Surah Al Mumtahanah Tafseer
Tafseer of Al-Mumtahanah : 11
Saheeh International
And if you have lost any of your wives to the disbelievers and you subsequently obtain [something], then give those whose wives have gone the equivalent of what they had spent. And fear Allah, in whom you are believers.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১০-১১ নম্বর আয়াতের তাফসীর :
৬ষ্ঠ হিজরীতে যখন নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাফিরদের সাথে হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হন তখন সন্ধির অন্যতম একটি শর্ত ছিল : মক্কা থেকে কোন ব্যক্তি মদীনায় চলে গেলে (যদিও মুসলিম হয়) তাকে মক্কায় ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। এতে নারী-পুরুষ সবাই শামিল ছিল। কিছু দিন পর কোন কোন মুসলিম মহিলা হিজরত করে মক্কা থেকে মদীনাতে চলে আসে। কাফিররা তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবী জানায়। তখন আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদেরকে উপরোক্ত শর্তের আওতামুক্ত করে দিলেন। কোন মহিলা হিজরত করে আসলে তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মু’মিনা জানা গেলে ফেরত দিতে নিষেধ করলেন। আব্দুল্লাহ বিন আবূ আহমাদ হতে বর্ণিত তিনি বলেন : একদা উম্মু কুলসুম বিনতু উকবা (রাঃ) হিজরত করে আসলেন। তার ভাই ওয়ালিদ ও আম্মার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করে তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন করল। তখন আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদের ব্যাপারে চুক্তি ভঙ্গ করে দেন। মহিলাদেরককে মুশরিকদের নিকট ফেরত দিতে নিষেধ করেন এবং এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। (উসদুল গাবাহ ৩/১৭১)
(فَامْتَحِنُوْهُنَّ)
“তাদেরকে পরীক্ষা কর” পরীক্ষা করার অর্থ হল : ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : তাদের থেকে এ সাক্ষী নেয়া যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সত্যিকার মা‘বূদ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা‘আলার বান্দা ও রাসূল। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন : পরীক্ষা করার অর্থ হল তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর কী জন্য এসেছে? যদি স্বামীদের প্রতি অসন্তুষ্টি ও রাগ করে চলে আসে তাহলে তাদেরকে তাদের স্বামীদের কাছে ফেরত দাও। ইকরিমা (রহঃ) বলেন : তাদেরকে বলা হবে : আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের প্রতি ভালবাসা ছাড়া অন্য কোন কারণে আসনি তো? কোন ব্যক্তির ভালবাসায় আসনি তো? স্বামীর প্রতি রাগ করে আসনি তো? মোটকথা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার রাসূলের ভালবাসায় দীন রক্ষার্থে যদি এসে থাকে তাহলে তাদেরকে ফেরত দিয়ো না। কারণ তারা মু’মিনা হওয়াতে কাফিরদের জন্য স্ত্রী হিসাবে থাকা জায়েয নেই। তারাও মু’মিনা মহিলাদের স্বামী হিসাবে বৈধ নয়। যদিও ইসলামের প্রাথমিক যুগে বৈধ ছিল। যেমন নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা জায়নাব (রাঃ)-এর আবূল আসের সাথে বিবাহ হয়েছিল। জায়নাব (রাঃ) ছিলেন মু’মিনা আর আবূল আস ছিল কাফির। বদর যুদ্ধে আবূল আস বন্দী হলে জায়নাব তাঁর মা খাদিজার কাছ থেকে প্রাপ্ত হার বন্দীর মুক্তিপণ সরূপ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে প্রেরণ করেন। হারটি দেখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুব নরম হয়ে যান। মুসলিমদেরকে বললেন : যদি তোমরা আমার কন্যার বন্দীকে মুক্তি দেওয়া পছন্দ কর তবে তাকে মুক্ত করে দাও। মুসলিমরা মুক্তিপণ ছাড়াই আবূল আসকে মুক্তি করে দিতে সম্মত হন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে আযাদ করে দিয়ে বলেন : জায়নাবকে মদীনায় পাঠিয়ে দেবে। আবূল আস পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে আবূল আস ইসলাম গ্রহণ করলে পূর্বের বিবাহের উপরেই নতুন মোহর ছাড়াই তার হাতে জায়নাবকে তুলে দেন। (আবূ দাঊদ হা. ২২৪০, তিরমিযী হা. ১১৪৩ সনদ সহীহ)।
উরওয়াহ হতে বর্ণিত তিনি বলেন : নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী আয়িশাহ (রাঃ) তাকে বলেছেন : কোন মু’মিন মহিলা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে হিজরত করে এলে তিনি তাকে আল্লাহ তা‘আলার এ আয়াতের ‘হে মু’মিনগণ! তোমাদের নিকট মু’মিন নারীরা হিজরত করে আসলে তোমরা তাদেরকে পরীক্ষা কর’ ভিত্তিতে পরীক্ষা করতেন।
(وَاٰتُوْهُمْ مَّآ أَنْفَقُوْا)
অর্থাৎ তাদের কাফির স্বামীরা তাদেরকে যে মোহর দিয়েছিল তা তোমরা তাদেরকে ফিরিয়ে দাও।
(وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ)
অর্থাৎ যে সকল নারীরা দীন রক্ষা করার জন্য হিজরত করে তোমাদের নিকট চলে এসেছে তাদের বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ। তবে শর্ত হল : ১. মোহর দিতে হবে, ২. ইদ্দত পূর্ণ করতে হবে, ৩. অভিভাবকদের সম্মতি ও দুজন সাক্ষী থাকা লাগবে।
عصم- (وَلَا تُمْسِكُوْا بِعِصَمِ الْكَوَافِر)
শব্দটি عصمة এর বহুবচন। এখানে অর্থ হল : দাম্পত্য সম্পর্ক। অর্থাৎ যদি স্বামী মুসলিম হয়ে যায় এবং স্ত্রী কাফির অথবা মুশরিক থেকে যায় তাহলে এ রকম মুশরিক মহিলাকে বিবাহ বন্ধনে রাখা বৈধ না। স্বামী তাকে ত্বালাক দিয়ে পৃথক হয়ে যাবে। এ নির্দেশের পর উমার (রাঃ) তাঁর দু’জন মুশরিক স্ত্রীকে এবং তালহা ইবনু ওবায়দুল্লাহও তাঁর স্ত্রীকে ত্বালাক দিয়ে দেন। (ইবনু কাসীর)।
তবে স্ত্রী আহলে কিতাব হলে ত্বালাক দেওয়া জরুরী নয়, কারণ তাদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ।
(وَاسْأَلُوْا مَآ أَنْفَقْتُمْ)
অর্থাৎ যে সকল কাফির স্ত্রীরা কুফরীর ওপর বহাল থেকে কাফিরদের কাছে চলে গেছে তাদের জন্য যা ব্যয় করেছ তা চেয়ে নাও। আর কাফির পুরুষেরা যেন চেয়ে নেয় ঐ সকল স্ত্রীদের থেকে যারা ইসলাম গ্রহণ করত হিজরত করে চলে এসেছে।
(فَعَاقَبْتُمْ) “তোমরা শাস্তি দাও অথবা প্রতিশোধ নাও” এর একটি অর্থ হল : মুসলিম হয়ে আগমনকারী মহিলাদের প্রাপ্ত মোহর যা তোমাদেরকে তাদের কাফির স্বামীদেরকে দিতে হত সেটা তোমরা সেই মুসলিমদেরকে দিয়ে দাও যাদের স্ত্রীরা কাফির হওয়ার কারণে কাফিরদের কাছে চলে গেছে এবং মুসলিমদের মোহরের পাওনা ফেরত দেয়নি (অর্থাৎ এটাও এক প্রকার সাজা)। দ্বিতীয় অর্থ হল : তোমরা কাফিরদের সাথে জিহাদ কর। অতঃপর যে গনিমতের মাল অর্জন কর, তা থেকে বণ্টনের পূর্বে প্রথমে যে মুসলিমদের স্ত্রীরা চলে গিয়ে কাফিরদের দলে মিলিত হয়েছে তাদের ব্যয়কৃত অর্থের সমপরিমাণ তাদেরকে দিয়ে দাও। অর্থাৎ গনিমতের মাল থেকে মুসলিমদের ক্ষতি পূরণ করাটাও এক প্রকার শাস্তি বা প্রতিশোধ। (আয়সারুত তাফাসীর, ইবনু কাসীর)। যদি গনীমতের মাল থেকে ক্ষতিপূরণ সম্ভব না হয়, তাহলে বাইতুল মাল থেকে সাহায্য করা হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয় :
১. মুসলিম মহিলাদের কাফির পুরুষদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ নয়।
২. মুসলিমরা আহলে কিতাবের নারীদের বিবাহ করতে পারে।
৩. কোন মহিলা কাফির দেশ থেকে হিজরত করে চলে আসলে তাকে পরীক্ষা করে জেনে নেয়া দরকার যে, প্রকৃতপক্ষে সে ইসলামের স্বার্থে হিজরত করেছে কিনা।
৪. মুসলিমরা আল্লাহ তা‘আলার আদেশ জানা মাত্রই তার কাছে মাথা নত করবে। যেমন উমার (রাঃ) ও তালহা (রাঃ) মুশরিকা নারীর সাথে বিবাহ বন্ধন হারাম হওয়ার কথা জানার সাথে সাথে ত্বালাক দিয়ে দেন।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings