Surah As Saf Tafseer
Tafseer of As-Saf : 1
Saheeh International
Whatever is in the heavens and whatever is on the earth exalts Allah, and He is the Exalted in Might, the Wise.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ :
الصف শব্দের অর্থ : কাতার, সারি, লাইন ইত্যাদি। এখান থেকেই শ্রেণিকে الصف বলা হয়। الصف শব্দটি অত্র সূরার চতুর্থ আয়াতে উল্লেখ রয়েছে। সেখান থেকেই এ নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। সূরার শুরুতে মু’মিনদেরকে কথা ও কাজের সামঞ্জস্যতার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং জিহাদের প্রতি উদ্ধুদ্ধ করা হয়েছে। তারপর মূসা (আঃ)-এর ও কওমের আলোচনা করা হয়েছে এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। অতঃপর ইসলাম কিয়ামত অবধি মাথা উঁচু করেই থাকবে এবং সকল বাতিল ধর্মের ওপর বিজয়ী থাকবেই তা নির্মূল করার যতই ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন। অতঃপর সূরার শেষের দিকে মু’মিনদেরকে জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির আমল তথা ঈমান ও আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ করার দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
শানে নুযূল :
বিশিষ্ট সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) বলেন : আমরা কয়েকজন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী বসে আলোচনা করছিলাম। আমরা বললাম : যদি আমরা জানতাম আল্লাহ তা‘আলার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল কোন্টি তাহলে তা আমল করতাম। তখন এ সূরাটি অবতীর্র্ণ হয়। আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে এ সূরাটি পাঠ করে শোনালেন। (তিরমিযী হা. ৩৩০৯, সনদ সহীহ)।
১-৪ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
(سَبَّحَ لِلّٰهِ) এ স¤পর্কে পূর্বের সূরাদ্বয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
(لِمَ تَقُوْلُوْنَ مَا لَا تَفْعَلُوْنَ)
অর্থাৎ কেন অন্যদেরকে ভাল কথা বল ও ভাল কাজে উৎসাহিত কর আর নিজেরা তা কর না। কেন অন্যদেরকে খারাপ কাজ থেকে নিষেধ কর, নিরুৎসাহিত কর আর নিজেরা তাতে জড়িত হও। এরূপ আচরণ আল্লাহ তা‘আলার কাছে খুবই নিন্দনীয়। আর এরূপ ব্যক্তিরা আল্লাহ তা‘আলার কাছে ক্রোধের পাত্র। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(أَتَأْمُرُوْنَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنْسَوْنَ أَنْفُسَكُمْ وَأَنْتُمْ تَتْلُوْنَ الْكِتٰبَ ط أَفَلَا تَعْقِلُوْنَ)
“তোমরা কি লোকদেরকে সৎকার্যে আদেশ করছ এবং নিজেদেরকে ভুলে যাচ্ছ; অথচ তোমরা কিতাব (তাওরাত) পাঠ কর। তবে কি তোমরা হৃদয়ঙ্গম করছ না?” (সূরা বাকারাহ ২ : ৪৪)
আনাস বিন মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : মিরাজের রাতে আমাকে এমন এক জাতির পাশে নিয়ে আসা হল যাদের ঠোঁট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছে। যখনই কাটা শেষ হয় আবার ঠোট পূর্ণ হয়ে যায়। আমি বললাম তারা কারা হে জিবরীল? তিনি বললেন : তারা হলেন আপনার উম্মতের বক্তাগণ যারা বলত কিন্তু তা করত না, তারা কিতাব পড়তো কিন্তু আমল করতো না। (সিলসিলা সহীহাহ ২৯১, আহমাদ হা. ১১৮০১)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : কিছু মু’মিন জিহাদ ফরয হওয়ার পূর্বে বলেছিল আমাদের আশা, আল্লাহ তা‘আলা যদি প্রিয় আমলের কথা জানাতেন তাহলে আমরা তা আমল করতাম। আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানিয়ে দিলেন যে, তাঁর কাছে প্রিয় আমল হল সন্দেহাতীত ঈমান আনা ও কাফিরদের বিরুদ্ধে আল্লাহ তা‘আলার পথে জিহাদ করা। যখন জিহাদের বিধান আসলো তখন অনেক মু’মিন তা অপছন্দ করল এবং তাদের ওপর তা কঠিন হয়ে গেল। আল্লাহ তা‘আলা তখন এ কথা বললেন। (ইবনু কাসীর)।
মোট কথা, কথার বিপরীত কাজ বা কাজের বিপরীত কথা কোনটিই মু’মিনের বৈশিষ্ট্য নয়, যদিও তা খেলাচ্ছলে হয়। যেমন আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন রবীআহ (রাঃ) বলেন : আমি শিশু থাকা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট আগমন করলেন। তখন আমি খেলা করার জন্য (বাড়ি থেকে) বের হতে লাগলাম। আমার মা আমাকে বলল : হে আব্দুল্লাহ শোন, আমি তোমাকে একটা জিনিস দেব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তুমি তাকে কী দেওয়ার জন্য ডাকছো? তিনি বললেন : খেজুর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন : তুমি যদি এরূপ না করতে অর্থাৎ খেজুর না দিতে তাহলে তোমার নামে একটি মিথ্যা লেখা হতো। (আবূ দাঊদ হা. ৪৯৯১, সহীহ )
তারপর আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে তাঁর রাস্তায় জিহাদ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করে বলেন : যারা তাঁর রাস্তায় সীসাঢালা প্রাচীরের মত মজবুত হয়ে সারিবদ্ধভাবে জিহাদ করে তাদেরকে তিনি ভালবাসেন। তাই কাতারবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করা যেমন ফযীলতে পূর্ণ তেমনি যুদ্ধের ময়দানে কাতার থেকে পলায়ন করা বড় ধরণের গুনাহ।
সুতরাং সাবধান! সাধারণ জনগণকে ভাল কথা বলব আর নিজেরা তা করব না-এটা উচিত নয়। এতে দুনিয়াতে যেমন অপমান তেমনি আখিরাতে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. সূরাটি অবতীর্ণের কারণ জানতে পারলাম।
২. ঈমানের পর জিহাদ করা সর্বোত্তম আমল।
৩. কথা ও কাজে গরমিল করা মু’মিনের বৈশিষ্ট্য নয়। যদিও তা খেলাচ্ছলে হয়।
৪. জিহাদের ময়দানে সারিবদ্ধ হয়ে দৃঢ়তার সাথে শত্রুর মোকাবেলা করা ঈমানের পরিচায়ক।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings