Surah At Tawbah Tafseer
Tafseer of At-Tawbah : 34
Saheeh International
O you who have believed, indeed many of the scholars and the monks devour the wealth of people unjustly and avert [them] from the way of Allah . And those who hoard gold and silver and spend it not in the way of Allah - give them tidings of a painful punishment.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৩৪-৩৬ নং আয়াতের তাফসীর:
এখানে আল্লাহ তা‘আলা পূর্ববর্তী উম্মাত তথা ইয়াহূদ খ্রিস্টানদের আলিমদের অবস্থা বর্ণনা করেছেন। তারা অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ খেত আর আল্লাহ তা‘আলার সঠিক পথে চলতে মানুষকে বাধা দিত।
সুদ্দী (রাঃ) বলেন: ইয়াহূদী আলিমদের আহবার “أَحْبَارٌ”এবং খ্রিস্টান আবেদদেরকে রুহবান “رَهْبَانٌ” বলা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(لَوْلَا يَنْهٰهُمُ الرَّبّٰنِيُّوْنَ وَالْأَحْبَارُ عَنْ قَوْلِهِمُ الْإِثْمَ وَأَكْلِهِمُ السُّحْتَ ط لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَصْنَعُوْنَ)
“কেন আল্লাহওয়ালাগণ ও আলেমগণ তাদেরকে খারাপ কথা বলতে ও অবৈধ ভক্ষণে নিষেধ করে না? এরা যা করে তা কতই না নিকৃষ্ট!” (সূরা মায়িদাহ ৫:৬৩)
মূলত আয়াতের উদ্দেশ্য হল- যে সকল দরবেশ, সূফী, পীর ও একশ্রেণির আলেম ধর্মের নামে ব্যবসা করে মানুষকে পথভ্রষ্ট করছে তাদের থেকে সতর্ক করা।
ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের আহবার ও রুহবানগণ যেমন ধর্মের নামে অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ খেত আর মানুষকে নিজের মনগড়া তৈরিকৃত তরীকাহ অনুসরণের নির্দেশ দিয়ে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করেছে, তেমনি আমাদের সমাজেও এরূপ ধর্ম ব্যবসায়ী একশ্রেণির আলেম ও পীর-বুজুর্গ রয়েছে যারা পেটপূজারী লম্বা আলখেল্লা পরিধান করে নিজেকে খুব আল্লাহওয়ালা প্রকাশ করত মিথ্যা কথা বলে মানুষের সম্পদ হরণ করে, ধর্মের নামে গুমরাহীর পথ দেখায়। তাদের চক্রান্ত থেকে সাবধান!
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের শাস্তির কথা বলেছেন, যারা নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা সত্ত্বেও যাকাত প্রদান করে না।
যায়েদ বিন ওয়াহ হতে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি একদা রাবাযা নামক স্থানে আবূ যার (রাঃ) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি (তাকে) জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কেন এ ভূমিতে এসেছেন? তিনি বললেন: আমি সিরিয়ায় ছিলাম, তখন আমি (মু‘আবিয়া (রাঃ)-কে) এ আয়াত পাঠ করে শোনালাম: “আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং সেটা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও।” মুআবিয়া (রাঃ) এ আয়াত শুনে বললেন: এ আয়াত আমাদের ব্যাপারে নাযিল হয়নি বরং আহলে কিতাবের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আমি বললাম যে, এ আয়াত আমাদের ও তাদের সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৬০) সুতরাং এ আয়াত সকলের জন্য প্রযোজ্য।
যারা সম্পদের যাকাত প্রদান করে না তাদের শাস্তির ব্যাপারে অনেক সহীহ হাদীস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে একটি হল- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: প্রত্যেক সোনা ও রূপার অধিকারী ব্যক্তি যে তার হক (যাকাত) আদায় করে না, কিয়ামাতের দিন তার ঐ সমুদয় সোনা-রূপাকে পাত তৈরি করে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দ্বারা তার পাঁজর, কপাল ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। যখনই সে পাত ঠাণ্ডা হয়ে যাবে তখনই তা পুনরায় গরম করে অনুরূপ দাগ দেয়ার শাস্তি কিয়ামতের দিন পর্যন্ত দেয়া হবে, যার পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। যতক্ষণ না বান্দাদের মাঝে বিচার ফায়সালা শেষ হয়। অতঃপর সে তার পথ দেখতে পাবে হয় জান্নাতের দিকে না হয় জাহান্নামের দিকে। (সহীহ মুসলিম, যাকাত অধ্যায়, হা: ৯৮৭)
(إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُوْرِ عِنْدَ اللّٰهِ اثْنَا عَشَرَ)
‘আল্লাহর বিধানে আল্লাহর নিকট মাসগুলোর সংখ্যা বারটি’ অর্থাৎ যেদিন আল্লাহ তা‘আলা আকাশ ও জমিন সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকেই আল্লাহ তা‘আলার নিকট মাসের সংখ্যা বারটি। তার মধ্যে চারটি মাস হল নিষিদ্ধ মাস যাতে বিশেষ করে ঝগড়া-বিবাদ নিষিদ্ধ।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: যুগ ঘুরে-ফিরে পুনরায় সেই অবস্থাতে এসে গেছে যে অবস্থাতে ছিল যখন আল্লাহ তা‘আলা আকাশ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তা হল বার মাসে এক বছর। যার মধ্যে চারটি হল নিষিদ্ধ মাস, তিনটি ধারাবাহিক যুলক্বাদাহ, যুলহাজ্জ ও মুহাররাম। আর চতুর্থটি হল রজব যা জুমাদাল আখির ও শাবানের মাঝে। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৬২) এটাই সঠিক শরীয়ত। অর্থাৎ এমন মাসগুলো এ ক্রমানুসারে হওয়া যেমন আল্লাহ তা‘আলা করেছেন, যার মধ্যে চার মাস নিষিদ্ধ। তা যথাযথ হিসাব ও সংখ্যায় পূর্ণ।
হারাম মাসগুলোতে যুদ্ধের সূচনা করা যাবে কিনা এ নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়।
১. হারাম মাসে যুদ্ধ করার যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা রহিত হয়ে গেছে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
(فَلَا تَظْلِمُوْا فِيْهِنَّ أَنْفُسَكُمْ)
“সুতরাং তোমরা তার মধ্যে নিজেদের প্রতি জুলুম করো না” আবার আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশও দিচ্ছেন।
আয়াতের পূর্বাপর দ্বারা বুঝা যাচ্ছে বিষয়টি ব্যাপক। যদি হারাম মাসে যুদ্ধ করা নিষেধ থাকত তাহলে তা শর্তযুক্ত করে দেয়া হত। তাছাড়া নাবী (সাঃ) শাওয়াল মাসে হাওয়াযেন গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৩২৫০)
২. হারাম মাসগুলোতে যুদ্ধ করা হারাম। এ বিধান রহিত হয়নি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اَلشَّھْرُ الْحَرَامُ بِالشَّھْرِ الْحَرَامِ وَالْحُرُمٰتُ قِصَاصٌ ﺚ فَمَنِ اعْتَدٰی عَلَیْکُمْ فَاعْتَدُوْا عَلَیْھِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدٰی عَلَیْکُمْﺕ وَاتَّقُوا اللہَ وَاعْلَمُوْٓا اَنَّ اللہَ مَعَ الْمُتَّقِیْنَ)
“নিষিদ্ধ মাসের পরিবর্তে নিষিদ্ধ মাস এবং নিষিদ্ধ মাসেও বদলার ব্যবস্থা রয়েছে ঐ অবস্থায় যদি কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করে, তবে তোমরাও তার প্রতি সে পরিমাণ অত্যাচার কর যতটুকু সে করেছে। আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।” (সূরা বাকারাহ ২:১৯৪) তবে প্রথম কথাই প্রসিদ্ধ ও অধিক গ্রহণযোগ্য।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানের আলিমদের প্রকৃত অবস্থান জানতে পারলাম।
২. একশ্রেণির আলিম, পীর ও ফকির বাবা রয়েছে যারা ধর্মের নামে পেটপূজারী।
৩. নিসাব পরিমাণ সম্পদ হলে যাকাত আদায় না করলে কী ভয়াবহ শাস্তি দেয়া হবে তা জানতে পারলাম।
৪. বারটি মাস আল্লাহ তা‘আলার নিকট পূর্ব নির্ধারিত তার মধ্যে চারটি মাস হারাম।
৫. আল্লাহ তা‘আলা মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন তাঁর সাহায্য ও সহযোগিতার দ্বারা।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings