Surah Al Jinn Tafseer
Tafseer of Al-Jinn : 20
Saheeh International
Say, [O Muhammad], "I only invoke my Lord and do not associate with Him anyone."
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
১৮-২৪ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তা’আলা স্বীয় বান্দাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তারা যেন তাঁর ইবাদতের জায়গাকে শিরক হতে পবিত্র রাখে, সেখানে যেন অন্য কাউকেও না ডাকে। কাউকেও যেন আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যে শরীক না করে। ইয়াহূদ ও খৃষ্টানরা তাদের গীর্জা ও মন্দিরে গিয়ে আল্লাহর সাথে অন্যদেরকে শরীক করতো। তাই এই উম্মতকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, তারা যেন এরূপ না করে, বরং নবী (সঃ) এবং উম্মত সবাই যেন একত্ববাদী হয়ে থাকে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার সময় শুধু মসজিদে আকসা ও মসজিদে হারামই বিদ্যমান ছিল। হযরত আ’মাশ (রঃ) এই আয়াতের তাফসীরে এটাও বর্ণনা করেছেন যে, জ্বিনেরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট তাঁর মসজিদে মানবের সাথে নামায পড়ার অনুমতি প্রার্থনা করে। সুতরাং তাদেরকে যেন বলা হচ্ছেঃ তোমরা নামায পড়তে পার, কিন্তু তাদের সাথে মিশ্রিত হয়ে যেয়ো না।
হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রঃ) বলেন যে, জ্বিনের রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট আরয করলোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমরা তো দূর দূরান্তে থাকি, সুতরাং আপনার মসজিদে নামায পড়তে আসতে পারি কি করে?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “উদ্দেশ্য হলো নামায আদায় করা এবং আল্লাহর ইবাদতে লেগে থাকা, তা যেখানেই হোক না কেন।” হযরত ইকরামা (রঃ) বলেন যে, এ আয়াতটি সাধারণ এটা সমস্ত মসজিদকেই অন্তর্ভুক্ত করে। হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রঃ) বলেন যে, এ আয়াতটি সিজদার অঙ্গগুলোর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। ভাবার্থ হলোঃ যে অঙ্গগুলোর উপর তোমরা সিজদা কর ওগুলো সবই আল্লাহর। সুতরাং তোমাদের এই অঙ্গগুলোর দ্বারা অন্যদেরকে সিজদা করা হারাম।
সহীহ হাদীসে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “সাতটি হাড়ের উপর সিজদা করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি। ওগুলো হলোঃ কপাল, (হাত দ্বারা ইশারা করে তিনি নাককেও কপালের অন্তর্ভুক্ত করেন), দুই হাত, দুই হাঁটু এবং দুই পায়ের পাতা।”
(আরবি)-এ আয়াতের একটি ভাবার্থ হলো এই যে, জ্বিনেরা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর মুখে যখন কুরআন পাঠ শুনলো তখন তারা এমনাবে আগে আগে বেড়ে চললো যে, যেন একে অপরের মাথার উপর দিয়ে চলে যাবে। দ্বিতীয় ভাবার্থ হলোঃ জ্বিনেরা নিজেদের সম্প্রদায়কে বললোঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাহাবীদের (রাঃ) তার প্রতি আনুগত্যের অবস্থা এই যে, যখন তিনি নামাযে দাঁড়িয়ে যান এবং সাহাবীগণ তাঁর পিছনে থাকেন তখন প্রথম হতে শেষ পৃর্যন্ত আনুগত্য ও অনুকরণে এমনভাবে লেগে থাকেন যে, যেন একটা বৃত্ত। তৃতীয় উক্তি এই যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন জনগণের মধ্যে একত্ববাদ ঘোষণা করেন তখন কাফিররা দাঁত কটমট হয়ে এই দ্বীন ইসলামকে মিটিয়ে দিতে এবং এর আলোকে নির্বাপিত করে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ পাকের ইচ্ছা এর বিপরীত, তিনি এই দ্বীনকে সমুন্নত করতে চান ? এই তৃতীয় উক্তিটিই বেশী একাশমান। কেননা এর পরেই রয়েছেঃ তুমি বল আমি আমার প্রতিপালককেই ডাকি এবং তাঁর সঙ্গে কাউকেও শরীক করি না।।
অর্থাৎ সত্যের আহ্বান ও একত্ববাদের শব্দ যখন কাফিরদের কানে পৌঁছে যার প্রতি তারা বহুদিন হতেই মনঃক্ষুন্ন ছিল তখন তারা কষ্ট প্রদানে, বিরুদ্ধাচরণে এবং অবিশ্বাসকরণে উঠে পড়ে লেগে যায়। আর সত্যকে মিটিয়ে দিতে চায় ও রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর শত্রুতার উপর একতাবদ্ধ হয়। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঐ কাফিরদেরকে সম্বোধন করে বলেনঃ আমি আমার এক শরীকবিহীন প্রতিপালকের ইবাদতে মগ্ন রয়েছি। আমি তাঁরই আশ্রয়ে আছি। তাঁরই উপর আমি ভরসা করি। তিনিই আমার আশ্রয়দানস্থল। তোমরা কখনো আমার নিকট হতে এ আশা করো না যে, আমি অন্য কারো সামনে মাথা নত করবো এবং তার ইবাদত করবো। আমি তোমাদের মতই মানুষ। তোমাদের লাভ-ক্ষতির আমি মালিক নই। আমি তো আল্লাহর এক দাস মাত্র। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আমিও এক বান্দা। তোমাদেরকে হিদায়াত করা বা পথভ্রষ্ট করার ক্ষমতা আমি রাখি না। সবকিছুই আল্লাহর অধিকারভুক্ত। আমি তো শুধু একজন প্রচারক। আমি নিজেই যদি আল্লাহর অবাধ্যাচরণ করি তবে অবশ্যই তিনি আমাকে শাস্তি দিবেন এবং আমাকে বাঁচাবার কারো ক্ষমতা হবে না। আল্লাহ ছাড়া আমি কোন আশ্রয় স্থল দেখি না। আমার পদমর্যাদা শুধু প্রচারক ও রাসূল হিসেবেই রয়েছে।
কারো কারো মতে (আরবি) শব্দের ইসতিসনা বা স্বাতন্ত্র (আরবি)-এর সাথে রয়েছে। অর্থাৎ আমি লাভ ক্ষতি এবং হিদায়াত ও যালালাতের মালিক নই। আমি তো শুধু তাবলীগ করি ও আল্লাহর বাণী মানুষের নিকট পৌঁছিয়ে থাকি। আবার এই ইসতিসনা (আরবি)-এর সাথেও হতে পারে। অর্থাৎ আমাকে শুধু আমার রিসালাতের পালনই আল্লাহর আযাব হতে বাঁচাতে পারে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবি)
অর্থাৎ “হে রাসূল (সঃ)! তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা তুমি (জনগণের কাছে) পৌঁছিয়ে দাও, আর যদি তুমি তা না কর তাহলে তুমি তার রিসালাত পৌঁছিয়ে দিলে না, আর আল্লাহ তোমাকে লোকদের (অনিষ্ট) হতে রক্ষা করবেন।”(৫:৬৭)
ইরশাদ হচ্ছেঃ যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-কে অমান্য করে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের অগ্নি, সেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। যখন এই মুশরিক দানব ও মানবরা কিয়ামতের দিন ভয়াবহ আযাব দেখতে পাবে তখন তারা বুঝতে পারবে কে সাহায্যকারীর দিক দিয়ে দুর্বল এবং কে সংখ্যায় স্বল্প। অর্থাৎ একত্ববাদে বিশ্বাসী মুমিন না তাতে অবিশ্বাসী মুশরিক। প্রকৃত ব্যাপার এই যে, ঐদিন মুশরিকদের শুধু নাম হিসেবেও কোন সাহায্যকারী থাকবে না এবং মহামহিমান্বিত আল্লাহর সেনাবাহিনীর তুলনায় তাদের সংখ্যা হবে অতি নগণ্য।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings