Surah An Naba Tafseer
Tafseer of An-Naba : 1
Saheeh International
About what are they asking one another?
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ :
(النبأ) নাবা শব্দের শাব্দিক অর্থ : সংবাদ, খবর ইত্যাদি। এখানে ‘নাবা’ দ্বারা কিয়ামত দিবসকে বুঝানো হয়েছে, এটি কিয়ামতের অন্যতম একটি নাম। সূরার দ্বিতীয় আয়াতে বর্ণিত ‘নাবা’ শব্দ থেকেই সূরার নামকরণ করা হয়েছে। তাছাড়া এ সূরাতে মহা সংবাদ বা কিয়ামত ও তার পূর্ব মুহূর্তে পৃথিবীর অবস্থা কিরূপ হবে, কিয়ামতের ভয়াবহতা, জ্ঞানীদের জন্য কিয়ামতের প্রমাণ উপস্থাপন ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সূরাতে আল্লাহ তা‘আলার বিভিন্ন নেয়ামতরাজির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে পুনরুত্থানের প্রতি গুরুত্বারোপ, জান্নাতীদের আরাম-আয়েশ ও জাহান্নামীদের দুঃখ কষ্টের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
১-১৬ নম্বর আয়াতের তাফসীর:
সকল যুগের নাস্তিক ও বস্তুবাদীদের ন্যায় মক্কার মুশরিকদের ধারণা ছিল মানুষের পরিণতি দুনিয়াতেই শেষ। অন্যান্য বস্তু যেমন পচে গলে মাটিতে মিশে যায়, মানুষও তেমনি মাটি হয়ে শেষ হয়ে যাবে। অতএব খাও-দাও ফূর্তি কর, শক্তি ও সাধ্যমত অন্যের উপর জুলুম কর। কিয়ামত সংঘটিত হওয়াকে অস্বীকারকারীদের এসব অমূলক ধারণা খণ্ডন করে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন : তারা আপোষে আল্লাহ তা‘আলার কোন নিদর্শন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে? তারপর আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিচ্ছেন যে, তারা ‘মহা সংবাদ’ সম্পর্কে পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ মহা সংবাদ কী এ নিয়ে মুফাসসিরদের মাঝে কয়েকটি উক্তি থাকলেও সঠিক কথা হলো এর দ্বারা উদ্দেশ্য কিয়ামত, মৃত্যুর পর যা কিছু হবে সবই এতে শামিল। এজন্যই পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন: এ বিষয়ে তারা মতবিরোধে লিপ্ত। অর্থাৎ কুরআন কিয়ামত সম্পর্কে যে সংবাদ প্রদান করেছে তার প্রতি যে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা মু’মিন আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না তারা কাফির। যারা কিয়ামত দিবসকে অস্বীকার করে তাদেরকে পরবর্তী দু‘আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ধমক দিয়েছেন। মানুষ উপস্থিত বা নগদটাই বিশ্বাস করে ও বুঝে, আর দৃষ্টির বাইরে যা রয়েছে তা সে বিশ্বাস করতে চায় না। অথচ মানুষের দৃষ্টি শক্তির বাইরে অনেক সত্য লুকিয়ে আছে। মানুষ দুনিয়াতে এসে আর যেতে চায়না, সে চায় আরো যদি বেঁচে থাকতাম। অথচ ইচ্ছা-অনিচ্ছায় মানুষকে দুনিয়া ছাড়তে হয়ই। অতএব দুনিয়ার পরেই আখিরাত, সেথায় তাদের জন্য সুসংবাদ যারা দুনিয়া থেকেই আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সাধ্যমত সৎ আমল করেছে। আর যারা কেবল নগদে বিশ্বাসী তাদের কারণে দুনিয়াতে যত অশান্তি। কারণ শক্তি ও বুদ্ধির জোরে তারা সাধারণ ও দুর্বল মানুষের ওপর জুলুম করে। তাই পরজগতে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বড় বড় কয়েকটি নিদর্শনের বিবরণ দিচ্ছেন যাতে মানুষ সহজেই কিয়ামত সংঘঠিত হওয়ার সত্যতা অনুধাবন করতে পারে। তিনি জমিনকে সৃষ্টি করেছেন مِهَادًا বা বিছানাস্বরূপ। এজন্য মায়ের কোলকে مهد বা বিছানা বলা হয়। কারণ মায়ের কোল শিশুর বিছানা, সেখানে সে ঘুমায়। তাই ঈসা (আঃ)-এর ব্যাপারে বলা হয়েছে :
(وَيُكَلِّمُ النَّاسَ فِي الْمَهْدِ وَكَهْلًا وَّمِنَ الصّٰلِحِيْنَ)
“আর তিনি শৈশবে (মায়ের কোলে) এবং বার্ধক্যে মানুষের সাথে কথা বলবেন এবং নেককারদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।” (সূরা আলি ইমরান ৩ : ৪৬)
أَوْتَادًا শব্দটি وتد এর বহুবচন, অর্থ হলো পেরেক। অর্থাৎ পাহাড়কে তিনি পেরেকস্বরূপ সৃষ্টি করেছেন যাতে জমিন নড়াচড়া করতে না পারে। কেননা পৃথিবী নড়াচড়া করলে বসবাস করা সম্ভব হতো না। এ বিশাল ও বিস্ময়কর সৃষ্টি যিনি প্রথমবার অস্তিত্বে এনেছেন কেবল একটা হুকুম ‘কুন ফা-ইয়াকুন’ (হও, অতএব হয়ে গেল) এর মাধ্যমে, সুতরাং তাঁর পক্ষে মানুষের মত একটা ক্ষুদ্র জীবকে পুনরায় সৃষ্টি করা ও পুনরুত্থান ঘটানো কোন ব্যাপারই নয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে প্রশ্ন করছেন:
(أَأَنْتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَا۬ءُ ط بَنٰهَا)
“তোমাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিন কাজ, না আকাশের? তিনিই এটা নির্মাণ করেছেন।” (সূরা নাযিআত ৭৯ : ২৭)
أَزْوَاجًا অর্থাৎ পুরুষ ও নারীরূপে। যাতে পরস্পরের মিলনে বংশধারা অব্যাহত থাকে। এ জোড়া পরস্পরের বিপরীতধর্মী এবং পরস্পরের প্রতি আকর্ষণপ্রবণ। জোড়া কেবল মানুষের মধ্যে নয়; বরং তা প্রাণী ও জড় জগতের মাঝেও বিরাজমান। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলা হয় পজেটিভ বা প্রোটন এবং নেগেটিভ বা ইলেকট্রন। শুধু এগুলোই নয় বরং আমাদের জানা-অজানা সকল ক্ষেত্রেই জোড়ার অস্তিত্ব রয়েছে, যা পরস্পরের বিপরীতধর্মী। যেমন রংয়ের মধ্যে সাদা ও কালো, গুণের মধ্যে ভাল ও মন্দ ইত্যাদি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(سُبْحَانَ الَّذِيْ خَلَقَ الْأَزْوَاجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنْـ ـبِتُ الْأَرْضُ وَمِنْ أَنْفُسِهِمْ وَمِمَّا لَا يَعْلَمُوْنَ )
“পবিত্র তিনি, যিনি জোড়া জোড়া করে সৃষ্টি করেছেন উদ্ভিদ, মানুষ এবং তারা যাদেরকে জানে না তাদের প্রত্যেককে।” (সূরা ইয়াসীন ৩৬: ৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَمِنْ كُلِّ شَيْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنَ )
“আমি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছি জোড়ায়-জোড়ায়, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।” (সূরা যারিআত ৫১ : ৪৯) সুতরাং একথাও প্রমাণ করে সৃষ্টিজগতের সবই জোড়া জোড়া। বেজোড় কেবলমাত্র একজন; তিনি হলেন আল্লাহ তা‘আলা।
سُبَاتًا এর অর্থ : ছিন্ন করা বা কাটা। অর্থাৎ সারাদিন কাজকর্ম করে শরীর যে ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে তা ঘুমের মাধ্যমে দূর হয়ে যায়। তাই তাকে - سُبَاتًا বলা হয়। মানুষসহ সকল প্রাণীর জন্য নিদ্রা হল আল্লাহ তা‘আলার দেওয়া বিশেষ এক নেয়ামত। নিদ্রা বা ঘুম কত বড় নেয়ামত, যাদের ঘুম আসে না তাদের জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়। ঘুম না থাকলে কোন কাজেই উদ্যম ও আগ্রহ থাকে না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা ঘুমকে একটি নিদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন (সূরা রূম ৩০ : ২৩) সূরা ফুরকানে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বস্তুতঃ ঘুমিয়ে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠার মধ্যে রয়েছে মৃত্যু ও পুনরুত্থানের বাস্তব উদাহরণ। এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে পুনরুস্থানের সত্যতার অকাট্য প্রমাণ। ঘুমিয়ে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠার দু‘আ পাঠ আমাদের সর্বদা মনে করিয়ে দেয় মৃত্যুর কথা ও আল্লাহ তা‘আলার কাছে ফিরে যাওয়ার কথা। অতএব ঘুম থকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে মৃত্যু ও পুনরুত্থান সম্পর্কে এবং মানুষের অসহায়ত্ব ও আল্লাহ তা‘আলার একচ্ছত্র ক্ষমতা সম্পর্কে।
لِبَاسًا শব্দের অর্থ : পোশাক। পোশাকের কাজ আবৃত করে নেয়া, ঢেকে নেয়া। রাত তার অন্ধকার কালো বর্ণ দ্বারা পোশাকের ন্যায় সব কিছু নিজের আঁচলে ঢেকে নেয়, যাতে মানুষসহ জীবজগত নিরিবিলি পরিবেশে সুস্থিরভাবে নিদ্রা যেতে পারে। আবার শেষরাতে উঠে শান্ত ও প্রফুল্ল চিত্তে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতে রত হতে পারে। তাই রাতকে লেবাস বা পোশাক বলা হয়েছে। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰهَا)
“শপথ রাত্রির যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে”। (সূরা শামস ৯১: ৪)
مَعَاشًا অর্থ وقت معاش বা জীবিকা অন্বেষণকাল, অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা দিনকে আলোকজ্জ্বল করেছেন যাতে লোকেরা জীবিকা অর্জনের জন্য কর্ম ও পরিশ্রম করতে পারে। দিবসের চেয়ে বড় নেয়ামত হল সূর্য। কারণ দিনের বেলায় সূর্য আলো না দিলে দিন কোন উপকারে আসে না। কারো মাঝে কর্মচাঞ্চল্য আসে না। সূর্য কিরণ না দিলে মানুষ, পশু, উদ্ভিদ কারো মাঝে শক্তি-সামর্থ্য সৃষ্টি হত না। সূর্য জীবদেহে শক্তির যো-----গান দেয়, তাই আমরা শক্তিশালী হই, উদ্ভিদজগত শক্ত হয়ে দাঁড়ায়। ধান, গম ইত্যাদি স্ব-স্ব গাছের শিষে শুকিয়ে যায়, অতঃপর তা আমাদের জন্য খাবারের উপযুক্ত হয়।
(سَبْعًا شِدَادًا)
অর্থাৎ মজবুত সুদৃঢ় সাত আকাশ সৃষ্টি করেছেন। সাত আকাশের অনুরূপ সাত জমিনও সৃষ্টি করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(اَللّٰهُ الَّذِيْ خَلَقَ سَبْعَ سَمٰوٰتٍ وَّمِنَ الْأَرْضِ مِثْلَهُنَّ ط يَتَنَزَّلُ الْأَمْرُ بَيْنَهُنَّ لِتَعْلَمُوْآ أَنَّ اللّٰهَ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ لا وَّأَنَّ اللّٰهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا)
“আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং এর অনুরূপ পৃথিবী, ওগুলোর মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ; যাতে তোমরা জানতে পার যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সবকিছুই পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।” (সূরা তালাক ৬৩ : ১২)
আলোচ্য আয়াতে সাত আকাশকে মজবুত ও সুদৃঢ় বলার মধ্যে বিজ্ঞানীদের জন্য ইঙ্গিত রয়েছে যে, এসব আকাশসমূহের গঠন প্রকৃতি এমন যে, যা ভেদ করা কঠিন ও দুরূহ। অন্য আয়াতে আকাশকে
(سَقْفًا مَّحْفُوْظًا)
সুরক্ষিত ছাদ (সূরা আম্বিয়া ২১ : ৩২) বলা হয়েছে। এতদ্ব্যতীত নক্ষত্ররাজি রাতের অন্ধকারে আলো দিয়ে ও দিক নির্দেশনা দিয়ে এবং বহু অজানা সেবা দিয়ে প্রতিনিয়ত জীবজগতের উপকার করছে যা আল্লাহ তা‘আলার অপার অনুগ্রহ।
(سِرَاجًا وَّهَّاجًا)
সিরাজ অর্থ প্রদীপ। এখানে প্রদীপ দ্বারা সূর্যকে বুঝানো হয়েছে। وَّهَّاجًا অর্থ وقادا জ্বলন্ত। অর্থাৎ আমি সূর্যকে জ্বলন্ত প্রদীপের ন্যায় বানিয়েছি। মানুষের আবাসস্থল পৃথিবীকে সূর্য থেকে এমন দূরে ও এমন কোণে স্থাপন করেছেন যেখান থেকে সূর্য সামান্য এগিয়ে এলে পৃথিবী জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে। আবার সামান্য পিছনে গেলে তা ঠান্ডা ও বরফে পরিণত হয়ে যাবে। বলা হয় সূর্য পৃথিবী থেকে ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মাইল দূরে ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে অবস্থিত।
الْمُعْصِرٰتِ
এমন মেঘমালাকে বলা হয় যা পানি দ্বারা পূর্ণ কিন্তু এখনো তা থেকে বৃষ্টি বর্ষণ হয়নি। ثَجَّاجًا অর্থ হলো : অতিরিক্তভাবে প্রবাহিত হয় এমন পানি। হাদীসে এসেছে; সর্বোত্তম হাজ্জ হলো উচ্চৈঃস্বরে তালবীয়া পাঠ করা ও প্রচুর রক্ত প্রবাহিত করা (কুরবানীর পশু জবাই করা)। (শুআবুল ঈমান হা. ৭৩২০) অর্থাৎ সূর্যের আলোচনার পর বৃষ্টির কথা নিয়ে আসলেন। বৃষ্টিপাতের অন্যতম কারণ হল সূর্য কিরণ। সাগরের লবণাক্ত পানি সূর্যতাপে বাষ্প হয়ে ওপরে উঠে যায়। অতঃপর তা ঘনীভূত হয়ে মেঘ ও বৃষ্টিতে পরিণত হয়। সূর্যের তাপে জমি মরুভূমিতে পরিণত হয়ে আবাদের অনুপোযোগি হয়ে যাওয়ার পর আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে বাতাস উপযুক্ত স্থানে মেঘমালা বহন করে নিয়ে যায় এবং বর্ষণ করে। বৃষ্টির সাথে মাঝে মধ্যে আসে বিদ্যুৎ, যাতে নাইট্রোজেন থাকে। এ নাইট্রোজেন জমির উর্বরতা ক্ষমতা বাড়ায়। এভাবে আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদের ওপর অনুগ্রহ করে থাকেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَمِنْ اٰيٰتِه۪ أَنَّكَ تَرَي الْأَرْضَ خَاشِعَةً فَإِذَآ أَنْزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَا۬ءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ ط إِنَّ الَّذِيْٓ أَحْيَاهَا لَمُحْيِي الْمَوْتٰي ط إِنَّه۫ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ)
“আর তাঁর একটি নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখতে পাও শুষ্ক, অতঃপর আমি তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করলে তা আন্দোলিত ও ষ্ফীত হয়; যিনি ভূমিকে জীবিত করেন তিনিই মৃতের জীবন দানকারী। নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।” (সূরা হা-মীম সিজদাহ ৪১: ৩৯)
أَلْفَافًا অর্থাৎ অধিক ডাল-পালার কারণে একে অপরের সাথে মিলে যাওয়া গাছপালা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَفِي الْأَرْضِ قِطَعٌ مُّتَجٰوِرٰتٌ وَّجَنّٰتٌ مِّنْ أَعْنَابٍ وَّزَرْعٌ وَّنَخِيْلٌ صِنْوَانٌ وَّغَيْرُ صِنْوَانٍ يُّسْقٰي بِمَا۬ءٍ وَّاحِدٍ قف وَنُفَضِّلُ بَعْضَهَا عَلٰي بَعْضٍ فِي الْأُكُلِ ط إِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَآيٰتٍ لِّقَوْمٍ يَّعْقِلُوْنَ)
“পৃথিবীতে রয়েছে পরস্পর সংলগ্ন ভূখণ্ড, এতে (পৃথিবীতে) আছে বিভিন্ন আঙ্গুরকানন, শস্যক্ষেত্র, একাধিক শীষ বিশিষ্ট অথবা এক শীষবিশিষ্ট খেজুর বৃক্ষ, সিঞ্চিত একই পানিতে, এবং ফল হিসাবে তাদের কতককে কতকের উপর আমি শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি। অবশ্যই বোধশক্তি সম্পন্নসম্প্রদায়ের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন।” (সূরা রা‘দ ১২: ৪)
বৃষ্টি বর্ষণের অন্যতম একটি প্রধান উদ্দেশ্য হল শস্য, উদ্ভিদ ও উদ্যানসমূহ সৃষ্টি করা। এখানে মানুষ ও গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে প্রধান তিন জাতের উৎপন্ন দ্রব্যের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন শস্যদানা বলতে ধান, গম, যব ইত্যাদি বুঝানো হয়েছে। نَبَاتًا বা উদ্ভিদ বলতে নানাবিধ সবজি, ঘাস ইত্যাদিকে বুঝানো হয়েছে। অতঃপর جَنّٰتٍ বা উদ্যান বলতে খেজুর, আঙ্গুর, কলা, আম ইত্যাদি ফল মূল বুঝানো হয়েছে। সুতরাং এসব আল্লাহ তা‘আলার অপূর্ব নিদর্শন যে, তিনি একই বৃষ্টির পানি দ্বারা বিভিন্ন জাতের ও বিভিন্ন স্বাদের ফলও ফসল উৎপন্ন করেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. কিয়ামত একদিন অবশ্যই সংঘঠিত হবে, এতে কোন সন্দেহ নেই।
২. আল্লাহ মানুষকে বিভিন্ন নেয়ামতরাজি দান করেছেন যাতে বান্দারা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হয়।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings