Surah Al Jumu'ah Tafseer
Tafseer of Al-Jumu'ah : 1
Saheeh International
Whatever is in the heavens and whatever is on the earth is exalting Allah, the Sovereign, the Pure, the Exalted in Might, the Wise.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ ও গুরুত্ব :
الجمعة জুমু‘আহ অর্থ : একত্রিত করা, সমবেত হওয়া ইত্যাদি। জুমু‘আহ বলতে জুমু‘আর সালাত উদ্দেশ্য। জুমু‘আর সালাতকে এজন্য জুমু‘আহ বলা হয় এ সালাতের জন্য মুসলিমরা দূর দূরান্ত থেকে সপ্তাহে একদিন সমবেত হয়। এ দিনে সমস্ত মাখলুকের সৃষ্টি পরিপূর্ণ করা হয়েছে, কারণ যে ছয় দিনে আকাশ-জমিন সৃষ্টি করা হয়েছে তার ৬ষ্ঠ দিন ছিল জুমু‘আর দিন। এ দিন আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং জান্নাত থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এ দিনই কিয়ামত সংঘঠিত হবে। (সহীহ মুসলিম হা. ১০৪৬)
এ দিনে এমন একটি সময় রয়েছে যদি কোন মুসলিম আল্লাহ তা‘আলার কাছে কল্যাণকর কিছু চায় আল্লাহ তা‘আলা তা দান করেন। (সহীহ বুখারী হা. ৯৩৫)
الجمعة শব্দটি অত্র সুরার ৯ নম্বর আয়াতে উল্লেখ হয়েছে। সেখান থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর সালাতে সূরা জুমু‘আহ ও সূরা মুনাফিকূন পাঠ করতেন। (সহীহ মুসলিম হা. ৮৭৭)
১-৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
আল্লাহ তা‘আলা বলছেন; আকাশে ও জমিনে এবং এতদুভয়ের মাঝে যা কিছু আছে সব কিছু তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করে। অর্থাৎ জীবজন্তু ও জড় পদার্থ যা কিছু আছে সবই। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَإِنْ مِّنْ شَيْءٍ إِلَّا يُسَبِّحُ بِحَمْدِه۪ وَلٰكِنْ لَّا تَفْقَهُوْنَ تَسْبِيْحَهُمْ ط إِنَّه۫ كَانَ حَلِيْمًا غَفُوْرًا)
“এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না; কিন্তু তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পার না; নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।” (সূরা ইসরা ১৭ : ৪৪)
الْقُدُّوْسِ অর্থ হল : সকল অপূর্ণাঙ্গ গুণাবলী থেকে পবিত্র, সকল পূর্ণাঙ্গ গুণে গুণান্বিত।
(هُوَ الَّذِيْ بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّيْنَ) - اميين
(নিরক্ষর) বলতে যাদের কোন আসমানী কিতাব নেই এবং রিসালাতের চিহ্নও নেই। তারা আরব হোক কিম্বা অনারব হোক। (তাফসীর সা‘দী)।
হাফেয ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন : اميين (নিরক্ষর) বলা হয় আরবদেরকে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَقُلْ لِّلَّذِيْنَ أُوْتُوا الْكِتٰبَ وَالْأُمِّيِّيْنَ أَأَسْلَمْتُمْ ط فَإِنْ أَسْلَمُوْا فَقَدِ اهْتَدَوْ)
“আর কিতাবধারী এবং নিরক্ষরদেরকে বল : তোমরা কি আত্মসমর্পণ করেছ? যদি তারা আত্মসমর্পণ করে তাহলে তারা হিদায়াত পাবে।” (সূরা আলি ইমরান ৩ : ২০)
এখানে বিশেষ করে اميين (নিরক্ষর) উল্লেখ করার অর্থ এই নয় যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাত অন্যদের জন্য ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিরক্ষরদের মাঝে প্রেরণ করে তাদের ওপর যে অনুগ্রহ করেছেন সে জন্য তাদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাত সারা জাহানের জন্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(قُلْ يٰٓأَيُّهَا النَّاسُ إِنِّيْ رَسُوْلُ اللّٰهِ إِلَيْكُمْ جَمِيْعَا)
“বল ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহ্র প্রেরিত রাসূল” (সূরা আ‘রাফ ৭ : ১৫৮)
এ সম্পর্কে সূরা আনআমে আলোচনা করা হয়েছে। এ আয়াতটি ইবরাহীম (আঃ)-এর দু‘আর প্রমাণ। ইবরাহীম (আঃ) মক্কাবাসীর মাঝে রাসূল প্রেরণ করার জন্য আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করে বলেছিলেন :
(رَبَّنَا وَابْعَثْ فِيْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ يَتْلُوْا عَلَيْهِمْ اٰيٰتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيْهِمْ ط إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ)
“হে আমাদের রব! সে দলে তাদেরই মধ্য হতে এমন একজন রাসূল প্রেরণ করুন যিনি তাদেরকে আপনার আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনাবেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দান করবেন ও তাদেরকে পবিত্র করবেন। নিশ্চয়ই আপনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” (সূরা বাকারাহ ২ : ১২৯)
(وَّاٰخَرِيْنَ مِنْهُمْ)
অর্থাৎ যারা এখনো নিরক্ষরদের সাথে মিলিত হয়নি সে সকল মানুষের জন্যও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাসূল।
اٰخَرِيْنَ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে সে ব্যাপারে মুফাসসিরগণের অভিমত :
(১) ইকরিমা (রহঃ) বলেন : তারা হল তাবেয়ী,
(২) ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন : সাহাবীদের পর কিয়ামত দিবস পর্যন্ত যত মানুষ আসবে সবাই শামিল।
(৩) ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন : আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : একদা আমরা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বসে ছিলাম। এমন সময় সূরা জুমু‘আহ অবতীর্ণ হল। সাহাবীগণ বললেন : হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! اٰخَرِيْنَ তথা অন্যান্য এরা কারা? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কোন জবাব দিলেন না। এমনকি তিনবার জিজ্ঞাসা করা হল। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলছেন, আমাদের মাঝে সালমান ফারেসী (রাঃ) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালমান ফারেসীর গায়ে হাত রেখে বললেন :
لَوْ كَانَ الإِيمَانُ عِنْدَ الثُّرَيَّا، لَنَالَهُ رِجَالٌ مِنْ هَؤُلاَءِ
ঈমান যদি সুরাইয়া নামক তারকাতেও থাকে তাহলে এ সকল লোক নিয়ে আসবে। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮৯৭)
এজন্য নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুম ও পারস্যসহ অন্যান্য জাতির নিকট বিভিন্ন চিঠি লিখে পাঠিয়েছিলেন। মুজাহিদ (রহঃ)-সহ অনেকে বলেছেন : اٰخَرِیْنَ বা অন্যান্যদের দ্বারা উদ্দেশ্য হল প্রত্যেক অনারবরা যারাই নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনবে। আল্লামা জাবের আল জাযায়েরী (রহঃ) বলেন : আরব ও অনারব প্রত্যেক সে সকল লোক যারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় উপস্থিত হয়নি। (আয়সারুত তাফাসীর)
অতএব বুঝা গেল اٰخَرِيْنَ দ্বারা উদ্দেশ্য হল অনারবের সকল মু’মিন মুসলিমরা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন :
إِنَّ فِي أَصْلَابِ أَصْلَابِ أَصْلَابِ رِجَالٍ مِنْ أَصْحَابِي، رِجَالًا وَنِسَاءً يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ
আমার সাহাবী হতে বংশানুক্রমে তিন পুরুষ পর্যন্ত আগমনকারী আমার উম্মাতের নারী ও পুরুষরা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর তিনি এ আয়াতটি তেলাওয়াত করেন। (মাযমাউজ জাওয়ায়েদ ১০/৪০৮ সনদ ভাল)।
(ذٰلِكَ فَضْلُ اللّٰهِ)
অর্থাৎ যে নবুওয়াত নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ তা‘আলা প্রদান করেছেন তা বিশেষ অনুগ্রহ, আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা তা প্রদান করে থাকেন।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. জুমু‘আর সালাতে এ সূরা পড়া সুন্নাত।
২. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রিসালাত সারা জাহানের জন্য।
৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মী ছিলেন। লিখতে-পড়তে জানতেন না।
৪. আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কেউ দেখুক আর না দেখুক যারাই ঈমান আনবে তাদের ফযীলত জানতে পারলাম।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings