন ঈমানদারগণ একত্রিত হয়ে বলবে, ‘আমরা যদি কোন একজনকে সুপারিশকারীরূপে মহান আল্লাহর নিকট পাঠাতাম তাহলে কতোই না ভালো হতো।’ সুতরাং তারা সবাই মিলে আদম (আঃ)-এর (আঃ) নিকট আসবে এবং তাঁকে বলবে, ‘আপনি আমাদের সবারই পিতা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আপনাকে স্বহস্তে সৃষ্টি করেছেন, স্বীয় ফিরিশতার দ্বারা আপনাকে সাজদাহ করিয়েছেন, আপনাকে সব জিনিসের নাম শিখিয়েছেন। সুতরাং আপনি আমাদের জন্য মহান আল্লাহর নিকট সুপারিশ করুন যেন আমরা আমাদের এই স্থানে শান্তি লাভ করতে পারি।’ এ কথা শুনে তিনি উত্তরে বলবেনঃ ‘আমার এ যোগ্যতা নেই।’ তাঁর স্বীয় পাপের কথা স্মরণ হয়ে যাবে, সুতরাং তিনি লজ্জিত হবেন। তিনি বলবেনঃ ‘তোমরা নূহের (আঃ) কাছে যাও। তিনি প্রথম রাসূল যাকে মহান আল্লাহ পৃথিবীবাসীর নিকট পাঠিয়েছিলেন।’ তারা এ উত্তর শুনে নূহ (আঃ)-এর নিকট আসবে। তিনিও এ উত্তরই দিবেন এবং মহান আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বীয় পুত্রের জন্য প্রার্থনার কথা স্মরণ করে তিনি লজ্জিত হবেন এবং বলবেনঃ ‘তোমরা মহান আল্লাহর বন্ধু ইব্রাহীম (আঃ)-এর নিকট যাও।’ তারা সবাই তাঁর কাছে আসবে, কিন্তু এখানেও ঐ উত্তরই পাবে। তিনি বলবেনঃ ‘তোমরা মূসা (আঃ)-এর কাছে যাও, তাঁর সাথে আল্লাহ তা‘আলা কথা বলেছিলেন এবং তাঁকে তাওরাত দান করেছিলেন।’ এ কথা শুনে সবাই মূসা (আঃ)-এর নিকট আসবে এবং তাঁর নিকট এ প্রার্থনাই জানাবে। কিন্তু এখানেও একই উত্তর পাবে। প্রতিশোধ গ্রহণ ছাড়াই একটি লোককে মেরে ফেলার কথা তাঁর স্মরণ হবে এবং তিনি লজ্জাবোধ করবেন এবং বলবেনঃ ‘তোমরা ‘ঈসা (আঃ)-এর কাছে যাও। তিনি মহান আল্লাহর বান্দা, তাঁর রাসূল, তাঁর কালিমা এবং তাঁর রূহ্। এরা সবাই এখানে আসবে, কিন্তু এখানেও ঐ উত্তরই পাবে। তিনি বলবেনঃ ‘তোমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। তাঁর পূর্বের ও পরের সমস্ত পাপ মার্জনা করা হয়েছে।’ তারা সবাই আমার নিকট আসবে। আমি অগ্রসর হবো। আমার প্রভুকে দেখা মাত্রই আমি সাজদাহয় পড়ে যাবো। যে পর্যন্ত আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার পক্ষ থেকে মঞ্জুর না হবে ততোক্ষণ আমি সাজদাহয় পড়েই থাকবো। অতঃপর মহান আল্লাহ বলবেনঃ ‘মাথা উঠাও, যাঞ্চা করো দেয়া হবে; বলো, শোনা হবে এবং সুপারিশ করো, গ্রহণ করা হবে।’ তখম আমি আমার মাথা উত্তোলন করবো এবং মহান আল্লাহর প্রশংসা করবো যা তিনি আমাকে ঐ সময়েই শিখিয়ে দিবেন। অতঃপর আমি সুপারিশ করবো। আমার জন্য সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হবে। তাদেরকে আমি জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিয়ে পুনরায় তাঁর নিকট ফিরে আসবো। আবার আমার রাব্বকে দেখে এ রকমই সাজদাহয় পড়ে যাবো। পুনরায় সুপারিশ করবো। আমার জন্য সীমা নির্ধারণ হবে। তাদেরকেও জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিয়ে তৃতীয়বার আসবো। আবার চতুর্থবার আসবো। শেষ পর্যন্ত জাহান্নামে শুধুমাত্র এরাই থাকবে যাদেরকে কুর’আন মাজীদ বন্দী রেখেছে এবং যাদের জন্য জাহান্নামে চির অবস্থান ওয়াজিব হয়ে গেছে। অর্থাৎ মুশরিক ও কাফির।’ সহীহ মুসলিম, সুনান নাসাঈ, সুনান ইবনু মাজাহ্ ইত্যাদি গ্রন্থে শাফা‘আতের এই হাদীসটি বিদ্যমান রয়েছে। (হাদীস সহীহ। সাহীহুল বুখারী- ৪২০৬, ৬১৯৭, ৬৯৭৫, ৭০০২, ৭০৭৪, সহীহ মুসলিম-৪৯৫, ১/৮১, সুনান নাসাঈ ৬/২৮৪, ৩৬৪; ইবনু মাজাহ ২/১৪৪২)
এখানে এই হাদীসটি আনার উদ্দেশ্য এই যে, এই হাদীসটিতে এ কথাটিও আছেঃ লোকেরা আদম (আঃ)-কে বলবে ‘মহান আল্লাহ আপনাকে সব জিনিসের নাম শিখিয়েছেন।’ অতঃপর ঐ জিনিসগুলো ফিরিশতার সামনে পেশ করেন এবং তাদেরকে বলেন, ‘তোমরা যদি তোমাদের এ কথায় সত্যবাদী হও যে, সমস্ত মাখলূক অপেক্ষা তোমরাই বেশি জ্ঞানী বা এ কথাই সঠিক যে, যমীনে মহান আল্লাহ তোমাদের চেয়ে মর্যাদা সম্পন্ন কাউকে খালীফা বানাবেন না, তাহলে এসব জিনিষের নাম বলো। এটাও বর্ণিত আছে যে যে, যদি তোমরা এ কথায় সত্যবাদী হও যে, ‘বানী আদম বিবাদ বিসম্বাদ ও রক্তারক্তি করবে’ তাহলে এ গুলোর নাম বলো। কিন্তু প্রথমটিই বেশি সঠিক মত। যেন এতে এ ধমক রয়েছে যে, আচ্ছা! তোমরা যে বলছো ‘যমীনে খালীফা হওয়ার যোগ্য আমরাই, মানুষ নয়, ‘যদি তোমরা এতে সত্যবাদী হও তাহলে যেসব জিনিস তোমাদের সামনে বিদ্যমান রয়েছে সেগুলোর নাম বলতো? আর যদি তোমরা তা বলতে না পারো তাহলে তোমাদের এটা বুঝে নেয়া উচিত যে, যা তোমাদের সামনে বিদ্যমান রয়েছে সেগুলোর নামইতো তোমরা বলতে পারলে না, তাহলে ভবিষ্যতের আগত জিনিসের জ্ঞান তোমাদের কিরূপে হতে পারে?
ফিরিশতাগণ এ কথা শোনা মাত্রই মহান আল্লাহর পবিত্রতা ও শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে এবং তাদের জ্ঞানের স্বল্পতা বর্ণনা করতে আরম্ভ করে বললেন যে, হে মহান আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে যতোটুকু শিখিয়েছেন, আমরা ততোটুকুই জানি। সমস্ত জিনিসকে পরিবেষ্টনকারী জ্ঞান তো একমাত্র আপনারই আছে। আপনিই সমুদয় জিনিসের সংবাদ রাখেন। আপনার সমুদয় আদেশ-নিষেধ হিকমাতে পরিপূর্ণ। যাকে কিছু শিখিয়ে দেন তাও হিকমাত এবং যাকে শিক্ষা হতে বঞ্চিত রাখেন তাও হিকমাত। আপনি মহা প্রজ্ঞাময় ও ন্যায় বিচারক।
‘সুবহানাল্লাহ’ এর অর্থ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, ‘সুবহানাল্লাহ’ এর অর্থ হচ্ছে মহান আল্লাহর পবিত্রতা, অর্থাৎ তিনি সমস্ত অশ্লীলতা থেকে পবিত্র। ‘উমার (রাঃ) একবার ‘আলী (রাঃ) এবং তাঁর পাশে উপবিষ্ট অন্য কয়েকজন সাহাবী (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেনঃ
‘আমরা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ তো জানি, কিন্তু ‘সুবহানাল্লাহ’ কি কালিমা? ‘আলী (রাঃ) উত্তরে বললেনঃ ‘এ কালিমাটি মহান আল্লাহ নিজের জন্য পছন্দ করেন এবং এতে তিনি খুব খুশি হোন, আর এটা বলা তাঁর নিকট খুবই প্রিয়।’ মাইমুন ইবনু মাহরান (রহঃ)-কে একজন লোক سبحان الله সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে উত্তরে তিনি বলেন যে, এতে মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব এবং সমস্ত অশ্লীলতা হতে পবিত্র হওয়ার বর্ণনা রয়েছে।
আদম (আঃ)-এর জ্ঞানের পরিচয় প্রদান
মহান আল্লাহ ইরশাদ করেনঃ
قَالَ یٰۤاٰدَمُ اَنْۢبِئْهُمْ بِاَسْمَآىِٕهِمْ١ۚ فَلَمَّاۤ اَنْۢبَاَهُمْ بِاَسْمَآىِٕهِمْ١ۙ قَالَ اَلَمْ اَقُلْ لَّكُمْ اِنِّیْۤ اَعْلَمُ غَیْبَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ١ۙ وَاَعْلَمُ مَا تُبْدُوْنَ وَ مَا كُنْتُمْ تَكْتُمُوْنَ
হে আদম! তুমি তাদেরকে ঐ সকলের নামসমূহ বর্ণনা করো; অতঃপর যখন সে তাদেরকে ঐগুলোর নামসমূহ বলেছিলো তখন তিনি বলেছিলেনঃ আমি কি তোমাদের বলিনি যে, নিশ্চয়ই আমি আসমান ও যমীনের অদৃশ্য বিষয় অবগত আছি এবং তোমরা যা প্রকাশ করো ও যা গোপন করো আমি তাও পরিজ্ঞাত আছি?
যায়দ ইবনু আসলাম (রহঃ) বলেন, আদম (আঃ) এভাবে নাম বলেছেনঃ আপনার নাম জিবরাঈল (আঃ), আপনার নাম মীকাঈল (আঃ), আপনার নাম ইসরাফীল (আঃ) এমন কি তাঁকে চিল, কাক ইত্যাদি সব কিছুর নাম জিজ্ঞেস করা হলে তিনি সবই বলে দেন। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/১১৮, ১৯৯) ফিরিশতা যখন আদম (আঃ)-এর (আঃ) মর্যাদার কথা বুঝতে পারলেন তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাদেরকে বললেনঃ ‘দেখো, আমি তোমাদেরকে পূর্বেই বলেছিলাম যে, আমি প্রত্যেক প্রকাশ্য ও গোপনীয় বিষয় জানি।’ যেমন অন্য জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ
﴿وَ اِنْ تَجْهَرْ بِالْقَوْلِ فَاِنَّهٗ یَعْلَمُ السِّرَّ وَ اَخْفٰى﴾
তুমি যদি উচ্চ কণ্ঠে বলো, তিনি তো যা গুপ্ত ও অব্যক্ত সবই জানেন। (২০ নং সূরাহ্ তা-হা, আয়াত নং ৭)
আরেক জায়গায় মহান আল্লাহ হুদহুদ পাখির মাধ্যমে সংবাদ দিয়ে সুলায়মান (আঃ)-কে বলেছিলেনঃ
﴿ اَلَّا یَسْجُدُوْا لِلّٰهِ الَّذِیْ یُخْرِجُ الْخَبْءَ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ یَعْلَمُ مَا تُخْفُوْنَ وَ مَا تُعْلِنُوْنَ۲۵ اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِیْمِ۩﴾
তারা নিবৃত্ত রয়েছে মহান আল্লাহকে সাজদাহ করা হতে, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর লুকায়িত বস্তুকে প্রকাশ করেন এবং যিনি জানেন যা তোমরা গোপন করো এবং যা তোমরা প্রকাশ করো। মহান আল্লাহ, তিনি ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই। তিনি মহা‘আরশের অধিপতি। (২৭ নং সূরাহ্ নামল, আয়াত নং ২৫-২৬)
আরো বলা হয়েছেঃ ‘তোমরা যা প্রকাশ করো এবং যা গোপন রাখো আমি তা জানি।’ ভাবার্থ এই যে, ইবলীসের অন্তরে যে গর্ব ও অহঙ্কার লুকায়িত ছিলো মহান আল্লাহ তা জানতেন। আর ফিরিশতা যা বলেছিলেন তাতো ছিলো প্রকাশ্য কথা। তাহলে মহান আল্লাহ যে বললেনঃ ‘তোমরা যা প্রকাশ করো এবং যা গোপন রাখো, আমি সবই জানি’ এর অর্থ দাঁড়ালো এই যে, ফিরিশতা যা প্রকাশ করেছিলেন তা মহান আল্লাহ জানেন এবং ইবলীস তার অন্তরে যা গোপন রেখেছিলো সেটাও তিনি জানতেন। (তাফসীর তাবারী ১/৪৯৮) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ), ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) এবং আরো কয়েকজন সাহাবী (রাঃ) ও সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ), মুজাহিদ (রহঃ), সুদ্দী (রহঃ), যাহ্হাক (রহঃ) এবং সাওরীর (রহঃ)-ও এটাই অভিমত। ইবনু জারীর (রহঃ)-ও এটাকে পছন্দ করেছেন। আবুল ‘আলিয়া (রহঃ), রাবী‘ ইবনু আনাস (রহঃ), হাসান বাসরী (রহঃ) এবং কাতাদাহ (রহঃ)-এর কথা এই যে, ফিরিশতার গোপনীয় কথা ছিলোঃ যে মাখলূকই মহান আল্লাহ সৃষ্টি করুন না কেন, আমরাই তাদের চেয়ে বেশি জ্ঞানী ও মর্যাদাবান হবো।’ কিন্তু পরে এটা প্রমাণিত হয়ে গেলো এবং তারাও জানতে পারলেন যে, জ্ঞান ও মর্যাদা দু’টিতেই আদম (আঃ) তাদের ওপর প্রাধান্য লাভ করেছেন।
‘আব্দুর রহমান ইবনু যায়দ ইবনু আসলাম বলেন যে, মহান আল্লাহ ফিরিশতাগণকে বললেন, তোমরা যেমন এসব জিনিসের নাম জানো না, তেমনি তোমরা এটাও জানতে পারো না যে, তাদের মধ্যে ভালো-মন্দ উভয়ই হবে। তাদের মাঝে কতকগুলো অনুগত হবে এবং কতকগুলো হবে অবাধ্য। আর পূর্বেই আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমাকে জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়টিই পুরণ করতে হবে। কিন্তু তোমাদেরকে তার সংবাদ দেইনি। অতএব ফিরিশতাগণ আদম (আঃ)-এর জ্ঞান উপলব্ধি করে তাঁর প্রাধান্য স্বীকার করে নেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings