Surah Al A'raf Tafseer
Tafseer of Al-A'raf : 165
Saheeh International
And when they forgot that by which they had been reminded, We saved those who had forbidden evil and seized those who wronged, with a wretched punishment, because they were defiantly disobeying.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
১৬৪-১৬৬ নং আয়াতের তাফসীর:
ইরশাদ হচ্ছে যে, এই জনপদবাসী তিন ভাগে ভাগ হয়েছিল। প্রথম প্রকার হচ্ছে ঐসব লোক যারা শনিবারের দিন মাছ ধরার কৌশল অবলম্বন করতঃ নিষিদ্ধ কাজ করে বসেছিল। যেমন সূরায়ে বাকারায় আলোচিত হয়েছে। দ্বিতীয় প্রকার হচ্ছে ঐ লোকেরা যারা ঐ পাপী লোকদেরকে ঐ পাপ কার্য করতে নিষেধ করেছিল এবং নিজেরা ঐ কাজ থেকে দূরে রয়েছিল। আর তৃতীয় প্রকার হচ্ছে ঐ দল যারা এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরব ছিল। যারা নিজেরা ঐ কাজে লিপ্ত হয়নি বটে, কিন্তু যারা ঐ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল তাদেরকে নিষেধও করেনি। বরং যারা নিষেধ করেছিল তাদেরকে তারা বলেছিলঃ “যে লোকদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করতে চান বা শাস্তি দিতে চান তাদেরকে উপদেশ দিয়ে লাভ কি? তোমরা তো জানছো যে এরা শাস্তি পাওয়ার যোগ্য হয়ে গেছে। সুতরাং এদের ব্যাপারে উপদেশ মোটেই ক্রিয়াশীল হবে না।” নিষেধকারীরা জবাবে বলেছিলঃ “আমরা তো কমপক্ষে আল্লাহর কাছে এ কৈফিয়ত দিতে পারবো যে, আমরা তাদেরকে নিষেধ করেছিলাম। কেননা, ভাল কাজের আদেশ করা এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা কর্তব্য তো বটে। কেউ কেউ মায়ূজেরাতান শব্দকে মায়ূজেরাতুন পড়েছেন। অর্থাৎ এটা ওর । আর মায়ূজেরাতান পড়লে অর্থ হবে- “আমরা ওযরের খাতিরে নিষেধ করছি। আর এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই যে, তারা হয়তো এ কাজ থেকে বিরত থাকবে এবং আল্লাহ তাআলার কাছে তাওবা করবে।” আল্লাহ পাক বলেন-কিন্তু তারা যখন তাদের উপদেশ গ্রহণ করলো না, বরং ঐ পাপ কার্য করতেই থাকলো তখন ঐ কাজ করতে নিষেধকারীদেরকে তো আমি বাঁচিয়ে নিলাম, কিন্তু ঐ পাপ কার্যে লিপ্ত যালিমদেরকে আমি পাকড়াও করলাম এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করলাম।
এখানে নিষেধকারীদের মুক্তি ও পাপীদের ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যারা ঐ পাপকার্যে জড়িতও হয়নি এবং নিষেধও করেনি তাদের ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন করা হয়েছে। কেননা, কাজ যেমন হবে প্রতিদান তেমনই হবে। সুতরাং তারা প্রশংসার যোগ্য হলো না কারণ তারা প্রশংসার যোগ্য কাজ করেনি। আর তারা নিন্দারও পাত্র হলো না, কেননা, তারা ঐ পাপকার্যে জড়িত হয়নি। তবে তারা মুক্তি পেয়েছিল কি ধ্বংস হয়েছিল এ ব্যাপারে ইমামদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, মাছ শনিবারে খুবই বেশী আসতো, কিন্তু অন্যান্য দিনে আসতো না। এভাবে কিছুদিন কেটে যাওয়ার পর তাদের মধ্যে কতক লোক শনিবারও মাছ ধরতে শুরু করে। কতক লোক তাদেরকে বলেঃ “আজকের দিন তো মাছ ধরা হারাম।” কিন্তু তাদের অবাধ্যতা ও ঔদ্ধত্যপনা ঠিকই থাকে। কিন্তু কতক লোক বরাবর নিষেধ করতেই থাকে। যখন এভাবেও কিছু দিন কেটে গেল তখন নিষেধকারীদেরকে তাদেরই মধ্যকার একটি দল বললোঃ এই দুষ্টদেরকে নিষেধ করে লাভ কি? আল্লাহর শাস্তি তাদের প্রাপ্য হয়ে গেছে! সুতরাং এখন আর তাদেরকে উপদেশ দিচ্ছ কেন? এই লোকগুলো নিষেধকারীদের তুলনায় আল্লাহর পথে বেশী কঠোর ও রাগান্বিত ছিল। তখন নিষেধকারীরা তাদেরকে বলেছিল, “আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন! আমরা ওযর পেশ করছি।” তাহলে এই দু’টি দলই যেন নিষেধকারী দল ছিল। সুতরাং যখন আল্লাহর শাস্তি নাযিল হয়ে গেল তখন এই দুটি দলই রক্ষা পেলো।
ইকরামা (রাঃ) বলেন, আমি একদা হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট গমন করি। সেই সময় তাঁর চক্ষু দু'টি অশ্রুসিক্ত ছিল এবং দেখি যে, কুরআন কারীম তার ক্রোড়ে রয়েছে। আমি সময়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তার সামনে বসে পড়লাম এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ “কুরআনের এ পৃষ্ঠা আমাকে কাঁদাচ্ছে।” তিনি সূরায়ে আরাফ পাঠ করছিলেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আয়লা কি জান কি?” আমি উত্তরে বললামঃ হ্যা। এবার তিনি বলতে শুরু করলেনঃ আয়লায় ইয়াহূদীরা বাস করতো। শনিবার মৎস্য শিকার তাদের উপর নিষিদ্ধ ছিল। তাদের পরীক্ষার জন্যে মাছগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, ওরা যেন শুধু শনিবারেই বের হয়। শনিবারের দিন নদী মাছে পরিপূর্ণ হয়ে যেতো। মোটাতাজা ও ভাল ভাল অধিক সংখ্যক মাছ পানির উপর লাফালাফি করতো। শনিবার ছাড়া অন্যান্য দিন কঠিন চেষ্টার পর কিছু মাছ পাওয়া যেতো। কিছুদিন পর্যন্ত ঐ লোকগুলো আল্লাহর আদেশের মর্যাদা দিলো এবং ঐ দিনে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলো। অতঃপর শয়তান তাদের অন্তরে এই অনুভূতি জাগিয়ে দিলো যে, শনিবার দিন মাছ খাওয়া নিষিদ্ধ বটে কিন্তু ধরা নিষিদ্ধ নয়। সেই দিনে ধরে অন্য দিনে খাওয়া যেতে পারে। একটি দলের অন্তরে এই খেয়াল জেগেই গেল। কিন্তু অন্য দল তাদেরকে বললোঃ “খাওয়া ও ধরা উভয়ই নিষিদ্ধ। মোটকথা, যখন জুমআর দিন আসলো তখন ঐ লোকগুলো নিজেদের স্ত্রী ও শিশু সন্তানদেরকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। তাদের ডান দিকে ছিল নিষেধকারী দলটি এবং বাম দিকে ছিল ঐ দলটি যারা নীরবতা অবলম্বন করেছিল। ডানদিকের দলটি বললোঃ “দেখো, আমরা তোমাদেরকে নিষেধ করছি, না জানি হয়তো এরূপ ঘটবে যে, তোমরা আল্লাহর শাস্তির কবলে পড়ে যাবে। তখন বাম দিকের দলটি নিষেধকারী দলটিকে বললো, তোমরা এমন লোকদেরকে কেন উপদেশ দান করছো যারা ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আল্লাহর শাস্তির কবলে পতিত হবে? এরা কি তোমাদের কথা মানবে? ডান দিকের লোকেরা উত্তরে বললো, “আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমরা এ জন্যেই এদেরকে নিষেধ করছি যে, হয়তো তারা এ কাজ থেকে বিরত থাকবে। আমাদের তো আন্তরিক ইচ্ছা এটাই যে, তারা যেন আল্লাহর আযাবে পাকড়াও না হয়। যদি তারা এ কাজ থেকে বিরত না হয় তবে আল্লাহ আমাদেরকে তো ক্ষমা করবেন!” ঐলোকগুলো কিন্তু ঐ পাপ কাজের উপর কায়েম থাকলো। নিষেধকারীরা তখন তাদেরকে বললো, “হে আল্লাহর শক্ররা! শেষ পর্যন্ত তোমরা মানলেই না। আল্লাহর কসম! আমাদের ভয় হচ্ছে যে, এই দিনের মধ্যেই হয়তো তোমাদেরকে যমীনে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে, বা তোমাদের উপর পাথর বর্ষিত হবে অথবা অন্য কোন শাস্তি তোমাদের উপর এসে পড়বে।” এখন এ নিষেধকারী দল এবং নীরবতা অবলম্বনকারী দল আল্লাহর শাস্তির ভয়ে শহরের বাইরে অবস্থান করতে থাকলো। আর পাপীরা শহরের মধ্যেই রয়ে গেল। তারা শহরের সদর দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিলো । অতঃপর বাইরে অবস্থানকারীরা সকালেই নগর প্রাচীরের দরজার কাছে পৌছে গেল। লোকগুলো বাইরে বের হয়নি বলে দরজা ভিতর থেকে বন্ধই ছিল। বহুক্ষণ ধরে তারা দরজায় করাঘাত করলো। বহু ডাকাডাকি করলো । কিন্তু কোন উত্তর আসলো না। তখন তারা নগর প্রাচীরের উপর সিঁড়ি লাগিয়ে উপরে উঠলো। উঠে দেখলো যে, তারা সব বানরে পরিণত হয়েছে। তাদের লম্বা লম্বা লেজ রয়েছে। এখন তারা সদর দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো । ঐ বানরগুলো তাদের বন্ধু বান্ধবদেরকে চিনে ফেললো। কিন্তু তারা তাদের বন্ধু বানরদেরকে চিনতে পারলো না। বানরগুলো তাদের কাছে এসে তাদের পায়ের উপর লুটিয়ে পড়লো । মানুষগুলো। তাদেরকে বললোঃ “আমরা কি তোমাদেরকে নিষেধ করিনি?” তারা মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালো। অতঃপর হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতটি পাঠ করলেনঃ “যখন তারা উপদেশ কবূল করলো না তখন আমি নিষেধকারীদেরকে বাঁচিয়ে নিলাম এবং ঐ পাপী অত্যাচারীদেরকে শাস্তিতে জড়িয়ে ফেললাম।” হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ “আমি তো জানতে পারছি যে, নিষেধকারীরা মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু অন্যদের ব্যাপারে এটা বুঝছি না। বিপদ তো এটাই যে, আমরাও লোকদেরকে পাপ করতে দেখছি, অথচ কিছুই বলছি না।” ইকরামা (রঃ) বলেন- তখন আমি বললাম, আমি আপনার উপর উৎসর্গীকৃত হই। এই দ্বিতীয় দলটিও তো ঐ পাপীদের উপর খুবই অসন্তুষ্ট ছিল এবং তাদের বিরুদ্ধাচরণ করতো। তারা বলতঃ “ধ্বংসের সম্মুখীন এই দলটিকে উপদেশ দিয়ে লাভ কি?" এর দ্বারা এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, এই দ্বিতীয় দলটিকে শাস্তিতে শরীক করা যেতে পারে না। আমার এ কথা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এতো খুশী হলেন যে, তিনি আমাকে দু'টি ভাল কাপড় পুরস্কার দিলেন।” (এটা আবদুর রাযযাক (রঃ) হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে তাখরীজ করেছেন)
কথিত আছে যে, শনিবার দিন মাছগুলোকে নদীর ধারে ধারে বহু সংখ্যায় দেখা যেতো। আর যখন সন্ধ্যা হয়ে যেতো তখন পরবর্তী শনিবার না আসা পর্যন্ত মাছগুলোকে আর দেখা যেতো না। একদা একটি লোক জালের দড়ি ও পেরেক। নিয়ে নদীতে গেল এবং জাল পেতে আসলো। শনিবার দিন একটি বড় মাছ। জালে আটকা পড়ে গেল। শনিবার গত হয়ে যখন রবিবারের রাত আসলো তখন সে মাছটি ধরে এনে রান্না করলো এবং খেতে লাগলো। রান্না করা মাছের সুগন্ধ পেয়ে লোকেরা তার কাছে দৌড়িয়ে আসলো এবং তাকে জিজ্ঞেস করলে সে অস্বীকার করলো যে, সে একটি মাছ ধরে এনেছিল। পরবর্তী শনিবার আসলে সে পুনরায় ঐ কাজই করলো এবং রবিবারে ওটাকে ভূনা করে খেলো। মাছের গন্ধ পেয়ে লোকেরা পুনরায় তার কাছে দৌড়িয়ে আসলো এবং সে মাছ কোথায় পেলো তা জিজ্ঞেস করলো। সে উত্তরে বললোঃ “আমি যা করছি তোমরাও তা-ই কর।” তারা জিজ্ঞেস করলোঃ “তুমি কি কি করে থাক?” উত্তরে সে নিজের কৌশলের কথা বলে দিলো। অন্যান্য লোকেরাও তখন ঐ কৌশলের উপর কাজ করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত কাজটি সাধারণভাবে হতে লাগলো । রব্য নামে তাদের একটি শহর ছিল। রাত্রিকালে তারা শহরটির দরজা বন্ধ করে রাখতো । রাতের মধ্যেই তাদের আকৃতির পরিবর্তন ঘটে। তাদের প্রতিবেশী গ্রামের লোকেরা, যারা জীবিকা অন্বেষণে সকালে ঐ শহরের মধ্যে প্রবেশ করতো, দরজা বন্ধ দেখলো। বহুক্ষণ ধরে ডাকলো, কিন্তু কোন উত্তর পেলো না। বাধ্য হয়ে তারা দেয়ালের উপর চড়লো। দেখে যে, তারা বানরে পরিণত হয়েছে। তারা লোকগুলোর নিকটে এসে তাদেরকে জড়িয়ে ধরলো। সূরায়ে বাকারায় আমরা এটা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি। ওখানে দেখে নেয়াই যথেষ্ট।
অন্য একটি উক্তি এও রয়েছে যে, নীরবতা অবলম্বনকারী দলটিও শাস্তিতে পতিত হয়েছিল । কেননা, তারা পাপীদেরকে মাছ ভাজতে ও খেতে দেখেও নিষেধ করতো না। শুধু একটি দল নিষেধ করেছিল। শেষ পর্যন্ত পাপীদের কাজ সাধারণভাবে অনুসৃত হতে শুরু হয়েছিল। তখন নীরবতা অবলম্বনকারী দলটি নিষেধকারী দলটিকে বলেছিলোঃ “এই অত্যাচারী দলটিকে আর নিষেধ করছো কেন? তারা তো কঠিন শাস্তিতে জড়িত হয়ে পড়বেই। আমরা তো তাদের এই আমলের প্রতি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট।” হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এই তিনটি দলের মধ্যে শুধুমাত্র নিষেধকারী দলটি মুক্তি পেয়েছিল। অবশিষ্ট দুটি দলই শাস্তিতে জড়িত হয়েছিল কিন্তু ইকরামা (রঃ)-এর উপরোক্ত কথা বলার পর মনে হয় তিনি তাঁর এই উক্তি হতে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। কেননা, তিনি ইকরামা (রঃ)-কে খুশী হয়ে দু’টি পোশাক পুরস্কার দিয়েছিলেন। তাঁর এ উক্তির চাইতে প্রত্যাবর্তনকৃত উক্তিটিই বেশী উত্তম যে, নীরবতা অবলম্বনকারী লোকেরাও মুক্তি পেয়েছিল। কেননা, আল্লাহ পাকের, (আরবী) -এ কথা দ্বারাও এটাই প্রমাণিত হয় যে, ঐ পাপীদের ছাড়া অবশিষ্ট দু'টি দলই মুক্তি পেয়েছিল। (আরবী) শব্দের অর্থ (আরবী) (কঠিন) বা (আরবী) (যন্ত্রণাদায়ক)। এ অর্থগুলোর ভাবার্থ প্রায় একই। আল্লাহ তাআলাই সর্বাপেক্ষা উত্তম জ্ঞানের অধিকারী। (আরবী) শব্দের অর্থ লাঞ্ছিত ও ঘৃণিত।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings