Surah At Talaq Tafseer
Tafseer of At-Talaq : 7
Saheeh International
Let a man of wealth spend from his wealth, and he whose provision is restricted - let him spend from what Allah has given him. Allah does not charge a soul except [according to] what He has given it. Allah will bring about, after hardship, ease.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৬-৭ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
এখানে আল্লাহ তা‘আলা রজয়ী ত্বালাকপ্রাপ্তা নারীর জন্য স্বামীর অবস্থানের জায়গাতেই অর্থাৎ স্বামী যেমন পরিবেশে থাকবে ত্বালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর জন্য একই ধরনের বাসস্থানের ব্যবস্থা করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। কারণ রজয়ী ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর বাসস্থান ও ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর। যথাসম্ভব স্বামী তার নিজ কক্ষে রাখবে। কারণ এতে স্বামীর স্ত্রীর প্রতি দয়া ও ভালবাসা জাগবে। ফলে ফিরিয়ে নেবে বিশেষ করে যদি সন্তান থাকে তাহলে ফিরিয়ে নেওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে। আমাদের সমাজে ত্বালাক দেওয়ার সাথে সাথে স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। ফলে তারা আল্লাহ তা‘আলার এ নির্দেশের ফলাফল থেকে বঞ্চিত হয়।
তিন ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর জন্য বাসস্থান ও খোরপোষ দিতে হবে কিনা এ নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায় : (১) ইবনু আব্বাস, জাবেরসহ প্রমুখ বলেন : তিন ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর জন্য কোন প্রকার বাসস্থান ও খোরপোষ দিতে হবে না। এটাই ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল বলেছেন। এটাই সঠিক। কেননা ফাতেমা বিনতে কায়েস (রাঃ) বলেন : আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে প্রবেশ করলাম। সাথে আমার স্বামীর ভাই ছিল। আমি বললাম : আমার স্বামী আমাকে ত্বালাক দিয়েছে আর সে বলছে আমার নাকি কোন বাসস্থান ও খোরপোষ নেই? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : বরং তোমার জন্য বাসস্থান ও খোরপোষ আছে। স্বামীর ভাই বলল : তার স্বামী তাকে তিন ত্বালাক দিয়ে দিয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তোমার কোন বাসস্থান ও খোরপোষ নেই। (সিলসিলা সহীহাহ হা. ১৭১১)
(২) ইমাম আবূ হানিফা (রহঃ) বলেন : তিন ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর জন্য বাসস্থান ও খোরপোষ আছে।
(৩) ইমাম মালেক (রহঃ) ও শাফিঈ (রহঃ) বলেন : তার জন্য বাসস্থান আছে কিন্তু কোন খোরপোষ নেই।
(وَلَا تُضَآرُّوْهُنَّ لِتُضَيِّقُوْا)
‘তাদেরকে কষ্ট দিও না সংকটে ফেলার জন্য’ অর্থাৎ খোরপোশ অথবা বাসস্থানের ব্যাপারে তাদের ওপর সংকীর্ণতা সৃষ্টি করা এবং তাদের মানহানি করা, যাতে তারা ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়। ইদ্দত শেষ হয়ে যাওয়ার কাছাকাছি পর্যায়ে তোমরা আবার রুজু করে নাও এবং বারংবার এ রকম কর। যেমন, জাহিলিয়াতের যুগে ছিল। সুতরাং সে পথ বন্ধ করার জন্য শরীয়ত ত্বালাক দেওয়ার পর ফিরিয়ে নেওয়ার সময় নির্দিষ্ট করে দিল। যাতে আগামীতে কেউ এভাবে মহিলার ওপর সংকীর্ণতা সৃষ্টি না করে। এখন একজন কেবল দুবার এ রকম করতে পারে। অর্থাৎ ত্বালাক দিয়ে ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বেই ফিরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু তৃতীয়বার আবার ত্বালাক দিলে তার ফিরিয়ে নেওয়ার মোটেই অধিকার থাকবে না।
(وَإِنْ كُنَّ أُولَاتِ حَمْلٍ)
‘তারা গর্ভবতী থাকলে...’ অধিকাংশ আলেম বলেছেন : এ বিধান বায়েনাহ ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর ক্ষেত্রে। অর্থাৎ বায়েনাহ ত্বালাক প্রাপ্তা নারী সে গর্ভবতী হোক আর না হোক তার ভরণ পোষণ ওয়াজিব। অন্যরা বলেছেন : না, এটা রজয়ী ত্বালাক প্রাপ্তা গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে, কেননা পূর্বাপর রজয়ী ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে বিশেষ ভাবে গর্ভবতী নারীর কথা উল্লেখ করার কারণ হল, যেহেতু অধিকাংশ সময় গর্ভধারণের সময় দীর্ঘ হয়। এ মতই সঠিক। (তাফসীর সা‘দী)।
(فَاٰتُوْهُنَّ أُجُوْرَهُنَّ)
অর্থাৎ ত্বালাক দেওয়ার পর তারা যদি তোমাদের শিশুদের দুধ পান করায় তাহলে তার পারিশ্রমিক তোমাদেরকেই দিতে হবে। (তখন সম্পর্ক নেই বলে কোন অর্থ ব্যয় করব না বলা চলবে না।)
(وَأْتَمِرُوْا بَيْنَكُمْ بِمَعْرُوْفٍ)
‘তোমরা সঙ্গতভাবে নিজেদের মধ্যে পরামর্শ কর’ অর্থাৎ আপোষে পরামর্শ করে পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সমস্ত বিষয় ঠিক করে নেবে, কেউ কারো ক্ষতি করবে না। যেমন সূরা বাকারাতে বলা হয়েছে :
(لَا تُضَآرَّ وَالِدَةٌۭبِوَلَدِهَا وَلَا مَوْلُوْدٌ لَّه۫بِوَلَدِه۪)
“কোন মাকে তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। আবার কোন পিতাকেও তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না।” (সূরা বাকারা ২ : ২৩৩)
(وَإِنْ تَعَاسَرْتُمْ) অর্থাৎ পারিশ্রমিক ও অন্যান্য ব্যাপারে যদি তাদের মতের মিল না হয় তবে অন্য কোন মহিলার সাথে চুক্তি করে নেবে, সে যেন তার শিশুকে দুধ পান করায়।
(لِيُنْفِقْ ذُوْ سَعَةٍ مِّنْ سَعَتِه)
অর্থাৎ দুগ্ধদাত্রী মহিলাদেরকে পারিশ্রমিক নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দিতে হবে। যদি ধন-সম্পদশালী হয় তাহলে সে অনুযায়ী দুগ্ধদাত্রীকে সম্মানজনক পারিশ্রমিক দিবে আর আর্থিক অসচ্ছল হলে অবস্থা অনুযায়ী ব্যয় করবে। আল্লাহ তা‘আলা কারো ওপর তার সামর্থ্যাতীত কিছু চাপিয়ে দেন না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. ত্বালাকে বায়েনাহ প্রাপ্তা নারী গর্ভবতী হলে তার ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব।
২. ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর ক্ষতি সাধনের জন্য সংকীর্ণতা সৃষ্টি করা হারাম।
৩. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সম্পর্ক সম্পূর্ণ ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর স্ত্রী স্বামীর সন্তানকে দুধ পান করালে তার পারিশ্রমিক স্বামীকে দিতে হবে।
৪. ব্যয় বহণকারীর আর্থিক সামর্থ্যানুযায়ী ব্যয় বহন করবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings