Surah Al An'am Tafseer
Tafseer of Al-An'am : 134
Saheeh International
Indeed, what you are promised is coming, and you will not cause failure [to Allah ].
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
১৩৩-১৩৫ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা'আলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে সম্বোধন করে বলছেন-হে মুহাম্মাদ (সঃ)! তোমার প্রতিপালক সমস্ত মাখলুকাত হতে সর্ব দিক দিয়েই অমুখাপেক্ষী। সমস্ত ব্যাপারে সবাই তারই মুখাপেক্ষী। তাছাড়া তিনি মহান ও দয়ালুও বটে। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই আল্লাহ লোকদের প্রতি অত্যন্ত করুণাময় ও দয়ালু।” (২:১৪৩)
ইরশাদ হচ্ছে-যদি তোমরা তাঁর আদেশ নিষেধ অমান্য কর তবে তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিবেন, অতঃপর যে কওমকে চাইবেন তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন, যাতে এই অন্য কওম তাঁর বাধ্য ও অনুগত হয়ে। যায়।
(আরবী) যেমন তিনি তোমাদেরকে অন্য এক জাতির বংশধর হতে সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ এই কাজের উপর তিনি পূর্ণ ক্ষমতাবান, তাঁর কাছে এটা খুবই সহজ। যেমন তিনি পূর্ব যুগকে ধ্বংস করে ওদের স্থলে অন্য কওমকে আনয়ন করতে সক্ষম। তিনি বলেনঃ হে লোকসকল! তোমরা আল্লাহর মুখাপেক্ষী এবং তার ফকীর। আর অমুখাপেক্ষী ও প্রশংসিত হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে ধ্বংস করে অন্য মাখলুক সৃষ্টি করবেন। এটা তাঁর কাছে মোটেই কঠিন কাজ নয়। তিনি বলেনঃ “যদি তোমরা তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও তবে তোমাদের পরিবর্তে তিনি অন্য কওমকে আনয়ন করবেন, অতঃপর তারা তোমাদের মত হবে না।” আবান ইবনে উসমান এই আয়াত সম্পর্কে বলেন যে, (আরবী) মূলকেও বলা হয় এবং বংশকেও বলা হয়।
আল্লাহ পাকের উক্তি-(আরবী) অর্থাৎ হে মুহাম্মাদ (সঃ)! তাদেরকে তুমি জানিয়ে দাও যে, কিয়ামত সম্পর্কে তাদেরকে যে কথার ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা অবশ্য অবশ্যই পালিত হবে। তোমরা আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না। তিনি তো এ কাজের উপর ক্ষমতাবান যে, তোমরা মাটি হয়ে যাওয়ার পর এবং তোমাদের হাড়গুলো পচে গলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও তোমাদেরকে তিনি পুনর্জীবিত করবেন। এই আয়াতের তাফসীরে ইবনে আবি হাতিম (রঃ) হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ “হে আদম সন্তান! যদি তোমরা জ্ঞানবান হও তবে নিজেদেরকে মৃতদের মধ্যে গণনা কর। কেননা, যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! তোমাদেরকে যে বিষয় সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা অবশ্যম্ভাবী এবং তোমরা আল্লাহকে অক্ষম ও দুর্বল করতে পারবে না।”
ইরশাদ হচ্ছে- হে নবী (সঃ)! তুমি তাদেরকে বলে দাও, তোমরা নিজ নিজ অবস্থায় আমল করতে থাক, আমিও আমল করছি। কার পরিণাম কল্যাণকর তা তোমরা শীঘই জানতে পারবে। এটা ভয়ানক ধমক ও ভীতি প্রদর্শন। অর্থাৎ যদি তোমরা ধারণা করে থাক যে, তোমরা সঠিক পথেই রয়েছে তবে ঐ পথেই চল এবং আমিও আমার পথে চলছি। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “হে মুহাম্মাদ (সঃ)! যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না তাদেরকে বলে দাও-তোমরা তোমাদের স্থানে আমল করে যাও এবং আমরাও আমল করে যাচ্ছি, তোমরা আমাদের জন্যে অপেক্ষা করতে থাক, আমরাও তোমাদের জন্যে অপেক্ষা করতে রয়েছি। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে যে কার পরিণাম কল্যাণকর। জেনে রেখো যে, যালিমরা কখনও মুক্তি ও সাফল্য লাভ করতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-এর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তার জন্যে বহু শহর জয় করিয়েছেন, দেশসমূহের উপর তাকে ক্ষমতা প্রদান করেছেন, বিরুদ্ধবাদীদের মাথা নীচু করিয়েছেন, মক্কার উপর তাঁকে বিজয়ী করেছেন, সারা মক্কাবাসীর উপর তাকে বিজয় দান করেছেন এবং সমস্ত আরব উপদ্বীপের উপর তার শাসন কায়েম করেছেন। অনুরূপভাবে ইয়ামন ও বাহরাইনের উপরও তার ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ সবকিছু তাঁর জীবদ্দশাতেই সংঘটিত হয়েছে। তাঁর ইন্তেকালের পর খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে শহরসমূহ এবং বিভিন্ন ভূখণ্ডগুলো বিজিত হতে থাকে। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন- আমি এবং আমার রাসূল (সঃ) অবশ্যই জয়যুক্ত হবে, আল্লাহ ক্ষমতাবান ও প্রতাপশালী ।”
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আমি অবশ্যই স্বীয় রাসূল (সঃ) এবং মুমিনদেরকে পার্থিব জীবনেও সাহায্য করবো এবং আখেরাতেও সাহায্য করবো, যেই দিন অত্যাচারীদের ওযর তাদের কোনই উপকার করবে না, তাদের জন্যে রয়েছে অভিসম্পাত ও জঘন্য বাসস্থান।" আর এক জায়গায় তিনি বলেনঃ “যিকরের পর যায়ূরে আমি লিখে দিয়েছিলাম যে, আমার সৎ বান্দারা যমীনের উত্তরাধিকারী হবে।” আর তিনি স্বীয় রাসূলদের সম্পর্কে খবর দিতে গিয়ে বলেনঃ “আমি রাসূলদের কাছে অহী পাঠিয়েছিলাম যে, যালিমদেরকে আমি অবশ্যই ধ্বংস করে দেবো, অতঃপর তাদের পরে আমি তোমাদেরকে (মুমিনদেরকে) ভূ-পৃষ্ঠে রাজত্ব দান করবো, এটা ঐ লোকদের জন্যে যারা আমাকে ভয় করে।” অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ “তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে ও ভাল কাজ করেছে তাদের সাথে আল্লাহ ওয়াদা করেছেন যে, তিনি তাদেরকে যমীনে তাঁর খলিফা বানাবেন যেমন তাদের পূর্ববর্তী লোকদেরকে স্বীয় খলিফা বানিয়েছিলেন, আর যে দ্বীনকে তিনি পছন্দ করেছেন সেই দ্বীনের উপর তাদেরকে পরিচালিত করবেন এবং ভয়ের পরে তাদের জীবনকে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে পরিবর্তন করবেন, কেননা তারা আমার ইবাদত করে এবং শির্ক করে না।” আল্লাহ তা'আলা উম্মতে মুহাম্মাদিয়াকে এই বিশেষত্ব দান করেছেন। সুতরাং প্রথম ও শেষ এবং প্রকাশ্য ও গোপনীয় সমস্ত প্রশংসা ও শুকরিয়া আল্লাহর জন্যে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings