Surah At Tawbah Tafseer
Tafseer of At-Tawbah : 69
Saheeh International
[You disbelievers are] like those before you; they were stronger than you in power and more abundant in wealth and children. They enjoyed their portion [of worldly enjoyment], and you have enjoyed your portion as those before you enjoyed their portion, and you have engaged [in vanities] like that in which they engaged. [It is] those whose deeds have become worthless in this world and in the Hereafter, and it is they who are the losers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬৭-৭০ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতগুলোতে মুনাফিক নর-নারীদের পারস্পারিক সম্পর্ক, পরকালে তাদের অবস্থান এবং তাদের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে।
মুনাফিক নর-নারী পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, একে অপরকে খারাপ কাজের নির্দেশ দেয়। তারা আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করা থেকে নিজেদের হাতকে সঙ্কুচিত করে রাখে।
(نَسُوا اللّٰهَ فَنَسِيَهُمْ)
‘তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, ফলে তিনিও তাদেরকে ভুলে গেছেন’ অর্থাৎ তারা আল্লাহ তা‘আলাকে ভুলে গেছে ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাথে এমন আচরণ করবেন যেন তিনি তাদেরকে ভুলে গেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَقِيْلَ الْيَوْمَ نَنْسٰكُمْ كَمَا نَسِيْتُمْ لِقَا۬ءَ يَوْمِكُمْ هٰذَا وَمَأْوَاكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِّنْ نّٰصِرِيْنَ)
“আর বলা হবেঃ আজ আমি তোমাদেরকে ভুলে যাব যেমন তোমরা এই দিবসের সাক্ষাতকে ভুলে গিয়েছিলে। তোমাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।”(সূরা জাসিয়া ৪৫:৩৪)
এসব কাফির মুনাফিকদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন। এদের অবস্থা ও কর্ম এবং পরিণামের দিক দিয়ে পূর্ববর্তী কাফিরদের মতই।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! তোমরা অবশ্যই তাদের অনুসরণ করবে- বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে ও গজে গজে। এমনকি যদি তারা গুই সাপের গর্তে প্রবেশ করে তাহলে তোমরাও তাতে প্রবেশ করবে (অর্থাৎ হুবহু অনুসরণ করবে)। সাহাবীগণ বললেন: তারা কারা? তারা কি আহলে কিতাব (ইয়াহূদ ও খ্রিস্টান)? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তাহলে আর কারা? আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন: তোমরা ইচ্ছা করলে এ আয়াত
(كَالَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ كَانُوْآ أَشَدَّ مِنْكُمْ قُوَّةً .....كَمَا اسْتَمْتَعَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ بِخَلَاقِهِمْ)
“তোমরাও তোমাদের পূর্ববর্তীদের মত যারা শক্তিতে তোমাদের অপেক্ষা প্রবল ছিল এবং যাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি ছিল তোমাদের অপেক্ষা অধিক, এবং তারা তাদের ভাগ্যে যা ছিল তা ভোগ করেছে; তোমাদের ভাগ্যে যা ছিল তোমরাও তা ভোগ করলে।” (সূরা তাওবাহ ৯:৬৯) তেলাওয়াত করতে পার। (সহীহ বুখারী হা: ৭৩২০, সহীহ মুসলিম হা: ২৬৬৯)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা এসব কাফির-মুনাফিকদেরকে পূর্ববর্তী অবাধ্য জাতিসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তাদের কাছে নাবী-রাসূলগণ আমার নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিল কিন্তু তারা তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। ফলে তাদের জুলুমের কারণে তাদের ওপর মর্মান্তিক শাস্তি আপতিত হয়েছিল। তাদের অন্যতম নূহ (আঃ)-এর জাতি ও কওমে আদ তথা হূদ (আঃ)-এর জাতি। আল্লাহ তা‘আলার গযবে ধ্বংসপ্রাপ্ত বিশ্বের প্রধান ছয়টি জাতির মধ্যে নূহ (আঃ)-এর পরে আ‘দ ছিল দ্বিতীয় জাতি। এরা খুব দুর্ধর্ষ, শক্তিশালী, সুঠামদেহী ও বিরাট বপুস¤পন্ন ছিল। হূদ (আঃ) তাদেরকে শির্ক বর্জন করে সার্বিক জীবনে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে মূর্তিপূজা ত্যাগ করার এবং জুলুম ও অত্যাচার পরিহার করে ন্যায় সুবিচারের পথে চলার উদাত্ত আহ্বান জানান। হূদ (আঃ) একজন তাদের মতই মানুষ, কিন্তু তারা বাপ-দাদা ইত্যাদির দোহাই দিয়ে দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করে। ফলে প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝার শাস্তি দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। যা সাত রাত ও সাত দিন একাধারে প্রবাহমান ছিল। এতে তাদের লাশগুলো খেজুর গাছের কাণ্ডের মত মাটিতে পড়েছিল। এদের কথা বিস্তারিতভাবে সূরা আ‘রাফের ৬৫-৭২নং আয়াাতের আলোচনা করা হয়েছে।
وَّثَمُوْدَ কওমে সামূদ সালেহ (আঃ)-এর জাতি। আদ জাতির ধ্বংসের প্রায় ৫০০ বছর পরে সালেহ (আঃ) সামূদ জাতির প্রতি নাবী হিসেবে প্রেরিত হন। (তারীখুল আম্বিয়া ১/৪৯) আদ জাতির ধ্বংসের পর সামূদ জাতি তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়। তারাও আদ জাতির মত শক্তিশালী ও বীরের জাতি ছিল। তারা প্রস্তর খোদাই ও স্থাপত্য বিদ্যায় খুবই পারশর্দী ছিল। ভীষণ ভূমিকম্প এবং ওপর থেকে বিকট ও ভয়াবহ এক গর্জন দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করা হয়। ফলে সবাই যার যার স্থানে একযোগে অধোমুখী হয়ে ভূতলশায়ী হল (সূরা আ‘রাফ ৭৮, হূদ ৬৭-৬৮) এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত হল এমনভাবে যেন তারা কোনদিন সেখানে বসবাস করেনি। এ সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ৭৩-৭৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় আলোচনা করা হয়েছে।
(اَصْحٰبِ مَدْیَنَ)
‘মাদইয়ান অধিবাসী’ উদ্দেশ্য হল শুআইব (আঃ)-এর জাতি। পবিত্র কুরআনের ১০টি সূরায় ৫৩টি আয়াতে তাঁর সম্পর্কে আলোচনা উল্লেখ রয়েছে। লূত (আঃ)-এর অবাধ্য জাতি ধ্বংসের অনতিকাল পরেই তাঁকে নবুওয়াত দিয়ে মাদইয়ানবাসীর হিদায়াতের জন্য প্রেরণ করা হয়েছিল। মাদইয়ান হল লূত সাগরের নিকটবর্তী সিরিয়া ও হিজাযের সীমান্তবর্তী একটি জনপদের নাম। যা অদ্যাবধি পূর্ব জর্ডানের সামুদ্রিক বন্দর ‘মো‘আন’ (معان ) এর অদূরে বিদ্যমান রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলার গযবে ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রধান ছয়টি প্রাচীন জাতির মধ্যে ৫ম জাতি হল ‘আহলে মাদইয়ান’। তাদের অপরাধ ছিল তারা আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক করত, রাহাজানি করত, লোকদেরকে ওজনে কম দিত এবং নিজেরা মানুষের নিকট থেকে নেয়ার সময় বেশি নিত। তাদের এই সীমালংঘনের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছেন। এমনকি তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এদের সম্পর্কে সূরা আ‘রাফের ৮৫-৯৩ ও হূদের ৮৪-৯৫ নং আয়াতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
الْمُؤْتَفِکٰتِ অর্থাৎ উল্টো-পাল্টাকৃত। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল লূত (আঃ)-এর সম্প্রদায় যাদের জনপদের নাম ছিল সামূদ। এদেরকে প্রথমত আকাশ থেকে পাথর বর্ষণ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত: তাদের জনপদকে উল্টো-পাল্টা করে দেয়া হয়েছিল। এ কারণে তাদেরকে আসহাবে মুতাফিকাত বলা হয়। সুতরাং এসব ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, আল্লাহ তা‘আলা কেন তাদের বিবরণ আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন? তা এজন্যই যে, যাতে আমরা সতর্ক হই এবং তাদের মত আচরণ না করি।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মুনাফিকরা পরস্পর পরস্পরের সহযোগী এবং তাদের কাজ-কর্ম ও চাল-চলন সাদৃশ্যপূর্ণ।
২. সৎ কাজে বাধা দেয়া অসৎ কাজের নির্দেশ দেয়া মুনাফিকদের আলামত।
৩. অনেকে সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির কারণে সত্য গ্রহণে বাধাগ্রস্ত হয়।
৪. পূর্ববর্তী জাতিদের পরিণতি থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings