Surah At Tawbah Tafseer
Tafseer of At-Tawbah : 41
Saheeh International
Go forth, whether light or heavy, and strive with your wealth and your lives in the cause of Allah . That is better for you, if you only knew.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৪১-৪৩ নং আয়াতের তাফসীর:
একজন মু’মিন যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন ইমাম জিহাদের জন্য আহ্বান করলে সে তার জান ও মাল নিয়ে আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদে বের হয়ে পড়বে।
(اِنْفِرُوْا خِفَافًا وَّثِقَالًا)
‘অভিযানে বের হয়ে পড়, হালকা অবস্থায় হোক অথবা ভারি অবস্থায়’- এ আয়াতের অর্থ বিভিন্ন মুফাসসিরগণ বিভিন্ন রকম করেছেন- মুজাহিদ (রাঃ) বলেন: যুবক হোক, বৃদ্ধ হোক, ধনী হোক, গরীব হোক অভিযানের আহ্বান আসলে বেরিয়ে পড়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: সন্তুষ্ট বা অসস্তুষ্ট অবস্থায়।
হাসান বসরী (রাঃ) বলেন: স্বচ্ছল অবস্থায় হোক বা অস্বচ্ছল অবস্থায় হোক।
এছাড়াও কেউ কেউ বলেছেন: পায়ে হেঁটে হোক বা সওয়ারীতে হোক, সন্তান থাকুক বা না থাকুক, সৈন্য দলের অগ্রে থাকুক বা পিছনে থাকুক ইত্যাদি।
ইমাম শাওকানী (রাঃ) বলেন: আয়াতটি সমস্ত অর্থেই ব্যাপক। যেহেতু আয়াতের অর্থ হল: তোমরা জিহাদে বের হও চাই তোমাদের ভারী মনে হোক অথবা হালকা মনে হোক। এ অর্থের মাঝে উল্লিখিত সমস্ত অর্থই চলে আসে। (ফাতহুল কাদীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ)
‘এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়’ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করা দুনিয়া ও আখিরাতের চেয়েও উত্তম।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা মুজাহিদদের দায়িত্ব নিয়েছেন যে, যদি তাকে মৃত্যু দান করেন তাহলে জান্নাত দেবেন আর বাড়িতে ফিরিয়ে আনলে প্রতিদান বা গনীমতসহ ফিরাবেন। (সহীহ বুখারী হা: ৩১২৩ ) এ জন্য আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ ج وَعَسٰٓي أَنْ تَكْرَهُوْا شَيْئًا وَّهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ ج وَعَسٰي أَنْ تُحِبُّوْا شَيْئًا وَّهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ ط وَاللّٰهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ)
“যুদ্ধ করা তোমাদের ওপর ফরয করে দেয়া হয়েছে। আর হয়ত এটা তোমাদের নিকট অপ্রিয়, তোমরা কোন বিষয়কে অপছন্দ কর যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, আবার হতে পারে তোমরা এমন বিষয়কে পছন্দ করছ যা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। মূলত আল্লাহই জানেন আর তোমরা জান না।”(বাকারাহ ২:২১৬)
لَوْ كَانَ عَرَضًا قَرِيبًا وَسَفَرًا قَاصِدًا
‘আশু সম্পদ লাভের সম্ভাবনা থাকলে ও সফর সহজ হলে..’ পূর্বের আয়াতগুলোতে জিহাদের প্রতি যে প্রেরণা দেয়া হয়েছে মূলত তা ছিল তাবুক যুদ্ধের প্রেক্ষাপট। তাবুক যুদ্ধের প্রেক্ষাপটের সাথে সম্পৃক্ত হলেও সকল যুগ ও অবস্থায় তা প্রযোজ্য। কেননা শব্দের ব্যাপকতাই ধতর্ব্য, নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট ধতর্ব্য নয়।
যারা তাবুক যুদ্ধে নাবী (সাঃ)-এর সাথে যায়নি তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা এখানে ভর্ৎসনা করে বলেছেন: সহজেই গনীমত পাওয়া গেলে ও সফর দূরবর্তী না হলে তারা তোমার সাথে যুদ্ধে যেত, কিন্তু (এ ফসল কাটার মওসুমে) তাদের জন্য শাম (সিরিয়া) সফর করা দুঃসাধ্য হয়ে গেছে। এখন তোমার কাছে অহেতুক ওজর পেশ করবে। আল্লাহ তা‘আলা জানেন তারা মিথ্যুক।
(عَفَا اللَّهُ عَنْكَ)
‘আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করেছেন’এখানে নাবী (সাঃ)-কে সম্বোধন করে বলা হচ্ছে যে, জিহাদে শরীক না হওয়ার অনুমতিপ্রার্থীদেরকে তাদের ওজরের সত্যতা যাচাই না করেই কেন অনুমতি দিয়ে দিলে? কিন্তু এ তিরস্কারেও স্নেহের প্রভাব বেশি ছিল। এ জন্যই উক্ত ত্র“টির ক্ষমা প্রথমেই স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এ তিরস্কার এ জন্যই করা হয়েছে যে, অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়ার সাথে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং পূর্ণভাবে সত্যতা যাচাই করে দেখার প্রয়োজন মনেকরা হয়নি। নচেৎ তদন্তের পর সত্যিই যার ওজর আছে তাকে অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার তরফ থেকে তাকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَرَسُوْلِه۪ وَإِذَا كَانُوْا مَعَه۫ عَلٰٓي أَمْرٍ جَامِعٍ لَّمْ يَذْهَبُوْا حَتّٰي يَسْتَأْذِنُوْهُ ط إِنَّ الَّذِيْنَ يَسْتَأْذِنُوْنَكَ أُولٰ۬ئِكَ الَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَرَسُوْلِه۪ ۪ ج فَإِذَا اسْتَأْذَنُوْكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ فَأْذَنْ لِّمَنْ شِئْتَ مِنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمُ اللّٰهَ ط إِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ)
“মু’মিন তো তারাই যারা আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রাসূলে ঈমান আনে এবং রাসূলের সঙ্গে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্র হলে তারা অনুমতি ব্যতীত সরে পড়ে না; নিশ্চয়ই যারা তোমার অনুমতি প্রার্থনা করে তারাই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাসী। অতএব তারা তাদের কোন কাজে বাইরে যাওয়ার জন্য তোমার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দাও এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমাও প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা নূর ২৪:৬২)
সুতরাং জিহাদের ডাক আসলে মু’মিন কোন প্রকার অজুহাত দেখিয়ে বসে থাকতে পারে না, বরং সে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে কিভাবে এ ফযীলতের কাজে অংশ গ্রহণ করা যায়।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইমাম যুদ্ধের জন্য আহ্বান করলে একজন মু’মিন যে অবস্থাতেই থাকুক জিহাদে বের হওয়া আবশ্যক, যদি শরীয়তসম্মত কোন কারণ না থাকে।
২. জিহাদ জান ও মাল উভয়টাই দ্বারা হয়।
৩. গনীমত পাওয়া যাবে অথবা কিছু দেয়া হবে এ আশা নিয়ে জিহাদে শরীক হওয়া ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য নয়, বরং জিহাদের মুখ্য উদ্দেশ্য থাকবে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও দীন প্রতিষ্ঠা করা।
৪. ভালবাসার পাত্রকে অপরাধের জন্য ধমক দেয়া শরীয়তসম্মত।
৫. আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং মুজাহিদদের দায়িত্বশীল, তারা দুনিয়াতে কোন সম্পদ বা সম্মান না পেলেও পরকালে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings