Surah Nuh Tafseer
Tafseer of Nuh : 11
Saheeh International
He will send [rain from] the sky upon you in [continuing] showers
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৫-২০ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আলোচ্য আয়াতগুলোতে নূহ (আঃ)-এর দাওয়াতের ধরণ ও পদ্ধতি, দাওয়াত পাওয়ার পর জাতির ঔদ্ধত্যতার ধরণ এবং আল্লাহ তা‘আলার কাছে অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করার ফলাফল আলোচনা করা হয়েছে। নূহ (আঃ)-এর দাওয়াতের পদ্ধতি ছিল :
(১) দিন রাত ২৪ ঘন্টা দাওয়াতী কাজ করেছেন। (২) প্রকাশ্যে জনসম্মুখে দাওয়াত দিয়েছেন। (৩) উঁচু আওয়াজে সমবেত জনসমাজে দাওয়াত দিয়েছেন। (৪) গোপনে জনে জনে দাওয়াত দিয়েছেন।
তাঁর জাতির লোকেরা দাওয়াত পেয়ে তা বর্জন করার যে পন্থাসমূহ অবলম্বন করল তা হল :
(১) দাওয়াতের কথা তাদের কানে পৌঁছলেই কানে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে দিত।
(২) কাপড় দ্বারা চেহারা ঢেকে নিত। (৩) কুফরীতে অটল থাকত। (৪) সত্য গ্রহণে অহংকার প্রকাশ করত।
নূহ (আঃ) বললেন, যদি তোমরা অপরাধ স্বীকার করতঃ আল্লাহ তা‘আলার কাছে ক্ষমা চাও তাহলে : (১) আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন। (২) প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যাতে ফসল ফলাতে পার। (৩) সন্তান ও ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে দেবেন। (৪) এবং আখিরাতে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
وَقَارًا শব্দটি توقير থেকে গঠিত। অর্থ : সম্মান, বড়ত্ব ও প্রতিপত্তি। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : আল্লাহ তা‘আলাকে যেমন সম্মান করা দরকার তেমন সম্মান কর না। অর্থাৎ তাঁর শাস্তিকে ভয় কর না।
أَطْوَارًا স্তরে স্তরে প্রথমে বীর্যে, তারপর রক্তপিন্ডে, তারপর মাংসপিন্ডে, তারপর হাড় বানিয়ে তার ওপর মাংস দ্বারা ঢেকে দেওয়া হয়। এভাবে একটি মানুষকে পূর্ণরূপে গড়ে তোলেন। এ সম্পর্কে সূরা হাজ্জের ৫ নম্বর, সূরা মু’মিনূনের ১৪ নম্বর আয়াতসহ অনেক সূরাতে আলোচনা করা হয়েছে।
طِبَاقًا অর্থ واحدة فوق واحدة একটির ওপর আরেকটি।
((وَّجَعَلَ الْقَمَرَ فِيْهِنّ. . . .
‘এবং সেখানে চাঁদকে....’ যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন :
(هُوَ الَّذِيْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَا۬ءً وَّالْقَمَرَ نُوْرًا وَّقَدَّرَه۫ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السِّنِيْنَ وَالْحِسَابَ ط مَا خَلَقَ اللّٰهُ ذٰلِكَ إِلَّا بِالْحَقِّ ج يُفَصِّلُ الْاٰيٰتِ لِقَوْمٍ يَّعْلَمُوْنَ)
“তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন এবং তার গতিপথসমূহ নির্দিষ্ট করেছেন যাতে তোমরা বৎসর গণনা ও সময়ের হিসেব জানতে পার। আল্লাহ এটা নিরর্থক সৃষ্টি করেননি। জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য তিনি এ সমস্ত নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করেন।” (সূরা ইউনুস ১০ : ৫)
(وَاللہُ اَنْۭبَتَکُمْ مِّنَ الْاَرْضِ نَبَاتًاﭠﺫ)
“উদ্ভিদ উৎপন্নের ন্যায় তোমাদেরকে উৎগত করেছেন মাটি হতে” অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা আদম (আঃ)-কে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। আর পরবর্তী বংশধর তার পৃষ্ঠ দেশ থেকে এসেছে। আর যদি বলা হয় বীর্য হতে সৃষ্টি তাহলে এ কথাও সঠিক। কেননা বীর্যের মূল উৎপত্তি স্থল হল মাটি।
(ثُمَّ يُعِيْدُكُمْ فِيْهَا وَيُخْرِجُكُمْ)
‘অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তাতে ফিরিয়ে নেবেন এবং পরে পুনরুত্থিত করবেন,’ অর্থাৎ মারা যাওয়ার পর মাটিতে দাফন করা হবে, আবার পুনরুত্থানের জন্য মাটি থেকেই উঠানো হবে।
بِسَاطًا অর্থাৎ মাটিকে আল্লাহ তা‘আলা বিছানার মত সুসমতল করে বানিয়েছেন যাতে মানুষ চলাচল করতে পারে। যদি সমতল করে না দিতেন তাহলে বসবাস, চলাচল ও ফসল ফলানোসহ কিছুই করা সম্ভব হতো না। سُبُلًا শব্দটি سبيل এর বহুবচন, অর্থ : পথ। فِجَاجًا হল فج এর বহুবচন, অর্থ : প্রশস্ত।
সুতরাং একজন আল্লাহ তা‘আলার পথে আহ্বানকারী অবিরাম স্থান কাল পাত্র ভেদে মানুষকে আহ্বান করবে। অনেকে তার আহ্বানে সাড়া দেবে, অনেকে বিরোধিতা করবে। তা সত্ত্বেও দাওয়াতী কার্যক্রম ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. নূহ (আঃ)-এর দাওয়াতী পদ্ধতি জানলাম।
২. সত্যের দাওয়াত অধিকাংশই প্রত্যাখ্যান করে থাকে যেমন করেছিল নূহ (আঃ)-এর জাতি।
৩. ঈমানের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক ফলাফল জানতে পারলাম।
৪. আকাশ-জমিন ও চন্দ্র-সূর্য ইত্যাদি সৃষ্টির রহস্য জানা গেল।
৫. একজন দাঈ নিরাশ না হয়ে যথাসম্ভব দাওয়াতী কাজে আঞ্জাম দিয়ে যাবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings