Surah As Saf Tafseer
Tafseer of As-Saf : 13
Saheeh International
And [you will obtain] another [favor] that you love - victory from Allah and an imminent conquest; and give good tidings to the believers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
৭-১৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
(وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرٰي.... وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِیْنَﭜ)
অর্থাৎ যারা আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে মিথ্যা অপবাদ দেয় যেমন বলে : আল্লাহ তা‘আলা সন্তান গ্রহণ করেছেন, আল্লাহ তা‘আলার স্ত্রী আছে ইত্যাদি; তাদের চেয়ে বড় যালেম আর কেউ নেই। অথচ তাকে তাওহীদের দিকে আহ্বান করা হয়।
(نُوْرَ اللّٰهِ) আল্লাহ তা‘আলার নূর অর্থ : কুরআন, ইসলাম, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিংবা দলীল প্রমাণাদি। মুখ দিয়ে নিভিয়ে দেওয়ার অর্থ হল : তাদের সে সব কটুক্তি ও নিন্দনীয় কথাবার্তা যা তাদের মুখ থেকে বের হয় তা দিয়ে তারা ঐ জ্যোতিকে প্রতিহত করতে চায়।
(وَاللّٰهُ مُتِمُّ نُوْرِه)
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা সারা জাহানে তার প্রসার ঘটাবেন এবং অন্য সমস্ত ধর্মের ওপর তাকে জয়যুক্ত করবেন।
(هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلٰي تِجَارَةٍ)
এখানে আমল (ঈমান ও জিহাদ)-কে বাণিজ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ এতেও ব্যবসা-বাণিজ্যের মত লাভ রয়েছে। সে লাভের কথা পরের আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা উল্লেখ করেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন :
(إِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰي مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ط يُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ فَيَقْتُلُوْنَ وَيُقْتَلُوْنَ)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মু’মিনদের নিকট হতে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে তার বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে স্বসস্ত্র যুদ্ধ করে, হত্যা করে ও নিহত হয়।” (সূরা তাওবা ৯ : ১১১)
এটা হল আখেরাতের লাভ। আর দুনিয়াবী লাভ হল আল্লাহ তা‘আলা যুদ্ধক্ষেত্রসহ সর্বত্র সহযোগিতা করবেন এবং বিজয় দান করবেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْآ إِنْ تَنْصُرُوا اللهَ يَنْصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ)
“ওহে, যারা ঈমান এনেছে! তোমরা যদি আল্লাহকে সাহায্য কর তবে তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের কদমকে মযবুত করে দেবেন।” (সূরা মুহাম্মদ ৪৭ : ৭)
আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার বিজয়সমূহ নিকটতম তাই তাকে (فَتْحٌ قَرِيْبٌ) বলা হয়েছে।
(یٰٓاَیُّھَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا....)
আল্লাহ তা‘আলা মু’মিন বান্দাদেরকে সর্বাবস্থায় কথায়, কাজে ও জান-মাল দ্বারা তাঁর সাহায্যকারী হওয়ার নির্দেশ প্রদান করছেন যেমন ঈসা (আঃ)-এর অনুসারীরা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে আল্লাহ তা‘আলার পথে সাহায্য করেছিল।
حَوَارِيْ শব্দটি حَوَرٌ ধাতু থেকে উৎপত্তি। অর্থ দেওয়ালে চুনকাম করার জন্য ধবধবে সাদা চুন। পারিভাষিক অর্থে ঈসা (আঃ)-এর খাঁটি অনুসারী শীর্ষস্থানীয় ভক্ত ও সাহায্যকারী ব্যক্তিগণকে ‘হাওয়ারী’ বলা হত। কোন কোন তাফসীরবিদ বলেছেন তাদের সংখ্যা ছিল ১২জন। ঈসা (আঃ)্-এর অনুসারী ও সাহায্যকারীকে, সহচরদেরকে ‘হাওয়ারী’ বলা হয়। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসারী ও সহচরদেরকে ‘সাহাবী’ বলা হয়। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : প্রত্যেক নাবীর একজন বিশেষ সাহায্যকারী (হাওয়ারী) ছিল। আমার বিশেষ সাহায্যকারী হল যুবাইর (রাঃ)। (সহীহ বুখারী হা. ২৮৪৭, সহীহ মুসলিম হা. ২৪১৫)
ইমাম বাগাভী অত্র আয়াতের তাফসীরে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, ঈসা (আঃ)-এর ঊর্ধ্বারোহণের পর খ্রিস্টান জাতি তিন দলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল তাকে ‘আল্লাহ তা‘আলা’ বলে। একদল তাকে ‘আল্লাহ তা‘আলার পুত্র’ বলে এবং একদল তাকে ‘আল্লাহ তা‘আলার বান্দা ও রাসূল’ বলে। প্রত্যেক দলের অনুসারী দল ছিল। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কলহ বাড়তে থাকে। অতঃপর শেষনাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমন ঘটে এবং তিনি মু’মিনদের দলকে সমর্থন দেন। ফলে তারাই দলীলের ভিত্তিতে জয়লাভ করে। এ সকল ঈসায়ীগণ সবাই ইসলাম কবূল করে।
(فَاٰمَنَتْ طَّآئِفَةٌ)
অর্থাৎ ঈসা (আঃ)-এর দাওয়াতে একদল লোক তাঁর প্রতি ঈমান এনেছিল। আর একদল তাঁর দাওয়াত বর্জন করে কুফরী করল। এটা ছিল সেসব ইয়াহূদী যারা ঈসা (আঃ)-এর মায়ের প্রতি অপবাদ দিয়েছিল।
(فَأَيَّدْنَا الَّذِيْنَ)
অর্থাৎ নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করে আল্লাহ তা‘আলা ঈসা (আঃ)-এর ওপর ঈমান আনয়নকারী দলকে অন্যান্য ভ্রষ্ট দলের ওপর শক্তিশালী করেছেন। তাই সঠিক আক্বীদার অধিকারী এ দলটি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপরও ঈমান আনল। আর এভাবে তিনি দলীল-প্রমাণের দিক দিয়েও সমস্ত কাফিরদের ওপর এদেরকে জয়যুক্ত করেছেন। এ জয়ের সর্বশেষ বিকাশ ঘটবে তখন যখন কিয়ামতের পূর্বকালে ঈসা (আঃ) পুনরায় পৃথিবীতে অবতরণ করবেন।
মু’মিনরা এভাবেই কিয়ামত অবধি কাফিরদের ওপর বিজয়ী থাকবে তবে শর্ত হল : তাদেরকে সঠিক ঈমান ও আমলের ওপর থাকতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সঠিক ঈমান ও আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. আল্লাহ তা‘আলার ওপর মিথ্যারোপ করা সবচেয়ে বড় জুলুম।
২. আল্লাহ তা‘আলা ইসলামকে সারা জাহানে বিজয়ী করবেন, যতই কাফির-মুশরিকরা প্রতিহত করার চেষ্টা করুক।
৩. জিহাদ করার ফযীলত জানলাম।
৪. আখেরাতের বিজয় সবচেয়ে বড় বিজয়।
৫. আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় সহযোগিতা করা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য।
৬. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে সহযোগিতা করেন।
৭. হকপন্থীরা সবর্দা জয়ী থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings