Surah Yunus Tafseer
Tafseer of Yunus : 7
Saheeh International
Indeed, those who do not expect the meeting with Us and are satisfied with the life of this world and feel secure therein and those who are heedless of Our signs
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৭-১০ নং আয়াতের তাফসীর:
পূর্বের আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ ও রুবুবিয়্যাহর বর্ণনা করার পর এই আয়াতগুলোতে তাদের প্রতিদান সম্পর্কে বর্ণনা করছেন যারা আল্লাহ তা‘আলার সাক্ষাতকে অস্বীকার করে, যারা সওয়াবের আশা করে না, শাস্তির ভয় করে না, সর্বোপরি ঈমান ও ইসলামকে পরওয়া না করে পার্থিব জীবন নিয়েই সন্তুষ্ট। اٰيٰتِنَا অর্থাৎ কুরআনের নিদর্শন ও পার্থিব নিদর্শন থেকে কোন শিক্ষা নেয় না। এদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন তারা সেখানে শাস্তি ভোগ করবে।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مَنْ كَانَ يُرِيْدُ الْحَيٰوةَ الدُّنْيَا وَزِيْنَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيْهَا وَهُمْ فِيْهَا لَا يُبْخَسُوْنَ)
“যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও তার সৌন্দর্য কামনা করে, দুনিয়াতে আমি তাদের কর্মের পূর্ণ ফল দান করি এবং সেথায় তাদেরকে কম দেয়া হবে না।” (সূরা হূদ ১১:১৫)
সুতরাং আখিরাতকে বাদ দিয়ে কেবল দুনিয়ার জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে হবে না, যারা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি কামনা করার জন্য কাজ করবে না এবং আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস করে দুনিয়ার ওপর তা প্রাধান্য দেবে না তাদের জন্যই জাহান্নাম।
পক্ষান্তরে যারা ঈমান ও সৎআমল করে আল্লাহ তা‘আলা তাদের ঈমান ও সৎআমলের বদৌলতে কিয়ামতের দিন জান্নাতে যাওয়ার পথ সহজ করে দেবেন। দুনিয়াতেও তারা সঠিক পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন: তাদের সাথে একটা নূর (আলো) থাকবে যার মাধ্যমে তারা পথ চলতে থাকবে। ইবনু জারীর বলেন: তাদের আমলগুলো একটি সুন্দর প্রতিকৃতি ও সুগন্ধময় হাওয়ার আকার বিশিষ্ট হবে এবং তারা যখন কবর থেকে উঠবে এ সুন্দর প্রতিকৃতিগুলো তাদের সামনে সামনে চলতে থাকবে এবং তাদেরকে সর্বপ্রকারের সুসংবাদ দিতে থাকবে। যখনই যে নেককার লোক তাকে জিজ্ঞাসা করবে তুমি কে? সে উত্তরে বলবে, আমি তোমার নেক আমল। এভাবে তাকে জান্নাত পর্যন্ত পৌঁছে দেবে।
(دَعْوٰهُمْ فِيْهَا) অর্থাৎ জান্নাতে তাদের প্রথম ইবাদত বা দু’আ হবে আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ, আল্লাহ তা‘আলাকে সকল অপরিপূর্ণ দোষ থেকে মুক্ত ঘোষণা করা। আর সর্বশেষ ইবাদতস্বরূপ তাদের মুখ থেকে বের হবে আল হামদুলিল্লাহ। সেখানে তাদেরকে কোন ইবাদত করতে বাধ্য করা হবে না কিন্তু অন্তরের প্রশান্তি ও মনের ভেতর থেকে এমনিতে এসব বাক্য বের হয়ে আসবে। হাদীসে এসেছে: জান্নাতীগণের মুখে এমনভাবে তাসবীহ ও তাহমীদ স্বয়ংক্রিয় করা হবে, যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস স্বয়ংক্রিয় (সহীহ মুসলিম হা: ২৮৩৫)। অর্থাৎ নিজের কোন ইচ্ছা ব্যতিরেকে যেরূপ শ্বাস-প্রশ্বাস চলতে থাকে, অনুরূপ জান্নাতীদের মুখে কোন ইচ্ছা ছাড়াই আল্লাহ তা‘আলার হামদ ও তাসবীহর শব্দ আসতে থাকবে।
জান্নাতীরা তথায় শুধু শান্তিপূর্ণ বাণীই শুনবে অন্য কোন বেহুদা কথা-বার্তা তারা শুনতে পাবে না। ফেরেশতাদেতর পক্ষ থেকে নিজেদের মাঝে অভিবাদন হবে সালাম। ফেরেশতারা জান্নাতে প্রবেশকালে জান্নাতীদেরকে সালাম দিয়ে অভিভাদন জানাবে। যেমন
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَه۫ سَلَامٌ)
“যেদিন তারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে, সেদিন তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’।” (সূরা আহযাব ৩৩:৪৪)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَالْمَلٰ۬ئِكَةُ يَدْخُلُوْنَ عَلَيْهِمْ مِّنْ كُلِّ بَابٍ - سَلٰمٌ عَلَيْكُمْ بِمَا صَبَرْتُمْ فَنِعْمَ عُقْبَي الدَّارِ)
“ফেরেশ্তাগণ তাদের নিকট উপস্থিত হবে প্রত্যেক দ্বার দিয়ে, (এবং বলবে:) তোমাদের প্রতি (সালাম) শান্তি; কত ভাল এ পরিণাম!’’ (সূরা রা‘দ ১৩:২৩-২৪)
আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
(لَا يَسْمَعُوْنَ فِيْهَا لَغْوًا إِلَّا سَلٰمًا)
“সেথায় তারা ‘শান্তির সম্ভাষণ ব্যতীত’ কোন অসার বাক্য শুনবে না।” (সূরা মারইয়াম ১৯:৬২)
সুতরাং এ নেয়ামত পাবার জন্য প্রত্যেক মু’মিনকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বেশি বেশি সৎআমল ও আল্লাহ তা‘আলার পথে দান করতে হবে।
ইবনু আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিপদে পড়লে এ দু’আ বলতেন-
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ العَظِيْمُ الحَلِيْمُ، لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ، وَرَبُّ العَرْشِ العَظِيْمِ
আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই, তিনি মহান ও ধৈর্যশীল, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই। তিনি আকাশ-জমিনের প্রতিপালক ও মহান আরশের অধিপতি। (সহীহ বুখারী হা: ৬৩৪৫, সহীহ মুসলিম হা: ২৭৩০)
ইমাম কুরতুবী (رحمه الله) বলেন: সালাফগণ এ বাক্য দ্বারা দু’আ করতেন এবং একে বিপদাপদের দু’আ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ইমাম কুরতুবী (رحمه الله) বলেন: সুন্নাত হল প্রথমে আল্লাহ তা‘আলার নাম নিয়ে খাওয়া শুরু করবে, খাওয়া শেষে আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করবে। জান্নাতীরা এ পদ্ধতি অনুসরণ করবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা বান্দার প্রতি খুশী হন যখন বান্দা এক লোকমা খায় আর আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করে, এক বার পান করে আর আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করে। (সহীহ মুসলিম হা: ২৭৩৪)
আয়াত হতে শিক্ষনীয় বিষয়:
১. আখিরাত ভুলে গিয়ে দুনিয়াকে প্রাধান্য দেয়ার ব্যাপারে সতর্কবাণী।
২. কুরআনের আয়াত সম্পর্কে গাফেল হবার ব্যাপারে সতর্কবাণী।
৩. ঈমান ও সৎ আমল জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম।
৪. জান্নাতে জান্নাতীরা সালাম দিয়ে পরস্পরকে অভিবাদন জানাবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings