Surah Yusuf Tafseer
Tafseer of Yusuf : 23
Saheeh International
And she, in whose house he was, sought to seduce him. She closed the doors and said, "Come, you." He said, "[I seek] the refuge of Allah . Indeed, he is my master, who has made good my residence. Indeed, wrongdoers will not succeed."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২৩-২৯ নং আয়াতের তাফসীর:
এখন ইউসুফ (عليه السلام)-এর জন্য এক নতুন পরীক্ষা শুরু হল। কিন্তু ইউসুফ (عليه السلام) সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ধৈর্যের পরিচয় দেন। আযীযে মিসর (মিসরের মন্ত্রীর) স্ত্রী (যুলাইখা)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন ইউসুফ (عليه السلام)-এর যতত্ন ও সুন্দর বাসস্থানসহ সম্মানের সাথে রাখার জন্য, কিন্তু সে স্ত্রী ইউসুফ (عليه السلام) এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পড়ে, ক্রমে ক্রমে তাঁকে ফুসলাতে থাকে তার সাথে অপকর্ম করার জন্য। এমনকি ঐ মহিলা ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে দিল (বলা হয় সে ঘরের সাতটি দরজা ছিল) এবং ইউসুফ (عليه السلام)-কে বলল: এসো আমরা কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করি। তখন ইউসুফ (عليه السلام) তার এই রকম কামনা-বাসনা দেখে তাকে বললেন: আমি আপনার এই রকম অসৎ উদ্দেশ্য থেকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং বললেন, দেখুন! আপনার স্বামী আমাকে উত্তমরূপে রেখেছেন এবং আমার সাথে খুবই সদয় ব্যবহার করেছেন। সুতরাং যিনি আমার সাথে এত ভাল আচরণ করেন ও আমাকে সম্মান করেন তার সাথে আমি বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না, এটি সম্ভব নয়। আর বিশ্বাসঘাতক কখনো সফলকাম হয়না, বরং সে কল্যাণ লাভে বঞ্চিত হয়। স্ত্রীলোকটি তাঁর এসব কথা-বার্তায় কান না দিয়ে বরং নিজের কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে মত্ত ছিল। সে তাঁকে আহ্বান জানালো।
মহিলার এসব কথা বার্তা ও আসক্তি দেখে ইউসুফও সে মহিলার প্রতি ঝুঁকে পড়তেন যদি না তাঁর রবের নিদর্শন দেখতেন।
(وَھَمَّ بِھَا لَوْلَآ اَنْ رَّاٰ بُرْهَانَ رَبِّه)
‘এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ত যদি না সে তার প্রতিপালকের নিদর্শন প্রত্যক্ষ করত।’
এই নিদর্শনের ব্যাপারে মুফাস্সিরগণের মধ্যে মত পার্থক্য থাকলেও সঠিক কথা হল, আল্লাহ তা‘আলার ভয়, যে মনিব তাঁকে আশ্রয় দান করেছেন তার মর্যাদা রক্ষা এবং নিজেকে জুলুম করা থেকে রক্ষা করার জন্য তিনি এরূপ কাম চরিতার্থ করা থেকে বিরত থাকলেন। এভাবে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর থেকে মন্দ এবং অশ্লীলতাকে দূরীভুত করলেন এজন্য যে, তিনি একজন সৎ বান্দা এবং আল্লাহ তা‘আলার মনোনীত ব্যক্তি অর্থাৎ নাবী। (তাফসীর সা‘দী, অত্র আয়াতের তাফসীর)
ইউসুফ (عليه السلام) ঐ মহিলার ডাকে সাড়া না দিয়ে বের হবার জন্য দরজার দিকে দৌড় দিলেন তখন মহিলাটিও তাকে ধরার জন্য তাঁর পিছনে ছুটল এবং ইউসুফ (عليه السلام) এর জামাটি পিছন দিক থেকে ধরে টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলল। এই অবস্থায় উভয়ে দরজার নিকট পৌঁছে যান। দরজায় পৌঁছতেই দেখেন যে, ঐ মহিলার স্বামী দরজার নিকট বিদ্যমান। স্বামীকে দেখা মাত্রই সে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে বলে: ‘যে আপনার স্ত্রীর সাথে অপর্কমে লিপ্ত হতে চায় তার জন্য কারগারে প্রেরণ বা অন্য কোন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ছাড়া আর কী হতে পারে?’
ইউসুফ (عليه السلام) যখন দেখলেন যে, মহিলাটি সমস্ত দোষ তাঁর ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে তখন তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য বলেন: প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আপনার স্ত্রীই আমাকে অপকর্মের জন্য আহ্বান করছিল কিন্তু আমি তার ডাকে সাড়া না দিয়ে দরজার দিকে ছুটে আসছিলাম তখন সেও আমার পিছনে ছুটে আসল। তখন মহিলার স্বামী বলল: তুমি যে এ দোষ থেকে মুক্ত তার প্রমাণ কী? যদি প্রমাণ না নিয়ে আসতে পারো তাহলে তোমাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে।
তখন আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের ব্যবস্থা করে দিলেন। মহিলার বাড়ির একটি দুগ্ধপোষ্য শিশু ফায়সালা দিল যে, যদি ইউসুফের জামা পেছন দিক দিয়ে ছেঁড়া থাকে তাহলে ইউসুফ সত্যবাদী মহিলাটি মিথ্যাবাদী আর যদি সামনের দিকে ছেঁড়া থাকে তাহলে মহিলাটি সত্যবাদী, ইউসুফ মিথ্যাবাদী। এখানে ফায়সালাকে شَهِدَ (সাক্ষ্য দিল) শব্দে এ জন্য বুঝানো হয়েছে যে, তখনও বিষয়টি যাচাই করার প্রয়োজন ছিল। এ সাক্ষ্যদাতা কে ছিল এ নিয়ে ইমাম কুরতুবী চারটি মত উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে দুটি মত প্রসিদ্ধ (১) এ সাক্ষীদাতা ছোট একটি দুগ্ধপোষ্য শিশু, মায়ের কোলে থাকা অবস্থায় কথা বলেছেন। সুহাইলী বলেন, এটাই সঠিক, কারণ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: মায়ের কোলে তিনজন শিশু কথা বলেছে। (সহীহ বুখারী হা: ৩৪৩৬, সহীহ মুসলিম হা: ২৫৫০) তন্মধ্যে ইউসুফ (عليه السلام) এর সাক্ষ্যদাতা একজন বলে উল্লেখ করেছেন। (২) এ সাক্ষীদাতা একজন দূরদর্শী জ্ঞানী ব্যক্তি, আযীযে মিসর তার থেকে পরামর্শ নিতেন। শেষোক্ত মতটি অধিক গ্রহণযোগ্য। (কুরতুবী, অত্র আয়াতের তাফসীর)
অতঃপর যখন মহিলার স্বামী দেখলেন যে, ইউসুফের জামা পেছন দিক দিয়ে ছেঁড়া তখন আযীয অর্থাৎ মহিলার স্বামী বুঝতে পারলেন যে, ইউসুফই সত্যবাদী এবং ঐ মহিলা ইউসুফকে অপবাদ দিয়েছে। তখন মহিলার স্বামী বললেন: তোমাদের চক্রান্ত খুবই কঠিন। তুমি যেভাবে ব্যক্ত করেছিলে মনে হয় যেন তুমিই পবিত্র, সে অপরাধী। এখানে নিজ স্ত্রীর কুস্বভাব দেখে নারী জাতি সম্পর্কে মন্তব্য করলেন যে “নিশ্চয়ই এটা তোমাদের চক্রান্ত”। তবে এ মন্তব্য সকল নারী জাতির ক্ষেত্রে সঠিক নয়। সুতরাং তা সকল নারীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা এবং এর ভিত্তিতে নারী মাত্রই সকলকে চক্রান্তকারী বলা কুরআনের উদ্দেশ্য নয়। যেমন অনেকে উক্ত বাক্য দ্বারা নারীদের সম্পর্কে এরূপ কথা বলে থাকে। আযীয ইউসুফ (عليه السلام) কে সান্ত্বনা দিলেন এবং এ কথা প্রচার করতে বারণ করলেন। তার স্ত্রীকে অপরাধের কারণে তাওবাহ করার নির্দেশ দিলেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কেউ কোন পাপ কাজের দিকে আহ্বান করলে তাতে সাড়া না দিয়ে আল্লাহ তা‘আলার নিকট আশ্রয় চাইতে হবে এবং অন্যায়কারীকে সদুপোদেশ দিতে হবে।
২. ন্যায় ও সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকলে আল্লাহ তা‘আলা বিপদ থেকে রক্ষা করবেন এটা আল্লাহ তা‘আলার প্রতিশ্রুতি।
৩. কিয়ামতের দিন সে যুবক আরশের ছায়াতলে স্থান পাবে যে যুবককে সুন্দরী রমণী অপকর্ম করার আহ্বান করলে বলে আমি আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করি।
৪. যুবকদেরকে অন্যায় কাজে জড়িত করার জন্য কতক নারীরাই অগ্রগামী।
৫. যারা পাপ থেকে বিরত থাকতে চায় আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকার উপযুক্ত ব্যবস্থা করে দেন।
৬. যে কোন বিষয় যাচাই বাছাই করে ফায়সালা করা উচিত।
৭. বেগানা মহিলার সাথে একাকিত্বের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত হলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings