Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 235
Saheeh International
There is no blame upon you for that to which you [indirectly] allude concerning a proposal to women or for what you conceal within yourselves. Allah knows that you will have them in mind. But do not promise them secretly except for saying a proper saying. And do not determine to undertake a marriage contract until the decreed period reaches its end. And know that Allah knows what is within yourselves, so beware of Him. And know that Allah is Forgiving and Forbearing.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
ইদ্দতের সময় পরোক্ষভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ‘তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই যদি তোমরা কথার ইশারায় নারীদের বিবাহের প্রস্তাব পাঠাও।’ ভাবার্থ এই যে, স্পষ্টভাবে না বলে কেউ যদি কোন স্ত্রীলোকের তার ইদ্দতের মধ্যে কোন উত্তম পন্থায় বিয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করে তাতে কোন পাপ নেই। যেমন তাকে বলেঃ ‘আমি বিয়ে করতে চাই, আমি এরূপ এরূপ মহিলাকে পছন্দ করি; আমি চাই যে, মহান আল্লাহ্ যেন আমার জোড়া মিলিয়ে দেন। আমি কোন সতী ও ধর্মভীরু লোককে বিয়ে করতে চাই। (ফাতহুল বারী ৯৮৪, তাফসীর তাবারী ৫/৯৫,৯৬) মুজাহিদ (রহঃ) , তাঊস (রহঃ) , ইকরামাহ (রহঃ) , সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) , ইবরাহীম নাখ‘ঈ (রহঃ) , শা‘বী (রহঃ) , হাসান বাসরী (রহঃ) , কাতাদাহ (রহঃ) , যুহরী (রহঃ) , ইয়াযীদ ইবনু কুসাইদ (রহঃ) , মুকাতিল ইবনু হাইয়্যান (রহঃ) এবং কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) এবং সালাফগণের অনেকে ও ইমামগণ বলেছেন যে, যার স্বামী মারা গেছে তাকে পরোক্ষভাবে বিয়ের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম-২/৮১৭, ৮১৮)
অনুরূপভাবে তালাক-ই বায়িন প্রাপ্ত নারীকেও তার ইদ্দতের মধ্যে এরূপ অস্পষ্ট শব্দগুলো বলা বৈধ। যেমন ফাতিমা বিনতি কায়িস (রাঃ) নাম্নী মহিলাকে যখন তার স্বামী আবূ ‘আমর ইবনু হাফস (রাঃ) তৃতীয় তালাক দেন, সেই সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছিলেনঃ ‘যখন তোমরা ইদ্দতকাল শেষ হবে তখন আমাকে সংবাদ দিবে এবং তুমি ইদ্দতকালে ইবনু উম্মু মাকতূমের ওখানে অতিবাহিত করবে।’ ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হলে ফাতিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে অবহিত করেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) -এর সাথে তাঁর বিয়ে দেন। (সহীহ মুসলিম-২/১১১৪/হা৩৬, সুনান ইবনু মাজাহ-১/৬০১/১৮৬৯, মুসনাদ আহমাদ -৬/৪১১, মুওয়াত্তা ইমাম মালিক-২/৬৭/৫৮০) তবে হ্যাঁ, যে স্ত্রীকে তালাকে রাজ‘ঈ দেয়া হয়েছে তার ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বে তাকে তার স্বামী ছাড়া অন্য কারো অস্পষ্টভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার অধিকার নেই। ‘তোমরা নিজেদের মনে গোপনে যা পোষণ করো।’ এর ভাবার্থ এই যে, কোন মহিলাকে বিবাহ করার যে আকাক্সক্ষা তোমাদের অন্তরে পোষণ করছো এতে তোমাদের কোন পাপ নেই। অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ﴿وَ رَبُّكَ یَعْلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُوْرُهُمْ وَ مَا یُعْلِنُوْنَ﴾
‘আর তোমার রাব্ব জানেন তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং তারা যা ব্যক্ত করে।’ (২৮ নং সূরাহ্ কাসাস, আয়াত নং ৬৯) অন্যত্র রয়েছেঃ ﴿ وَاَنَا اَعْلَمُ بِمَاۤ اَخْفَیْتُمْ وَمَاۤ اَعْلَنْتُمْ ﴾
‘তোমরা যা গোপন করো এবং তোমরা যা প্রকাশ করো তা আমি সম্যক অবগত।’ (৬০সূরাহ্মুমতাহানাহ, আয়াত নং১)
সুতরাং মহান আল্লাহ্ খুব ভালোভাবেই জানেন যে, তাঁর বান্দাগণ তাদের আকাক্সিক্ষতা নারীদেরকে অন্তরে স্মরণ করবে। তাই তিনি সঙ্কীর্ণতা সরিয়ে দিয়েছেন। ‘আলী ইবনু তালহা (রহঃ) বলেছেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, ‘কিন্তু তাদের সাথে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ হয়ো না’ এর অর্থ হলো তাকে বলো না ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ অথবা এ কথা বলা যে, ‘প্রতিজ্ঞা করো যে, ইদ্দত শেষ হওয়ার পর অন্য কাউকে বিয়ে করবে না’ ইত্যাদি ইত্যাদি। (তাফসীর তাবারী ৫/১০৭) সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) , শা‘বী (রহঃ) , ইকরামাহ (রহঃ) , আবুদ্ দুহা (রহঃ) , যাহ্হাক (রহঃ) , যুহরী (রহঃ) , (ইবনু আবী হাতিম ২/৮২১) মুজাহিদ (রহঃ) এবং সুফইয়ান সাওরী (রহঃ) বলেন যে, এর অর্থ হলো মহিলাদের কাছ থেকে এই প্রতিশ্র“তি নেয়া যে, সে অন্য কাউকে বিয়ে করবে না। (তাফসীর তাবারী ৫/১০৯)
অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেন, ‘বরং বৈধভাবে তাদের সাথে কথা বলো।’ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) , মুজাহিদ (রহঃ) , সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) , (ইবনু আবী হাতিম ২/৮২৪) সুদ্দী (রহঃ) , সুফইয়ান সাওরী (রহঃ) এবং ইবনু যায়দ (রহঃ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে পরোক্ষভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া; যেমন বলা, আমি তোমার মত কাউকে বিয়ে করতে আগ্রহী। (তাফসীর তাবারী ৫/১১৪) মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেনঃ আমি ‘উবাইদাহ (রহঃ) -কে এই আয়াতাংশের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ সে ঐ মহিলার অভিভাবককে বলতে পারে ‘আমাকে প্রথম জিজ্ঞেস না করে তাকে কোথাও বিয়ে দিবেন না।’ (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম২/৮২৬)
ইদ্দত চলাকালীন সময়ে বিবাহ শুদ্ধ নয়
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿وَلَا تَعْزِمُوْا عُقْدَةَ النِّكَاحِ حَتّٰى یَبْلُغَ الْكِتٰبُ اَجَلَه﴾ যে পর্যন্ত ইদ্দতকাল শেষ না হবে সে পর্যন্ত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে না।’ ‘আলিমগণের এ বিষয়ে ইজমা‘ রয়েছে যে, ইদ্দতের মধ্যে বিয়ে শুদ্ধ নয়। যদি কেউ ইদ্দতের মধ্যে বিয়ে করে এবং সহবাসও হয়ে যায় তথাপি তাদেরকে পৃথক করে দিতে হবে। কিন্তু এই দ্বিতীয় স্বামীর জন্য সে চিরতরে হারাম হবে কি না এ মর্মে দু’টি অভিমত পাওয়া যায়। জামহুরের মত হলো সে চিরতরে হারাম হবে না। বরং তার ইদ্দত শেষ হলে আবার প্রস্তাব দিয়ে বিবাহ করতে পারবে। আর ইমাম মালিক অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, সে দ্বিতীয় স্বামীর জন্য চিরতরে হারাম হবে। আর এ ব্যাপারে তিনি ‘উমার (রাঃ) কর্তৃক একটি বর্ণনা দলীল হিসেবে প্রয়োগ করেছেন আর তা হলোঃ
أَيُّمَا امْرَأَةٍ نُكِحَتْ فِي عِدَّتِهَا، فَإِنَّ زَوْجَهَا الَّذِي تَزَوَّجَهَا لَمْ يَدْخُلْ بِهَا، فَرَّقَ بَيْنَهُمَا، ثُمَّ اعْتَدَّتْ بَقِيَّةَ عِدَّتِهَا مِنْ زَوْجِهَا الْأَوَّلِ، ثُمَّ كَانَ الْآخَرُ خَاطِبًا مِنَ الْخُطَّابِ، وَإِنْ كَانَ دَخَلَ بِهَا فُرِّقَ بَيْنَهُمَا، ثُمَّ اعْتَدَّتْ بَقِيَّةَ عِدَّتِهَا مِنَ الْأَوَّلِ ثُمَّ اعْتَدَّتْ مِنَ الْآخَرِ، ثُمَّ لَمْ يَنْكِحْهَا أَبَدًا
‘যে কোন স্ত্রীলোক তার ইদ্দতের মধ্যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে আর এ অবস্থায় এই দ্বিতীয় স্বামী তার সাথে সহবাস করার পূর্বেই যদি পৃথক করে দেয়া হয় তাহলে পূর্বের ইদ্দত সমাপ্ত করার পর আবার দ্বিতীয় স্বামী প্রস্তাব দিতে পারবে। কিন্তু যদি দ্বিতীয় স্বামী কর্তৃক সহবাসের পর পৃথক করে দেয়া হয় তাহলে প্রথমতঃ পূর্বের ইদ্দত পালন করে যাবে। এরপর দ্বিতীয় স্বামীর ইদ্দত পালন করবে। তবে দ্বিতীয় স্বামী আর কখনো তাকে বিবাহ করতে পারবে না।’ (মুওয়াত্তা ইমাম মালিক-২/২৭/৫৩৬) এর মূল কারণ হলো যেহেতু সে তাড়াহুড়া করে মহান আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের প্রতি ভ্রƒক্ষেপ করলো না। সেহেতু তাকে এই শাস্তি দেয়া হলো যে, ঐ স্ত্রী তার জন্য চিরতরে হারাম হয়ে গেল। যেমন হত্যাকারীকে নিহত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করা হয়। ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) ইমাম মালিক (রহঃ) হতে এটা বর্ণনা করেছেন। ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) বলেন যে, ইমাম শাফি‘ঈ পূর্বের মত প্রত্যাখ্যান করে নতুন মত দিয়েছেন যে, সে বিবাহ করতে পারবে। কেননা ‘আলী (রাঃ) থেকেও বর্ণিত আছে যে, সে বিবাহ করতে পারবে। তাছাড়া ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) , মুজাহিদ (রহঃ) , শা‘বী (রহঃ) , কাতাদাহ (রহঃ) , রাবী‘ ইবনু আনাস (রহঃ) , আবূ মালিক (রহঃ) , যায়দ ইবনু আসলাম (রহঃ) , মুকাতিল ইবনু হাইয়্যান (রহঃ) , যুহরী (রহঃ) , ‘আতা আল খুরাসানী (রহঃ) , সুদ্দী (রহঃ) , সুফইয়ান সাওরী (রহঃ) এবং যাহ্হাক (রহঃ) বলেছেন যে, ইদ্দতকাল শেষ হওয়ার পূর্বে বিয়ে করা যাবে না। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম২/৮২৮, ৮২৯)
অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ﴿وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ یَعْلَمُ مَا فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ فَاحْذَرُوْهُ ﴾ জেনে রেখো যে, মহান আল্লাহ্ তোমাদের অন্তরের কথা অবগত আছেন। সুতরাং তোমরা এর প্রতি লক্ষ্য রেখে তাঁকে সদা ভয় করে চলো।’ অতএব স্ত্রীদের সম্পর্কে তোমাদের অন্তরে মহান আল্লাহ্র নির্দেশের বিপরীত চিন্তাও যেন স্থান না পায়। মহান আল্লাহ্ ভীতির নির্দেশের সাথে সাথে মহান আল্লাহ্ স্বীয় দয়া ও করুণার প্রতি আগ্রহী হওয়ার জন্য বলেন যেঃ ﴿وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ حَلِیْمٌ﴾
‘আরো জেনে রেখো, মহান আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম সহিষ্ণু।’ অর্থাৎ বিশ্বপ্রভু মহান আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের পাপসমূহ ক্ষমাকারী এবং তিনি সহিষ্ণু।’
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings