Surah Al Ma'idah Tafseer
Tafseer of Al-Ma'idah : 17
Saheeh International
They have certainly disbelieved who say that Allah is Christ, the son of Mary. Say, "Then who could prevent Allah at all if He had intended to destroy Christ, the son of Mary, or his mother or everyone on the earth?" And to Allah belongs the dominion of the heavens and the earth and whatever is between them. He creates what He wills, and Allah is over all things competent.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
১৭-১৯ নং আয়াতের তাফসীর:
এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা নিজের অসীম ক্ষমতা ও পূর্ণ সার্বভৌমত্বের মালিকানার কথা বর্ণনা করেছেন। উদ্দেশ্য হল: খ্রিস্টানদের ত্রিত্ববাদ আকীদাহ ও বিশ্বাসকে খণ্ডন করা। ঈসা (আঃ)-কে যারা আল্লাহ বলে বিশ্বাস করে তারা কাফির। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
(لَقَدْ كَفَرَ الَّذِيْنَ قَالُوْآ إِنَّ اللّٰهَ ثَالِثُ ثَلٰثَةٍ)
“যারা বলে, ‘আল্লাহ তো তিনের মধ্যে একজন, তারা কুফরী করেছে।”(সূরা মায়িদাহ ৫:৭৩)
আল্লাহ তা‘আলা যদি ঈসা ও তার মাতাকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করেন তাহলে কেউ কি বাঁচাতে পারবে? না পারবে না। তাহলে কিভাবে তারা আল্লাহ হতে পারে! এ জন্যই তিনি অত্র আয়াতের সাথেই সংযুক্ত করে বলেছেন: ‘আসমান ও জমিনের এবং এদের মধ্যে যা কিছু আছে তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ অর্থাৎ আকাশ-জমিনের রাজত্ব তাঁর, তিনি যা ইচ্ছা যেভাবে ইচ্ছা সৃষ্টি করতে পারেন। তিনি ইচ্ছা করলে কাউকে পিতা-মাতা ছাড়া সৃষ্টি করতে পারেন যেমন আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করেছেন, আবার পিতা ছাড়াও সৃষ্টি করতে পারেন। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। তাই বলে তিনি আল্লাহ বা আল্লাহর অংশ হয়ে যাবেন এমনটা নয়।
যুগে যুগে মানুষ কুফর, শির্ক ও গুমরাহীতে নিপতিত হবার বড় কারণ ছিল নাবী-রাসূল ও অলী-আওলিয়াদের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা। তাদের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে খ্রিস্টানরা ঈসা (আঃ) কে আল্লাহ বানিয়ে ছিল, আর ইয়াহূদীরা উযাইর (আঃ)-কে আল্লাহর পুত্র বানিয়ে ছিল। উম্মতে মুহাম্মাদীর এক শ্রেণির মানুষ অলী-আওলিয়াদের নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে তাদেরকে আল্লাহর মর্যাদায় তুলে দিচ্ছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: তোমরা বাড়াবাড়ি করা থেকে বিরত থাক, কারণ তোমাদের পূর্ববর্তীরা বাড়াবাড়ি করার কারণে ধ্বংস হয়েছে। (ইবনু মাযাহ হা: ৩০২৯, সহীহ)
ইয়াহূদীরা উযায়েরকে আল্লাহ তা‘আলার পুত্র ও খ্রিস্টানরা ঈসা (আঃ)-কে আল্লাহ বলে থাকে। মূলত এ দু’জনই আল্লাহ তা‘আলার প্রিয়পাত্র ও বান্দা এবং তাঁরা বান্দা পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করেননি। যেমন সূরা নিসার ১৭২ নং আয়াতে উল্লেখ হয়েছে। এমনকি তাঁরা কেউ নিজেদেরকে মা‘বূদ দাবী করেননি এবং নিজেদের ইবাদতের দিকে আহ্বান করেননি। এ সম্পর্কে অত্র সূরার ১১৬ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে।
(وَقَالَتِ الْيَهُوْدُ وَالنَّصٰرٰي نَحْنُ أَبْنٰ۬ؤُا اللّٰهِ وَأَحِبَّا۬ٓؤُه)
‘ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানগণ বলে, ‘আমরা আল্লাহর পুত্র ও তার প্রিয়পাত্র।’আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং তার উত্তর দিচ্ছেন: তাহলে কেন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের পাপের কারণে শাস্তি দেন। যদি প্রিয়পাত্রই হতে তাহলে তো শাস্তি দেয়ার প্রশ্নই আসে না।
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে এটা তাদের মিথ্যা দাবী। আল্লাহ তা‘আলা কাউকে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেননি এবং স্ত্রী হিসেবেও কাউকে গ্রহণ করেননি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(یٰٓاَھْلَ الْکِتٰبِ لَا تَغْلُوْا فِیْ دِیْنِکُمْ وَلَا تَقُوْلُوْا عَلَی اللہِ اِلَّا الْحَقّ َ ﺚ اِنَّمَا الْمَسِیْحُ عِیْسَی ابْنُ مَرْیَمَ رَسُوْلُ اللہِ وَکَلِمَتُھ۫ ﺆ اَلْقٰٿھَآ اِلٰی مَرْیَمَ وَرُوْحٌ مِّنْھُﺑ فَاٰمِنُوْا بِاللہِ وَرُسُلِھ۪)
‘‘হে আহলে কিতাবগণ! তোমাদের দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি কর না ও আল্লাহ সম্পর্কে সত্য ছাড়া অন্য কিছু বল না। মারইয়ামের ছেলে ‘ঈসা মসীহ তো আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর বাণী, যা তিনি মারইয়ামের নিকট প্রেরণ করেছিলেন ও তাঁর আদেশ। সুতরাং তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আন।” (সূরা নিসা ৪:১৭১)
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা আহলে কিতাদেরকে নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান আনার আহ্বান করেছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এমন সময় প্রেরণ করেছেন যখন নাবী-রাসূলের আগমনে দীর্ঘ বিরতি ছিল।
(فَتْرَةٍ مِّنَ الرُّسُلِ)
‘রাসূল আগমনে বিরতির সময়’এ বিরতি সময়ের ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ঈসা (আঃ)-এরমাঝে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধান ছিল, ইমাম বুখারী সালমান ফারেসী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন: সে সময় ছিল ছয়শত বছর। (সহীহ বুখারী হা: ৩৯৪৮) এছাড়া বিভিন্ন বর্ণনাতে বলা হয়েছে: ৫৬০, ৫৪০ বছর ইত্যাদি।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রেরণ করার অন্যতম আরেকটি উদ্দেশ্য হল, যাতে এ অভিযোগ না করতে পারে যে, কোন সুসংবাদদাতা বা ভীতি প্রদর্শনকারী আমাদের নিকট আসেনি। সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা বলে দিলেন:
(فَقَدْ جَا۬ءَكُمْ بَشِيْرٌ وَّنَذِيْرٌ)
“এখন অবশ্যই তোমাদের নিকট একজন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী এসেছে।”
আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. যারা বলে আল্লাহ তা‘আলা হলেন ঈসা বা আল্লাহ তা‘আলা তিনজনের একজন বা আল্লাহ তা‘আলার সমতুল্য কোন গাউস, কুতুব, পীর-ফকির বা বাবা রয়েছে তারা কাফির।
২. ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের কর্তৃক তাদের আল্লাহ তা‘আলার পুত্র হবার দাবী মিথ্যা।
৩. সকল সার্বভৌমত্বের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা।
৪. নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সারা পৃথিবীবাসীর জন্য প্রেরণ করেছেন যাতে কেউ তাওহীদ না জানার অভিযোগ করতে না পারে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings