Surah Al Qiyamah Tafseer
Tafseer of Al-Qiyamah : 15
Saheeh International
Even if he presents his excuses.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ
: القيامة কিয়ামত, যা অবশ্যই ঘটবে। সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত শব্দ থেকেই সূরার নামকরণ করা হয়েছে। প্রথম দুটি আয়াতে কিয়ামত সংক্রান্ত বচন ও মন সংক্রান্ত বিষয়ের মধ্য দিয়ে সূরাটির সূচনা হয়েছে, তারপর কিয়ামতের কিছু নিদর্শন বর্ণনা করা হয়েছে। অতঃপর কুরআন নাযিলের সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১-১৫ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
لَآ أُقْسِمُ বাক্যতে لَآ অক্ষরটিকে কেউ অতিরিক্ত বলে উল্লেখ করেছেন। ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন : যে জিনিসকে কেন্দ্র করে শপথ করা হয় (المقسم عليه) তা যদি নাবোধক হয় তাহলে গুরুত্ব বুঝোনোর জন্য শপথের (القسم) পূর্বে নাবোধক لَآ নিয়ে আসা হয়। (ইবনু কাসীর)
আল্লামা সাদী (রহঃ) বলেন : এখানে لا অক্ষরটি নাবোধকও নয় বা অতিরিক্তও না। বরং এখানে নিয়ে আসা হয়েছে সূচনা করা ও গুরুত্ব বুঝোনোর জন্য। (তাফসীর সা‘দী)
আবার কেউ কেউ বলেছেন, এ শপথের পূর্বে কাফিরদের কথার খন্ডন করা হয়েছে। তারা বলত যে, মরণের পর আর কোন জীবন নেই। لا দ্বারা বলা হল যে, তোমরা যেমন বলছ ব্যাপারটা তেমন নয়। এ ব্যাপারে আমি কিয়ামতের দিনের শপথ করে বলছি। কিয়ামতের দিনের শপথের উদ্দেশ্য হল তার গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বুঝানো।
(النَّفْسِ اللَّوَّامَةِ)
‘তিরস্কারকারী আত্মা’ সূরা ইউসুফে আলোচনা করা হয়েছে যে, نفس (আত্মা) তিন প্রকার, তার মধ্যে এটি একটি। এ আত্মাকে لوامة বলা হয়
لكثرة تلو وترددها وعدم بثوتها علي حالة من أحوالها
বিভিন্ন রং ধারণ ও বেশি বেশি পরিবর্তন হওয়ার কারণে এবং একই অবস্থার ওপর বহাল না থাকার কারণে। প্রত্যেক আত্মাই নিজেকে তিরস্কার করবে, ভাল আত্মা নিজেকে তিরস্কার করে বলবে কেন আরো ভাল কাজ করিনি? আর খারাপ আত্মা নিজেকে খারাপ কাজ করার জন্য ভর্ৎসনা করবে। কিয়ামত ও নাফসে লাওওয়ামাহর শপথ করে আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামত অবধারিত হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তবে সেটা কিছুটা ভিন্ন আংগিকে যথা :
(أَيَحْسَبُ الْإِنْسَانُ)
এটা শপথের জবাব। এখানে ইনসান বা মানুষ বলতে কাফির ও নাস্তিকদেরকে বুঝোনো হয়েছে যারা আখিরাতকে অস্বীকার করে থাকে। যারা বলে, আমরা মারা গেলে পচে গলে যাব, কোন অস্তিত্ব থাকবে না। আবার কি আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ একত্রিত করা সম্ভব? জবাবে আল্লাহ বলছেন : بلي হ্যাঁ, আল্লাহ তা‘আলা এতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, বরং আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত যথাযথভাবে সুবিন্যস্ত করতে সক্ষম। এখানে বিশেষ করে আঙ্গুলের অগ্রভাগের কথা উল্লেখ করার কারণ হল : একজন মানুষের আঙ্গুলের অগ্রভাগের ছাপের সাথে অন্য মানুষের আঙ্গুলের ছাপের মিল নেই। আল্লাহ তা‘আলা মানুষের এ সূক্ষ্ম পার্থক্যটুকুসহ নিয়ে আসতে সক্ষম।
এ আয়াতকে কেন্দ্র করে আবিস্কার করা হল (ফিঙ্গার প্রিন্ট) যা ব্যক্তিগত কাজে অপরাধীকে সনাক্তকরণে ব্যবহার করা হয়।
(لِيَفْجُرَ أَمَامَه۫) الفجور
-বলা হয় স্বেচ্ছায় মিথ্যা কথা বলাকে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : মানুষ বলে যে, খারাপ কাজ করতে থাকব, অতঃপর কিয়ামতের পূর্বে তাওবা করে নেব। (ইবনু কাসীর) তারপর আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের অবস্থা বর্ণনা করছেন।
(بَرِقَ الْبَصَرُ)
অর্থাৎ কিয়ামতের আতংকে চক্ষু খুলে স্থির হয়ে যাবে আর পলক পড়বে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَلَا تَحْسَبَنَّ اللّٰهَ غَافِلًا عَمَّا يَعْمَلُ الظّٰلِمُوْنَ إِنَّمَا يُؤَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيْهِ الْأَبْصَارُ)
“তুমি কখনও মনে কর না যে, জালিমরা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ গাফিল, নিশ্চয়ই তিনি তাদেরকে সেদিন পর্যন্ত অবকাশ দেন যেদিন চক্ষুসমূহ বিস্ফোরিত হবে।” (সূরা ইবরাহীম ১৪ : ৪২)
(خَسَفَ الْقَمَرُ)
অর্থাৎ চাঁদের আলো থাকবে না।
(وَجُمِعَ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ)
‘যখন সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে’ আজ পর্যন্ত চাঁদ ও সূর্য একত্রিত হয়নি। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা চাঁদকে আলোহীন আর সূর্যকে গুটিয়ে নিয়ে উভয়কে একত্রিত করবেন।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ وَإِذَا النُّجُوْمُ انْكَدَرَت)
“সূর্যকে যখন গুটিয়ে আলোহীন করা হবে, নক্ষত্ররাজি যখন খসে পড়বে।” (সূরা তাকভীর ৮১ : ১-২)
কিয়ামতের এ ভয়াবহ অবস্থা দেখে কাফিররা পলায়ন করার চেষ্টা করবে কিন্তু পলায়নের জায়গা কোথায়? পালানোর কোন জায়গা থাকবে না।
وزر অর্থ : এমন পাহাড় বা দুর্গকে বলা হয় যেখানে আশ্রয় গ্রহণ করা যায়। অর্থাৎ সেদিন কোন আশ্রয়স্থল থাকবেনা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
( مَا لَكُمْ مِّنْ مَّلْجَإٍ يَّوْمَئِذٍ وَّمَا لَكُمْ مِّنْ نَّكِيْرٍ)
“যেদিন তোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তোমাদের জন্য তা প্রতিরোধকারী কেউ থাকবে না।” (সূরা শুয়ারা ৪২ : ৪৭)
(يُنَبَّؤُا الْإِنْسَانُ. . . )
“সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে, যা সে অগ্রে পাঠিয়েছে ও পশ্চাতে রেখে গেছে।” যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন :
(وَوَجَدُوْا مَا عَمِلُوْا حَاضِرًا ط وَلَا يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا)
“তারা তাদের কৃতকর্ম সম্মুখে উপস্থিত পাবে; তোমার প্রতিপালক কারোর প্রতি জুলুম করেন না।” (সূরা কাহাফ ১৮ : ৪৭)
(بَصِيرَةٌ . . . . . وَّلَوْ أَلْقٰي مَعَاذِيرَه)
অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষ তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জ্ঞাত যদিও সে নানা রকমের বাহানা বা অজুহাত পেশ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(اِقْرَأْ كِتٰبَكَ ط كَفٰي بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيْبًا)
‘তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসেব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’ (সূরা ইসরা ১৭ : ১৪)
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন : যদিও মানুষ তাদের কৃত পাপ কাজ অস্বীকার করার জন্য বিতর্ক করবে কিন্তু সে ভাল করেই অবগত যে, এগুলো আমার দ্বারা কৃত অপরাধ। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(ثُمَّ لَمْ تَكُنْ فِتْنَتُهُمْ إِلَّآ أَنْ قَالُوْا وَاللّٰهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ)
“অতঃপর (যখন তাদের শরীকদের সম্পর্কে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে তখন) তাদের এটা ছাড়া বলার অন্য কোন অজুহাত থাকবে না-‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহর শপথ! আমরা তো মুশরিকই ছিলাম না।” (সূরা আনআম ৬ : ২৩)
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. نفس اللوامة
এর পরিচয় ও তিরস্কার করার কারণ জানতে পারলাম।
২. আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে পুক্সক্ষানুপুক্সক্ষভাবে পুনরুত্থিত করতে সক্ষম।
৩. কিয়ামতের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানলাম।
৪. সেদিন মানুষ কৃত অপরাধ অস্বীকার করতে চাইবে, পলায়ন করতে চাইবে কিন্তু কোন পথ পাবে না।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings