Surah At Tawbah Tafseer
Tafseer of At-Tawbah : 33
Saheeh International
It is He who has sent His Messenger with guidance and the religion of truth to manifest it over all religion, although they who associate others with Allah dislike it.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৩২-৩৩ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা'আলা বলেন, সর্ব শ্রেণীর কাফিরদের মনের ইচ্ছা এটাই যে, তারা আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিবে এবং তাঁর হিদায়াত ও সত্য দ্বীনকে দুনিয়ার বুক থেকে মুছে ফেলবে। তাহলে তাদের চিন্তা করে দেখা উচিত যে, যদি কেউ তার মুখের ফুৎকার দ্বারা সূর্যের বা চন্দ্রের রশ্মিকে নিভিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করে তবে তা কখনো সম্ভব হবে কি? কখনই না। অনুরূপভাবে এ লোকগুলোও আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষে অপারগ হয়ে গেছে। এটা অবশ্যম্ভাবী বিষয় এবং আল্লাহর ফায়সালা যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে যে সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করা হয়েছে তা সদা বিজয়ী থাকবেই। হে কাফির ও মুশরিকের দল! তোমরা আল্লাহর দ্বীনকে মিটিয়ে দিতে চাচ্ছ, কিন্তু আল্লাহ চাচ্ছেন তা উন্নত রাখতে। আর স্পষ্ট কথা যে, আল্লাহর ইচ্ছা তোমাদের ইচ্ছার উপর নিঃসন্দেহে বিজয়ী থাকবে। যদিও তোমাদের কাছে অপ্রীতিকর হয় তবুও কিন্তু হিদায়াতের সূর্য মধ্য গগণে পৌছে যাবেই।
আরবী অভিধানে কোন জিনিস গোপনকারীকে কাফির বলা হয়। এ কারণেই রাত্রি সব জিনিসকে গোপন করে দেয় বলে ওকেই কাফির বলা হয়। কৃষককেও কাফির বলা হয়ে থাকে, কেননা সে শস্য-বীজকে মাটির মধ্যে গোপন করে দেয়। যেমন কুরআন কারীমে (আরবী) (৫৭:২০) বলা হয়েছে।
ঐ আল্লাহ তাআলাই স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে হিদায়াত ও দ্বীনে হকসহ পাঠিয়েছেন। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সত্য সংবাদ, সঠিক ঈমান এবং উপকারী ইমই হচ্ছে হিদায়াত। আর উত্তম কার্যাবলী, যেগুলো দুনিয়া ও আখিরাতে ফায়দা দেয় সেটাই হচ্ছে দ্বীনে-হক। এটা দুনিয়ার সমুদয় দ্বীনের উপর বিজয়ীরূপে থাকবে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “আমার জন্যে ভূ-পৃষ্ঠের পূর্ব ও পশ্চিম দিককে জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমার উম্মতের রাজ্য এই সমুদয় স্থান পর্যন্ত পৌছে যাবে।” নবী (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের হাতে পূর্ব ও পশ্চিম বিজিত হবে। তোমাদের নেতারা জাহান্নামী হবে, তারা ব্যতীত যারা পরহেজগার হবে এবং আমানতদাতার কাছে আমানত পৌছিয়ে দেবে।” তামীমুদদারী (রাঃ)। হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছি- “অবশ্যই এই দ্বীন ঐ সব জায়গায় পৌছবে যেখানে রাত ও দিন পৌছে থাকে। এমন কোন কাঁচা ঘর ও পাকা ঘর বাকী থাকবে না যেখানে মহা মহিমান্বিত আল্লাহ ইসলামকে পৌঁছাবেন না। আল্লাহ তা'আলা সম্মানিতদেরকে সম্মান দেবেন এবং লাঞ্ছিতদেরকে লাঞ্ছিত করবেন। যারা ইসলামের মর্যাদা দেয় তারা সম্মান পাবে এবং কাফিররা লাঞ্ছিত হবে।” তামীমুদদারী (রাঃ) বলেনঃ “এটা তো আমি স্বয়ং আমার বাড়ীতেই দেখতে পেয়েছি। যে মুসলিম হয়েছে সে কল্যাণ ও বরকত এবং সম্মান ও মর্যাদা লাভ করেছে, আর যে কাফির হয়েছে সে লাভ করেছে ঘৃণা ও অভিসম্পাত। তাদেরকে অপমানের সাথে জিযিয়া প্রদান করতে হয়েছে।”
মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছি- “ভূ-পৃষ্ঠে এমন কোন কাঁচা ও পাকা ঘর বাকী থাকবে না যেখানে আল্লাহ তা'আলা ইসলামের কালেমাকে প্রবিষ্ট করবেন না। তিনি মর্যাদাবানদেরকে মর্যাদা দিবেন এবং লাঞ্ছিতদেরকে লাঞ্ছিত করবেন। যাদেরকে তিনি মর্যাদা দানের ইচ্ছা করবেন তাদেরকে তিনি ইসলাম গ্রহণের সৌভাগ্য দান করবেন। আর যাদেরকে তিনি লাঞ্ছিত করতে চাইবেন তারা তা মানবে না, কিন্তু তাদেরকে ঐ মুসলিমদের অধীনস্থ হয়ে থাকতে হবে।” আদী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমার নিকট আগমন করে আমাকে বলেনঃ “তুমি ইসলাম কবুল কর, তাহলে নিরাপত্তা লাভ করবে।” আমি বললাম, আমি তো একটা দ্বীন মেনে চলছি। তিনি বললেনঃ “তোমার দ্বীন সম্পর্কে তোমার চেয়ে আমারই জ্ঞান বেশী আছে।” আমি বললাম, সত্যই কি? তিনি উত্তরে বললেনঃ “সম্পূর্ণরূপে সত্য। তুমি কি রাকূসিয়া’র অন্তর্ভুক্ত নও? তুমি কি তোমার কওমের নিকট থেকে ট্যাক্স আদায় কর না?” আমি জবাব দিলাম, হ্যাঁ, এ কথা সত্য বটে। তিনি বললেনঃ “তোমার ধর্মে এটা তোমার জন্যে হালাল নয়।” তার এ কথা শুনামাত্রই আমি তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গেলাম। অতঃপর তিনি আমাকে বললেনঃ “তোমাকে ইসলাম গ্রহণে কিসে বাধা দিচ্ছে তা আমি বেশ ভাল রূপেই জানি। দেখো, তুমি শুধু এ কারণেই বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে যে, মুসলিমরা খুবই দুর্বল ও শক্তিহীন। সারা আরববাসী তাদেরকে ঘিরে রয়েছে। কিন্তু বলতো তুমি হীরা (রাজ্য) চেনো কি?” আমি উত্তরে বললাম, আমি হীরা (রাজ্য) কোন দিন দেখিনি বটে, তবে শুনেছি নিশ্চয়ই। তিনি তখন বললেনঃ “যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! আল্লাহ তা'আলা এই দ্বীনকে পূর্ণ করবেন। এমন কি একজন পর্দানশীল নারী উস্ত্রীর উপর আরোহণ করে হীরা হতে যাত্রা শুরু করবে। এবং কারো আশ্রয় ছাড়াই নিরাপদে মক্কা পৌছে যাবে ও বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করবে। আল্লাহর কসম! তোমরা কিসরার (পারস্য সম্রাট) কোষাগারগুলো জয় করে নিবে।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, কিসরা ইবনে হরমূযের (কোষাগার)? তিনি উত্তরে বললেনঃ “হ্যাঁ, হ্যাঁ, কিসরা ইবনে হরমূযের (কোষাগার)। তোমাদের কাছে ধন-সম্পদের এতো প্রাচুর্য হবে যে, তা গ্রহণ করার লোক পাওয়া যাবে না।” এ হাদীসটি বর্ণনা করার সময় আদী (রাঃ) বলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ঐ ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হয়ে গেছে। দেখো, আজ হীরা সাম্রাজ্য হতে উষ্ট্রারোহীরা নির্ভয়ে ও কারো আশ্রয় ছাড়াই নিরাপদে মক্কায় পৌছে বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করছে। সত্যবাদী ও সত্যায়িত নবী (সঃ)-এর দ্বিতীয় ভবিষ্যদ্বাণীও সত্যে পরিণত হয়েছে। কিসরার কোষাগার বিজিত হয়েছে। আমি স্বয়ং ঐ সেনাবাহিনীতে ছিলাম যারা ইরানের ইট দ্বারা ইট বাজিয়েছে, অট্টালিকাগুলো মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে এবং কিসরার গুপ্ত কোষাগার দখল করে নিয়েছে। আল্লাহর শপথ! আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, সত্যবাদী ও সত্যায়িত রাসূল (সঃ)-এর তৃতীয় ভবিষ্যদ্বাণীও সত্যে পরিণত হবে।”
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “দিন ও রাত্রির গমনাগমন অব্যাহত থাকবে যে পর্যন্ত না পুনরায় ‘লাত’ ও ‘উযযা’র ইবাদত শুরু হবে। আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) (আরবী)-এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত আমার ধারণা তো এই রয়েছে যে, এটা পূর্ণ কথা।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “হ্যা, এটা পূর্ণ হয়ে গেছে এবং যতদিন পর্যন্ত আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা হবে তা পূর্ণই থাকবে। অতঃপর তিনি একটা পবিত্র বায়ু প্রেরণ করবেন, যার ফলে যে ব্যক্তির অন্তরে এক সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান থাকবে তার প্রাণবায়ু নির্গত হয়ে যাবে। তারপর শুধুমাত্র ঐ লোকগুলোই অবশিষ্ট থাকবে যাদের মধ্যে কোন পুণ্য ও কল্যাণ নিহিত থাকবে না। সুতরাং তারা তাদের বাপ দাদাদের ধর্মের দিকে ফিরে যাবে।” (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) তাঁর সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings