Surah At Tawbah Tafseer
Tafseer of At-Tawbah : 1
Saheeh International
[This is a declaration of] disassociation, from Allah and His Messenger, to those with whom you had made a treaty among the polytheists.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
১-২ নং আয়াতের তাফসীর:
এই সম্মানিত সূরাটি হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর নাযিলকৃত সর্বশেষ সূরা । সহীহ বুখারীতে বারা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সর্বশেষ আয়াত হচ্ছে- (আরবী) (৪:১৭৬) এই আয়াতটি এবং সর্বশেষ সূরা হচ্ছে সূরায়ে বারাআত। (ইমাম বুখারী (রঃ) এটাকে বারা ইবনে আযিব (রাঃ) হতে তাখরীজ করেছেন) এই সূরার প্রথমে বিসমিল্লাহ লিখিত না থাকার কারণ এই যে, সাহাবীগণ আমীরুল মুমিনীন উসমান ইবনে আফফান (রাঃ)-কে অনুকরণ করে কুরআনে এই সূরার পূর্বে বিসমিল্লাহ লিখেননি। সুনানে তিরমিযীতে রয়েছে যে, ইবনে আব্বাস (রাঃ) উসমান (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “আপনি (আরবী)-এর অন্তর্ভুক্ত সূরায়ে আনফালকে (আরবী)-এর অন্তর্ভুক্ত সূরায়ে বারাআতের সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন এবং এ দু’টির মাঝে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ লিখেননি, আর এটাকে সাতটি দীর্ঘ সূরার মধ্যে রেখেছেন, এর কারণ কি?” উসমান (রাঃ) উত্তরে বলেন, কোন কোন সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর একই সাথে কয়েকটি সূরা অবতীর্ণ হতো। যখন কোন আয়াত অবতীর্ণ হতো তখন তিনি লেখকদের কাউকে ডেকে বলতেনঃ “এই আয়াতটিকে অমুক সূরার মধ্যে রেখে দাও যার মধ্যে এর বর্ণনা রয়েছে।” মদীনায় সর্বপ্রথম সূরায়ে আনফাল অবতীর্ণ হয়েছিল এবং সর্বশেষে অবতীর্ণ হয়েছিল সূরায়ে বারাআত। বর্ণনায় এ দুটো সূরার মধ্যে মিল ছিল। তাই আমি ভয় পেলাম যে, না জানি এটা হয়তো সূরায়ে আনফালেরই অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ইনতিকাল হয়ে গেল এবং এ সূরাটি সূরায়ে আনফালের অন্তর্ভুক্ত কি-না তা তিনি বলে গেলেন না। এ জন্যেই আমি দু’টি সূরাকে মিলিতভাবে লিখেছি এবং মধ্যখানে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” লিখিনি। আর এটাকে সাতটি দীর্ঘ সূরার মধ্যে রেখেছি। এই সূরার প্রথম অংশ ঐ সময় অবতীর্ণ হয় যখন নবী (সঃ) তাবূকের যুদ্ধ হতে ফিরে আসছিলেন। ওটা হজ্বের মওসুম ছিল। মুশরিকরা নিজেদের অভ্যাস মত হজ্ব করতে এসে উলঙ্গ হয়ে বায়তুল্লাহ শরীফের চারদিকে তাওয়াফ করতো। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদের সাথে মিলিত হতে অপছন্দ করে আবু বকর (রাঃ)-কে ঐ বছর হজ্বের ইমাম বানিয়ে মক্কা অভিমুখে রওয়ানা করান, যেন তিনি মুসলিমদেরকে হজ্বের আহকাম শিক্ষা দেন এবং মুশরিকদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে, তারা যেন আগামী বছর হজ্ব করতে না আসে। আর জনসাধারণের মধ্যে তিনি যেন সূরা বারাআতেরও ঘোষণা শুনিয়ে দেন। তাঁর পিছনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) আলী (রাঃ)-কেও পাঠিয়ে দেন যে, তার নিকটতম আত্মীয় হিসেবে তিনিও যেন তাঁর পয়গাম পৌঁছিয়ে দেন। এর বিস্তারিত বর্ণনা ইনশাআল্লাহ আসছে।
ঘোষণা হচ্ছে- “এটা হচ্ছে সম্পর্ক ছিন্নতা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর পক্ষ হতে। কেউ কেউ বলেন যে, এই ঘোষণা ঐ চুক্তি ও অঙ্গীকার সম্পর্কে, যার জন্যে কোন সময় নির্দিষ্ট ছিল না বা যাদের সাথে চার মাসের কম সময়ের জন্যে চুক্তি ছিল। কিন্তু যাদের সাথে চুক্তির মেয়াদ দীর্ঘ ছিল ওটা যথা নিয়মে বাকী থেকে যায়। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “তোমরা তাদের অঙ্গীকার বা চুক্তি তাদের মেয়াদ পর্যন্ত পূর্ণ কর।” (৯:৪) হাদীস শরীফেও রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমাদের সাথে যাদের সন্ধি বা চুক্তি রয়েছে, আমরা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ঐ চুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবো।” এই ব্যাপারে আরো উক্তি রয়েছে। কিন্তু এই উক্তিটিই সবচেয়ে বেশী উত্তম ও দৃঢ়। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, যাদের সাথে চুক্তি হয়েছিল, আল্লাহ তাআলা তাদের জন্যে চার মাসের সীমা নির্ধারণ করে দেন। আর যাদের সাথে চুক্তি ছিল না তাদের জন্যে হারাম মাসগুলো অতিক্রান্ত হওয়াকে সীমা নির্ধারণ করেন। অর্থাৎ ১০ই যিলহজ্ব হতে মুহররম মাস শেষ হওয়া পর্যন্ত পঞ্চাশ দিন। এই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে তাদের সাথে যুদ্ধ করার অনুমতি দেয়া হয় যে পর্যন্ত না তারা ইসলাম গ্রহণ করে। আর যাদের সাথে চুক্তি রয়েছে তারা ১০ই যিলহজ্ব ঘোষণার দিন থেকে নিয়ে ২০শে রবিউল আখির পর্যন্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। অতঃপর ইচ্ছা করলে মুকাবিলা করবে। এটা হচ্ছে নবম হিজরীর ঘটনা। রাসূলুল্লাহ (সঃ) আবূ বকর (রাঃ)-কে হজ্বের আমীর নিযুক্ত করে পাঠিয়েছিলেন এবং আলী (রাঃ)-কে কুরআনের এই সূরাটির ত্রিশটি অথবা চল্লিশটি আয়াতসহ পাঠিয়ে দেন যে, তিনি যেন চার মাসের মেয়াদের ঘোষণা করেন। তিনি তাদের তাঁবুতে, ঘরে এবং মনজিলে গিয়ে গিয়ে এ আয়াতগুলো তাদেরকে শুনিয়ে দেন। সাথে সাথে তাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর এ নির্দেশও শুনিয়ে দেন যে, এ বছরের পর কোন মুশরিক যেন হজ্ব করতে না আসে এবং কোন উলঙ্গ ব্যক্তি যেন বায়তুল্লাহ তাওয়াফ না করে। খুযাআ' গোত্র, মুদলিজ কবিলা এবং অন্যান্য সকল গোত্রের জন্যেও এই ঘোষণাই বলবৎ ছিল। তাবুক থেকে প্রত্যাবর্তন করে রাসূলুল্লাহ (সঃ) হজ্ব করার ইচ্ছা করেছিলেন। কিন্তু সেখানে মুশরিকদের আগমন ও উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফকরণ তার নিকট অপছন্দনীয় ছিল। এই জন্যে তিনি হজ্ব করলেন না এবং ঐ বছর আবু বকর (রাঃ) ও আলী (রাঃ)-কে প্রেরণ করেন। তাঁরা যিল মাজাযের বাজারসমূহে প্রত্যেক অলিতে-গলিতে, প্রত্যেক তাঁবুতে এবং মাঠে ময়দানে ঘোষণা করে দেন যে, চার মাস পর্যন্ত মুশরিকদেরকে অবকাশ দেয়া হলো, এর পরেই মুসলিমদের তরবারী তাদের উপর আঘাত হানবে। ঐ চার মাস হচ্ছে যিলহজ্ব মাসের বিশ দিন, মুহররম, সফর ও রবিউল আওয়াল এই তিন মাস পুরো এবং রবিউল আখির মাসের ১০ দিন। যুহরী (রঃ) বলেন যে, শাওয়াল থেকে মুহররম মাস পর্যন্ত অবকাশ ছিল। কিন্তু এই উক্তিটি গারীব বা দুর্বল এবং এটা মনেও ধরে না যে, হুকুম পৌছার পূর্বেই মেয়াদের গণনা কিভাবে হতে পারে?
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings