Surah Al Mumtahanah Tafseer
Tafseer of Al-Mumtahanah : 6
Saheeh International
There has certainly been for you in them an excellent pattern for anyone whose hope is in Allah and the Last Day. And whoever turns away - then indeed, Allah is the Free of need, the Praiseworthy.
Ibn Kathir Full
Tafseer 'Ibn Kathir Full' (BN)
৪-৬ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ্ তা'আলা স্বীয় মুমিন বান্দাদেরকে কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব না করার হিদায়াত দানের পর তাদের জন্যে তাঁর খলীল হযরত ইবরাহীম (আঃ) ও তার অনুসারীদের (রাঃ) নমুনা বা আদর্শ পেশ করছেন যে, তাঁরা স্পষ্টভাবে তাদের আত্মীয়-স্বজন ও জ্ঞাতি-গোষ্ঠীকে বলে দেনঃ তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত কর তার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। তোমাদের দ্বীন ও পন্থাকে আমরা ঘৃণা করি। তোমরা আমাদেরকে শত্রু মনে করতে থাকো যে পর্যন্ত তোমরা এই পন্থা ও মাযহাবের উপর রয়েছে। ভ্রাতৃত্বের কারণে যে আমরা তোমাদের কুফরী সত্ত্বেও তোমাদের সাথে ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কায়েম রাখবো এটা অসম্ভব। হ্যাঁ, তবে যদি আল্লাহ তোমাদের কে হিদায়াত দান করেন এবং তোমরা এক ও শরীক বিহীন আল্লাহর উপর ঈমান আনয়ন কর ও তাঁর একত্ববদিকে মেনে নিয়ে তাঁর ইবাদত করতে শুরু করে দাও এবং যাদেরকে তোমরা আল্লাহর শরীক মনে করে রেখেছে ও তাদের উপাসনায় লেগে রয়েছে তাদের সবকেই পরিত্যাগ করে দাও ও নিজেদের কুফরীর নীতি ও শিরকের পন্থা হতে সরে পড় তাহলে সেটা স্বতন্ত্র কথা! এ অবস্থায় তোমরা অবশ্যই আমাদের ভাই ও বন্ধু হয়ে যাবে। অন্যথায় আমাদের ও তোমাদের মধ্যে ইত্তেহাদ ও ইত্তেফাক নেই। আমরা তোমাদের হতে ও তোমরা আমাদের হতে পৃথক। তবে হ্যাঁ, এটা স্মরণ রাখার বিষয় যে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) তার পিতার জন্যে যে ক্ষমা প্রার্থনা করার অঙ্গীকার করেছিলেন এবং তা পূর্ণ করেছিলেন, এতে তাঁর অনুসরণ করা চলবে না। কেননা, এই ক্ষমা প্রার্থনা ঐ সময় পর্যন্ত অব্যাহত ছিল যে পর্যন্ত তিনি তাঁর পিতার আল্লাহ্ তা'আলার শত্রু হওয়ার কথা পরিষ্কারভাবে জানতে পারেননি। যখন তিনি নিশ্চিতরূপে জানতে পারলেন যে, তাঁর পিতা আল্লাহর শত্রু তখন তিনি স্পষ্টভাবে তার প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন। কোন কোন মুমিন নিজের মুশরিক মাতা-পিতার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন এবং দলীল হিসেবে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর তাঁর পিতার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করার ঘটনাটি পেশ করতেন। তখন আল্লাহ্ তা'আলা নিম্নের আয়াত দুটি অবতীর্ণ করেনঃ (আরবী)
অর্থাৎ “আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী এবং মুমিনদের জন্যে সংগত নয় যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী। ইবরাহীম (আঃ) তার পিতার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল, তাকে এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে। অতঃপর যখন এটা তার নিকট সুস্পষ্ট হলো যে, সে আল্লাহর শত্রু তখন ইবরাহীম (আঃ) ওর সম্পর্ক ছিন্ন করলো। ইবরাহীম (আঃ) তো কোমল হৃদয় ও সহনশীল।” (৯:১১৩-১১৪) আর এই সূরায় আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন যে, উম্মতে মুহাম্মাদী (সঃ)-এর জন্যে ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। তবে ব্যতিক্রম তার পিতার প্রতি ইবরাহীম (আঃ)-এর উক্তিঃ আমি নিশ্চয়ই তোমার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং তোমার ব্যাপারে আল্লাহর নিকট আমি কোন অধিকার রাখি না। অর্থাৎ মুশরিকদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করার মধ্যে আদর্শ নেই। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ), মুজাহিদ (রঃ), কাতাদাহ্ (রঃ), মুকাতিল ইবনে হাইয়ান (রঃ), যহ্হাক। (রঃ) প্রমুখ শুরুজনও এই ভাবার্থই বর্ণনা করেছেন।
এরপর ইরশাদ হচ্ছে যে, কওমের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে হযরত ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর নিকট আশ্রয় গ্রহণ করছেন। তিনি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা'আলার নিকট আরয করছেনঃ হে আল্লাহ! সমস্ত কাজে-কর্মে আমাদের ভরসা আপনার পবিত্র সত্তার উপরই রয়েছে। আমরা আমাদের সমস্ত কার্য আপনার কাছেই সমর্পণ করছি। আমাদের প্রত্যাবর্তন তো আপনারই নিকট।
এরপর হযরত ইবরাহীম (আঃ) মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছেনঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে কাফিরদের পীড়নের পাত্র করবেন না। অর্থাৎ যেন এমন না হয় যে, তারা আমাদের উপর বিজয় লাভ করে আমাদেরকে বিপদগ্রস্ত করে ফেলে। অনুরূপভাবে যেন এরূপও না হয় যে, আপনার পক্ষ হতে আমাদের উপর কোন বিপদ আপতিত হয় এবং ওটা তাদের বিভ্রান্তির কারণ হয় যে, যদি আমরা সত্যের উপর থেকে থাকি তবে আমাদের উপর আল্লাহর আযাব আসলো কেন? দ্রুপ এও যেন না হয় যে, তারা আমাদের উপর বিজয়ী হয়ে আমাদেরকে কষ্ট দিতে দিতে আপনার দ্বীন হতে আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়।
অতঃপর হযরত ইবরাহীম (আঃ) প্রার্থনা করছেনঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আপনি ক্ষমা করে দিন, আমাদের অপরাধ মার্জনা করুন! আপনি তো পরাক্রমশালী। আপনার নিকট আশ্রয়প্রার্থী কখনো বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে আসে না। আপনার দ্বারে করাঘাতকারী কখনো শূন্য হস্তে ফিরে না। আপনি আপনার কথায়, কাজে, শরীয়ত ও ভাগ্য নির্ধারণে প্রজ্ঞাময়। আপনার কোন কাজই হিকমত শূন্য নয়।
এরপর গুরুত্ব হিসেবে মহান আল্লাহ্ পূর্ব কথারই পুনরাবৃত্তি করে বলেনঃ তাদের মধ্যে তোমাদের জন্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। যে কেউই আল্লাহ তাআলার উপর, কিয়ামত সংঘটনের সত্যতার উপর ঈমান রাখে তার তাদের অনুসরণে আগে বেড়ে পা রাখা উচিত। আর যে কেউই আল্লাহর আহ্কাম হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ্ তো অভাবমুক্ত। তিনি কারো কোন পরোয়া করেন না। তিনি প্রশংসাৰ্য। মাখলুক সৃষ্টিকর্তার প্রশংসায় নিমগ্ন রয়েছে। যেমন তিনি বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “যদি তোমরা এবং ভূ-পৃষ্ঠের সবাই কুফরী কর বা অবাধ্য হয়ে যাও তবে জেনে রেখো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অভাবমুক্ত ও প্রশংসার্হ।।” (১৪:৮)
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, তাকেই বলা হয় যিনি তাঁর অভাবহীনতায় পরিপূর্ণ। একমাত্র আল্লাহরই মধ্যে এই বিশেষণ রয়েছে যে, তিনি সর্বপ্রকারের অভাবমুক্ত এবং সম্পূর্ণরূপে বেপরোয়া। অন্য কারো সত্তা এরূপ নয়। তাঁর সমকক্ষ কেউই নেই। কেউই তার সাথে তুলনীয় হতে পারে না। তিনি পবিত্র ও একক। তিনি সবারই উপর হাকিম, সবারই উপর বিজয়ী এবং সবারই বাদশাহ্। তিনি প্রশংসাৰ্হ। সমস্ত সৃষ্টজীব সদা তাঁর প্রশংসায় রত রয়েছে। অর্থাৎ তিনি তাঁর সমস্ত কথায় ও কাজে প্রশংসনীয়। তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং তিনি ছাড়া কোন প্রতিপালকও নেই।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings