Surah Al Anfal Tafseer
Tafseer of Al-Anfal : 70
Saheeh International
O Prophet, say to whoever is in your hands of the captives, "If Allah knows [any] good in your hearts, He will give you [something] better than what was taken from you, and He will forgive you; and Allah is Forgiving and Merciful."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬৭-৭১ নং আয়াতের তাফসীর:
يُثْخِنَ পরাভূত হওয়া, নির্মূল হওয়া।
৬৭ নং আয়াতের শানে নুযূল:
ইবুন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: বদরের দিন যখন বন্দীরা বন্দী হল সে সকল বন্দীদের মধ্যে আব্বাসও ছিলেন। তাকে বন্দী করেছিল একজন আনসারী। আনসারীর ধারণা ছিল তাকে হত্যা করা হবে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ অবস্থা অবগত ছিলেন। তিনি (সাঃ) বললেন: আমার চাচা আব্বাসের কারণে গত রাতে ঘুমাতে পারিনি, আর আনসাররা ধারণা করেছে তারা তাকে হত্যা করবে। উমার (রাঃ) বললেন: আমি কি তাদের কাছে যাব? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) উত্তরে বললেন: হ্যাঁ। উমার (রাঃ) আনসারীর নিকট আসলেন এবং বললেন: আব্বাসকে ছেড়ে দাও। আনসারীরা বলল: না। আল্লাহর শপথ! ছাড়ব না। উমার তাদের বললেন: এতে যদি রাসূলের সন্তুষ্টি থাকে? তারা বলল: এতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সন্তুষ্টি থাকলে নিন। উমার (রাঃ) তাকে নিলেন। যখন তার হাতে চলে এল তখন বললেন: হে আব্বাস ইসলাম গ্রহণ কর। তোমার ইসলাম গ্রহণ করা আমার পিতার ইসলাম গ্রহণ করার চেয়ে অধিক প্রিয়। কেননা তুমি ইসলাম গ্রহণ করলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) খুশি হবেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আবূ বকরের সাথে পরামর্শ করলে তিনি বলেছেন: তিনি আপনার আত্মীয়। সুতরাং তাকে ছেড়ে দিন। তারপর উমার (রাঃ)-এর সাথে পরার্মশ করলেন। তিনি বললেন: সকলকেই হত্যা করুন। অবশেষে মুক্তিপণ নিয়ে সকলকে ছেড়ে দিলেন। তখন
(مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَكُونَ لَهُ أَسْرَى حَتَّي يُثْخِنَ فِي الْأَرْضِ)
আয়াতটি নাযিল হয়। (হাকিম: ২/৩২৯, সনদ সহীহ)
প্রকৃত পক্ষে এসব পরামর্শের কারণ হল বদর যুদ্ধ মুসলিমদের প্রথম যুদ্ধ, তখনও জিহাদ সংক্রান্ত সকল হুকুম-আহকাম বিস্তারিত বিবরণ কুরআনে অবতীর্ণ হয়নি। যেমন গনীমতের মাল পেলে কী করতে হবে, বন্দীদের কী করতে হবে ইত্যাদি।
وَلَوْلَا كِتَابٌ مِنَ اللّٰهِ سَبَقَ
‘আল্লাহর পূর্ব বিধান না থাকলে....’ অর্থাৎ গনীমত হালাল হবার বিধান যদি পূর্ব থেকেই আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে তথা লাওহে মাহফূযে লেখা না থাকত তাহলে বন্দীদের থেকে যা নিয়েছো তার জন্য কঠিন শাস্তি তোমাদেরকে পাকড়াও করত। আবূ হুরাইয়াহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নাবী (সাঃ) বলেন: পূববর্তীদের জন্য গনীমতের মাল খাওয়া হারাম ছিল। আকাশ থেকে আগুন এসে তা পুড়িয়ে দিত। যখন বদরের দিন আসল হালাল হবার পূর্বেই লোকেরা গনীমতের মাল নিয়ে টানাটানী করতে লাগল- তখন এ আয়াত নাযিল হয়। (তিরমিযী হা: ৩০৮৫, সহীহ)
আনাস (রাঃ) বলেন: নাবী (সাঃ) বদরের বন্দীদের সম্পর্কে পরামর্শ চাইলেন। তিনি বললেন: আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তোমাদের হস্তগত করে দিয়েছেন। উমার (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাদের গর্দান উড়িয়ে দিন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ মত গ্রহণ করলেন না। আবূ বকর (রাঃ) বললেন: আমি মনে করি তাদের ক্ষমা করে দিয়ে মুক্তিপণ গ্রহণ করি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ক্ষমা করে দিলেন এবং মুক্তিপণ গ্রহণ করলেন। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। (আহমাদ ৩/২৪৩)
(فَكُلُوْا مِمَّا غَنِمْتُمْ حَلَالًا طَيِّبًا)
‘যুদ্ধে যা তোমরা লাভ করেছ তা বৈধ ও উত্তম বলে ভোগ কর’ অর্থাৎ গনীমত হালাল করে দেয়া হল যা পূর্ববর্তীদের জন্য হারাম ছিল। এখন তোমরা হালাল ও পবিত্র রিযিক হিসেবে খেতে পার। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- আমাকে এমন পাঁচটি জিনিস দেয়া হয়েছে যা পূর্বে কোন নাবীকে দেয়া হয়নি। তার মধ্যে একটি হল- আমার জন্য গনীমত হালাল করে দেয়া হয়েছে যা আমার পূর্বে কারো জন্য হালাল ছিল না। (সহীহ বুখারী হা: ৩৩৫)
(قُلْ لِّمَنْ فِيْ أَيْدِيْكُمْ مِّنَ الْأَسْرٰي)
‘তোমাদের করায়ত্ত যুদ্ধবন্দীদেরকে বল: ‘আল্লাহ যদি তোমাদের হৃদয়ে ভাল কিছু দেখেন..’ অর্থাৎ বদরের বন্দীদেরকে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। যারা ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রু। যারা তাদেরকে কষ্ট দিতে, মারতে এবং হত্যা করতে কখনই কোন ক্রটি করেনি; যখনই কোন রকম সুযোগ পেয়েছে তখনই নির্দয়ভাবে অত্যাচার-উৎপীড়ন করেছে, মুসলিমদের হাতে বন্দী হয়ে আসার পর এহেন শত্রুদেরকে প্রাণে বাঁচিয়ে দেয়াটা সাধারণ ব্যাপার ছিল না; এটা ছিল তাদের বিরাট প্রাপ্তি এবং অসাধারণ দয়া ও করুণা। পক্ষান্তরে মুক্তিপণ হিসেবে তাদের কাছ থেকে যে অর্থ গ্রহণ করা হয়েছিল তাও ছিল অতি সাধারণ। এটা আল্লাহ তা‘আলার একান্ত মেহেরবানী যে, এ সাধারণ অর্থ পরিশোধ করতে গিয়ে যে কষ্ট তাদের করতে হয়, তাও তিনি কি চমৎকারভাবে দূর করে দিয়েছেন। উল্লিখিত আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে- আল্লাহ তা‘আলা যদি তোমাদের মন-মানসিকতায় কোন রকম কল্যাণ দেখতে পান, তবে তোমাদের কাছ থেকে যা কিছু নেয়া হয়েছে তার চেয়ে উত্তম বস্তু দান করবেন। তদুপরি তোমাদের অতীত গুনাহ ক্ষমা করবেন। এখানে خير অর্থ ঈমান ও ইসলাম। অর্থাৎ মুক্তি লাভের পর সেসব বন্দীদের মধ্যে যারা পরিপূর্ণ নিষ্ঠার সাথে ঈমান ও ইসলাম গ্রহণ করবে, তারা যে মুক্তিপণ দিয়েছে, তার চেয়ে অধিক উত্তম বস্তু পেয়ে যাবে। তা হল তাদের অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং পরকালে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। বন্দীদেরকে মুক্তি করে দেয়া সাথে সাথে তাদেরকে এমনভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যে, তারা যেন মুক্তি লাভের পর নিজেদের লাভ-ক্ষতির প্রতি মনোনিবেশ করে। সুতরাং বাস্তব ঘটনার দ্বারা প্রমাণিত যে, তাদের মধ্যে যারা মুসলিম হয়েছিল আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ক্ষমা করে এবং জান্নাতের সুউচ্চ স্থান দান ছাড়াও পার্থিব জীবনে এত অধিক পরিমাণ ধন-সম্পদ দান করেছিলেন, যা তাদেরকে দেয়া মুক্তিপণ অপেক্ষা বহুগুণে উত্তম ও অধিক ছিল।
আর যদি খিয়ানত করতে চায় অর্থাৎ মুখে ইসলাম প্রকাশ করে আর উদ্দেশ্য হয় ধোঁকা দেয়া তাহলে তাদেরকেও তাদের পূর্বে যারা এরূপ করেছিল তাদের মত পাকড়াও করবেন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আব্বাস (সাঃ)-এর ফযীলত জানলাম, তার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা আয়াত অবতীর্ণ করেছেন।
২. সৎ কাজের নিয়ত করার ফযীলত জানলাম।
৩. যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য কিছু ছেড়ে দেবে আল্লাহ তা‘আলা তার বিনিময়ে উত্তম বস্তু দান করবেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings