Surah Al An'am Tafseer
Tafseer of Al-An'am : 142
Saheeh International
And of the grazing livestock are carriers [of burdens] and those [too] small. Eat of what Allah has provided for you and do not follow the footsteps of Satan. Indeed, he is to you a clear enemy.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৪১-১৪২ নং আয়াতের তাফসীর:
সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা- এ আয়াত তার প্রমাণ বহন করছে।
প্রাণী, শস্য ও ফলমূলসহ পৃথিবীতে যা কিছু দেখতে পাই সবই আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি। তিনি এসব সৃষ্টি করেছেন মানুষের কল্যাণের জন্য। আর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য।
مَّعْرُوْشٰتٍ এর মূল ধাতু হল عرش অর্থ উঁচু করা ও উঠানো। আর معروشات থেকে বুঝানো হয়েছে কোন কোন গাছের লতাপাতাগুলো যা মাচার উপরে চড়ানো হয়। যেমন আঙ্গুর ও শাক-সবজির মাচা ইত্যাদি।
(وَّغَيْرَ مَعْرُوْشٰتٍ)
‘মাচা অবলম্বী নয়’বলতে যা মাচার ওপর চড়ানো হয় না। বরং জমির উপরেই বাড়তে থাকে যেমন তরমুজ, শস্য ইত্যাদি।
(وَاٰتُوْا حَقَّه يَوْمَ حَصَادِه)
‘আর ফসল তোলার দিনে তার হক প্রদান করবে’এ আয়াত বলবত আছে, না কি রহিত হয়ে গেছে? হক বলতে ফরয যাকাত, না নফল যাকাত? এ নিয়ে অনেক মতামত পাওয়া যায়।
আল্লামা শানক্বিতী (রহঃ) এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। (আযওয়াউল বায়ান, ২/১৪১)
তবে সঠিক কথা হল, আয়াত রহিত নয়। আর حق (হ্ক) বলতে ফরয যাকাত যা ফসল মাড়ানোর দিনে দিতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ উশর বা দশভাগের একভাগ যদি সেচ দিয়ে উৎপন্ন করতে না হয়। আর সেচ দিয়ে উৎপন্ন করা হলে বিশভাগের একভাগ দিতে হবে। (তাফসীর মুয়াসসার, পৃঃ ১৪৫)
(وَلَا تُسْرِفُوْا ط إِنَّه لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ)
‘এবং অপচয় করবে না; নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না।’অর্থাৎ প্রয়োজন মত খাও, ব্যয় কর, কিন্তু অপচয় করো না। কারণ অপচয়কারীকে আল্লাহ তা‘আলা ভালবাসেন না। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّ الْمُبَذِّرِيْنَ كَانُوْآ إِخْوَانَ الشَّيَاطِيْنِ)
“যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই।”(সূরা বানী ইসরাঈল ১৭:২৭)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
كُلُوا وَاشْرَبُوا وَالبَسُوا وَتَصَدَّقُوا، فِي غَيْرِ إِسْرَافٍ وَلَا مَخِيلَةٍ
তোমরা পান কর, পরিধান কর, সদাকা দাও; অপচয় ও কৃপণতা কর না। (সহীহ বুখারী, কিতাবুল লিবাস এর শুরু)
(حَمُوْلَةً وَّفَرْشًا)
‘কতক ভারবাহী ও কতক ক্ষুদ্রাকার পশু’অর্থাৎ চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে এমন কিছু প্রাণী সৃষ্টি করেছেন যার ওপর বোঝা বহন করা হয়। যেমন উট, ঘোড়া আর কতকগুলো আছে ছোট যেমন ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি। তবে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: حَمُوْلَةً (যার ওপর বোঝা বহন করানো হয় যেমন উট আর وَّفَرْشًا হল ছোট উট। (হাকিম ২/৩১৭, সহীহ)
এ সম্পর্কে কুরআনে অসংখ্য আয়াত বিদ্যমান। যেমন সূরা ইয়াসীনের ১৭-৭২ নং, নাহালের ৬৬-৮০ নং, ফাতিরের ৭৯-৮১ নং আয়াত।
সবশেষে আল্লাহ তা‘আলা শয়তানের অনুসরণ থেকে নিষেধ করেছেন। কেননা সে আমাদের প্রকাশ্য শত্র“। অতএব তাকে শত্র“ হিসেবেই গ্রহণ করা দরকার। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوْهُ عَدُوًّا ط إِنَّمَا يَدْعُوْا حِزْبَه۫ لِيَكُوْنُوْا مِنْ أَصْحٰبِ السَّعِيْرِ )
“নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের শত্র“, সুতরাং তাকে তোমরা শত্র“রূপেই গ্রহণ কর। সে তার দলবলকে শুধু এজন্যই আহ্বান করে, যেন তারা (পথভ্রষ্ট হয়ে) জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।”(সূরা মু’মিনূন ৪০:৬)
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা আমাদের এত নেয়ামত দান করেছেন, কিভাবে আমরা তাঁর অবাধ্য হব এবং তাঁর নাফরমানী করব? বরং আমাদের উচিত তাঁর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা ও একমাত্র তাঁরই ইবাদত করা এবং সকল শয়তানী কর্মের অনুসরণ বর্জন করা।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা এবং এসব সৃষ্টি করার লক্ষ উদ্দেশ্য একমাত্র তাঁরই আনুগত্য ও দাসত্ব করা।
২. ফসলের হক হল ওশর বা যাকাত আদায় করা।
৩. আল্লাহ তা‘আলা অপচয়কারীকে ভালবাসেন না।
৪. আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়ার সবকিছু মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
৫. শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্র“। অতএব তাকে শত্র“ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings