Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 221
Saheeh International
And do not marry polytheistic women until they believe. And a believing slave woman is better than a polytheist, even though she might please you. And do not marry polytheistic men [to your women] until they believe. And a believing slave is better than a polytheist, even though he might please you. Those invite [you] to the Fire, but Allah invites to Paradise and to forgiveness, by His permission. And He makes clear His verses to the people that perhaps they may remember.
Ibn Kathir Partial
Tafseer 'Ibn Kathir Partial' (BN)
মুশরিক নর-নারীকে বিয়ে করা অবৈধ
এখানে মু’মিনদের জন্য মুশরিক মহিলাদেরকে বিয়ে করার অবৈধতার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। আয়াতটি সাধারণ বলে প্রত্যেক মুশরিক মহিলাকে বিয়ে করার নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হলেও অন্য জায়গায় রয়েছেঃ
﴿مِنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ مِنْ قَبْلِكُمْ اِذَاۤ اٰتَیْتُمُوْهُنَّ اُجُوْرَهُنَّ مُحْصِنِیْنَ غَیْرَ مُسٰفِحِیْنَ﴾
‘আর সতী সাধ্বী মুসলিম নারীরা এবং তোমাদের পূর্ববর্তী আহলে কিতাবের মধ্যকার সতী-সাধ্বী নারীরাও তোমাদের বিয়ের জন্য হালাল, যখন তোমরা তাদেরকে তাদের বিনিময়ে (মোহর) প্রদান করো, এরূপে যে, তোমরা তাদেরেকে পত্নী রূপে গ্রহণ করে নাও, না প্রকাশ্যে ব্যাভিচার করো, আর না গোপন প্রণয় করো।’ (৫ নং সূরাহ্ মায়িদাহ, আয়াত নং ৫) ইবনু আব্বাস (রাঃ) -এরও উক্তি এটাই যে, ঐ মুশরিক মহিলাদের হতে কিতাবীদের মহিলাগণ খাস তথা বিশিষ্ট। মুজাহিদ (রহঃ) , ইকরামাহ (রহঃ) , সা‘ঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) , মাকহুল (রহঃ) , হাসান ইবনু সাবিত (রহঃ) , যাহহাক (রহঃ) , যায়দ ইবনু আসলাম (রহঃ) এবং রাবী‘ ইবনু আনাস (রহঃ) -এরও উক্তি এটাই। কেউ কেউ বলেন যে, এই আয়াত শুধুমাত্র মূর্তিপূজক মুশরিক নারীদের জন্যই অবতীর্ণ হয়েছে।
ইবনু জারীর (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়েক প্রকারের নারীকে বিয়ে করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। হিজরতকারিনী ও বিশ্বাসিনী নারীদেরকে ছাড়া অন্যান্য ঐসব মেয়েকে বিয়ে করার অবৈধতা ঘোষণা করেছেন যারা অন্য ধর্মের অনুসারিনী। (হাদীসটি য‘ঈফ। তাফসীর তাবারী -৪/৩৬৪, ৩৬৫/৪২২১)
কুর’আনুল কারীমের অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ﴿وَمَنْ یَّكْفُرْ بِالْاِیْمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهٗ﴾ অর্থাৎ যে ব্যক্তি ঈমানের প্রতি অস্বীকৃতি জানিয়েছে তার ‘আমল বিনষ্ট হয়েছে।’ (৫ নং সূরাহ্ মায়িদাহ, আয়াত নং ৫) একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, তালহা ইবনু ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ) একজন ইয়াহূদী মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। আর হুযাইফা ইবনু ইয়ামান (রাঃ) একজন খ্রিষ্টান নারীকে বিয়ে করেছিলেন। ‘উমার (রাঃ) এতে অত্যন্ত রাগান্বিত হোন। এমনকি তিনি যেন তাঁদেরকে চাবুক মারতে উদ্যত হোন। ঐ দুই মহান ব্যক্তি তখন বলেনঃ হে আমিরুল মু’মিনীন! আপনি আমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন না। আমরা তাদেরকে তালাক দিচ্ছি। তখন ‘উমার (রাঃ) বলেনঃ তালাক দেয়া যদি হালাল হয় তবে বিয়েও হালাল হওয়া উচিত। আমি তাদেরকে তোমাদের নিকট হতে ছিনিয়ে নিবো এবং অত্যন্ত অপমানের সাথে তাদেরকে পৃথক করে দিবো। কিন্তু এই হাদীসটি অত্যন্ত গরীব এবং ‘উমার (রাঃ) হতে স¤পূণরূপেই গারীব।
ইমাম ইবনু জারীর (রহঃ) কিতাবী মহিলাদেরকে বিয়ে করার বৈধতার ওপর ইজমা‘ নকল করেছেন এবং ‘উমার (রাঃ) -এর এই হাদীস সম্বন্ধে লিখেছেন যে, এটা শুধু রাজনৈতিক যৌক্তিকতার ভিত্তিতে ছিলো যেন মানুষ মুসলিম নারীগণের প্রতি অনাগ্রহী না হয় কিংবা অন্য কোন দূরদর্শীতা এই নির্দেশের মধ্যে নিহিত ছিলো। একটি বর্ণনায় এটাও রয়েছে যে, হুযাইফা (রাঃ) যখন এই নির্দেশ নামা প্রাপ্ত হোন তখন তিনি উত্তরে লিখেনঃ ‘আপনি কি এটাকে হারাম বলেন? মুসলিমদের খালীফা ‘উমার ফারুক (রাঃ) , বলেনঃ ‘আমি হারাম তো বলি না। কিন্তু আমার ভয় হয় যে, তোমরা মুসলিম নারীকে বিয়ে করছো না কেন?’ এ বর্ণনাটির ইসনাদও বিশুদ্ধ। (হাদীসটি সহীহ। তাফসীর তাবারী -৪/৩৬৬/৪২২৩, সুনান বায়হাক্বী-৭/১৭২) অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, ‘উমার (রাঃ) বলেছেনঃ ‘মুসলিম পুরুষ খ্রিষ্টান মহিলাকে বিয়ে করতে পারে, কিন্তু মুসলিম মহিলার সাথে খ্রিষ্টান পুরুষের বিয়ে হতে পারে না। (হাদীসটি সহীহ। তাফসীর তাবারী -৪/৩৬৬/৪২২২, সুনান বায়হাক্বী-৭/১৭২) এই বর্ণনাটির সনদ প্রথম বর্ণনাটি হতে সঠিকতর।
ইবনু জারীর (রহঃ) একটি মারফূ‘ হাদীস সনদসহ বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
نَتَزَوَّجُ نِسَاءَ أَهْلِ الْكِتَابِ وَلَا يَتَزَوَّجُونَ نِسَاءَنَا.
‘আমরা আহলে কিতাবের নারীদেরকে বিয়ে করতে পারি কিন্তু আমাদের নারীদেরকে আহলে কিতাবের পুরুষ লোকেরা বিয়ে করতে পারে না।’ (তাফসীর তাবারী -৪/৩৬৭/৪২২৪) কিন্তু এর সনদে কিছুটা দুর্বলতা থাকলেও উম্মাতের ইজমা‘ এর ওপরেই রয়েছে।
ইবনু আবী হাতিম (রহঃ) -এর বর্ণনায় রয়েছে যে, ‘উমার (রাঃ) আহলে কিতাবের সাথে বিয়েকে অপছন্দ করে এই আয়াতটি পাঠ করেন। (হাদীসটি সহীহ। তাফসীরে ইবনু আবী হাতিম)
ইমাম বুখারী (রহঃ) ‘উমার (রাঃ) -এর এই উক্তিও নকল করেছেনঃ
لَا أَعْلَمَ شِرْكًا أَعْظَمَ مِنْ أَنْ تَقُولَ: رَبُّهَا عِيسَى.
‘কোন মহিলা বলে যে, ‘ঈসা (আঃ) তাঁর প্রভু, এই শিরক অপেক্ষা বড় শিরক আমি জানি না।’ (ফাতহুল বারী ৯/৩২৬) ইমাম আহমাদ (রহঃ) কে এ আয়াতের ভাবার্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ ‘এর দ্বারা ‘আরবের ঐ মুশরিক মহিলাদেরকে বুঝানো হয়েছে যারা মূর্তি পূজা করতো।’
অতঃপর মহান আল্লাহ্র বাণীঃ
﴿وَلَاَمَةٌمُّؤْمِنَةٌخَیْرٌمِّنْمُّشْرِكَةٍوَّلَوْاَعْجَبَتْكُمْ﴾
‘বিশ্বাসিনী মহিলা অংশীবাদিনী মহিলা হতে উত্তম, ওদেরকে তোমাদের যতোই ভালো মনে হোক না কেন।’ এই ঘোষণাটি ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) -এর সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়। তাঁর কৃষ্ণ বর্ণের একটি দাসী ছিলো। একবার ক্রোধান্বিত হয়ে তিনি তাকে একটি চড় বসিয়ে দেন। তারপর তিনি সন্ত্রস্ত হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উপস্থিত হোন এবং ঘটনাটি বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, তার ধ্যান ধারণা কি। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! সে সাওম পালন করে, সালাত আদায় করে, ভালোভাবে ওযূ করে, মহান আল্লাহ্র একত্ববাদে বিশ্বাস করে এবং আপনার প্রেরিতত্বের সাক্ষ্য প্রদান করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বলেন, হে আবূ ‘আবদুল্লাহ! তবে তো সে মুসলমান। তিনি তখন বলেন হে মহান আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! সেই মহান আল্লাহ্র শপথ, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন। আমি তাকে মুক্ত করে দিবো। শুধু তাই নয়, আমি তাকে বিয়েও করে নিবো। সুতরাং তিনি তাই করেন। এতে কতোগুলো মুসলমান তাকে বিদ্রƒপ করেন। তারা চাচ্ছিলেন যে, মুশরিক মহিলার সাথে তার বিয়ে দিয়ে দিবেন। তাহলে বংশ মর্যাদা বজায় থাকবে। (আসবাবুন নুযূল-৬৫ পৃষ্ঠা, তাফসীর তাবারী -৪/৩৬৮/৪২২৫) তখন এই ঘোষণা দেয়া হয় যে, মুশরিক আযাদ মহিলা হতে মুসলমান দাসী বহুগুণে শ্রেষ্ঠ। অনুরূপভাবে মুশরিক আযাদ পুরুষ হতে মুসলমান দাস বহুগুণে উক্তম।
‘আবদ ইবনু হুমাইদ বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
لَا تَنْكِحُوا النِّسَاءَ لِحُسْنِهِنَّ، فَعَسَى حُسْنُهُنَّ أَنْ يُرْدِيَهُنَّ، وَلَا تَنْكِحُوهُنَّ عَلَى أَمْوَالِهِنَّ فَعَسَى أَمْوَالُهُنَّ أَنْ تُطْغِيَهُنَّ وَانْكِحُوهُنَّ عَلَى الدِّينِ، فَلَأَمَةٌ سَوْدَاءُ خَرْماء ذَاتُ دِينٍ أَفْضَلُ.
‘নারীদের শুধুমাত্র সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তাদেরকে বিয়ে করো না। হতে পারে যে, তাদের সৌন্দর্য তাদের মধ্যে অহঙ্কার উৎপাদন করবে। নারীদেরকে তাদের স¤পদের ওপরে বিয়ে করো না। তাদের স¤পদ তাদেরকে অবাধ্য করে তুলবে এ সম্ভাবনা রয়েছে। বিয়ে করলে ধর্মপরায়ণতা দেখো। কালো কুৎসিত দাসীও যদি ধর্মপরায়ণ হয় তবে সে বহুগুণে উত্তম। (হাদীসটি য‘ঈফ। সুনান ইবনু মাজাহ-১/৫৯৭/১৮৫৮) কিন্তু এই হাদীসটির বর্ণনাকারীদের মধ্যে আফরেকী দুর্বল।
সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ: لِمَالِهَا، وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا، وَلِدِينِهَا؛ فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ.
‘চারটি জিনিস দেখে নারীদেরকে বিয়ে করা হয়। প্রথম মাল, দ্বিতীয় বংশ, তৃতীয় সৌন্দর্য এবং চতুর্থ ধর্মপরায়ণতা। তোমরা ধর্মপরায়ণতাই অনুসন্ধান করো।’ (ফাতহুল বারী ৯/৩৫, মুসলিম ২/১০৮৭)
সহীহ মুসলিমে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
الدُّنْيَا مَتَاعٌ، وَخَيْرُ مَتَاعِ الدُّنْيَا الْمَرْأَةُ الصَالِحٍةُ.
‘দুনিয়াটাই একটি সম্পদ বিশেষ। সম্পদসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম সম্পদ হচ্ছে সতী নারী।’ অতঃপর নির্দেশ দেয়া হচ্ছেঃ
﴿وَلَاتُنْكِحُواالْمُشْرِكِیْنَحَتّٰىیُؤْمِنُوْا﴾
‘ঈমান না আনা পর্যন্ত মুশরিক পুরুষদের সাথে মুসলিম নারীদের বিয়ে দিয়ো না।’ যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ
﴿لَا هُنَّ حِلٌّ لَّهُمْ وَ لَا هُمْ یَحِلُّوْنَ لَهُنَّ﴾
‘তারা অর্থাৎ মু’মিনা নারীরা কাফিরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফিররা মু’মিন নারীদের জন্য বৈধ নয়।’ (৬০ নং সূরাহ্ মুমতাহীনাহ, আয়াত নং ১০)
এরপরে বলা হয়েছে, মু’মিন পুরুষ যদি কৃতদাসও হয় তথাপি সে স্বাধীন কাফির নেতা হতে উত্তম। এইসব লোকের সাথে মেলামেশা, তাদের সাহচার্য, দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা এবং দুনিয়াকে আখিরাতের ওপর প্রাধান্য দেয়া শিক্ষা দেয়। এর পরিণাম হচ্ছে জাহান্নামে অবস্থান। আর মহান আল্লাহ্র অনুগত বান্দাদের অনুসরণ, তার নির্দেশ পালন জান্নাতের পথে চালিত করে এবং পাপ মোচনের কারণ হয়ে থাকে। মানুষকে উপদেশ ও শিক্ষা দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ্ তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে থাকেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings