Surah At Tawbah Tafseer
Tafseer of At-Tawbah : 73
Saheeh International
O Prophet, fight against the disbelievers and the hypocrites and be harsh upon them. And their refuge is Hell, and wretched is the destination.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৭৩-৭৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-কে তাঁর অনুসারীদের সাথে যেমন নম্র ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন তেমনি কাফির মুনাফিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। এ নির্দেশে সকল মু’মিনরা শামিল।
আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে চারটি তরবারীসহ প্রেরণ করা হয়েছে। একটি মুশরিকদের বিরুদ্ধে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَإِذَا انْسَلَخَ الْأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِيْنَ حَيْثُ وَجَدْتُّمُوْهُمْ وَخُذُوْهُمْ وَاحْصُرُوْهُمْ وَاقْعُدُوْا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ)
“অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদেরকে যেখানে পাবে হত্যা কর, তাদেরকে বন্দী কর, অবরোধ কর এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে বসে থাক।”(সূরা তাওবাহ ৯:৫)
দ্বিতীয়টি হল আহলে কিতাব কাফিরদের বিরুদ্ধে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قَاتِلُوا الَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْاخِرِ وَلَا يُحَرِّمُوْنَ مَا حَرَّمَ اللّٰهُ وَرَسُوْلُه۫ وَلَا يَدِيْنُوْنَ دِيْنَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتٰبَ حَتّٰي يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَّدٍ وَّهُمْ صٰغِرُوْنَ)
“যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহতে ঈমান আনে না ও শেষদিনেও নয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেন তারা তা হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দীন অনুসরণ করে না তাদের সাথে যুদ্ধ কর, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে স্বহস্তে জিয্য়া দেয়।” (সূরা তাওবাহ ৯:২৯)
তৃতীয়টি হল মুনাফিকদের বিরুদ্ধে। তা হল উপরোক্ত আয়াত।
চতুর্থটি হল ইসলামী রাষ্ট্রের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِنْ طَآئِفَتٰنِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْتَتَلُوْا فَأَصْلِحُوْا بَيْنَهُمَا ج فَإِنْمبَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَي الْأُخْرٰي فَقَاتِلُوا الَّتِيْ تَبْغِيْ حَتّٰي تَفِیْ۬ ئَ إِلٰٓي أَمْرِ اللّٰهِ)
“যদি ঈমানদারদের দুদল একে অপরের সাথে লড়াই করে তাহলে তাদের মধ্যে আপোষ করে দাও। এরপর যদি একদল অপর দলের সাথে বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে তোমরা লড়াই কর; যতক্ষণ না সে দলটি আল্লাহর হুকুমের দিকে ফিরে আসে।” (সূরা হুজুরাত ৪৯:৯)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একটি গাছের ছায়ার নিচে বসেছিলেন। তখন তিনি (সাঃ) বললেন: এখনই আমাদের কাছে একটি লোক আসবে এবং সে আমাদের দিকে শয়তানের দৃষ্টিতে তাকাবে। যখন সে আসবে তখন তোমরা তার সাথে কথা বলবে না। তখন টেরা চক্ষুবিশিষ্ট একজন লোক আসল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে ডেকে বললেন: তুমি ও তোমার সঙ্গীরা আমাকে গালি দাও কেন? তৎক্ষণাৎ সে গিয়ে তার সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে আসলো এবং সবাই আল্লাহ তা‘আলার নামে শপথ করে বলল: আমরা এসব কথা বলিনি। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাদেরকে ক্ষমা করে দিলেন। তখন
(يَحْلِفُوْنَ بِاللّٰهِ مَا قَالُوْا)
৭৪ নং আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (তাফসীর তাবারী ১৬৯৭৩, দুররুল মানসুর ২/২৫৮, সনদ সহীহ)
(وَهَمُّوا بِمَا لَمْ يَنَالُوا)
‘তারা যা সংকল্প করেছিল তা পায়নি..’ এ ব্যাপারেও কয়েকটি ঘটনা বর্ণনা করা হয়। যেমন মুসনাদ আহমাদের ৫ম খণ্ড ৪৫৩ পৃষ্ঠায় সহীহ সনদে ও সহীহ মুসলিমে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য অধ্যায়ে একটি হাদীস রয়েছে। যার সারকথা হল: তাবুক যুদ্ধ থেকে ফিরার পথে মুনাফিকরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বিরুদ্ধে এক চক্রান্ত করেছিল। তাতে তারা সফল হতে পারেনি। দশ-বারজন মুনাফিক এক উপত্যকায় তাঁর পিছু নেয় যেখানে তিনি বাকি সৈন্য থেকে পৃথকভাবে প্রায় একাকী অতিক্রম করছিলেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল যে, এ সুযোগে অতর্কিতভাবে তার ওপর হামলা করে হত্যা করে ফেলা। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ খবর ওয়াহীর মাধ্যমে জেনে সতর্ক হয়ে যান।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: আমার সাহাবীদের মধ্যে বারজন মুনাফিক রয়েছে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না। আটজনের কাঁধে আগুনের ফোঁড়া হবে যা বক্ষ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। তা তাদেরকে ধ্বংস করে দেবে। একমাত্র হুযায়ফা (রাঃ) ঐ বারজন মুনাফিকের নাম জানতেন। এজন্য তাকে ‘সিররুন নাবী’ বা নাবী (সাঃ)-এর গোপন কথা জানেন বলা হয়।
(وَمَا نَقَمُوا إِلَّا أَنْ أَغْنَاهُمُ اللَّهُ)
‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নিজ কৃপায় তাদেরকে অভাবমুক্ত করেছিলেন বলেই তারা বিরোধিতা করেছিল’ অর্থাৎ তারা শুধু এরই প্রতিশোধ গ্রহণ করেছে যে, আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় অনুগ্রহে তাঁর রাসূল (সাঃ)-এর মাধ্যমে তাদেরকে সম্পদশালী করেছেন। যদি তাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার পূর্ণ অনুগ্রহ হতো তবে তাদের ভাগ্যে হিদায়াতও মিলত। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আনসারদেরকে বলেছেন: আমি কি তোমাদেরকে পথহারা পায়নি? অতঃপর আমার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন। তোমরা কি বিচ্ছিন্ন ছিলে না? অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা আমার মাধ্যমে তোমাদেরকে ভালবাসায় আবদ্ধ করেছেন। তোমরা কি দরিদ্র ছিলে না? অতঃপর আল্লাহ তা‘আলার আমার মাধ্যমে তোমাদেরকে ধনী করেছেন। প্রতিটি প্রশ্নের জবাবে আনসাররা বলেছিল, হ্যাঁ।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা তাওবাহ করার কথা বলছেন আর এটাই উত্তম।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আয়াতুস সাইফ তরবারীর আয়াতের বর্ণনা পেলাম।
২. একজন মুসলিম ইসলামের নামে অপবাদ দেয়া ও আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে গালি-গালাজ ইত্যাদি করার মাধ্যমে মুরতাদ হয়ে যায়।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে হত্যায় মুনাফিকদের নীল-নকশার কথা জানতে পারলাম।
৪. হুযাইফাহ (রাঃ)-এর ফযীলত জানতে পারলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings