Surah Al Ma'idah Tafseer
Tafseer of Al-Ma'idah : 31
Saheeh International
Then Allah sent a crow searching in the ground to show him how to hide the disgrace of his brother. He said, "O woe to me! Have I failed to be like this crow and hide the body of my brother?" And he became of the regretful.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
২৭-৩১ নং আয়াতের তাফসীর:
আদম (আঃ)-এর দুই পুত্র হাবীল ও কাবীল। কাবীল হাবীলের চেয়ে বয়সে বড়। একদা উভয়েই আল্লাহ তা‘আলার জন্য কুরবানী করেছিল। কিন্তু কী জন্য করেছিল তার বর্ণনা বিশুদ্ধভাবে কিছু পাওয়া যায় না। ইমাম ইবনু কাসীর (আঃ) তাঁর তাফসীরে এ সম্পর্কে কয়েকটি বর্ণনা নিয়ে এসেছেন সেগুলো বিশুদ্ধ নয়। তাই বলা যায়, তখন কুরবানীর বিধান ছিল, একদা তারা উভয়ে কুরবানী করল। কাবীলের কুরবানী কবূল না হওয়ায় হাবীলের সাথে হিংসা করে সে তাকে হত্যা করে। এটাই আয়াতের সাথে অধিক সামঞ্জস্য। তবে এ কথা প্রসিদ্ধ যে, দুনিয়ার প্রাথমিক অবস্থায় আদম ও হাওয়া (আঃ)-এর একটি ছেলে ও একটি মেয়ে একসাথে জন্মগ্রহণ করত। পরবর্তী গর্ভে অনুরূপ একটি ছেলে ও একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করত। তখন পূর্ব গর্ভের ছেলে মেয়ের সাথে পরবর্তী গর্ভের ছেলে-মেয়ের বিবাহ দেয়া হত। হাবীলের যমজ বোন সুন্দরী ছিল না। কিন্তু কাবীলের যমজ বোন সুন্দরী ছিল। তৎকালীন শরীয়ত অনুপাতে হাবীলের বিবাহ কাবীলের যমজ বোনের সাথে আর কাবীলের বিবাহ হাবীলের যমজ বোনের সাথে হবার কথা। কিন্তু কাবীল তা মানতে অস্বীকৃতি জানাল।
আদম (আঃ) কাবীলকে বুঝালেন। কিন্তু সে বুঝতে চেষ্টা করল না। অবশেষে আদম (আঃ) উভয়কে আল্লাহ তা‘আলার নামে কুরবানী পেশ করার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন: যার কুরবানী কবূল হবে কাবীলের যমজ বোন তার সাথে বিবাহ দেয়া হবে। হাবীল ছিল মেষওয়ালা, ফলে হাবীল একটি মোটা তাজা মেষ কুরবানীর জন্য পেশ করল। আর কাবীল ছিল কৃষক, সে কিছু গমের শিষ কুরবানীর জন্য পেশ করল। আসমান থেকে আগুন এসে হাবীলের কুরবানী জ্বালিয়ে দিল, যা কবূল হবার নিদর্শন। কাবীলের কুরবানী গ্রহণ করা হল না। ফলে হিংসায় সে হাবীলকে হত্যা করার মনস্থ করল। পরে কুরআনে উল্লিখিত ঘটনা ঘটে। তবে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা কুরবানী করেছিল বলে এর কোন নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায় না। (ইবনু কাসীর, অত্র আয়াতের তাফসীর)
(مَآ أَنَا بِبَاسِطٍ يَّدِيَ إِلَيْكَ لِأَقْتُلَكَ)
‘তবুও আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য তোমার দিকে আমার হাত বাড়াব না’ অর্থাৎ হাবীল কাবীলকে বলল: আমার কুরবানী আল্লাহ তা‘আলা কুবল করেছেন- এ জন্য আমার প্রতি হিংসার বশবর্তী হয়ে তুমি আমাকে হত্যা করতে চাইলে আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য আমার হাত প্রসারিত করবো না। আমি তোমাকে হত্যা করলে অন্যায় কাজে তোমার সমান হয়ে যাব। আমি আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করি। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যদি দু’জন মুসলিম ব্যক্তি তরবারী নিয়ে মারামারি করে তাহলে হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ে জাহান্নামী। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন: হত্যাকারী জাহান্নামে যাবে এটা তার উপযুক্ত শাস্তি। কিন্তু নিহত ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে কেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বললেন: সেও হত্যাকারীকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। (সহীহ বুখারী হা: ৭০৪৩, সহীহ মুসলিম হা: ২৮৮৮)
বুসর বিন সাঈদ (রহঃ) হতে বর্ণিত, যখন উসমান (রাঃ)-কে হত্যা করার জন্য ঘেরাও করা হয় তখন সা‘দ বিন আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: অচিরেই ফেতনা সৃষ্টি হবে, যারা বসে থাকবে তারা দণ্ডায়মান ব্যক্তি থেকে উত্তম। আর চলন্ত ব্যক্তি থেকে দণ্ডায়মান ব্যক্তি উত্তম, আর দৌড়ানো ব্যক্তি থেকে চলন্ত ব্যক্তি উত্তম। বর্ণনাকারী বলেন: হে আল্লাহর রাসূল! আপনি লক্ষ্য করেছেন; তারা যদি আমার বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে মারার জন্য হাত প্রসারিত করে? তিনি বললেন: আদম সন্তানের মত হয়ে যাও। (মুসনাদ আহমাদ ১/১৮৫, তিরমিযী হা: ২১৯৪, সহীহ)
(إِنِّيْٓ أُرِيْدُ أَنْ تَبُوْٓأَ بإِثْمِيْ وَإِثْمِكَ)
“আমি চাই, তুমি বহন কর আমার ও তোমার গুনাহর বোঝা”অর্থাৎ আমাকে হত্যা করার গুনাহ আর পূর্বে থেকে তোমার যে গুনাহ রয়েছে তা নিয়ে ফিরে যাও।
আবার কেউ বলেন: আমি চাই তুমি আমার অপরাধের গুনাহ ও আমাকে হত্যা করার গুনাহ বহন করে নাও। (ইবনু জারীর তাবারী ৬/১২৪) এতো সতর্ক করার পরেও সে হত্যা করা থেকে বিরত থাকল না।
(فَأَصْبَحَ مِنَ الْخٰسِرِيْنَ)
‘ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শামিল হয়ে গেল।’ অর্থাৎ সে দুনিয়া ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে তার অপরাধের কিছু বোঝা আদম (আঃ)-এর প্রথম সন্তান (কাবীলের) ওপর বর্তাবে। কেননা সে প্রথম হত্যা করার নীতি চালু করেছে। (সহীহ বুখারী হা: ৩৩৩৫, সহীহ মুসলিম হা: ১৬৭৭) এর চেয়ে বড় ক্ষতি আর কী আছে?
প্রকাশ থাকে যে, হাবীলকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার শাস্তি কাবীলকে তৎক্ষণাৎ দুনিয়াতেই দেয়া হয়েছিল। যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে সকল পাপের শাস্তি আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে দুনিয়াতে প্রদান করবেন এবং পরকালেও তার জন্য ভীষণ শাস্তি জমা রাখবেন সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় পাপ হল সীমালঙ্ঘন করা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা। (আবূ দাঊদ হা: ৪৯০৪, তিরমিযী হা: ২৫১১, সহীহ) আর এ দু’টি অপরাধই কাবীলের মধ্যে বিদ্যমান ছিল।
(فَأَصْبَحَ مِنَ النّٰدِمِيْنَ)
তারপর সে অনুতাপ করতে লাগল!’ অর্থাৎ মানুষ কত দুর্বল! নিজের ভাইকে সে হত্যা করার পর কী করবে তা খুঁজে বুঝে উঠতে পারছিল না। তখন আল্লাহ তা‘আলা দু’টি কাক প্রেরণ করলেন, একটি অন্যটিকে মেরে ফেলে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখল। তখন কাবীল এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে তার ভাইকে দাফন করল এবং নিজে খুব অনুতপ্ত হল।
সুতরাং এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত, মহান আল্লাহ জালিম, সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। তারা ক্ষতিগ্রস্থ ও তাদের ধ্বংস অনিবার্য।
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলার ভালবাসার বস্তুর মাধ্যমেই তাঁর নৈকট্য হাসিল করতে হবে।
২. আল্লাহ তা‘আলা পূর্ববর্তীদের ইতিহাস বর্ণনা করেছেন তা থেকে শিক্ষা নেয়ার জন্য।
৩. আল্লাহ তা‘আলা কেবল মুত্তাকিদের আমল গ্রহণ করেন।
৪. ভেবে চিন্তে কাজ করতে হবে, তা না হলে পরে আফসোস করে কোন লাভ হবে না।
৫. মানুষ মারা যাওয়ার পর তার লাশ দাফন করতে হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings