64:9

يَوۡمَ يَجۡمَعُكُمۡ لِيَوۡمِ ٱلۡجَمۡعِ‌ۖ ذَٰلِكَ يَوۡمُ ٱلتَّغَابُنِ‌ۗ وَمَن يُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ وَيَعۡمَلۡ صَٰلِحًا يُكَفِّرۡ عَنۡهُ سَيِّـَٔـاتِهِۦ وَيُدۡخِلۡهُ جَنَّٰتٍ تَجۡرِى مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًا‌ۚ ذَٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِيمُ٩

Saheeh International

The Day He will assemble you for the Day of Assembly - that is the Day of Deprivation. And whoever believes in Allah and does righteousness - He will remove from him his misdeeds and admit him to gardens beneath which rivers flow, wherein they will abide forever. That is the great attainment.

Tafsir "Tafsir Fathul Mazid" (Bengali)

৭-১৩ নম্বর আয়াতের তাফসীর : কাফির-মুশরিকদের প্রকৃত জ্ঞান, হিদায়াত ও সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দানকারী কিতাব উপস্থিত না থাকায় তারা যেসব বাতিল ধারণা করে ও পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা এখানে আলোকপাত করেছেন। তাই নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সত্ত্বার শপথ করে বলতে বললেন : বলে দাও, আমার রবের শপথ! অবশ্যই তোমরা পুনরুত্থিত হবে। কুরআন মাজীদের আরো একাধিক জায়গায় আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এরূপ রবের নামে কসম করার নির্দেশ করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন : (وَیَسْتَنْۭبِئُوْنَکَ اَحَقٌّ ھُوَﺛ قُلْ اِیْ وَرَبِّیْٓ اِنَّھ۫ لَحَقٌّﺨ وَمَآ اَنْتُمْ بِمُعْجِزِیْنَ) “তারা তোমার নিকট (কিয়ামতের আযাব সম্পর্কে) জানতে চায়, ‘তা কি সত্য?’ বল : ‎ ‘হ্যাঁ, আমার প্রতিপালকের শপথ! তা অবশ্যই সত্য। এবং তোমরা এটা ব্যর্থ করতে পারবে না।” (সূরা ইউনুস ১০ : ৫৩)অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন : ( وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَا تَأْتِيْنَا السَّاعَةُ ط قُلْ بَلٰي وَ رَبِّيْ لَتَأْتِيَنَّكُمْ) “কাফিররা বলে আমাদের ওপর কিয়ামত আসবে না। আপনি বলে দিন, কেন আসবে না? ক্বসম আমার প্রতিপালকের! অবশ্যই তা তোমাদের ওপর আসবে।” (সূরা সাবা ৩৪ : ৩) পুনরুত্থানের পর প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কৃত আমলের প্রতিদান প্রদান করা হবে আর এটা আল্লাহ তা‘আলার জন্য খুবই সহজ। فَاٰمِنُوْا এখানে ’فا‘ ফা অক্ষরটিকে ‘ফা ফাসীহাহ’ বলা হয়। অর্থাৎ এর পূর্বে একটি শর্ত উহ্য রয়েছে। অর্থ হল যখন বিষয়টি এ রকমই যা বর্ণিত হয়েছে সুতরাং তোমরা আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং তাঁর ওপর অবতীর্ণ নূর, কুরআনের প্রতিও ঈমান আন। (لِيَوْمِ الْجَمْعِ) ‘সমাবেশ দিবসে’ সমাবেশ দিবসে বলতে কিয়ামত দিবসকে বুঝানো হয়েছে। কিয়ামত দিবসকে সমাবেশ দিবস বলার কারণ হল সেদিন সকল আদম সন্তান, জিন, আকাশবাসী ও জমিনবাসীকে একই ময়দানে সমবেত করা হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন : (ذٰلِكَ يَوْمٌ مَّجْمُوْعٌ لا لَّهُ النَّاسُ وَذٰلِكَ يَوْمٌ مَّشْهُوْدٌ)‏ “এটা সেদিন, যেদিন সমস্ত‎ মানুষকে একত্র করা হবে; এটা সে দিন যেদিন সকলকে উপস্থিত করা হবে।” (সূরা হূদ ১১ : ১০৩)অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন : (قُلْ إِنَّ الْأَوَّلِيْنَ وَالْاخِرِيْنَ لَمَجْمُوْعُوْنَ ৫ إِلٰي مِيْقَاتِ يَوْمٍ مَّعْلُوْم)‏ “বল : অবশ্যই পূর্ববর্তীগণ এবং পরবর্তীগণকে একত্রিত করা হবে এক নির্ধারিত দিনের নির্ধারিত সময়ে” (সূরা ওয়াকিয়া ৫৬ : ৪৯) (مَآ أَصَابَ مِنْ مُّصِيْبَةٍ) অর্থাৎ জান-মাল সন্তান-সন্ততি ইত্যাদিতে পতিত সকল বিপদ আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত ও তাঁর ফায়সালা অনুপাতেই হয়ে থাকে। কেউ বলেছেন : এ আয়াতটি কাফিরদের উক্তির প্রতিবাদস্বরূপ অবতীর্ণ হয়। তারা বলত মুসলিমরা সত্যের ওপর থাকলে দুনিয়াতে কোন বালা মসিবত তাদের ওপর আসত না। (ফাতহুল কাদীর)(وَمَنْ یُّؤْمِنْۭ بِاللہِ) অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমানসহ ঈমানের অন্যান্য রুকনের প্রতি বিশ্বাসী হয় এবং এ বিশ্বাস রাখে যে, ভাল-মন্দ ও আপদ-বিপদ সবকিছু আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক ফায়সালাকৃত আর আল্লাহ তা‘আলার ফায়সালার প্রতি আত্মসমর্পণ করে আল্লাহ তা‘আলা তার অন্তর হিদায়াতের ওপর অটল রাখবেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : (يَهْدِ قَلْبَه۫) অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাসের ওপর আল্লাহ তা‘আলা তার অন্তর অটল রাখবেন। ফলে সে নিশ্চিত থাকবে যে, তার ওপর যে আপদ-বিপদ হয় তা ভুল করে আসে না, আর যে সকল আপদ-বিপদে আক্রান্ত হয় না তা ভুল করে তার থেকে সরে যায়নি। (ইবনু কাসীর)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন : এর দ্বারা এমন লোকদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা বিপদগ্রস্ত হলে আল্লাহ তা‘আলার প্রতি সন্তুষ্ট থাকে এবং এ কথা বুঝতে পারে যে, এ বিপদ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতেই এসেছে। (সহীহ বুখারী)রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : মু’মিনের কাজগুলা আশ্চর্যজনক, তার প্রত্যেক কাজ কল্যাণকর। তার ওপর কোন বিপদ আপতিত হলে ধৈর্য ধারণ করে-এটা তার জন্য কল্যাণকর, আর আনন্দদায়ক বিষয় হলে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে; এটাও তার জন্য কল্যাণকর। এটা মু’মিন ছাড়া অন্য কারো জন্য নয়। (সহীহ মুসলিম হা. ৭৬৯২)(وَأَطِيْعُوا اللّٰهَ) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা নির্দেশ করেছেন তা অনুসরণ করো আর যা বর্জন করতে বলেছেন তা বর্জন করে চলো। আর যদি তা না করো তাহলে জেনে রেখো, তোমাদের কর্মের কারণে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পাকড়াও করা হবে না। তাঁর কাজ কেবল পৌঁছে দেওয়া। ইমাম জুহরী (রহঃ) বলেন : আল্লাহ তা‘আলার কাজ রাসূল প্রেরণ করা, রাসূলদের কাজ পৌঁছে দেওয়া আর আমাদের কাজ হল তা মেনে নেয়া। (ইবনু কাসীর)। সুতরাং আমাদের রাসূলের নির্দেশ মেনে চলা আবশ্যক। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় : ১. পুনরুত্থান অবশ্যই হবে এবং প্রত্যেক মানুষকে তার কর্মের হিসাব দিতে হবে। ২. যারা সৎআমল করবে তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার আর যারা কুফরী করবে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ৩. দুনিয়ায় যা কিছু ঘটে সব পূর্ব ফায়সালাকৃত ও আল্লাহ তা‘আলার অনুমতিতেই ঘটে থাকে। ৪. মু’মিনদের প্রত্যেক কাজ কল্যাণকর, কারণ তারা সুখী অবস্থায় কৃতজ্ঞ হয় আর বিপদ-আপদের সময় ধৈর্য ধারণ করে। ৫. আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আনুগত্য করা ওয়াজিব।

Arabic Font Size

30

Translation Font Size

17

Arabic Font Face

Help spread the knowledge of Islam

Your regular support helps us reach our religious brothers and sisters with the message of Islam. Join our mission and be part of the big change.

Support Us