Surah Al A'raf Tafseer
Tafseer of Al-A'raf : 199
Saheeh International
Take what is given freely, enjoin what is good, and turn away from the ignorant.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৯৯-২০০ নং আয়াতের তাফসীর:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন: জনগণের যে অতিরিক্ত সম্পদ রয়েছে এবং যে সম্পদ তারা নিজেরাই তোমার কাছে নিয়ে আসে তুমি (নাবী) তা গ্রহণ কর। সূরা তাওবার ফরয যাকাত অবতীর্ণ হবার পূর্বে এ বিধানই ছিল। (ইবনু কাসীর, ৩/৬৮০)
অন্যান্য মুফাসসিরগণ এ থেকে চারিত্রিক নির্দেশনা অর্থাৎ ক্ষমা করার অর্থ নিয়েছেন। ইমাম ইবনু জারীর ও ইমাম বুখারী (রাঃ) প্রভৃতি এ অর্থকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
ইমাম বুখারী এ আয়াতের ব্যাখ্যায় উমার (রাঃ) থেকে একটি ঘটনা তুলে ধরেন। তা হল: একদা উয়াইনাহ বিন হিসন উমার (রাঃ)-এর খিদমতে হাজির হন ও সমালোচনা করতে শুরু করেন যে, আপনি আমাদের পূর্ণ প্রাপ্য দেন না আর আমাদের মাঝে ইনসাফও করেন না। উমার (রাঃ) রাগান্বিত হয়ে যান। এই পরিস্থিতি দেখে উমারের পরামর্শদাতা হুর বিন কায়িস (রাঃ) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-কে আদেশ করেন:
(خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجٰهِلِيْنَ)
“তুমি ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বন কর, সৎকার্যের নির্দেশ দাও এবং অজ্ঞদেরকে এড়িয়ে চল।” সাথে সাথে উমার (রাঃ) কুরআনের সামনে আত্মসমর্পণ করেন। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৪২)
আবদুল্লাহ বিন যুবাইর (রাঃ) বলেন:
(خُذِ الْعَفْوَ)
আয়াতটি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর চরিত্রের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। (সহীহ বুখারী হা: ৪৬৪৩)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ওপর যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন: এটা কি হে জিবরীল? উত্তরে তিনি বললেন: যিনি আপনার ওপর জুলুম করবে তাকে ক্ষমা করা আর যিনি আপনার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে তাকে প্রদান করতে এবং যিনি সম্পর্ক ছিন্ন করবে তার সাথে সম্পর্ক বহাল রাখতে আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিয়েছেন। (ইবনু জারীর, ১৫৫৪৮, কুরতুবী: ৭/৩২৯, সহীহ)
কতক আলিমগণ বলেছেন: মানুষ দুই প্রকার ১. সৎ লোক, এ সকল সৎ লোকের সৎ আচরণ গ্রহণ কর, তাদের ওপর সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু চাপিয়ে দিও না। ২. খারাপ লোক, তাদেরকে ভাল কাজের আদেশ দাও। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِدْفَعْ بِالَّتِيْ هِيَ أَحْسَنُ السَّيِّئَةَ ط نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَصِفُوْنَ وَقُلْ رَّبِّ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ هَمَزٰتِ الشَّيٰطِيْنِ)
“মন্দের মোকাবেলা কর যা উত্তম তা দ্বারা; তারা যা বলে আমি সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত। বল: ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা হতে।” (সূরা মু’মিনূন ২৩:৯৬-৯৭)
(وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ)
‘যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে’ এরূপ আরো দু’টি আয়াত রয়েছে। একটি সূরা মু’মিনূন-এর ৯৭, ৯৮ নং আয়াতে, অন্যটি সূরা হা-মীম সিজদাহ ৩৬ নং আয়াতে। এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা পাপাচারী মানুষদের সাথে মুয়ামালাত/উঠা-বসা লেনদেন ইত্যাদি করার দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন তবে উত্তম পন্থায়। কেননা উত্তম পন্থা অবলম্বন করলে আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছায় তা প্রতিহতকরণে যথেষ্ট হবে। এ জন্য আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(فَإِذَا الَّذِيْ بَيْنَكَ وَبَيْنَه۫ عَدَاوَةٌ)।
তারপর তিনি জিন শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
কেননা তাদের সাথে সৎ আচরণে তাদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কেননা তারা সর্বদা তোমার ধ্বংস ও বিনাশ চায়।
نَزْغٌ অর্থ কুমন্ত্রণা, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: তোমাদের কারো কাছে শয়তান এসে বলে: কে এরূপ সৃষ্টি করেছে? কে এরূপ সৃষ্টি করেছে? এমনকি তাকে বলে তোমার আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? যখন এ পর্যায়ে পৌঁছে যাবে তখন শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে। (সহীহ বুখারী হা: ৩২৭৬, সহীহ মুসলিম হা: ১৩৪)
আল্লামা ইবনু জারীর (রাঃ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন: হয়তো শয়তান তোমাকে মূর্খদের থেকে এড়িয়ে চলতে বাধা দেবে আর তাদের থেকে প্রতিশোধ নিতে প্রেরণা যোগাবে। এক্ষেত্রে তুমি আল্লাহ তা‘আলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. উত্তম আখলাকে ভূষিত হবার নির্দেশ পেলাম।
২. ক্ষমা মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করে।
৩. শয়তানের কুমন্ত্রণা অনুভব করলে আল্লাহ তা‘আলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা আবশ্যক।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings