Surah Al Baqarah Tafseer
Tafseer of Al-Baqarah : 167
Saheeh International
Those who followed will say, "If only we had another turn [at worldly life] so we could disassociate ourselves from them as they have disassociated themselves from us." Thus will Allah show them their deeds as regrets upon them. And they are never to emerge from the Fire.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৬৫ থেকে ১৬৭ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা নিজের এককত্বের অকাট্য দলিল পেশ করার পরও এক শ্রেণির মানুষ রয়েছে যারা তাঁর সাথে মনগড়া মা‘বূদের শরীক স্থাপন করে। তাদের সাথে ঐরূপ ভালবাসা পোষণ করে যেমন ভালবাসা আল্লাহ তা‘আলার সাথে হওয়া উচিত। এখানে তাদের কথাই তুলে ধরেছেন।
এ শির্কের ছড়াছড়ি কেবল তৎকালীন আরব সমাজেই বিদ্যমান ছিল না বরং বর্তমানেও অনেক নামধারী মুসলিম এ রোগে আক্রান্ত। গায়রুল্লাহ, পীর, ফকীর, মাজারগুলোকে কেবল নিজেদের ইবাদতখানা বানিয়েই নিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, বরং তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার চেয়ে বেশি ভালবাসে। সেই সাথে তাদের সম্মান ও আনুগত্য এমনভাবে করে- যা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কেউ পাওয়ার হকদার নয়।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاِذَا ذُکِرَ اللہُ وَحْدَھُ اشْمَاَزَّتْ قُلُوْبُ الَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِﺆ وَاِذَا ذُکِرَ الَّذِیْنَ مِنْ دُوْنِھ۪ٓ اِذَا ھُمْ یَسْتَبْشِرُوْنَ)
“এক আল্লাহর কথা বলা হলে যারা আখিরাতকে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর ঘৃণায় ভরে যায় এবং আল্লাহর পরিবর্তে (তাদের দেবতাগুলোর) উল্লেখ করা হলে তারা আনন্দিত হয়।” (সূরা যুমার ৩৯:৪৫)
কিন্তু মু’মিনদের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা আল্লাহ তা‘আলা-কে সর্বাধিক ভালবাসে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
(ثَلَاثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ، أَنْ يَكُونَ اللّٰهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا)
যে ব্যক্তির মাঝে তিনটি গুণ রয়েছে সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে, তার মধ্যে একটি হল- কেবল আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূল তার নিকট সবচেয়ে বেশি ভালবাসার পাত্র হওয়া। (সহীহ বুখারী হা: ১৬)
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যকে তাঁর সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে যাবে। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন: আমি বললাম, আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে সমকক্ষ হিসেবে আহ্বান না করে মারা যায় সে জান্নাতে যাবে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৪৯৭, সহীহ মুসলিম হা: ৯২)
(الَّذِیْنَ ظَلَمُوْٓا)
‘এবং যারা যুলুম করেছে’আয়াতে “যালিম” হল কাফিরগণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَالْكَافِرُونَ هُمُ الظَّالِمُونَ)
কাফিররাই হলো যালেম। (সূরা বাকারাহ ২:২৫৪) [আযওয়াউল বায়ান ১ম খণ্ড, ৯২]
লুকমান (আঃ) তাঁর ছেলেকে বলেন-
(لَا تُشْرِكْ بِاللّٰهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ)
“আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। নিশ্চয়ই শির্ক তো মহা জুলুম।” (সূরা লুকমান ৩১:১৩)
যারা শির্ক করে নিজেদের প্রতি জুলুম করেছে তারা যদি জানত যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বশক্তিমান ও কঠোর শাস্তিদাতা তাহলে আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যান্য বাতিল মা‘বূদের ইবাদত করত না।
(إِذْ تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُوْا)
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামীদের পরস্পরে বিবাদের বিষয়ের দিকে ইশারা করেছেন। অন্যত্র তাদের বিবরণ তুলে ধরে বলেন:
(وَلَوْ تَرٰٓی اِذِ الظّٰلِمُوْنَ مَوْقُوْفُوْنَ عِنْدَ رَبِّھِمْﺊ یَرْجِعُ بَعْضُھُمْ اِلٰی بَعْضِ اۨلْقَوْلَﺆ یَقُوْلُ الَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْا لِلَّذِیْنَ اسْتَکْبَرُوْا لَوْلَآ اَنْتُمْ لَکُنَّا مُؤْمِنِیْنَﭮقَالَ الَّذِیْنَ اسْتَکْبَرُوْا لِلَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْٓا اَنَحْنُ صَدَدْنٰکُمْ عَنِ الْھُدٰی بَعْدَ اِذْ جَا۬ءَکُمْ بَلْ کُنْتُمْ مُّجْرِمِیْنَﭯوَقَالَ الَّذِیْنَ اسْتُضْعِفُوْا لِلَّذِیْنَ اسْتَکْبَرُوْا بَلْ مَکْرُ الَّیْلِ وَالنَّھَارِ اِذْ تَاْمُرُوْنَنَآ اَنْ نَّکْفُرَ بِاللہِ وَنَجْعَلَ لَھ۫ٓ اَنْدَادًا)
“তুমি যদি দেখতে যালিমদেরকে যখন তাদের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান করা হবে, তখন তারা পরস্পর বাদ-প্রতিবাদ করতে থাকবে, দুর্বলেরা অহংকারীদেরকে বলবেঃ তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মু’মিন হতাম। অহংকারীরা দুর্বলদেরকে বলবেঃ তোমাদের নিকট সৎ পথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে ওটা হতে নিবৃত্ত করেছিলাম? বস্তুতঃ তোমরাই তো ছিলে অপরাধী। দুর্বলেরা অহংকারীদেরকে বলবেঃ প্রকৃতপক্ষে তোমরাই তো দিবা-রাত্র চক্রান্তে লিপ্ত ছিলে, আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহকে অমান্য করি এবং তাঁর শরীক স্থাপন করি।”(সূরা সাবা ৩৪:৩১-৩৩) [আযওয়াউল বায়ান ১ম খণ্ড, ৯২]
আর সেদিন কারো সাথে কোন সম্পর্ক বহাল থাকবেনা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(یَوْمَ یَفِرُّ الْمَرْئُ مِنْ اَخِیْھِﭱﺫ وَاُمِّھ۪ وَاَبِیْھِﭲﺫ وَصَاحِبَتِھ۪ وَبَنِیْھِ)
“সেদিন মানুষ পলায়ন করবে তাঁর নিজের ভাই হতে, এবং তার মাতা, পিতা, স্ত্রী ও সন্তান হতে।”(সূরা আবাসা ৮০:৩৪-৩৬)
তবে যারা দুনিয়াতে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলত তাদের সম্পর্ক বহাল থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلْاَخِلَّا۬ئُ یَوْمَئِذٍۭ بَعْضُھُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ اِلَّا الْمُتَّقِیْنَ)
“বন্ধুরা সে দিন হয়ে যাবে একে অপরের শত্র“, তবে মুত্তাকীরা ব্যতীত।”(সূরা যুখরুফ ৪৩:৬৭)
কিয়ামত দিবসে খাজা, পীর, ফকীর ও কবরপূজারীদের অপারগতা ও বিশ্বাসঘাতকতা দেখে মুশরিকরা আফসোস করবে, কিন্তু সে আফসোস ও অনুতাপ কোন কাজে আসবে না। সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَثَلُ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا بِرَبِّھِمْ اَعْمَالُھُمْ کَرَمَادِ اۨشْتَدَّتْ بِھِ الرِّیْحُ فِیْ یَوْمٍ عَاصِفٍ)
“যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের কর্মসমূহের উপমা ভস্মসদৃশ যা ঝড়ের দিনের বাতাস প্রচণ্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়।”(সূরা ইবরাহীম ১৪:১৮)
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. উম্মাতে মুহাম্মাদীর কিছু লোক মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয়ে যাবে।
২. আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসা অন্যকে দেয়া শির্ক।
৩. কিয়ামাতের দিন অমুসলিমদের কোন সম্পর্ক উপকারে আসবে না।
৪. যারা শির্কযুক্ত আমল করবে তাদের আমল বিফলে যাবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings