Surah Yunus Tafseer
Tafseer of Yunus : 6
Saheeh International
Indeed, in the alternation of the night and the day and [in] what Allah has created in the heavens and the earth are signs for a people who fear Allah
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫-৬ নং আয়াতের তাফসীর:
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ক্ষমতার পূর্ণতা ও সাম্রাজ্যের প্রমাণস্বরূপ বহু নিদর্শন সৃষ্টি করেছেন সে সংবাদ দিচ্ছেন। আল্লাহ তা‘আলা মহান স্রষ্টা তার প্রমাণ বহন করে এমন অনেক নিদর্শন তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল চন্দ্র ও সূর্য। আল্লাহ তা‘আলা সূর্যকে করেছেন দীপ্তিময় এবং চন্দ্রকে করেছেন আলোকময়। কুরআনে সূর্যকে বুঝাতে الشَّمْسَ (শামস) শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। আবার السراج (সিরাজ) শব্দটি দ্বারাও সূর্যকে বুঝানো হয়ে থাকে, যার অর্থ বাতি বা মশাল। অন্যত্র সূর্যকে الشَّمْسَ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ হলো প্রজ্জ্বলিত বাতি। এখানে একই অর্থ বুঝানোর জন্য ضِيَا۬ءً শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে উজ্জ্বল জ্যোতি। তিনটি বর্ণনার সবই সূর্যের জন্য উপযোগী। কারণ, সূর্য নিজ দহনক্রিয়ার মাধ্যমে প্রচণ্ড তাপ ও আলো উৎপন্ন করে। আর চাঁদকে বলা হয়েছে الْقَمَرَ (কামার), একে منير (মুনির) ও বলা হয়েছে। যার অর্থ স্নিগ্ধ আলো দানকারী। তাছাড়া চাঁদ হচ্ছে একটি নিষ্ক্রিয় জিনিস, যা সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে, চাঁদের এ বৈশিষ্ট্যের সাথে কুরআনের বর্ণনা হুবহু মিলে যায়। কুরআনে একবারের জন্যও চাঁদকে السراج (সিরাজ) وهاج (ওয়াহহাজ) বা ضِيَا۬ءً (জিয়া) হিসেবে এবং সূর্যকে نُوْرً (নূর) منير (মুনীর) হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, কুরআন সূর্যের আলো এবং চন্দ্রের আলোর পার্থক্যকে স্বীকার করে। এরূপ আয়াত সূরা ফুরকানের ৬১ নং এবং সূরা নূহের ১৬ নং এ উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং চাঁদের আলো প্রতিফলিত আলো, যা বর্তমান বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে অথচ কুরআন তা ১৪০০ বছর পূর্বে প্রমাণ করেছে।
(وَّقَدَّرَه۫ مَنَازِلَ)
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা চন্দ্র পরিভ্রমণের কক্ষপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কক্ষপথ বলতে তার ঐ পরিভ্রমণ পথকে বুঝায় যা চাঁদ এক দিন ও এক রাতে তার বিশেষ পরিক্রমণ দ্বারা অতিক্রম করে। উক্ত কক্ষ হল আশিটি। প্রত্যেক রাতে একটি কক্ষ সমাপ্ত করে, তাতে কখনো কোন ব্যতিক্রম হয় না। প্রথম কক্ষগুলোতে চাঁদকে ছোট ও সরু দেখা যায়। তারপর ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে এমন কি চৌদ্দ রাত্রি বা চৌদ্দতম কক্ষে গিয়ে তা পূর্ণ (পূর্ণিমার) চন্দ্র রূপে প্রকাশ হয়। তার পর পুনরায় ছোট ও সরু হতে আরম্ভ করে, এমনকি শেষে এক বা দুই রাত্রি লুক্কায়িত থাকে এবং পরে প্রথম দিনের ক্ষীণ চন্দ্ররূপে উদিত হয়। চন্দ্রের উপকারিতা এ কারণে বর্ণনা করা হয়েছে যে, যাতে তোমরা বছর গণনা ও সময়ের হিসেব করতে পার। অর্থাৎ চন্দ্রের সে কক্ষপথ ও গতি দ্বারাই মাস ও বছর গণনা হয়, যার দিনের, দিবারাত্রি চব্বিশ ঘন্টার সমান সমান দিন হলে বার ঘন্টা করে এবং শীত ও গ্রীষ্মকালে কমবেশি হয়ে থাকে। তাছাড়া পার্থিব উপকার ও কাজ কারবার শুধু সেই চন্দ্রের কক্ষপথের সাথে সম্পৃক্ত নয় বরং তাতে দীনি লাভও অর্জন হয়। নতুন চাঁদ দ্বারা হজ্জ, রমাযানের রোযা, নিষিদ্ধ মাস এবং অন্যান্য ইবাদতের সময়কাল নির্দিষ্ট করা হয়, প্রত্যেক মু’মিন তাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
আল্লাহ তা‘আলা এ সমস্ত বস্তু সৃষ্টি করেছেন যাতে করে জ্ঞানীরা উপদেশ গ্রহণ করে সঠিক পথে ফিরে আসতে পারে। এগুলোকে অযথা সৃষ্টি করেননি। দিন-রাতের আবর্তন ও আকাশ-জমিন যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার মাঝে মুত্তাকিদের জন্য রয়েছে নিদর্শন। সূর্য উঠছে, অস্ত যাচ্ছে, দিন-রাত এক এক করে আসছে আর চলে যাচ্ছে। এভাবে একদিন একদিন করে সপ্তাহ, মাস, বছর অতীত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ অনুধাবন করতে পারছে না, এর মধ্যে তার জীবনটা অতীত হয়ে যাচ্ছে। একদিন দেখা যাবে সূর্য উঠছে কিন্তু সে মানুষ আর নেই। অর্থাৎ পৃথিবী তার আপন গতিতে চলবে কিন্তু মানুষ একদিন বিদায় নেবে।
আয়াত হতে শিক্ষনীয় বিষয়:
১. চন্দ্র, সূর্য সৃষ্টি করার হিকমত জানতে পারলাম।
২. প্রত্যেক জিনিসের সৃষ্টিতে মানুষের জন্য উপকার রয়েছে।
৩. জ্ঞানীদের মর্যাদা জানতে পারলাম।
৪. দিন-রাতের পরিবর্তনের মাঝে ইঙ্গিত রয়েছে পৃথিবী একদিন শেষ হয়ে যাবে এবং প্রত্যেকেই একদিন বিদায় নেবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings