Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 236
Saheeh International
There is no blame upon you if you divorce women you have not touched nor specified for them an obligation. But give them [a gift of] compensation - the wealthy according to his capability and the poor according to his capability - a provision according to what is acceptable, a duty upon the doers of good.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
সহবাস হওয়ার আগেই তালাক দেয়া প্রসঙ্গ
বিবাহ বন্ধনের পর সহবাসের পূর্বেও তালাক দেয়ার বৈধতার কথা বলা হচ্ছে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) , তাউস (রহঃ) , ইবরাহীম নাখ‘ঈ (রহঃ) এবং হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন যে, এখানে مَسٌّ শব্দের অর্থ সহবাস। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম-২/৮৩১) সহবাসের পূর্বে তালাক দেয়া, এমন কি মোহর নির্ধারিত না থাকলেও তালাক দেয়া বৈধ।
তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে অর্থ প্রদান
তবে এতে স্ত্রীদের খুবই মনঃকষ্ট হবে বলে স্বামীদেরকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, তারা যেন তাদের অবস্থা অনুপাতে তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীদেরকে কিছু অর্থ সাহায্য করে। কি পরিমাণ অর্থ দিয়ে সাহায্য করবে এ ব্যাপারে ‘আলিমগণ মতবিরোধ করেছেন।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এর সর্বোচ্চ অংশ হচ্ছে গোলাম ও নীচে হচ্ছে চাঁদী এবং সর্বনিম্ন হচ্ছে কাপড়। অর্থাৎ ধনী হলে গোলাম ইত্যাদি তাকে প্রদান করবে। আর যদি গরীব হয় তবে কমপক্ষে তিন খানা কাপড় দিবে। শা‘বী (রহঃ) বলেন যে, তার জন্য মধ্যম শ্রেণীর উপকারী বস্তু হবে জামা, দোপাট্টা, লেপ এবং চাদর। শুরাইহ্ (রহঃ) বলেন যে, পাঁচশ’ দিরহাম প্রদান করবে। ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন যে, গোলাম দিবে বা খাদ্য অথবা কাপড় দিবে। হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ) তাঁর তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে দশ হাজার দিয়ে ছিলেন। কিন্তু তিনি বলেছিলেন যে, এই প্রেমা¯পদের বিচ্ছেদের তুলনায় এটা অতি নগণ্য।
ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) -এর উক্তি এই যে, যদি এই উপকারী বস্তুর পরিমাণ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয় তবে তার বংশের নারীদের যে মোহর রয়েছে তার অধেক প্রদান করবে। ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেনঃ কোন নির্দিষ্ট জিনিসের ওপর স্বামীকে বাধ্য করা যাবে না। বরং কমপক্ষে যে জিনিসকে মাত‘আ অর্থাৎ উপকারের বস্তু বা আসবাবপত্র বলা হয় সেটাই যথেষ্ট হবে। আমার মতে মাত‘আর সর্বনিম্ন পরিমাণ তাই হবে যা পরিধান করে সালাত আদায় করলে জায়িয হয়ে থাকে। ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) -এর প্রথম উক্তি ছিলো এইঃ ‘এর সঠিক পরিমাণ আমার জানা নেই। কিন্তু আমার নিকট পছন্দনীয় এই যে, কমপক্ষে ত্রিশ দিরহাম দিতে হবে।’ এটা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও বর্ণিত আছে।
প্রত্যেক তালাকপ্রাপ্ত নারীকেই কিছু না কিছু আসবাবপত্র দেয়া উচিত
শুধুমাত্র সহবাস করা হয়নি এরূপ নারীদেরকেই মাত‘আ দিতে হবে না-কি প্রত্যেক তালাকপ্রাপ্তা নারীকেই কিছু না কিছু আসবাবপত্র দেয়া উচিত, এ সম্বন্ধে বহু উক্তি রয়েছে।
প্রথম উক্তিঃ প্রত্যেক তালাকপ্রাপ্তা নারীকেই কিছু না কিছু আসবাবপত্র দেয়া উচিত। কেননা কুর’আন মাজীদের মধ্যে রয়েছেঃ ﴿وَلِلْمُطَلَّقٰتِ مَتَاعٌۢ بِالْمَعْرُوْفِ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِیْنَ﴾
‘তালাকপ্রাপ্তা নারীদের সঙ্গতভাবে ভরণ-পোষণ করা মুত্তাক্বীদের কর্তব্য।’ (২নংসূরাহআল-বাকারাহ, আয়াত-২৪১) এই আয়াতটি সাধারণ। সুতরাং প্রত্যেকের জন্যই এটা সাব্যস্ত হচ্ছে। অনুরূপভাবে নিম্নের আয়াতটিও তাঁদের দালীলঃ
﴿یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ قُلْ لِّاَزْوَاجِكَ اِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَیٰوةَ الدُّنْیَا وَزِیْنَتَهَا فَتَعَالَیْنَ اُمَتِّعْكُنَّ وَاُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِیْلًا﴾
‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীদের বলে দাও-তোমরা যদি পার্থিব জীবন আর তার শোভাসৌন্দর্য কামনা করো, তাহলে এসো, তোমাদের ভোগসামগ্রী দিয়ে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় দেই।’ (৩৩ নং সূরাহ আল আহযাব, আয়াত-২৮) সুতরাং এই সমুদয় সতী সাধ্বী নারী তাঁরাই ছিলেন যাদের মোহর নিধারিত ছিলো এবং যারা মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সহধর্মিণী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন। সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) , আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) এবং হাসান বাসরী (রহঃ) -এরও উক্তি এটাই। এটাই ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) -এরও একটি উক্তি। কেউ কেউ তো বলেন যে, এটাই তার নতুন ও সঠিক উক্তি।
দ্বিতীয় উক্তিঃ ঐ তালাকপ্রাপ্তা নারীকে আসবাবপত্র দেয়া কর্তব্য যার সাথে নির্জন ঘরে অবস্থান করা হয়েছে, যদিও তার জন্য মোহর ধার্য করা হয়ে থাকে। যেমন কুর’আনুল কারীমে রয়েছেঃ
﴿یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِذَا نَكَحْتُمُ الْمُؤْمِنٰتِ ثُمَّ طَلَّقْتُمُوْهُنَّ مِنْ قَبْلِ اَنْ تَمَسُّوْهُنَّ فَمَا لَكُمْ عَلَیْهِنَّ مِنْ عِدَّةٍ تَعْتَدُّوْنَهَا١ۚ فَمَتِّعُوْهُنَّ وَسَرِّحُوْهُنَّ سَرَاحًا جَمِیْلًا﴾
‘হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন কোন মু’মিন নারীকে বিবাহ করো, তারপর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বেই তাদের তালাক দাও, তখন তাদের জন্য তোমাদের কোন ইদ্দত পালন করতে হবে না, যা তোমরা অন্যক্ষেত্রের তালাকে গণনা করে থাকো। কাজেই কিছু সামগ্রী তাদের দাও। আর তাদের বিদায় দাও উত্তম বিদায়ে।’ (৩৩নং সূরাহ আল আহযাব, আয়াত-২৮) সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়াব (রহঃ) -এর উক্তি এই যে, সূরাহ আল আহযাবের এই আয়াতটি সূরাহ আল বাকারার এই আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে গেছে। অবশ্য ইমাম বুখারী (রহঃ) স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেন যে, সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) এবং আবূ উসাইদ (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমাইমাহ বিনতি শুরাহ্বিল (রাঃ) -কে বিয়ে করেন। যখন তাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে উপস্থিত করা হয় তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার প্রতি হাত বাড়িয়ে দেন, কিন্তু সে তা পছন্দ করেনি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আবূ উসাইদ (রাঃ) -কে আদেশ করেন যে, তিনি যেন ঐ মহিলাকে কিছু খাদ্য এবং দুই প্রস্থ কাপড় দিয়ে বিদায় করেন। (সহীহুল বুখারী-৯/২৬৯/৫২৫৬, ৫২৫৭, ফাতহুল বারী -৯/২৬৯)
তৃতীয় উক্তিঃ এই যে, শুধুমাত্র সেই অবস্থায় স্ত্রীকে মাত‘আ দিতে হবে যখন তাকে সহবাসের পূর্বে তালাক দেয়া হবে এবং মোহর নির্ধারিত না থাকবে। আর যদি সহবাস হয়ে যায়, তাহলে মোহর মিসাল অর্থাৎ তার বংশের স্ত্রী লোকদের জন্য যে মোহর ধার্য রয়েছে সেটাই দিতে হবে। আর এটা ঐ অবস্থায় প্রযোজ্য যখন মোহর ধার্য করা থাকবে না। আর যদি ধার্য হয়ে থাকে এবং সহবাসের পূর্বে তালাক দিয়ে দেয়, তবে অর্ধেক মোহর দিতে হবে। কিন্তু যদি সহবাস হয়ে গিয়ে থাকে তবে পুরো মোহরই দিতে হবে। আর এটাই মাত‘আর বিনিময় হয়ে যাবে। হ্যাঁ ঐ বিপদগ্রস্ত স্ত্রীর জন্য মাত‘আ রয়েছে যার সাথে সহবাসও হয়নি এবং মোহরও ধার্য করা হয়নি। ইবনু ‘উমার (রাঃ) এবং মুজাহিদ (রহঃ) -এর উক্তি এটাই।
তবে কোন কোন ‘আলিম প্রত্যেক তালাকপ্রাপ্ত নারীকেই কিছু না কিছু দেয়া মুস্তাহাব বলে থাকেন। কিন্তু যাদেরকে সহবাসের পূর্বে তালাক দেয়া হবে এবং মোহর ধার্য করা থাকবে না তাদেরকে তো অবশ্যই দিতে হবে। ইতোপূর্বে সূরাহ আহযাবের যে আয়াতটির বর্ণনা দেয়া হয়েছে তার ভাবার্থ এটাই। এজন্যই এখানে এই নিদিষ্ট অবস্থার কথা বলা হচ্ছে যে, ধনী তার অবস্থা অনুপাতে প্রদান করবে এবং গরীবও তার অবস্থা অনুপাতে প্রদান করবে।
তালাকপ্রাপ্তা নারীকে কিছু সম্পদ দেয়া মুস্তাহাব ওয়াজিব নয়
শা‘বী (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়, যে ব্যক্তি তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে এই মাত‘আ অর্থাৎ সংস্থানের ব্যবস্থা করে না দিবে তাকে মহান আল্লাহ্র নিকট দায়ী থাকতে হবে কি? তিনি উত্তরে বলেন, নিজের ক্ষমতা অনুসারে দিতে হবে। মহান আল্লাহ্র শপথ! এই ব্যাপারে কাউকেও দায়ী থাকতে হবে না। যদি এটা ওয়াজিব হতো তবে বিচারকগণ অবশ্যই এরূপ লোককে বন্দী করতেন। (সনদটি হাসান)
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings