Surah Al An'am Tafseer
Tafseer of Al-An'am : 159
Saheeh International
Indeed, those who have divided their religion and become sects - you, [O Muhammad], are not [associated] with them in anything. Their affair is only [left] to Allah ; then He will inform them about what they used to do.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৫৯-১৬০ নং আয়াতের তাফসীর:
যারা তাদের দীনকে বিভিন্ন দলে উপদলে বিভক্ত করতঃ বিভিন্ন নাম ধারণ করেছে তাদেরকে ধমক দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে নাবী, তাদের দায়িত্ব তোমার নয়। তাদের দায়িত্ব আল্লাহ তা‘আলার, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করবেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(إِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَالَّذِيْنَ هَادُوْا وَالصّٰبِئِيْنَ وَالنَّصٰرٰي وَالْمَجُوْسَ وَالَّذِيْنَ أَشْرَكُوْآ إِنَّ اللّٰهَ يَفْصِلُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ط إِنَّ اللّٰهَ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ شَهِيْدٌ)
“যারা ঈমান এনেছে এবং যারা ইয়াহূদী হয়েছে, যারা সাবিয়ী, খ্রিস্টান ও অগ্নিপূজক এবং যারা মুশরিক হয়েছে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন। আল্লাহ সমস্ত কিছুর সম্যক প্রত্যক্ষকারী।”(সূরা হাজ্জ ২২:২৭)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَلَا تَکُوْنُوْا کَالَّذِیْنَ تَفَرَّقُوْا وَاخْتَلَفُوْا مِنْۭ بَعْدِ مَا جَا۬ءَھُمُ الْبَیِّنٰتُﺚ وَاُولٰ۬ئِکَ لَھُمْ عَذَابٌ عَظِیْمٌ)
“তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং তাদের কাছে প্রমাণ আসার পর মতভেদে লিপ্ত হয়েছে। তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।”(সূরা আলি-ইমরান ৩:১০৫)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(مُنِیْبِیْنَ اِلَیْھِ وَاتَّقُوْھُ وَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَلَا تَکُوْنُوْا مِنَ الْمُشْرِکِیْنَﭮﺫ مِنَ الَّذِیْنَ فَرَّقُوْا دِیْنَھُمْ وَکَانُوْا شِیَعًاﺚ کُلُّ حِزْبٍۭ بِمَا لَدَیْھِمْ فَرِحُوْنَ)
“(নিজেকে দীনে প্রতিষ্ঠিত রাখো) বিশুদ্ধচিত্তে আল্লাহ অভিমুখী হয়ে এবং তাকে ভয় কর, সালাত কয়েম কর এবং মুশরিকদের মধ্যে শামিল হয়ো না, যারা তাদের দীনকে খণ্ড-বিখণ্ড করে নিয়েছে এবং ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ অনুসৃত নিয়ম নিয়ে উল্লসিত।”(সূরা রূম ৩০:৩১-৩২)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের তিনটি বিষয়ে সন্তুষ্ট হন আর তিনটি বিষয়ে অসন্তুষ্ট বা অপছন্দ করেন। তিনি তোমাদের জন্য সন্তুষ্ট যে, তোমরা তাঁরই ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। আর তোমরা আল্লাহ তা‘আলার রজ্জুকে সুদৃঢ় ও সম্মিলিতভাবে আঁকড়ে ধরবে, দলে দলে বিচ্ছিন্ন হবে না। আর তিনি অপছন্দ করেন অনর্থক কথা বলাবলি করা, অনর্থক প্রশ্ন করা এবং সম্পদ নষ্ট করা। (সহীহ মুসলিম হা: ৪৫৭৮)
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: জামা‘আতের ওপর আল্লাহ তা‘আলার হাত রয়েছে। (তিরমিযী হা: ২১৬৬, সহীহ)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন: আয়াতে বিভক্ত জাতি দ্বারা উদ্দেশ্য ইয়াহুদ ও খ্রিস্টানরা। কারণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নবুওয়াতের পর তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। (ইবনু কাসীর ৩/৪১৯)। কেউ কেউ বলেছেন: কিছু মুশরিক ফেরেশতাদের, কিছু তারকারাজির এবং কিছু বিভিন্ন মূর্তির পূজা করত। তবে এ আয়াত ব্যাপক।
দলে দলে বিভক্ত হওয়া হকপন্থীদের বৈশিষ্ট্য নয়, বরং তা মুশরিক, বিদ‘আতী ও প্রবৃত্তির অনুসারীদের কাজ। বিদআতীরা তাদের প্রবৃত্তি যা ভাল মনে করে সে ধারণানুযায়ী বিভিন্ন তরীকা, ওযীফা ও সবক তৈরি করে মানুষকে নিজেদের দল ও মতের দিকে আহ্বান করে জান্নাতের যিম্মাদারী নিচ্ছে। জেনে রাখুন, এসব শয়তানের তরীকা, মুসলিমদের তরীকা হল একটি। তা হল কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ। বিভিন্ন পথ, মত ও তরীকা তৈরি করে মুসলিমদেরকে দলে দলে বিভক্ত করা গোমরাহী ছাড়া কিছুই নয়।
(مَنْ جَا۬ءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَه۫ عَشْرُ اَمْثَالِھَا)
‘কেউ কোন সৎ কাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে’এ আয়াতে সৎ আমলকারীদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার দয়া ও অনুগ্রহের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। যে ব্যক্তি একটি ভাল আমল করবে তার বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা দশ গুণ প্রতিদান দেবেন। আবার যে খারাপ আমল করবে তার বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা দশ গুণ গুনাহ দেবেন না। বরং ঐ একটি খারাপ আমলের যে গুনাহ হয় তাই দেবেন। আল্লাহ তা‘আলা পারতেন ভাল কাজের বিনিময়ে একটি মাত্র নেকী দিতে কিন্তু এটাই হল আল্লাহ তা‘আলার দয়া যা ছাড়া কোন মানুষ জান্নাতে যেতে পারবে না।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা বলেন, নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক দয়ালু। যে ব্যক্তি একটি সৎ কাজের মনস্থ করেছে, কিন্তু আমল করেনি তার জন্য একটি নেকী লিখা হয়। আর যদি কমিটি করে তাহলে দশ থেকে সাতশত পর্যন্ত নেকী লেখা হয়। এমনকি এর চেয়েও বেশি। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কোন খারাপ কাজের মনস্থ করে, কিন্তু বাস্তবে তা করল না তার জন্য একটি নেকী লেখা হয়। আর যদি করেই ফেলে তাহলে একটি গুনাহ লেখা হয়। অথবা তা মিটিয়ে দেন। আল্লাহ তা‘আলা তাকেই ধ্বংস করেন যে নিজেকে ধ্বংস করে। (সহীহ বুখারী হা: ৬৪৯১)
এরূপ অসংখ্য সহীহ হাদীস রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে সৎ কাজের বেশি প্রতিদান দেয়ার কথা আর খারাপ কাজের অনুরূপ প্রতিদান দেয়ার কথা। ( ইবনে কাসীর, ৩য় খণ্ড, পৃঃ ৪২১-৪২৩)
তাই দীনের ভিতর দলাদলি সৃষ্টি করা যা মুসলিম ঐক্যের প্রতিবন্ধক এমন কাজ অবশ্যই বর্জনীয়। আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। আসুন, আমরা সকল মুসলিম! সকল তরীকা, মাযহাব ও মতাদর্শ বর্জন করে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর দিকে ফিরে আসি। তবেই আমরা আবার ইসলামের স্বর্ণ যুগ ফিরে পারবো ইনশা-আল্লাহ। আর যদি আপন আপন মত ও তরীকার দিকে আহ্বান জানাই, শুধু মুখে ঐক্যের বুলি আওড়াই তাহলে কখনও ঐক্য সম্ভব নয়। সুতরাং আকীদাহ-আমল সকল ক্ষেত্রে ঐক্যের মানদন্ড হবে কুরআন ও সহীহ হাদীস, তাহলেই ঐক্য সম্ভব। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সেই তাওফীক দান করুন, আমীন।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. দীনের মধ্যে দল উপদল সৃষ্টি করা হারাম।
২. যারা ব্যক্তি ও গোষ্ঠির স্বার্থে দলে দলে বিভক্ত হয়ে যায় তাদের সাথে মু’মিনদের কোন সম্পর্ক নেই।
৩. মু’মিনদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার কিরূপ দয়া ও অনুগ্রহ তা জানতে পারলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings