Surah Al Insan Tafseer
Tafseer of Al-Insan : 3
Saheeh International
Indeed, We guided him to the way, be he grateful or be he ungrateful.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
সহীহ্ মুসলিমের হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীস ইতিপূর্বে গত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) জুমআ’র দিন ফজরের নামাযে সূরা আলিফ-লাম-তানযীল এবং হাল আতা আলাল ইনসান পাঠ করতেন। একটি মুরসাল গারীব হাদীসে রয়েছে যে, যখন এই সূরাটি অবতীর্ণ হয় এবং রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) তা পাঠ করেন তখন তাঁর নিকট একটি কালো বর্ণের সাহাবী (রাঃ) বসেছিলেন। যখন জান্নাতের গুণাবলীর বর্ণনা আসে তখন হঠাৎ তাঁর মুখ হতে একটা ভীষণ চীৎকার বের হয় এবং সাথে সাথে তাঁর দেহ হতে প্রাণ পাখী উড়ে যায়। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) তাঁর সাহাবীদেরকে বলেনঃ “তোমাদের সাথী এবং তোমাদের ভাই-এর প্রাণ জান্নাতের আগ্রহে বেরিয়ে গেছে।”
১-৩ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ্ তা'আলা খবর দিতে গিয়ে বলেন যে, তিনি মানুষকে এমন অবস্থায় সৃষ্টি করেছেন যে, তার নিকৃষ্টতা ও দুর্বলতার কারণে সে উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না। তিনি তাকে পুরুষ ও নারীর মিলিত শুক্রের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন এবং বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত করার পর তাকে বর্তমান রূপ ও আকৃতি দান করেছেন। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ আমি তাকে পরীক্ষা করবার জন্যে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন করেছি। যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেছেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “তোমাদেরকে পরীক্ষা করবার জন্যে যে, কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম?” (৬৭:২) সুতরাং তিনি তোমাদেরকে কর্ণ ও চক্ষু দান করেছেন যাতে আনুগত্য ও অবাধ্যতার মধ্যে পার্থক্য করতে পার।
মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি। অর্থাৎ অত্যন্ত স্পষ্ট ও পরিষ্কারভাবে আমার সরল সোজা পথ তোমার কাছে খুলে দিয়েছি।
যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ অন্য জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “সামূদ সম্প্রদায়কে আমি পথের নির্দেশ দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা অন্ধত্বকে হিদায়াতের উপর প্রাধান্য দিয়েছিল।” (৪১:১৭) আর এক জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “আমি তাকে দু'টি পথই দেখিয়েছি।” (৯০:১০) অর্থাৎ ভাল ও মন্দ দু'টি পথই প্রদর্শন করেছি। (আরবি)-এই আয়াতের তাফসীরে হযরত মুজাহিদ (রঃ), হযরত আবূ সালিহ্ (রঃ), হযরত যহহাক (রঃ) এবং হযরত সুদ্দী (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, পথ দেখানো দ্বারা উদ্দেশ্য হলোঃ আমি তাকে মায়ের পেট হতে বের হবার পথ দেখিয়েছি। কিন্তু এটা গারীব উক্তি। প্রথম উক্তিটিই সঠিক।
(আরবি) এখানে (আরবি) হওয়ার কারণে (আরবি) এবং (আরবি)-এর উপর (আরবি) বা যবর হয়েছে। এর (আরবি) হলো (আরবি) এর সর্বনামটি। অর্থাৎ আমি তাকে পথের নির্দেশ দিয়েছি এমন অবস্থায় যে সে হতভাগ্য বা ভাগ্যবান। যেমন সহীহ মুসলিমে হযরত আবূ মালিক আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “প্রত্যেক ব্যক্তি সকাল বেলায় স্বীয় নফসকে বিক্রিকারী হয়ে থাকে, হয় সে ওকে মুক্তকারী হয়, না হয় ওকে ধ্বংসকারী হয়।”
মুসনাদে আহমাদে হযরত জাবির ইবনে আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। যে, নবী (সঃ) হযরত কা'ব ইবনে আজরা (রাঃ)-কে বলেনঃ “আল্লাহ তোমাকে নির্বোধদের নেতৃত্ব হতে রক্ষা করুন!” হযরত কাব (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! নির্বোধদের নেতৃত্ব কি?" উত্তরে তিনি বললেনঃ “তারা ঐ সব নেতা যারা আমার পরে নেতৃত্ব লাভ করবে। তারা না আমার সুন্নাতের উপর আমল করবে, না আমার তরীকার উপর চলবে। যারা তাদের মিথ্যাকে সত্য বলে বিশ্বাস করবে এবং উৎপীড়নমূলক কার্যে সাহায্য করবে তারা আমার অন্তর্ভুক্ত নয় এবং আমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত নই। জেনে রেখো যে, তারা আমার হাউযে কাওসারের উপরও আসতে পারবে না। পক্ষান্তরে, যারা তাদের মিথ্যাকে সত্য বলে বিশ্বাস করবে না এবং তাদের অত্যাচারমূলক কাজে সাহায্য সহযোগিতা করবে না তারা আমার এবং আমি তাদের। তারা আমার হাউযে কাওসারে আমার সাথে মিলিত হবে। হে কা'ব (রাঃ)! রোযা ঢাল স্বরূপ, সাদকা বা দান-খয়রাত পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয় এবং নামায আল্লাহর নৈকট্য লাভের কারণ অথবা বলেছেনঃ মুক্তির দলীল। হে কাব (রাঃ)! (দেহের) ঐ গোশত জান্নাতে প্রবেশ করবে না যা হারাম দ্বারা বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে। ওটা জাহান্নামেরই যোগ্য। হে কা'ব (রাঃ)! মানুষ সকাল বেলায় নিজের নফসকে বিক্রী করে থাকে। কেউ ওকে আযাদকারী হয় এবং কেউ হয় ওকে ধ্বংসকারী।” সূরা রূমের (আরবি) আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ কর, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। (৩০:৩০) এ আয়াতের তাফসীরে হযরত জাবির (রাঃ)-এর রিওয়াইয়াতে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিম্নের উক্তিটি গত হয়েছেঃ “প্রত্যেক সন্তান ইসলামের ফিতরাত বা প্রকৃতির উপর সৃষ্ট হয়ে থাকে, শেষ পর্যন্ত তার জিহ্বা চলতে থাকে, হয় সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়।”
মুসনাদে আহমাদে হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তিই (বাড়ী হতে) বের হয় তারই দরজার উপর দু’টি পতাকা থাকে, একটি থাকে ফেরেশতার হাতে এবং অপরটি থাকে শয়তানের হাতে। যদি সে এমন কাজের জন্যে বের হয়ে থাকে যাতে আল্লাহ সন্তুষ্ট, তবে ফেরেশতা তাঁর পতাকা নিয়ে তার সাথী হয়ে যান এবং তার প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত সে ফেরেশতার পতাকার নীচেই থাকে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহর অসন্তুষ্টির কাজে বের হয়, শয়তান তার পতাকা নিয়ে তার সাথে হয়ে যায় এবং তার প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত সে শয়তানের পতাকা তলেই থাকে।”
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings