Surah At Talaq Tafseer
Tafseer of At-Talaq : 1
Saheeh International
O Prophet, when you [Muslims] divorce women, divorce them for [the commencement of] their waiting period and keep count of the waiting period, and fear Allah, your Lord. Do not turn them out of their [husbands'] houses, nor should they [themselves] leave [during that period] unless they are committing a clear immorality. And those are the limits [set by] Allah . And whoever transgresses the limits of Allah has certainly wronged himself. You know not; perhaps Allah will bring about after that a [different] matter.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ :
الطلَاق শব্দটি ক্রিয়ামূল। অত্র সূরার প্রথম আয়াতে উক্ত ক্রিয়ামূলের ক্রিয়া ব্যবহার হয়েছে। সেখান থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। তাছাড়া এ সূরাতে ত্বালাক সংক্রান্ত বিধি-বিধান আলোচনা করা হয়েছে।
الطلَاق (ত্বালাক) শব্দের অর্থ : বন্ধন মুক্ত করা। যেমন বলা হয় : اطلق الاسير বন্দী মুক্ত করা হয়েছে। শারঈ পরিভাষায় ত্বালাক বলা হয়
حل قيد النكاح بلفظ الطلاق ونحوه
ত্বালাক বা অনুরূপ শব্দ দ্বারা বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা। (সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ ৩ : ২৩২)
ত্বালাকের শর্তাবলী : ত্বালাক ইসলামে একটি জটিল বিষয়। এটা নিয়ে ঠাট্টা করতেও নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ হা. ২১৯৪, তিরমিযী হা. ১১৮৪ শাইখ আলবানী হাসান বলেছেন আবার কেউ কেউ দুর্বল বলেছেন)।
১. ত্বালাক স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে দিতে হয়।
২. স্বামী প্রাপ্তবয়স্ক ও জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে।
৩. ত্বালাক স্বেচ্ছায় (একাধিক স্ত্রী থাকলে নির্দিষ্ট করে) ও ইঙ্গিতে বা সরাসরি শব্দ উল্লেখ করে দিতে হবে।
৪. ঋতু অবস্থায় নয় এবং স্ত্রীর সাথে সহবাস করা হয়নি এমন পবিত্র অবস্থায় অথবা গর্ভবতী অবস্থায় ত্বালাক দিতে হবে। (বিস্তারিত দেখুন সহীহ ফিকহুস স্ন্নুাহ, ত্বালাক অধ্যায়)
১ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্মানের সাথে তাঁর উম্মাতকে তাঁর অনুসারী হিসাবে সম্বোধন করে ত্বালাকের বিধি-বিধান শেখাচ্ছেন।
(فَطَلِّقُوْهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ)
অর্থাৎ ইদ্দতের মাঝে ত্বালাক দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। لِعِدَّتِهِنَّ এর لا (লাম) অক্ষরটি তাওক্বীত বা সময় নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ لأول অথবা لاستقبال عدتهن বা ইদ্দতের শুরুতে ত্বালাক দাও। ইদ্দত হল স্ত্রী ঋতু বা মাসিক থেকে পবিত্র হওয়া, যে পবিত্র অবস্থায় স্বামী তার সাথে সহবাস করেনি। তাই স্ত্রী ঋতু বা মাসিক থেকে পবিত্র থাকা অবস্থায় সহবাসের পূর্বেই (ত্বালাকের প্রয়োজন হলে) ত্বালাক দিতে বলা হয়েছে। অথবা স্ত্রী গর্ভবতী এমন সময় ত্বালাক দিতে পারে। (তাফসীর সা‘দী)
এভাবেই ত্বালাক দেওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবনু উমার (রাঃ)-কে বলেছিলেন। আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে তাঁর স্ত্রীকে ঋতু অবস্থায় ত্বালাক দেন। উমার (রাঃ) এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তাকে নির্দেশ দাও, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয় এবং নিজের কাছে রেখে দেয় যতক্ষণ না সে মহিলা পবিত্র হয়ে আবার ঋতুবতী হয় এবং আবার পবিত্র হয়। অতঃপর সে যদি ইচ্ছা করে তাকে রেখে দেবে আর যদি ইচ্ছা করে তবে সহবাসের পূর্বেই তাকে ত্বালাক দেবে। আর এটাই ত্বালাকের নিয়ম, যে নিয়মে আল্লাহ তা‘আলা স্ত্রীদের ত্বালাক দিতে বলেছেন। (সহীহ মুসলিম, সহীহ বুখারী হা. ৪৯০৮)।
তাই স্ত্রীকে তার ঋতু/মাসিক অবস্থায় অথবা সহবাস করা হয়েছে এমন পবিত্র অবস্থায় ত্বালাক দেওয়াকে শরীয়তে বিদআত ত্বালাক বলা হয়। (ইবনু কাসীর)। সেজন্য এরূপ বিদআত থেকে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত। রাগবশত যেন এরূপ পাপ কাজে লিপ্ত না হই।
বি. দ্র. এক বৈঠকে তিন ত্বালাক দিলে তিন ত্বালাক গণ্য হবে না, এক ত্বালাক গণ্য হবে? এ নিয়ে তিনটি মত পাওয়া যায়। তবে সঠিক মত হল এক বৈঠকে তিন ত্বালাক দিলে এক ত্বালাক বলে গণ্য হবে। যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বকর ও উমার (রাঃ)-এর যুগের প্রথম দু বছর এ বিধান চালু ছিল। (সহীহ মুসলিম হা. ১৪৭২)
প্রসিদ্ধ হিদায়া গ্রন্থে একত্রে তিন ত্বালাককে বিদ‘আতী ত্বালাক বলা হয়েছে। (হিদায়া, ত্বালাক অধ্যায়)
তবে ইসলামী রাষ্ট্রের ইমাম যদি কল্যাণস্বরূপ বা শাস্তিস্বরূপ একত্রে দেওয়া তিন ত্বালাককে তিন ত্বালাক বলে গণ্য করেন যেমন উমার (রাঃ) করেছিলেন তাহলে তা গণ্য হতে পারে। (সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ ৩/২৯০)
(وَأَحْصُوا الْعِدَّةَ)
অর্থাৎ ইদ্দতের সময় গণনা করে রাখবে। কারণ স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চাইলে যাতে সময়মত ফিরিয়ে নিতে পারে।
(لَا تُخْرِجُوْهُنَّ مِنْ ۭ بُيُوْتِهِنَّ)
‘তোমরা তাদেরকে তাদের বাসগৃহ হতে বের করে দিও না’ অর্থাৎ ইদ্দত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ তিন ঋতু বা মাসিক অতিক্রম না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে তোমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিওনা এবং তারাও যেন বের হয়ে না যায়। কারণ থাকা ও ভরণ পোষণের দায়িত্ব তোমাদের (স্বামীদের) ওপর।
(إِلَّآ أَنْ يَّأْتِيْنَ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ)
‘যদি না তারা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায়’ অর্থাৎ যদি তারা প্রকাশ্যে কোন খারাপ কাজ করে যেমন ব্যভিচার তাহলে বাড়ি থেকে বের করে দাও।
(لَا تَدْرِيْ لَعَلَّ اللّٰهَ يُحْدِثُ بَعْدَ ذٰلِكَ أَمْرًا)
‘তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ এর পর কোন উপায় বের করে দেবেন’ অর্থাৎ পুরুষের অন্তরে ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর প্রতি চাহিদা ও আকর্ষণ সৃষ্টি করে দেবেন ফলে সে ফিরিয়ে নেয়ার প্রতি অনুপ্রাণিত হবে। কেননা প্রথম ও দ্বিতীয় ত্বালাকের পর স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার রাখে। তাই কোন কোন মুফাসসির বলেছেন, এখানে আল্লাহ তা‘আলা এক ত্বালাকের কথা বলেছেন এবং তিন ত্বালাক দিতে নিষেধ করেছেন। কারণ শরীয়ত যদি তিন ত্বালাক কার্যকর করেই দেয় তাহলে এ কথার কোন অর্থ থাকে না। হয়তো আল্লাহ তা‘আলা কোন নতুন উপায় বের করে দেবেন। কারণ তিন ত্বালাক বা ত্বালাকে বায়েন হয়ে গেলে ফিরিয়ে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। এ আয়াতকে কেন্দ্র করেই ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেছেন : বায়েন ত্বালাক প্রাপ্তা নারীর জন্য স্বামীর কাছে কোন বাসস্থান ও ভরণ-পোষণের অধিকান নেই। এ বিষয়ে আরো দুটি মত আছে তবে এটাই সঠিক। (তাওযীহুল আহকাম শরহু বুলুগুল মারাম ৫/৫৭০)
সুতরাং ত্বালাকের সুন্নাতী পদ্ধতি হল সহবাস করা হয়নি এমন পবিত্র অবস্থায় এক ত্বালাক দেওয়া। সহবাস করা হয়েছে বা স্ত্রী ঋতুবতী এমন সময় ত্বালাক দেওয়া অথবা একত্রে তিন ত্বালাক দেওয়া সুন্নাতের খেলাফ যা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা জরুরী।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. ত্বালাক পরিচিতি ও তার শর্তসমূহ জানলাম।
২. ত্বালাক দিলে দিতে হবে ইদ্দতের সময়ে, ইদ্দত হলো সহবাস করা হয়নি এমন পবিত্র অবস্থা।
৩. ঋতু/মাসিক অবস্থায় ত্বালাক দিলে ত্বালাক গণ্য হবে না।
৪. দুই ত্বালাক দেওয়ার পরেও স্ত্রীকে স্বামী ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার রাখে।
৫. ত্বালাকে বায়েনের পূর্ব পর্যন্ত স্ত্রীর বাসস্থান ও ভরণ-পোষণ স্বামীর দায়িত্বে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings