Surah Al A'raf Tafseer
Tafseer of Al-A'raf : 12
Saheeh International
[ Allah ] said, "What prevented you from prostrating when I commanded you?" [Satan] said, "I am better than him. You created me from fire and created him from clay."
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১১-২৫ নং আয়াতের তাফসীরঃ
(فَبِمَآ أَغْوَيْتَنِيْ)
অর্থাৎ আমাকে পথভ্রষ্ট করার কারণে।
(مَذْءُوْمًا مَّدْحُوْرًا)
অর্থাৎ নিন্দনীয়, বিতাড়িত ও ক্রোধভাজন।
(فَدَلّٰهُمَا بِغُرُوْرٍ)
অর্থাৎ ধোঁকা দিয়ে ধীরে ধীরে তাদের দু’জনকে গাছের নিকটবর্তী করল, অবশেষে তারা গাছের ফল খেল।
এ আয়াতগুলো আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি, ফেরেশতা কর্তৃক তাকে সিজদাহ করানো, জান্নাতে বসবাস, শয়তানের কুমন্ত্রণায় নিষেধকৃত বিষয়ে লিপ্ত হওয়া, জান্নাত থেকে বহিস্কার, আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাওবাহ করা এবং আল্লাহ তা‘আলার সাথে শয়তানের প্রতিশ্র“তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ সবের অধিকাংশ বিষয় সূরা বাক্বারার শুরুতে (৩৪-৩৯ নং আয়াতে) আলোচনা করা হয়েছে।
(وَلَقَدْ خَلَقْنٰكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنٰكُمْ)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَا۬ئِكَةِ إِنِّيْ خَالِقٌۭ بَشَرًا مِّنْ صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُوْنٍ - فَإِذَا سَوَّيْتُه۫ وَنَفَخْتُ فِيْهِ مِنْ رُّوْحِيْ فَقَعُوْا لَه۫ سٰجِدِيْنَ)
“স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বললেন: ‘আমি গন্ধযুক্ত কর্দমের শুষ্ক ঠন্ঠনা মৃত্তিকা হতে মানুষ সৃষ্টি করেছি; ‘যখন আমি তাকে পূর্ণমাত্রায় বানিয়ে দেব এবং তাতে আমার পক্ষ হতে রূহ সঞ্চার করব তখন তোমরা তার প্রতি সিজ্দাবনত হও’।” (সূরা হিজর ১৫:২৮-২৯)
(مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ)
‘আমি যখন তোমাকে আদেশ দিলাম তখন কিসে তোমাকে সিজদাহ দিতে বারণ করল?’ অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বললেন, আদমকে নিজের উভয় হাতে সৃষ্টি করেছেন, তারপর ফেরেশতাদেরকে সিজদাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قَالَ يٰٓإِبْلِيْسُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ ط أَسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنْتَ مِنَ الْعَالِيْنَ)
“তিনি (আল্লাহ) বললেন: হে ইবলীস! আমি যাকে নিজের দু’হাতে সৃষ্টি করেছি, তাকে সিজদাহ করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি কি অহঙ্কার করলে, না তুমি শ্রেষ্ঠ মর্যাদাশীলদের একজন?” (সূরা সোয়াদ ৩৮:৭৫)
(أَنَا خَيْرٌ مِّنْهُ)
‘আমি তার অপেক্ষা উত্তম’ অর্থাৎ শয়তান আদম (আঃ)-কে সিজদাহ না করার কারণ পেশ করল: আমি তার থেকে শ্রেষ্ঠ। আমি আগুন দ্বারা সৃষ্ট আর সে মাটি দ্বারা সৃষ্ট। আগুন মাটি থেকে উপরে থাকে। এটা ছিল শয়তানের হিংসা ও অহঙ্কারের বহিঃপ্রকাশ।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন: সে ছিল অহঙ্কারী। অহঙ্কার হল সকল ধ্বংসের মূল। ইবলীস প্রথমে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্যশীল বান্দা হওয়া সত্ত্বেও পরে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে বিতাড়িত হল।
(أَنْظِرْنِيْ إِلٰي يَوْمِ يُبْعَثُوْنَ)
‘পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দাও।’ শয়তান বিতাড়িত হবার পর আল্লাহ তা‘আলার কাছে কিয়ামত অবধি আয়ু চাইলে আল্লাহ তা‘আলা তা মেনে নিলেন।
(ثُمَّ لَاٰتِيَنَّهُمْ مِّنْۭ بَيْنِ)
‘অতঃপর আমি তাদের নিকট আসব তাদের সম্মুখ...’ অর্থাৎ শয়তান মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য সামনে, পেছনে, ডান ও বাম দিক দিয়ে আসবে। কিন্তু ওপর দিক থেকে আসতে পারবে না। আর মানুষের কাছে খারাপ অশ্লীল বেহায়াপনাপূর্ণ কাজগুলো চাকচিক্য করে তুলে ধরবে।
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, জীবিকা নির্বাহের সব উপকরণ দিয়েছেন। এসত্ত্বেও মানুষ আল্লাহ তা‘আলার বিধানমত চলে কিনা তা পরীক্ষার জন্য ইবলীসকে সুযোগ দিয়েছেন। যারা আল্লাহ তা‘আলার কৃতজ্ঞ বান্দা তারা আল্লাহ তা‘আলার পথে অটল থাকবে, তারা মুক্তি পাবে। আর যারা ইবলীসের অনুসরণ করবে আল্লাহ তা‘আলা ইবলীসসহ তাদেরকে জাহান্নামে দিবেন।
(وَقَاسَمَهُمَا)
‘সে তাদের উভয়ের নিকট শপথ করে বলল’ অর্থাৎ শয়তান আদম (আঃ)-এর কাছে আল্লাহ তা‘আলার নামে শপথ করে বলল: নিশ্চয়ই আমি তোমাদের কল্যাণকামী। ঐ গাছের কাছে যেতে আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন এ কারণে, যাতে তোমরা ফেরেশতা না হয়ে যাও অথবা চিরস্থায়ী না হতে পার। কত বড় মিথ্যুক শয়তান। শয়তানের ধোঁকায় পড়ে নিষিদ্ধ কাজে জড়িত হবার পর নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আদম ও হাওয়া (আলাইহিমাস সালাম) উভয়ে আল্লাহ তা‘আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল।
(فِيْهَا تَحْيَوْنَ وَفِيْهَا... )
‘সেখানেই তোমরা জীবন যাপন করবে’ যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বললেন:
(مِنْهَا خَلَقْنٰكُمْ وَفِيْهَا نُعِيْدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرٰي)
“আমি মৃত্তিকা হতে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তাতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং তা হতে পুনরায় তোমাদেরকে বের করব।” (সূরা ত্বহা ২০:৫৫) যে শয়তান আদম (আঃ)-এর সুখ সহ্য করতে পারেনি, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করেছে সে শয়তান আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করতে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ। আমরা যেন কিছুতেই তার কথা শুনে সঠিক পথ না হারাই। এ সম্পর্কে আরো আলোচনা সূরা হিজর-এ আসবে ইনশা-আল্লাহ ।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. শয়তানের অহঙ্কারের কথা অবগত হলাম, অহংকারই ধ্বংসের মূল, এ অহংকারের কারণে মানুষ হক হতে বিচ্যুত ও বঞ্চিত হয়।
২. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু, তার প্রতিশ্র“তি মিথ্যা, সে ধোঁকা দিয়ে মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে চায়, তাই তার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
৩. শয়তানের চক্রান্তে পড়ে অন্যায় করলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবাহ করা উচিত, এটাই আদম (আঃ)-এর বৈশিষ্ট্য। আর তাওবাহ না করে অপরাধে অটল থাকা শয়তানের কাজ।
৪. মৃত্যুর পর আবার পুনরুত্থান হবে, সেখানে মানুষের ভাল-মন্দ কর্মের প্রতিদান ও প্রতিফল দেয়া হবে তার প্রমাণ পেলাম।
৫. নগ্নতা শয়তানের প্রথম কাজ, সে নগ্নতার মাধ্যমে সমাজে বেহায়াপনা ছড়িয়ে দিতে চায়।
৬. সমাজে অশ্লীল-বেহায়াপনা ও ঝগড়া-বিবাদ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য শয়তান নারীদেরকে বড় ধরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings