Surah Taghabun Tafseer
Tafseer of At-Taghabun : 1
Saheeh International
Whatever is in the heavens and whatever is on the earth is exalting Allah . To Him belongs dominion, and to Him belongs [all] praise, and He is over all things competent.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ :
التغاون শব্দটি غبن থেকে গৃহীত। যার অর্থ হল : লোকসান বা ক্ষতি। التغاون কিয়ামতের অন্যতম একটি নাম। সেদিন কাফিররা তো লোকসানের অনুভূতি অনুভব করবেই, সাথে সাথে ঈমানদাররাও লোকসান অনুভব করবে এভাবে যে, যদি আরো বেশি ভাল কাজ করতাম তাহলে আরো মর্যাদা পেতাম। অত্র সূরার ৯ নম্বর আয়াতে التغاون শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। সেখান থেকেই সূরার নামকরণ করা হয়েছে। অধিকাংশ মুফাসসিরদের মতে অত্র সূরা মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : সূরা তাগাবুন মক্কায় অবতীর্ণ হয় তবে সূরার শেষের আয়াতগুলো মদীনায় সাহাবী আউফ বিন মালেক (রাঃ)-এর ব্যাপারে নাযিল হয়। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে তার পরিবার ও সন্তানাদির রূঢ় আচরণের অভিযোগ করেছিলেন,
তখন
(يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلَادِكُمْ عَدُوًّا لَّكُمْ فَاحْذَرُوْهُمْ) নাযিল হয় (কুরতুবী)।
সূরার শুরুর দিকে আল্লাহ তা‘আলার সার্বভৌমত্ব, সৃষ্টিগতভাবেই একশ্রেণির মানুষ কাফির ও আরেক শ্রেণি মু’মিন এবং আল্লাহ তা‘আলা প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সবকিছু অবগত আছেন সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সূরার মধ্যভাগে কাফিরদের বস্তুবাদী ধারণাকে খণ্ডন করতঃ বলা হয়েছে যে, মানুষকে অবশ্যই পুনরুত্থিত হতে হবে এবং সবাইকে একত্রিত করার দিন একত্রিত করবেন, যারা ঈমান ও সৎআমল নিয়ে আসবে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতপূর্ণ জান্নাত, আর কাফিরদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী জাহান্নামের আগুন। সূরার শেষ দিকে মু’মিনদেরকে পরিবার ও সন্তানাদির ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে এবং যথাসম্ভব আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১. আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, কর্তৃত্ব তাঁরই এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁরই, তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
২. তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ হয় কাফির এবং কেউ হয় মু’মিন। তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।
৩. তিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশসমূহ ও পৃথিবী যথাযথভাবে এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতি সুন্দর করেছেন তোমাদের আকৃতি আর প্রত্যাবর্তন তো তাঁরই দিকে।
৪. আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন এবং তিনি জানেন তোমরা যা গোপন কর ও তোমরা যা প্রকাশ কর এবং আল্লাহ অন্তর্যামী।
১-৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
যে কয়টা সূরা سبح , يسبح দ্বারা শুরু করা হয়েছে তার মধ্যে এটা সর্বশেষ সূরা। মাখলূক কিভাবে আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ পাঠ করে এ সম্পর্কে সূরা হাশরে আলোচনা করা হয়েছে।
(لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ)
‘কর্তৃত্ব তাঁরই এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁরই’ এ বৈশিষ্ট্য কেবল আল্লাহ তা‘আলার জন্যই। সমস্ত রাজত্ব ও সার্বভৌমত্বের মালিকানা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার, তাঁর রাজত্ব ও সার্বভৌমত্বের বাইরে কোন মাখলূক নেই। আর সমস্ত প্রশংসা পাওয়ার অধিকার একমাত্র তাঁরই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ تَنْفُذُوْا مِنْ أَقْطَارِ السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ فَانْفُذُوْا ط لَا تَنْفُذُوْنَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ)
“হে জিন ও মানুষ জাতি! আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সীমা হতে যদি তোমরা বের হতে পার, তবে বের হয়ে যাও; কিন্তু তোমরা তা পারবে না, শক্তি ব্যতিরেকে (আর সে শক্তি তোমাদের নেই)।” (সূরা আর রহমান ৫৫ : ৩৩)
(فَمِنْكُمْ كٰفِرٌ وَّمِنْكُمْ مُّؤْمِنٌ)
‘অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ হয় কাফির এবং কেউ হয় মু’মিন’ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তার মধ্যে ঈমান ও কুফর দুটি উপাদান বদ্ধমূল করে দিয়েছেন। তবে প্রত্যেক সন্তান যখন জন্ম নেয় তখন ঈমানের তথা ইসলামের ওপর জন্ম নেয়। (সহীহ বুখারী হা. ১৩৮৫) অতঃপর সে সন্তান যে পরিবেশে বড় হয় সে ধর্মেরই অনুসরণ করে থাকে। অর্থাৎ যদি সে ইসলামী পরিবেশ পায় তাহলে মুসলিম হয় আর কুফরী পরিবেশ পেলে কাফির হয়।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : আল্লাহ তা‘আলা আদম সন্তানকে মু’মিন ও কাফির বানিয়ে সৃষ্টি করেছেন আবার কিয়ামতের দিন কাফির ও মু’মিন হিসাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন : আল্লাহ তা‘আলা ফির‘আউনকে তার মায়ের গর্ভে কাফির হিসাবেই সৃষ্টি করেছেন, আর ইয়াহইয়াকে তার মায়ের পেটে মু’মিন হিসাবেই সৃষ্টি করেছেন। (সিলসিলা সহীহাহ হা. ১৮৩১)
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : তোমাদের কেউ জান্নাতবাসী হওয়ার আমল করতেই থাকে এমনকি তার ও তার মৃত্যুর মাঝে এক বিঘত বা একহাত বাকী থাকে এমন সময় তার তাকদীর তার আমলের ওপর প্রাধান্য লাভ করে ফলে সে জাহান্নামবাসীদের আমল করে ফেলে যার কারণে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। তোমাদের কেউ জাহান্নামবাসী হওয়ার আমল করতেই থাকে এমনকি তার ও তার মৃত্যুর মাঝে এক বিঘত বা এক হাত বাকি থাকে এমন সময় তার তাকদীর তার আমলের ওপর প্রাধান্য লাভ করে ফলে সে জান্নাতবাসীদের আমল করে আর জান্নাতে চলে যায়। (সহীহ বুখারী হা. ৩৩৩২, সহীহ মুসলিম হা. ২৬৪৩)
(وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ)
অর্থাৎ তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(اَللّٰهُ الَّذِيْ جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ قَرَارًا وَّالسَّمَا۬ءَ بِنَا۬ءً وَّصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ)
“আল্লাহই তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন বাসোপযোগী এবং আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তোমাদের আকৃতি করেছেন উৎকৃষ্ট।” (সূরা মু’মিন ৪০ : ৬৪)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :
(لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِيْٓ أَحْسَنِ تَقْوِيْمٍ)
“আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতর অবয়বে” (সূরা তীন ৯৫ : ৪)
সুতরাং মানুষ মাখলূকাতের মাঝে সবচেয়ে উত্তম আকৃতির ও দৃশ্যমানের অধিকারী। তাই এ সুন্দর সৃষ্টিকর্তারই ইবাদত করা উচিত।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আকাশ ও জমিনের সব কিছু আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ পাঠ করে।
২. সার্বভৌমত্বের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৩. তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস রাখা ওয়াজিব।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings