Surah Al An'am Tafseer
Tafseer of Al-An'am : 119
Saheeh International
And why should you not eat of that upon which the name of Allah has been mentioned while He has explained in detail to you what He has forbidden you, excepting that to which you are compelled. And indeed do many lead [others] astray through their [own] inclinations without knowledge. Indeed, your Lord - He is most knowing of the transgressors.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১১৬-১২১ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীবাসী সম্পর্কে বলেন যে, তাদের অধিকাংশই পথভ্রষ্ট। কারণ তারা ধারণার অনুসারী। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ الْأَوَّلِيْنَ)
“আর তাদের পূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছিল পূর্ববর্তীদের অধিকাংশই।”(সূরা সাফফাত ৩৭:৭১)
অন্যত্র তিনি বলেন:
(وَمَآ أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِيْنَ)
“তুমি যতই আকাক্সক্ষা কর না কেন, অধিকাংশ লোকই বিশ্বাসী নয়।”(সূরা ইউসুফ ১২:১০৩)
তাই আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলছেন, তুমি যদি অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাকে তাদের মত পথভ্রষ্ট করে ফেলবে।
অতএব সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্যের মাপকাঠি হতে পারে না। সত্যের পক্ষে একজন থাকলেও সত্যের পথই অবলম্বন করা উচিত। সুতরাং সত্যের মাপকাঠি হল কুরআন ও সহীহ হাদীস।
১১৮-১২১ নং আয়াতের শানে নুযূল:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, কিছু মানুষ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করল। অতঃপর বলল: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা যা হত্যা করি তা খাব আর আল্লাহ তা‘আলা যা হত্যা করেন তা খাব না? তখন
(فكلوا مما ذكر.......لمشركون)
নাযিল হয়। (তিরমিযী, হা: ৩০৬৯, সহীহ।)
ইবনু আব্বাস থেকে অন্য বর্ণনায় রয়েছে: (শয়তানরা) বলে: আল্লাহ তা‘আলা যা জবাই করে দেন তা খাও না আর নিজেরা যা জবাই কর কেবল তা খাও? তখন
(وَإِنَّ الشَّيٰطِيْنَ لَيُوْحُوْنَ إِلٰٓي أَوْلِيَآئِهِمْ)
নাযিল হয়। (নাসাঈ হা: ৪৪৩৭, সনদ সহীহ)
(فَكُلُوْا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللّٰهِ عَلَيْهِ)
‘তোমরা তাঁর নিদর্শনে বিশ্বাসী হলে যা আল্লাহর নাম নিয়ে (জবেহ করা) হয়েছে তা হতে খাও।’যেসব জন্তু আল্লাহ তা‘আলার নাম নিয়ে জবেহ করা হয় তা খাওয়া মুসলিমদের জন্য তিনি বৈধ করে দিয়েছেন। আর যা জবেহ করার সময় তাঁর নাম নেয়া হয়নি তা হারাম করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(لَا تَأْكُلُوْا مِمَّا لَمْ يَذْكُرِ اسْمُ اللّٰهِ عَلَيْهِ)
‘যাতে আল্লাহর নাম নিয়ে (জবেহ করা) হয়নি তার কিছুই তোমরা খেও না।’
তাই কোন শিকার ধরে নিয়ে আসার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রাণী প্রেরণ করলে অবশ্যই ‘বিসমিল্লাহ’ বলে পাঠাতে হবে। আর যদি এমন এলাকা থেকে কোন জবেহকৃত প্রাণী বা গোশত আসে যে, তারা আল্লাহ তা‘আলার নাম নিয়েছে কি না তা জানা যায়নি, তা হলে ‘বিসমিল্লাহ’বলে খাওয়া বৈধ হবে। (সহীহ বুখারী হা: ৫৫০৭)
যা হারাম তা আল্লাহ তা‘আলা বর্ণনা করে দিয়েছেন। তবে কেউ নিরুপায় হয়ে হারাম খেতে বাধ্য হলে তাও তার জন্য জায়েয রয়েছে। এ সম্পর্কে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।
তারপর আল্লাহ তা‘আলা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল পাপের কাজ ত্যাগ করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّـيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ)
“বল: নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক হারাম করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা।”(সূরা আ‘রাফ ৭:৩৩)
নাউয়াস বিন সামআন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বলেন: গুনাহ হল তা-ই যা করলে তোমার মনে খটকা লাগে এবং তুমি এটা অপছন্দ কর যে, মানুষ তা জেনে ফেলবে। (সহীহ মুসলিম হা: ৬৬৮০, তিরমিযী হা: ২৩৮৯)
(وَإِنَّه۫ لَفِسْقٌ)
‘তা অবশ্যই পাপ’ অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে যে পশুকে আল্লাহ তা‘আলার নাম ছাড়া বা কোন দেব দেবীর নামে জবেহ করা হয়েছে তা খাওয়া ফাসেকী বা হারাম কাজ।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) এই অর্থই করেছেন। তিনি বলেন: যে ভুলে যায় তাকে ফাসিক বলা হয় না।
ইমাম বুখারী (রহঃ)-ও এ মত পোষণ করেছেন। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন: মুসলিমদের জবেহ করা পশু উভয় অবস্থাতেই হালাল, আল্লাহ তা‘আলার নাম নিয়ে যবাই করুক আর ভুলবশতঃ নাম ছাড়াই জবাই করুক।
(وَإِنَّه۫ لَفِسْقٌ)
বলতে তিনি আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে অন্যের নামে জবেহ করাকে বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ অন্যের নামে জবেহ করলে খাওয়া হারাম হয়ে যাবে।
(وَإِنْ أَطَعْتُمُوْهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُوْنَ)
“যদি তোমরা তাদের কথামত চল তবে তোমরা অবশ্যই মুশরিক হবে” অর্থাৎ তাদের কথা শুনে মৃত জন্তু খাওয়া হালাল করে নাও, তাহলে তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে। সুতরাং আয়াত প্রমাণ করে- আল্লাহ তা‘আলা যা হারাম করেছেন তা হালাল করে নিলে মুশকিরক হয়ে যাবে।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্যের মাপকাঠি নয় বরং সত্যের মাপকাঠি হচ্ছে কুরআন ও সহীহ হাদীস।
২. আল্লাহ তা‘আলার ভাষায় অধিকাংশ মানুষ পথভ্রষ্ট।
৩. যা আল্লাহ তা‘আলার নাম নিয়ে জবেহ করা হবে কেবল তা-ই খাওয়া মুসলিমদের জন্য বৈধ।
৪. প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল প্রকার পাপ মুসলিমদেরক পক্ষে বর্জন করা আবশ্যক।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings