Surah Al Anbiya Tafseer
Tafseer of Al-Anbya : 25
Saheeh International
And We sent not before you any messenger except that We revealed to him that, "There is no deity except Me, so worship Me."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২১-২৫ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা অস্বীকৃতিমূলক জিজ্ঞাসা আকারে মুশরিকদেরকে ভর্ৎসনা করছেন যে, তারা এমন নির্বোধ যে, মাটির তৈরি মূর্তিগুলোকে মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে যারা মৃতকে জীবিত করতে পারে না। সুতরাং যারা মৃতকে জীবিত করতে না পারে তারা কেমন করে মা‘বূদ হল। মা‘বূদ হতে হলে তাকে অনেক ক্ষমতার অধিকারী হতে হবে। তারা তো নিজেদের গা থেকে মাছি সরাতেও সক্ষম না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِهٰٓ اٰلِهَةً لَّا يَخْلُقُوْنَ شَيْئًا وَّهُمْ يُخْلَقُوْنَ وَلَا يَمْلِكُوْنَ لِأَنْفُسِهِمْ ضَرًّا وَّلَا نَفْعًا وَّلَا يَمْلِكُوْنَ مَوْتًا وَّلَا حَيٰوةً وَّلَا نُشُوْرًا)
“আর তারা তাঁর পরিবর্তে মা‘বূদরূপে গ্রহণ করেছে অন্যদেরকে যারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং তারা নিজেদের অপকার অথবা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না এবং মৃত্যু, জীবন ও পুনরুত্থানের ওপরও কোন ক্ষমতা রাখে না।” (সূরা ফুরক্বান ২৫:৩)
সুতরাং মা‘বূদ হলেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যদি আকাশ-জমিনের একাধিক উপাস্য থাকত তাহলে পৃথিবী পরিচালনার ব্যাপারে বিপর্যয় সৃষ্টি হত, পৃথিবীতে শান্তি, নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় থাকত না। এক মা‘বূদ চাইতো সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হোক, অন্য মা‘বূদ চাইতো পূর্ব দিকে উদিত হোক। এক মা‘বূদ বৃষ্টি দিতে চাইবে, অন্য মা‘বূদ দিতে চাইবে না ইত্যাদি ইত্যাদি বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হত।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَا اتَّخَذَ اللّٰهُ مِنْ وَّلَدٍ وَّمَا كَانَ مَعَه۫ مِنْ إلٰهٍ إِذًا لَّذَهَبَ كُلُّ إلٰهٍۭ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلٰي بَعْضٍ ط سُبْحٰنَ اللّٰهِ عَمَّا يَصِفُوْنَ)
“আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে অপর কোন ইলাহ্ নেই; যদি থাকত তবে প্রত্যেক মা‘বূদ স্বীয় সৃষ্টি নিয়ে পৃথক হয়ে যেত এবং একে অপরের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করত। তারা যা বলে তা হতে আল্লাহ পবিত্র!” (সূরা মু’মিনুন ২৩:৯১)
সুতরাং আকাশজমিনে একাধিক মা‘বূদ হতে পারে না। এটা মানুষের বিবেকও বলে। তাই আল্লাহ তা‘আলার সাথে অন্য মা‘বূদ রয়েছে এ কথা হতে তিনি পবিত্র। তিনি একক, অদ্বিতীয়।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা নিজের মহত্ব্ ও বড়ত্ব এবং ক্ষমতার পূর্ণতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন, তাঁকে প্রশ্ন করার ক্ষমতা কারো নেই। কেউ বলতে পারবে না, আপনি এ কাজ করলেন কেন, এ কাজ করেন না কেন? বান্দা যা করে ও বলে, সে সকল কথা ও কাজের জন্য তাদেরকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। জবাবদিহিতা ছাড়া এক কদমও এগুতে পারবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَوَرَبِّكَ لَنَسْأَلَنَّهُمْ أَجْمَعِيْنَ - عَمَّا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ)
“সুতরাং শপথ তোমার প্রতিপালকের! আমি তাদের সকলকে প্রশ্ন করবই, সে বিষয়ে যা তারা করে।” (সূরা হিজর ১৫:৯২-৯৩)
অতঃপর যারা আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যদের উপাসনা করে তাদেরকে লক্ষ্য করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্যের ইবাদত করা যাবে এ ব্যাপারে তোমাদের প্রমাণসমূহ নিয়ে এস। কিন্তু তারা কোন প্রমাণই পেশ করতে সক্ষম হবে না। আর আল্লাহ তা‘আলা জানেন যে, তাদের নিকট এ বিষয়ে কোনই দলীল প্রমাণ নেই। তারা নিজেদের খেয়াল-খুশির বশীভূত হয়ে এ সমস্ত বাতিল মা‘বূদদের উপাসনা করে। তাদের এ উপাসনা আল্লাহ তা‘আলার সম্মুখে কোন কাজে আসবে না।
(ذِكْرُ مَنْ مَّعِيَ)
এখানে যিকির বলতে কুরআনকে বুঝানো হয়েছে।
(وَذِكْرُ مَنْ قَلْبِيْ)
এখানে যিকির বলতে পূর্ববর্তী নাবীদের গ্রন্থসমূহকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ যারা আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করে তাদের দলিল-প্রমাণ কুরআনে রয়েছে এবং পূর্ববর্তী নাবীদের কিতাবেও তা রয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত মুশরিকরা সত্য বিষয় সম্পর্কে অবগত নয়।
এরপর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যত নাবী-রাসূল প্রেরণ করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিধান ছিল একটাই, তা হল এক আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত আর কোন সঠিক মা‘বূদ নেই, সুতরাং তাঁরই ইবাদত করতে হবে। তাঁর ইবাদত ব্যতীত মুক্তি পাওয়া যাবে না।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُوْلًا أَنِ اعْبُدُوا اللّٰهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوْتَ)
“আল্লাহর ইবাদত করার ও তাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেয়ার জন্য আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি।” (সূরা নাহল ১৬:৩৬)
সুতরাং আমাদের প্রত্যেকের উচিত একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা, তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করা, আল্লাহ ব্যতীত যত মা‘বূদ রয়েছে সকল মা‘বূদকে ঘৃণা করা ও তাদেরকে অস্বীকার করা।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. উপাস্য একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই।
২. সকল নাবী-রাসূলদের দীনের মূলনীতি ছিল একই যে, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই ইবাদত করতে হবে।
৩. প্রমাণ ছাড়া কোন আমল করা যাবে না।
৪. মানুষকে তার প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
৫. মা‘বূদ হওয়ার যোগ্যতা অন্য কোন কিছুর নেই, তাই যারা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্যের ইবাদত করে তারা ভ্রান্ত।
৬. আরশের অধিপতি একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, অন্য কেউ নয়।
৭. আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কারো কোন উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা নেই।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings