Surah Al Insan Tafseer
Tafseer of Al-Insan : 3
Saheeh International
Indeed, We guided him to the way, be he grateful or be he ungrateful.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ ও গুরুত্ব :
الدهر শব্দের অর্থ : সময়, যুগ, কাল ইত্যাদি। এ সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত শব্দ থেকেই সূরার নামকরণ করা হয়েছে। প্রথম আয়াতে الإنسان (মানুষ) শব্দটি বিদ্যমান। তাই ইনসান নামেও এ সূরাকে অভিহিত করা হয়। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ, না মদীনায় অবতীর্ণ-এ ব্যাপারে মতভেদ পাওয়া গেলেও অধিকাংশ আলেমদের মতে এটি মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন : শেষের দশ আয়াত মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। (ফাতহুল কাদীর)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর দিন ফজরের সালাতে প্রথম রাকাতে সূরা সাজদাহ দ্বিতীয় রাকাতে অত্র সূরা পাঠ করতেন। (নাসায়ী হা. ৯৫৫, ইবনু মাযাহ হা. ৮২১, সহীহ)
সূরার শুরুতেই প্রশ্নাকারে মানুষের সৃষ্টির উৎস ও রহস্য উদঘাটন করে তার সৃষ্টির পেছনে কোন মহৎ উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে, তারপর কাফিরদের শাস্তির কথা সংক্ষিপ্তাকারে বলার পর সৎ, কৃতজ্ঞ ও সৃষ্টি জীবের প্রতি দয়ালু ব্যক্তিদের জন্য তৈরি করা জান্নাতের নেয়ামত ও তাতে তাদের সাচ্ছন্দ্যে বসবাসের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
১-৩ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আলোচ্য আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষের সৃষ্টির প্রাথমিক ও তার পূর্বের অবস্থা বর্ণনা করছেন। মানুষকে সৃষ্টি করার পূর্বে সে উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না। এ আয়াতটি মানুষের বিবেকে আরো অনেক চিন্তা-ভাবনা ও আত্মজিজ্ঞাসার জন্ম দেয়। মানুষের জন্মের উৎস, পার্থিব জীবন ও তার চূড়ান্ত পরিণতি সম্পর্কে তাকে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে। এরপর আসে জন্মের পর মানুষের স্থীতি ও প্রজাতিক বিস্তৃতির প্রসংগ। এর পেছনে রয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্নতর এক কাহিনী। আয়াতে حِيْنٌ مِّنَ الدَّهْرِ বলতে মায়ের গর্ভে রূহ ফুঁকে দেওয়ার পূর্বের সময়কালকে বুঝোনো হয়েছে, যে সময় বীর্য আকারে জরায়ুতে বিদ্যমান ছিল। এ সময়টা ছিল চল্লিশ দিন।
(مِنْ نُّطْفَةٍ أَمْشَاجٍ)
“আমশাজ” অর্থ : মিশ্রিত, অর্থাৎ স্বামী ও স্ত্রীর ডিম্বাণু উভয়ের সংমিশ্রণকে বুঝোনো হয়েছে। স্বামীর বীর্য স্ত্রীর ডিম্বাণুর সংমিশ্রণে চল্লিশ দিন বিদ্যমান থাকার পর আল্লাহ তা‘আলা মায়ের জরায়ুতে রূহ ফুঁকে দেন। তারপর স্তরে স্তরে পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করেন। অসীম শক্তিধর স্রষ্টা এভাবে মিশ্রিত বীর্য থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন নিছক তামাসাচ্ছলে বা উদ্দেশ্যহীনভাবে নয় বরং তাকে পরীক্ষা করার জন্য যে, কে সৎ আমলে উত্তম। এ কারণেই তিনি মানুষকে সৃষ্টি করার পর তাকে দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তিসম্পন্ন করেছেন। তারপর তাকে ভাল ও মন্দ উভয় পথ দেখিয়ে বিবেকের স্বাধীনতা দান করেছেন। যাতে আখিরাতে আল্লাহ তা‘আলার কাছে সে কোন অভিযোগ করতে না পারে। এ সম্পর্কে সূরা মু’মিনূনে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।
نَّبْتَلِيْهِ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য, কে সৎ আমলে উত্তম। যেমন তিনি বলেন :
(الَّذِيْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيٰوةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا ط وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْغَفُوْرُ)
“যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করবার জন্য কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক দিয়ে সর্বোত্তম। আর তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।” (সূরা মুলক ৬৭ : ২)
(إِنَّا هَدَيْنٰهُ السَّبِيْلَ)
অর্থাৎ মানুষ সৃষ্টি করার পর আল্লাহ তা‘আলা ভালমন্দের দুটি পথই দেখিয়ে দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَهَدَيْنٰهُ النَّجْدَيْن)
“আর আমি কি তাকে দু’টি পথ দেখাইনি?” (সূরা বালাদ ৯০ : ১০)
অনেকে বলে থাকে, আল্লাহ তা‘আলা খারাপ পথ না দেখিয়ে শুধু ভাল পথ দেখালে তো মানুষ অন্যায় কাজ করত না। হ্যাঁ, আল্লাহ তা‘আলা উভয় পথকে দেখিয়ে দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য। সাথে সাথে বলে দিয়েছেন যারা ভাল পথে চলবে তাদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে উত্তম প্রতিদান আর যারা খারাপ পথ অবলম্বন করবে তাদের পরিণাম হবে ভয়াবহ ও অত্যন্ত খারাপ।
(إِمَّا شَاكِرًا وَّإِمَّا كَفُوْرًا)
অর্থাৎ মানুষকে ভালমন্দের উভয় পথ দেখিয়ে দেওয়ার পর একশ্রেণির মানুষ আল্লাহ তা‘আলার পথে চলে আরেক শ্রেণি আল্ল্হার সাথে কুফরী করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : প্রত্যেক ব্যক্তি সকাল করে নিজেকে বিক্রিত অবস্থায়। বিক্রি করে নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয় (অর্থাৎ কুফরী করে জাহান্নামে যায়) অথবা নিজেকে মুক্ত করে। (অর্থাৎ ঈমান এনে জাহান্নাম থেকে নিজেকে মুক্ত করে)। (সহীহ মুসলিম হা. ২২৩)
সুতরাং বিবেক ও মত প্রকাশ ইত্যাদির স্বাধীনতা পেয়ে যেন আল্লাহদ্রোহী কাজে লিপ্ত না হই সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত, কারণ সব কিছুর হিসাব দিতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. সূরার গুরুত্ব অবগত হলাম।
২. মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে সাধারণ একটু পানি থেকে, অতএব গর্ব অহংকারের সাথে দম্ভভরে চলার কোন কারণ নেই।
৩. আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টির পর ভালমন্দ উভয় পথ দেখিয়ে দিয়েছেন।
৪. যারা সৎপথ বেছে নিয়েছে তারা সফলকাম আর যারা সৎপথ বর্জন করেছে তারা হতভাগা।
৫. মানুষকে উভয় পথ প্রদর্শনের উদ্দেশ্য হল পরীক্ষা করা। কে ঈমানের পথে চলে আর কে তা বর্জন করে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings