Surah Al Anfal Tafseer
Tafseer of Al-Anfal : 37
Saheeh International
[This is] so that Allah may distinguish the wicked from the good and place the wicked some of them upon others and heap them all together and put them into Hell. It is those who are the losers.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৩৬-৩৭ নং আয়াতের তাফসীর:
বদরের যুদ্ধে কুরায়েশদের উপর যখন বিপদ পৌঁছে এবং তারা মক্কা প্রত্যাবর্তন করে, আর আবূ সুফিয়ানও কাফেলাসহ মক্কা ফিরে যান তখন আবদুল্লাহ ইবনে আবি রাবিআহ, ইকরামা ইবনে আবি জেহেল, সাফওয়ান। ইবনে উমাইয়া এবং কুরায়েশদের আরো কয়েকজন লোক, যাদের পিতা, পুত্র এবং ভাই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল তারা আবু সুফিয়ানকে বললো এবং ঐ লোকদেরকেও বললো যাদের ব্যবসায়ের মাল ঐ কাফেলায় ছিলঃ “হে কুরায়েশের দল! মুহাম্মাদ (সঃ) তোমাদেরকে নীচে ফেলে দিয়েছে এবং তোমাদের সম্ভ্রান্ত লোকদেরকে হত্যা করেছে। তার সাথে পুনরায় যুদ্ধ করার জন্যে তোমরা এই কাফেলার সমস্ত মাল দিয়ে দাও, যেন আমরা এর মাধ্যমে তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারি।” সুতরাং তারা তাদের সমস্ত মাল দিয়ে দিলো। এ ব্যাপারেই আল্লাহ তা'আলা ... (আরবী)-এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। অর্থাৎ কাফিররা আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত্ত করার উদ্দেশ্যে তাদের মাল-ধন ব্যয় করে। তারা তাদের মাল-ধন ব্যয় করতেই থাকবে, অতঃপর ওটাই তাদের জন্যে দুঃখ ও আফসোসের কারণ হবে এবং তারা পুনরায় পরাজিত হবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে । যাহহাক (রঃ) বলেন যে, এ আয়াতটি আবু সুফিয়ান এবং কুরায়েশদের মাল-ধন খরচ করার ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়নি, বরং আহলে বদরের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছিল। মোটকথা, যে ব্যাপারেই অবতীর্ণ হাক না কেন আয়াতটি সাধারণ, যদিও এর শানে নুযূল বিশিষ্ট হয়ে থাকে। আল্লাহ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, সত্যের পথ অনুসরণকারীদেরকে বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে কাফিররা তাদের ধন-দৌলত ব্যয় করে থাকে। কিন্তু তাদের এই সমুদয় মাল বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং পরিণামে তাদেরকে আফসোস করতে হবে। তারা আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায়, কিন্তু আল্লাহ চান তার নূরকে পূর্ণ করতে-যদিও এটা কাফিরদের কাছে অপছন্দনীয় হয়। আল্লাহ স্বীয় দ্বীনের সাহায্যকারী ও স্বীয় কালেমাকে জয়যুক্তকারী থাকবেন। কাফিরদের জন্যে দুনিয়ায় রয়েছে অপমান ও লাঞ্ছনা এবং আখিরাতে রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। যারা যুদ্ধের ময়দান থেকে জীবিত ফিরেছে তারা তাদের লজ্জাজনক পরিণাম স্বচক্ষে অবলোকন করেছে। আর যারা নিহত হয়েছে তারা তো চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামের অধিবাসী হয়ে গেছে।
(আরবী) হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে- যেন আল্লাহ ভাগ্যবানদের থেকে হতভাগাদেরকে পৃথক করে দেন। অর্থাৎ যেন মুমিনরা কাফিরদের থেকে পৃথক হয়ে যায়। আবার এ সম্ভাবনাও রয়েছে যে, এই পৃথককরণ দ্বারা আখিরাতের পৃথককরণ বুঝানো হয়েছে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “আমি মুশরিকদেরকে বলবো- তোমরা ও তোমাদের শরীকরা তোমাদের স্থানে অবস্থান কর, আমি তাদের মাঝে স্বাতন্ত্র্য আনয়ন করবো।” অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেনঃ ' “সেই দিন তারা পৃথক পৃথক হয়ে যাবে।” আর এক জায়গায় আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “হে অপরাধীরা! আজ তোমরা (মুমিনদের হতে) পৃথক হয়ে যাও।” অথবা এর দ্বারা দুনিয়াতেই পৃথক হওয়া উদ্দেশ্য। তা এভাবে যে, মুমিনদের আমল আলাদা এবং কাফিরদের আমল আলাদা। আর (আরবী)-এর (আরবী) টি বা কারণ সম্পৰ্কীয় হতে পারে। অর্থাৎ পাপ কার্যের উপর মাল খরচ করার কারণে আল্লাহ তা'আলা ভাল হতে মন্দকে পৃথক করে দিয়েছেন। অর্থাৎ এই স্বাতন্ত্র্য আনয়নের জন্যে যে, কাফিরদের সাথে যুদ্ধ করার ব্যাপারে কে আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করছে এবং কে এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পাপী হয়ে যাচ্ছে। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ দুটো সেনাবাহিনী মুখোমুখী হওয়ার সময় তোমাদের উপর যা কিছু পৌঁছেছিল তা আল্লাহর হুকুমেই ছিল, যেন তিনি মুমিনদেরকেও দেখে নেন। আর ঐ লোকদেরকেও দেখে নেন যারা কপটতাপূর্ণ কাজ করেছে। তাদেরকে বলা হয়েছিল- এসো, আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর অথবা শত্রুদের প্রতিরোধকারী হয়ে যাও। তারা বললো- “যদি আমরা কোন নিয়মিত যুদ্ধ দেখতাম তবে অবশ্যই তোমাদের সঙ্গী হয়ে যেতাম।” আল্লাহ তাআলা আর এক জায়গায় বলেনঃ “তোমরা কি ধারণা কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ এখন পর্যন্ত আল্লাহ তাদেরকে তো দেখেই নেননি যারা তোমাদের মধ্যে জিহাদ করেছে এবং তাদেরকেও দেখেননি যারা জিহাদে দৃঢ়পদ থাকে।” মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ আল্লাহ মুমিনদের এ অবস্থায় রাখতে চান না যে অবস্থায় তোমরা এখন রয়েছে, যে পর্যন্ত না তিনি অপবিত্রকে পবিত্র হতে পৃথক করেন এবং আল্লাহ এরূপ অদৃশ্য বিষয় তোমাদেরকে অবহিত করেন না।” এর দৃষ্টান্ত সূরায়ে বারাআতেও রয়েছে। সুতরাং এ আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছে- আমি তোমাদেরকে কাফিরদের সাথে ভিড়িয়ে দিয়ে পরীক্ষা করবো। তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করবে এবং তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের ধন-মাল খরচ করবে। এটা শুধু এই পৃথককরণের জন্যে যে, অপবিত্র কারা এবং পবিত্র কারা (আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে একটা জিনিসের উপর একটা জিনিসকে একত্রিত করা। যেমন মেঘ সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “অতঃপর ঐ মেঘকে তিনি স্তরে স্তরে সাজিয়ে দেন।” (২৪:৪৩) (আরবী) অর্থাৎ “অতঃপর তিনি তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন, ঐসব লোকই হচ্ছে চরম ক্ষতিগ্রস্ত লোক।"
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings